ঘোষণার পরও কমেনি বাসের ভাড়া, ক্ষুব্ধ যাত্রী

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০২ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১১: ০৭

সরকার কিলোমিটারপ্রতি পাঁচ পয়সা ভাড়া কমানোর ঘোষণা দিলেও পরিবহনসংশ্লিষ্টরা তা মানছেন না। এতে ক্ষুব্ধ ময়মনসিংহের যাত্রীরা। ভাড়া নিয়ে পরিবহনশ্রমিক ও যাত্রীদের মধ্যে বিতণ্ডা দেখা গেছে। পরিবহনসংশ্লিষ্ট অনেকে বলছেন, তারা কোনো সিদ্ধান্ত না পাওয়ায় ভাড়া কমাতে পারছেন না। 
জেলা প্রশাসন বলছে, সরকারের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে মাঠে নামছেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা। সরকারনির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে বেশি ভাড়া নেওয়ার অভিযোগ পেলেই সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

জানা গেছে, ডিজেলের দাম লিটারপ্রতি পাঁচ টাকা কমার পর কিলোমিটারপ্রতি বাসভাড়া পাঁচ পয়সা কমানো ঘোষণা দেয় সরকার। তবে গতকাল বৃহস্পতিবার নগরীর পাটগুদাম ব্রিজমোড়, টাঙ্গাইল বাসস্ট্যান্ড এবং বাসকান্দা বাসটার্মিনালে গিয়ে দেখা গেছে, বাসে আগের ভাড়াই আদায় করা হচ্ছে।

ঢাকাগামী এনা পরিবহনের যাত্রী অমিতাভ দাশ বলেন, ‘গত সোমবার লিটারে জ্বালানি তেল পাঁচ টাকা কমেছে। গতকাল থেকে প্রতি কিলোমিটারে পাঁচ পয়সা ভাড়া কম নেওয়ার কথা থাকলেও আমাদের কাছ থেকে আগের মতো ৩২০ টাকা ভাড়া নিচ্ছে। কোনো কিছুর দাম বাড়ানোর ঘোষণার পরপরই বেড়ে যায় অটোমেটিক, আর ডিজেলের দাম কমার তিন দিন পরও ভাড়া কমেনি—এটা আমাদের জন্য হতাশা ছাড়া আর কিছুই নয়।’

একই বাসের আরেক যাত্রী সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘সবকিছুতে দেশে অরাজকতা চলছে। পানি শুধু নিচের দিকে গড়ায়। আমরা নিম্ন আয়ের মানুষের যত সমস্যা। আহামরি বাসভাড়া না কমলেও চালকেরা কিছু টাকা কম নিতে কোনোভাবেই রাজি নয়। এ নিয়ে এখন তাদের সঙ্গে ঝগড়া করা ছাড়া কোনো উপায় নেই।’

নগরীর ত্রিশাল বাসস্ট্যান্ডে কথা হয় ত্রিশালগামী যাত্রী রেজাউল করিম বাদলের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘ময়মনসিংহ শহর থেকে ত্রিশালের দূরত্ব ২০ কিলোমিটার। নতুন ভাড়া বৃদ্ধির পর ১৫ টাকা বাড়িয়ে ৪০ টাকা করা হয়। প্রতি কিলোমিটারে পাঁচ পয়সা কমায় ভাড়া হচ্ছে ৩৯ টাকা। এখন সমস্যা হলো কারও কাছে দুই টাকা এবং এক টাকার নোট পাওয়া যায় না। বাসচালকের সহকারীকে ৪০ টাকা দিচ্ছি। সে এক টাকা ফেরত দেয়নি, বলে ভাংতি নেই। এ নিয়ে তার সঙ্গে সামান্য বিতণ্ডা হয়েছে। পরে ৪০ টাকা ভাড়া দিয়েছি।’

টাঙ্গাইল বাসস্ট্যান্ডে টাঙ্গাইলগামী যাত্রী শরিফুল ইসলাম বলেন, ‘ভাড়া তো কমানো নয়। সরকার ঝামেলা সৃষ্টি করেছে। আড়াই টাকা ভাড়া বৃদ্ধির পর পাঁচ পয়সা ভাড়া কমানো এর কোনো যৌক্তিক কারণ আমরা খুঁজে পাই না।’

এনা পরিবহনের চালক আনিছ মিয়া বলেন, ‘ভাড়া কম-বেশি নেওয়ার আমাদের কোনো সুযোগ নেই। মালিকপক্ষ যেভাবে বলে আমরা সেভাবে ভাড়া নিয়ে থাকি।’ 

এনা পরিবহনের সহকারী ম্যানেজার মো. আলম বলেন, ‘সরকারনির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে আমরা আগে থেকেই ৬ টাকা যাত্রীদের কাছ থেকে কম নিচ্ছি। সুতরাং আমাদের নতুন করে ভাড়া কমানোর কোনো যৌক্তিক কারণ নেই।’

ময়মনসিংহ জেলা মোটর মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘ভাড়া কম নেওয়ার আমরা কোনো প্রজ্ঞাপন পাইনি। যদি সরকারি প্রজ্ঞাপন আসে তাহলে সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে।’

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ এনামুল হক বলেন, ‘সরকারের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে মাঠে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা কাজ করছেন। কারও বিরুদ্ধে নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে বেশি নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত