গোড়ার মাটি কেটে বাঁধ সংস্কার, ভাঙনের ঝুঁকি

মাসুদ পারভেজ রুবেল, ডিমলা (নীলফামারী)
প্রকাশ : ১৪ জানুয়ারি ২০২৩, ১২: ৪৫

নীলফামারীর ডিমলায় দেশের বৃহত্তম তিস্তা সেচ প্রকল্পের মূল সেচনালা সংস্কারকাজে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। নালার বাঁধ কাম রাস্তার নিচের অংশের মাটি কেটে ওপরের দিক ভরাট করা হচ্ছে। এ ছাড়া মাটি কাটতে গিয়ে সামাজিক বনায়নের বিভিন্ন প্রজাতির গাছ ধ্বংস করার অভিযোগ রয়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, সংস্কারকাজে ব্যবহারের জন্য বালু ও মাটি সরবরাহ না করে দায়সারা কাজ করা হচ্ছে। এই কাজে ঠিকদারি প্রতিষ্ঠানকে সহায়তা করছেন স্থানীয় কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তি ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) কিছু অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারী।
ডালিয়া পাউবোর দেওয়া তথ্য অনুসারে, মূল সেচনালার ১৭ কিলোমিটার বাঁধ কাম রাস্তা সংস্কারে ৪ কোটি ৫৫ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। কাজ বাস্তবায়নের দায়িত্ব পায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বেলাল এন্টারপ্রাইজ। কাজটি সম্পন্ন করছেন সাব ঠিকাদার সেলিম সরকার।
সরেজমিনে দেখা গেছে, এক্সকাভেটর দিয়ে সেচনালার দুই পাশের রাস্তার ঢাল কেটে সেই মাটি দিয়েই ওপরের অংশ নতুনভাবে সংস্কার করা হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, এতে বাঁধ দেবে যেতে পারে। তিস্তা নদীর পানি বাড়লেই সেচ প্রকল্প ক্ষতিগ্রস্ত হবে। রয়েছে ভাঙনের আশঙ্কা।

এ ছাড়া সংস্কারের জন্য মাটি সংগ্রহের কাজ করতে গিয়ে সেচনালার পাশ থেকে সরকারি বালু লুট করা হচ্ছে। বাঁধের কোল থেকে মাটি কেটে এর সঙ্গে বালু মিশিয়ে দায়সারাভাবে সংস্কারের কাজ করায় সরকারের এই বড় প্রকল্পের স্থায়িত্বসহ কোটি কোটি টাকা ভেস্তে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

কাজ দেখভালের দায়িত্বে থাকা উপসহকারী প্রকৌশলী ফিরোজ আহমেদ জানান, এলাকাবাসীর অভিযোগের ভিত্তিতে তিনি ওই এলাকায় গিয়ে বাঁধের দুই পাশের মাটি কাটার বিষয়ে সত্যতা পেয়েছেন।

তবে সাব ঠিকাদার সেলিম সরকারের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, বাইরে থেকে মাটি কিনে ট্রলি দিয়ে নিয়ে আসা হচ্ছে। আর কাজ করতে গেলে টুকটাক সমস্যা তো হবেই।

এ বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হলে ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আসফাউদদৌলা আজকের পত্রিকাকে বলেন, প্রকল্প কাজের ঠিকাদার নতুন করে যাতে বাঁধ থেকে মাটি সংগ্রহ করতে না পারে তা দেখভাল করতে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বাঁধের মাটি না কেটে অন্য জায়গা থেকে তা সরবরাহের জন্য ঠিকাদারকেও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এরপরও গাছ কাটা ও মাটি সংগ্রহের ব্যাপারে এলাকাবাসীর কোনো অভিযোগ থাকলে তা নেওয়া হবে।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত