খরচ কমানোই বড় চ্যালেঞ্জ

ফারুক মেহেদী, ঢাকা
প্রকাশ : ১৫ অক্টোবর ২০২১, ০৭: ১১
আপডেট : ১৫ অক্টোবর ২০২১, ১৮: ৩০

করোনা পরিস্থিতি সহনীয় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়তি প্রায় ২০ শতাংশ অর্ডার পাচ্ছে তৈরি পোশাক খাত। তবে অর্ডার বাড়লেও পণ্যের দাম বাড়ছে না কাঙ্ক্ষিত হারে। উল্টো কাঁচামাল ও ফ্রেইটের খরচ বেড়েছে কয়েক গুণ। এমন পরিস্থিতিতে উৎপাদন দক্ষতা বাড়িয়ে উৎপাদন খরচ কমিয়ে আনার চ্যালেঞ্জের মুখে এখন রপ্তানিমুখী তৈরি পোশাক খাত। উদ্যোক্তারা বলছেন, টিকে থাকার জন্য কারখানায় দক্ষতা উন্নয়নে কাজ করছেন তাঁরা। তবে শিল্পকে টেকসই করতে সরকারি সহায়তা দরকার।

ভারত, ভিয়েতনামে করোনা পরিস্থিতির অবনতি আর মিয়ানমারের রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে কয়েক মাস আগে থেকে অর্ডারের একটি বড় অংশ বাংলাদেশে আসতে থাকে। ফলে বর্তমানে পোশাক খাত রপ্তানিমুখী তৈরি পোশাকের অর্ডার পাওয়ার দিক থেকে ভালো সময় পার করছে বলা যায়। এ খাতের বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা যায়, ২০১৯ সালের তুলনায় চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত তাঁরা অন্তত ১৫ থেকে ২০ শতাংশ বেশি অর্ডার পাচ্ছেন। যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে এ অর্ডার ২৬ থেকে ৮০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে। আর ইউরোপের বাজারে তা বেড়েছে ১৮ থেকে ৩০ শতাংশ পর্যন্ত।

এ বিষয়ে পোশাক খাতের বেশ কয়েকজন উদ্যোক্তা জানান, অর্ডার বাড়ছে ঠিক। তবে এটা কোনো অবস্থাতেই ২০১৮-১৯ অর্থবছরের মতো নয়। অর্ডার বাড়লেও লকডাউনের কারণে অনেক কারখানা তাদের উৎপাদন সক্ষমতা কমিয়েছিল। যে কারণে কর্মীদের বেশির ভাগই গ্রামে চলে যান। এখন বেশি অর্ডার আসতে শুরু করায় কারখানাগুলোতে কর্মিসংকট দেখা দিয়েছে। নতুন করে কারখানার সক্ষমতা বাড়ানো হলেও অন্তত ১০ থেকে ১৫ শতাংশ কর্মী এখনো কাজে ফেরেননি। ফলে কারখানায় উৎপাদন সক্ষমতা থাকলেও কর্মিসংকটে কাঙ্ক্ষিত উৎপাদন হচ্ছে না।

এর সঙ্গে যোগ হয়েছে কাঁচামালের বাড়তি খরচ। চীনে বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় তাদেরও উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। সেখানে রেশনিং করে উৎপাদন কর্মকাণ্ড চালিয়ে নেওয়া হচ্ছে। এতে পণ্যের উৎপাদন খরচ বেড়ে যাওয়ায় পণ্যের দামও বেড়ে গেছে।

উদ্যোক্তারা জানান, তাঁরা আগে ১০০ ডলারের কাজ করলে, সেখানে ৭০ শতাংশ ব্যাক টু ব্যাক এলসি খুলতেন। আর এখন ১১০ ডলার বা ১০৫ ডলারে কাজ করলেও ব্যাক টু ব্যাক খুলছেন ৮৫ শতাংশ। অর্থাৎ কাঁচামালের খরচ বেড়ে যাওয়ায়, এফওবি ভ্যালু কিছুটা বাড়লেও প্রকৃত অর্থে তা ১০ থেকে ১৫ শতাংশ কমেছে।

বিজিএমইএর প্রথম সহসভাপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম বলেন, ‘অর্ডার বাড়ছে কোনো সন্দেহ নেই। তবে আমাদের মার্জিন খুব একটা বাড়েনি। কারণ, এর সঙ্গে যোগ হয়েছে নানা খরচ। অথচ পণ্যের দাম বাড়েনি। এ জন্য আমরা মনে করি, শিল্পটির টিকে থাকা টেকসই করতে হলে, সরকারের শুল্ককর-এ কিছু ছাড় এবং কিছু নীতি সহায়তা দিতে হবে।’

পোশাক রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান মাইক্রো ফাইবার গ্রুপের পরিচালক ড. কামরুজ্জামান কায়সার বলেন, ‘আমরা উৎপাদন সক্ষমতা ও দক্ষতা বাড়ানোর দিকে জোর দিয়েছি। সরকার এবং স্টেকহোল্ডারদের সহযোগিতা নিয়ে খাতটি এগিয়ে নিতে হবে।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত