বৈধ অস্ত্র জমাদানের নির্দেশনা আসেনি

রংপুর প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১৬ নভেম্বর ২০২২, ১৫: ০৫

রংপুর সিটি করপোরেশন (রসিক) নির্বাচনের এখনো বাকি ৪২ দিন। তফসিল ঘোষণার এক সপ্তাহ পার হলেও এখনো নির্বাচন কমিশন থেকে দেওয়া হয়নি বৈধ অস্ত্র জমা দেওয়ার নির্দেশনা। ১০ লাখের বেশি জনসংখ্যা-অধ্যুষিত এই সিটিতে ভোট গ্রহণে সব কটি কেন্দ্রে ইভিএম ব্যবহার করা হবে।

এদিকে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার তিন দিন পর ১০ নভেম্বর সম্ভাব্য প্রার্থীদের পক্ষে নগরজুড়ে সাঁটানো ব্যানার, পোস্টার, ফেস্টুন, বিলবোর্ড ও তোরণ অপসারণে ৩৬ ঘণ্টা সময় বেঁধে দেন দায়িত্বপ্রাপ্ত রিটার্নিং কর্মকর্তা। ওই নির্দেশনার পর নগরীর প্রধান সড়কের দুপাশ থেকে প্রচারসামগ্রী অপসারণ করা হলেও এখনো সিটির বর্ধিত এলাকাগুলোতে শোভা পাচ্ছে মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীদের পোস্টার-ফেস্টুন।

সচেতন মহল বলছে, নির্বাচন কমিশনের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা কঠোর না হলেও প্রার্থীরা নির্দেশনা মানতে চাইবেন না। এতে হরহামেশাই আচরণবিধি লঙ্ঘনের ঘটনা বাড়বে। কমিশনকে সুষ্ঠু, অবাধ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন সম্পন্ন করতে এখন থেকেই কঠোর অবস্থানে থাকবে হবে। শুধু তা-ই নয়, বৈধ অস্ত্র জমাদানের কোনো নির্দেশনা না আসায় নির্বাচনে বৈধ অস্ত্রের অবৈধ ব্যবহারের আশঙ্কা রয়েছে। এ কারণে বৈধ অস্ত্রধারীদের গোয়েন্দা নজরদারিতে রাখা প্রয়োজন।

সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) রংপুর মহানগরের সভাপতি অধ্যক্ষ ফখরুল আনাম বেঞ্জু বলেন, রংপুরে লাইসেন্সধারী শতাধিক বৈধ অস্ত্র রয়েছে। অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করে সিটি নির্বাচনে প্রার্থীদের পক্ষে বৈধ অস্ত্রের অবৈধ ব্যবহার হতে পারে। এতে ঘটতে পারে প্রাণহানিসহ নানা দুর্ঘটনা। তাই সিটি নির্বাচনের আগমুহূর্তে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে অভিযান পরিচালনার পাশাপাশি বৈধ অস্ত্র জমা নেওয়া জরুরি।

ফখরুল আনাম আরও বলেন, প্রার্থীদের আলটিমেটাম দিয়েও এখনো সব প্রচারসামগ্রী অপসারণ করাতে পারেনি নির্বাচন কমিশন। শুধু তা-ই নয়, সম্ভাব্য প্রার্থীরা বিভিন্ন কৌশলে প্রচারণা চালাচ্ছেন। প্রার্থীদের এমন আচরণ সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য একধরনের হুমকি। তফসিল অনুযায়ী আগামী ২৭ ডিসেম্বর রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন। সে জন্য আগে থেকে নির্বাচন অফিসে থাকা ইভিএমগুলো ঢাকায় কমিশন কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে।

রংপুর জেলার সিনিয়র নির্বাচন কর্মকর্তা ফরহাদ হোসেন জানান, বৈধ অস্ত্র জমাদানের বিষয়ে ঢাকা থেকে এখনো কোনো নির্দেশনা আসেনি। নির্দেশনা এলেই অস্ত্র জমা নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হবে। তবে গোয়েন্দা নজরদারির বিষয়টি তাঁদের মাথায় রয়েছে। ইভিএম প্রসঙ্গে ফরহাদ হোসেন বলেন, ‘এখানে থাকা মেশিনগুলো টাইম, প্রবলেমসহ বিভিন্ন সমস্যা থাকায় ঢাকায় নির্বাচনর কমিশনে পাঠানো হয়েছে। ইভিএমের কোয়ালিটি চেকিংয়ের পর ব্যবহার উপযোগী হলে সেগুলো রংপুরে আনা হবে।’ এ সময় তিনি বলেন, নগরীর বেশির ভাগ থেকে প্রার্থীদের সাঁটানো প্রচারসামগ্রী অপসারণ করা হয়েছে।

এবার নিয়ে তৃতীয়বারের মতো রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। নির্বাচন কমিশন ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী মনোনয়ন দাখিলের শেষ দিন ২৯ নভেম্বর। ১ ডিসেম্বর মনোনয়নপত্র বাছাই এবং ৮ ডিসেম্বর মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ তারিখ। প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হবে ৯ ডিসেম্বর। প্রতীক বরাদ্দের পর প্রার্থীরা ১৭ দিন প্রচার-প্রচারণার সুযোগ পাবেন।

২৭ ডিসেম্বর ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) মাধ্যমে সকাল সাড়ে আটটা থেকে বিকেল সাড়ে চারটা পর্যন্ত একটানা ভোট গ্রহণ চলবে। এ ছাড়া সব ভোটকেন্দ্রে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করা হবে। রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ইসির যুগ্ম সচিব নির্বাচনী প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের (ইটিআই) মহাপরিচালক আবদুল বাতেনকে রিটার্নিং কর্মকর্তার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। 

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত