Ajker Patrika

মাগুরা হাসপাতালে পানির সংকট

ফয়সাল পারভেজ, মাগুরা
আপডেট : ৩০ ডিসেম্বর ২০২১, ১২: ০৬
মাগুরা হাসপাতালে পানির সংকট

‘সকালে দুইবার আইছি, দেখেন কল আছে, চাপ দেওয়ার ডান্ডি নাই। এখন পানি উঠাবো কী করে? রোগী আনছি সেই বুনাগাতি থেকে গতকাল। গরিব মানুষ কিনে পানি খাওয়ার উপায় নাই। এই শীতে এখন কনে যাব পানি নিয়ে আসতি? এত বড় হাসপাতাল, কত ঝকঝকে আর তকতকে ভেতরে আর তার টিউবওয়েল মাত্র একটি। এটা কিরাম কতা?’

মাগুরা ২৫০ শয্যা সদর হাসপাতাল মর্গের পাশে এমন করেই নিজের আক্ষেপের কথা জানান সুরুজ মিয়া। বোনকে নিয়ে এসেছেন হাসপাতালে। সঙ্গে নিজের দুই সন্তান রয়েছে। বোনকে সেবা-যত্ন করতে তাঁকেই হাসপাতালে ঘুরতে হচ্ছে। খাবার পানি নিয়ে পড়েছেন বিপত্তিতে। হাসপাতালে খাবার পানি বলতে পুরোনো রোগীরা তাঁকে এই উত্তর পাশের চাপকলটি দেখিয়ে দিয়েছে। এখন দেখেন কলে চাপ দেওয়ার লম্বা লোহাটি খোলা।

একই চাপকলে জোহরা খাতুন নিয়ে এসেছেন থালাবাসন। জামাই অসুস্থ। মেয়ে ও তাঁর একটি বাচ্চা হাসপাতালে তিন দিন। কিন্তু পানির সমস্যা যায় না। হাসপাতালে কয়েকটি জায়গাতে ফিল্টার পানির ব্যবস্থা থাকলেও তা এত বড় হাসপাতালে শখানেক মানুষেরই জোগান দিতে পারে না।

এ ধরনের ভোগান্তি প্রতিদিনের বলে জানান নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হাসপাতালের কয়েকজন কর্মচারী। তাঁরা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘রোগীর চাপ এখন শীতের সময় কম, তবে যখন বেশি থাকে, তখন তাঁদের পানির সংকট থাকে। সরকারি হাসপাতালে তো গরিব মানুষই বেশি আসেন। তাঁদের সবার পানি কিনে খাওয়ার অবস্থা থাকে না। এ ছাড়া অনেক রোগী আছেন, যাঁরা অনেক দিন হাসপাতালে থাকেন। তাঁদের সঙ্গে স্বজনেরা থাকেন। কাপড় থেকে শুরু করে থালাবাসন ধোয়াটা খুব কঠিন। অনেকে ক্ষোভ দেখান, কিন্তু দেখা ছাড়া আমাদের কিছু করার নেই।’

মাগুরা সদর হাসপাতালের নতুন ভবনের পাশেই পুরোনো ভবন। সেই ভবনের পশ্চিম পাশে ছিল আগের জরুরি বিভাগ। এর পেছনে একটি টিউবওয়েলে একজনকে গোসল করতে দেখা যায়। সিয়াম নামে যুবকটি এক রোগীর স্বজন। তিনি জানান, এর পানি খাওয়া যায় না। বিশ্রি গন্ধ আর আয়রনভরা। শুধু গোসল করা যায়। এ ছাড়া হাসপাতালের উত্তর পাশের কর্মচারী কোয়ার্টারে একটি টিউবওয়েল আছে, তার মাথা খুলে রাখে ওখানকার বাসিন্দারা। তাহলে আমরা যাবটা কোথায়, বলেন? চিকিৎসা নিতি এসে আমরা নিজেরাই পানির অভাবে অসুস্থ হয়ে যাচ্ছি।

মাগুরা ২৫০ শয্যা সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তা ডা. বিকাশ শিকদার বলেন, ‘টিউবওয়েল একটি আছে হাসপাতালের উত্তর পাশে মর্গের দেয়াল ঘেঁষে। ওটা ছাড়াও রোগীদের জন্য একটি আছে পুরোনো জরুরি বিভাগের পেছনে। রোগী প্রচুর, তাই সব বিষয়ে আসলে নজর দেওয়া সম্ভব হয় না। ফিল্টার পানির ব্যবস্থা আছে হাসপাতালের ভেতরে। ইচ্ছা করলে রোগীরা সেটাও ব্যবহার করছে। তবে টিউবওয়েল আরও কয়েকটি দরকার। সেটা আমরা দেখছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আ. লীগ নির্বাচনে অংশ নেবে কি না, তারাই সিদ্ধান্ত নেবে: বিবিসিকে প্রধান উপদেষ্টা

‘মবের হাত থেকে বাঁচাতে’ পলকের বাড়ি হয়ে গেল অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প

স্বাধীনতা পদক পাচ্ছেন এম এ জি ওসমানীসহ ৮ জন

কনের বাড়িতে প্রবেশের আগমুহূর্তে হৃদ্‌রোগে বরের মৃত্যু

বগুড়ায় মোবাইল ফোনে কথা বলার সময় ছাদ থেকে পড়ে নার্সিং শিক্ষার্থীর মৃত্যু

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত