Ajker Patrika

অরক্ষিত স্লুইসগেট, উদ্বিগ্ন কৃষক

মো. ফরিদ রায়হান, অষ্টগ্রাম
আপডেট : ১৬ এপ্রিল ২০২২, ১৪: ৫৭
অরক্ষিত স্লুইসগেট, উদ্বিগ্ন কৃষক

কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম উপজেলার বিভিন্ন হাওরে স্লুইসগেট ও সংলগ্ন বাঁধ সংস্কার বা নির্মাণ করা না হয়নি। স্থানীয় কৃষকেরা বলছেন, হাওরাঞ্চলে ২ এপ্রিল থেকে পাহাড়ি ঢলে তলিয়ে গেছে কয়েক শ হেক্টর বোরোখেত।

রপর কৃষক ও প্রশাসনের উদ্যোগে ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধ সংস্কার ও রক্ষায় ভূমিকা নেওয়া হলেও, অষ্টগ্রামের বিভিন্ন হাওরের স্লুইসগেট ও সংলগ্ন বাঁধ সংস্কার বা নির্মাণের কোনো উদ্যোগ নেই। অরক্ষিত স্লুইসগেট ও বাঁধের কারণে উদ্বিগ্ন হাজারো কৃষক। তাঁদের দাবি বর্ষা আসার আগেই স্লুইসগেটগুলো দ্রুত সংস্কার এবং বাঁধ নির্মাণ করা হোক। তা না হলে বর্ষায় উজানের পানিতে স্লুইসগেট থাকা সত্ত্বেও বাঁধের অভাবে ডুবে যাবে ফসল।

জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড বলছে, স্লুইসগেটগুলো বাঁধ দিয়ে নিরাপদে রাখা হয়েছে। যদি কোথাও কোনো সমস্যা হয়, তাৎক্ষণিকভাবে মেরামত করা হবে। 
পাউবো সূত্রে জানা গেছে, অষ্টগ্রামের তিনটি ইউনিয়নে ৯টি স্লুইসগেট ও একাধিক রেগুলেটর রয়েছে। উপজেলা সদর ইউনিয়নে বিলবল্লি, গায়েলা ও চরগাঁও খাল; কলমা ইউনিয়নে পাতিদা, জলডুব ও করানির খাল; পূর্ব অষ্টগ্রাম ইউনিয়নে চেঙ্গারঘাট; দেওঘর ইউনিয়নে কাগজিগ্রাম ও ভাটিনগর হাওর রয়েছে। জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) অধীনে এসব এলাকায় স্লুইসগেট নির্মাণ করা হয়েছে কয়েক বছর আগে। প্রথম দিকে এসব স্লুইসগেটসংলগ্ন মাটির বাঁধ সংরক্ষণ করা হলেও, কয়েক বছর ধরে সেসব প্রায় অকেজো অবস্থায় রয়েছে।

গতকাল শুক্রবার সকালে সরেজমিনে দেখা গেছে, কলমা ইউনিয়নের করানির খাল স্লুইসগেটের ৩০ মিটার দূরে রয়েছে কৃষকদের নির্মিত ফসল বাঁধ। তার পাশ দিয়ে প্রবেশ করছে আগাম বর্ষার পানি। সম্পূর্ণ অকেজো রয়েছে সদর ইউনিয়নের চরগাঁও স্লুইসগেট। দেওঘর হাওরের দুটি রেগুলেটর কাঠ দিয়ে বন্ধ করেছে পাউবো। 

স্থানীয় কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, করানির খাল স্লুইসগেটে প্রথম দিকে সরকারিভাবে ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণ করা হলেও, এখন কৃষকেরা সাধ্যমতো মাটি দিয়ে আগাম পানি সামলানোর চেষ্টা করছেন। ২৫-৩০ একর জমি রক্ষায় নির্মিত চেঙ্গাঘাট স্লুইসগেটও অরক্ষিত। পাতিদা ও জলডুব স্লুইসগেটে সিনথেটিকের ব্যাগে মাটি ভরে কোনো রকমে বাঁধ দিয়েছেন কৃষকেরা।

কৃষকদের দাবি, বোরো জমি আগাম পানি থেকে রক্ষায়, বিলবল্লি স্লুইসগেটের উভয় পাশে নোমানীর বাতান থেকে বল্লি ড্রেন পর্যন্ত আড়াই কিলোমিটার ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণ করা জরুরি। খরানি ও গায়েলা স্লুইসগেটে প্রয়োজনীয় ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণ করতে হবে। প্রশাসনিক উদ্যোগে প্রতিবছর কৃষকদের সমন্বয়ে স্লুইসগেট পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণ করতে হবে।

বিলবল্লি হাওরের কৃষক ওয়াহেদ মিয়া, মাসুদুর রহমান, হরমুজ মিয়া বলেন, এই স্লুইসগেটগুলো কেউ রক্ষণাবেক্ষণ করে না। পানি বাড়লে বাঁধের অভাবে গেটের পাশ দিয়ে পানি প্রবেশ করবে। এতে চোখের সামনে তলিয়ে যাবে জমিগুলো। কলমা ইউপি চেয়ারম্যান রাধাকৃষ্ণ দাস বলেন, বাঁধের মধ্যে স্লুইসগেট নির্মাণ করা হয় পানির নিয়ন্ত্রণ রাখতে। এখন বাঁধ ছাড়া স্লুইসগেট দাঁড়িয়ে থাকলে কী লাভ?

সদর ইউপি চেয়ারম্যান সৈয়দ ফাইয়াজ হাসান বাবু বলেন, ফসল রক্ষা বাঁধ না থাকায় স্লুইসগেটগুলো প্রায় অকেজো হয়ে আছে। এসব গেট ফসলের জন্য হুমকি। আগামী মৌসুমে বিলবল্লি হাওরে বাঁধ নির্মাণ করা না হলে এসব স্লুইসগেট নির্মাণ করা সরকারি টাকার অপচয় ছাড়া আর কিছুই না। মোবাইলে জানতে চাইলে কিশোরগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড নির্বাহী পরিচালক প্রকৌশলী মো. মতিউর রহমান বলেন, ‘পানি উন্নয়ন বোর্ডের স্লুইসগেটগুলো আমরা বাঁধ দিয়ে নিরাপদে রেখেছি। তারপরও যদি কোথাও কোনো সমস্যা হয়, তাৎক্ষণিকভাবে মেরামত করা হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বিশ্ববিদ্যালয় ঘোষণা হলেই মেয়াদ শেষ নতুন পরিচালনা কমিটির

মুসলিম থেকে খ্রিষ্টান হওয়া ইরানি নারী এখন পানামার জঙ্গলে

ঢাবি ছাত্রীকে যৌন হেনস্তাকারীর পক্ষে নামা ‘তৌহিদী জনতার’ আড়ালে এরা কারা

এনসিপিকে চাঁদা দিচ্ছেন ধনীরা, ক্রাউডফান্ডিং করেও অর্থ সংগ্রহ করা হবে: নাহিদ ইসলাম

ভ্যানিটি ব্যাগ ধরে টান, সন্তানসহ ছিটকে পড়তেই তরুণীর গালে ছুরিকাঘাত

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত