গ্রেপ্তার-আতঙ্ক

সম্পাদকীয়
Thumbnail image

কোটা সংস্কার আন্দোলন একসময় সহিংস রূপ ধারণ করে। শিক্ষার্থীদের কর্মসূচি শুধু তাদের আন্দোলন হয়ে থাকেনি। সমাজের আপামর মানুষও তাদের সঙ্গে যুক্ত হয়ে যায়। এ পরিস্থিতিতে বিরোধী রাজনৈতিক দল, বিশেষ করে বিএনপি-জামায়াত এই আন্দোলনকে ভিন্ন দিকে নিয়ে যাওয়ার জন্য ঢাকার অনেক রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় অগ্নিসংযোগসহ ধ্বংসযোগ্য চালায় বলে অভিযোগ উঠেছে।

এর পরিপ্রেক্ষিতে সরকার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কারফিউ জারি করে। ফলে দেশের মানুষের মধ্যে স্বস্তি ফিরে এসেছে। এর মধ্যে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ঢাকাসহ সারা দেশে ব্যাপকভাবে গণগ্রেপ্তার শুরু করেছে। এ নিয়ে আজকের পত্রিকায় রোববার একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে।

জানা যায়, ঢাকায় সহিংসতার ঘটনায় ২০৭ মামলায় এখন পর্যন্ত ২ হাজার ৫৩৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সারা দেশে ১১ দিনে (১৭-২৭ জুলাই) গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৬ হাজার জনকে।

অভিযোগ উঠেছে, এ ধরনের গণগ্রেপ্তারের ঘটনায় অনেক নিরপরাধ মানুষকেও আটক করা হচ্ছে, যারা ঘটনার সঙ্গে কোনোভাবেই যুক্ত ছিল না। আবার আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের গ্রেপ্তারের পাশাপাশি যারা আন্দোলনে যুক্ত ছিল না—তাদেরও গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। ঢাকার যেসব এলাকায় বেশি বিক্ষোভ ও ভাঙচুর হয়েছে, সেই সব এলাকা থেকে বেশি মানুষকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। কে জড়িত ছিল, কে ছিল না, সেই বাছবিচার করা হচ্ছে না।

শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের সুযোগ নিয়ে চরম অরাজকতা সৃষ্টি ও সরকারি স্থাপনায় ধ্বংসযজ্ঞ চালানো অবশ্যই নিন্দনীয় কাজ। যারা রাষ্ট্রীয় সম্পদ ধ্বংসে যুক্ত ছিল, প্রকৃত অপরাধীদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হলে সাধারণ মানুষ তাতে সরকারের প্রতি আশ্বস্ত হতো। কিন্তু কেন নিরপরাধ মানুষদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে, এই প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে। ধরপাকড়ে কি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ভাবমূর্তি সংকটে পড়ছে না?

ঢাকা শহরের আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত পুলিশ, র‍্যাব, বিজিবির সদস্য কম ছিলেন না। তাঁরা রাষ্ট্রের সম্পদ রক্ষা করতে না পেরে এখন গণহারে গ্রেপ্তার অভিযান চালাচ্ছেন। তাঁদের কাছে আমাদের দাবি: যারা প্রকৃত নাশকতাকারী, তাদের ধরুন, নিরপরাধ মানুষকে হেনস্তা করবেন না।

আইনমন্ত্রী বলেছিলেন, আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের কোনোভাবে হয়রানি করা হবে না। কিন্তু পরিস্থিতি শান্ত হওয়ার পর মন্ত্রীর কথার বিপরীত কাজ করা হচ্ছে। এতে করে কি শিক্ষার্থীদের মনের ক্ষোভ প্রশমিত হবে?

উচ্চ আদালতের নির্দেশনা উপেক্ষা করে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সেই নির্দেশনায় আছে, কাউকে গ্রেপ্তার করার সময় পুলিশ তাঁর পরিচয়পত্র দেখাতে বাধ্য থাকবে; গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে সুস্পষ্ট অভিযোগ থাকতে হবে এবং গ্রেপ্তারের তিন ঘণ্টার মধ্যে কারণ জানাতে হবে ইত্যাদি। কিন্তু এসবের কোনোটাই মানা হচ্ছে না।

সাধারণ মানুষের মধ্যে আস্থা ও বিশ্বাসের পরিবেশ ফিরিয়ে আনা প্রয়োজন। অতি বলপ্রয়োগ সমস্যা সমাধানের পথ হতে পারে না। সরকার কি এ বিষয়ে কিছু ভাবছে?

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

শপথ নিয়েই বাইডেনের নীতি বাতিল ও ১০০ নির্বাহী আদেশের ঘোষণা ট্রাম্পের

শাহজালাল বিমানবন্দরে চাকরি নেননি মনোজ কুমার, বিজ্ঞাপনচিত্র নিয়ে বিভ্রান্তি

বিপিএলে আতশি কাচের নিচে চল্লিশের বেশি ক্রিকেটার

নতুন ভোটার যাচাই: জনপ্রতিনিধির দায়িত্ব পাচ্ছেন শিক্ষকেরা

বিদ্যালয়ে একই পরিবারের ১৬ জনের চাকরি, তদন্তের নির্দেশ হাইকোর্টের

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত