সেলিম জাহান
সম্প্রতি শ্রীলঙ্কায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হয়ে গেল। দ্বিতীয় দফায় ৫৭ শতাংশ ভোট পেয়ে দেশটির রাষ্ট্রপ্রধান নির্বাচিত হলেন বামপন্থী দল জনতা ভিমুক্তি পেরামুনা (জেভিপি) মোর্চার প্রার্থী অনুড়া কুমারা দিশানায়েকে। শ্রীলঙ্কার এই নির্বাচনটি তিনটি কারণে গুরুত্বপূর্ণ।
এক, ২০২২ সালে শ্রীলঙ্কার চরম অর্থনৈতিক সংকটের পরে এটাই প্রথম প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। দুই, সেই সংকট উত্তরণের জন্য কৃচ্ছ্রসাধন কর্মসূচির ওপরে এই নির্বাচন আদতে ছিল একটি গণভোট। তিন, সাম্প্রতিক নির্বাচনে শ্রীলঙ্কার অর্থনীতিই ভোটদাতাদের কাছে মুখ্য বিষয়। বলা প্রয়োজন যে বিগত বছরগুলোর বাস্তবতার পরিপ্রেক্ষিতে জেভিপি তাদের আগেকার চরম অবস্থান থেকে অনেকটা সরে এসে বর্তমান সময়ে নমনীয় একটি দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণ করেছে।
একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার থেকে একটি নির্বাচিত সরকারে শ্রীলঙ্কার এই উত্তরণ নিশ্চিতভাবে সাধুবাদের যোগ্য এবং সেই সঙ্গে এই অর্জন উদ্যাপনের দাবি রাখে। কারণ, গত দুই-তিন বছরে দেশটির ওপর দিয়ে বহু ঝড়ঝাপটা গেছে। প্রচুর অর্থনৈতিক অব্যবস্থাপনা, অর্বাচীন নীতিমালা, বৈদেশিক খাতের ধস, কোভিড-১৯ এবং আরও নানাবিধ কারণে ২০২২ সালে শ্রীলঙ্কার অর্থনীতি তলানিতে গিয়ে ঠেকেছিল। বৈদেশিক মুদ্রার মজুত ক্রমবর্ধমান হারে হ্রাস পাচ্ছিল, দেশজ বা বৈদেশিক কোনো ঋণই পরিশোধের মতো সক্ষমতা শ্রীলঙ্কা হারিয়ে ফেলেছিল। সরকারি ঋণ ৮৩ বিলিয়ন ডলারে গিয়ে দাঁড়ায়। ২০২২ সালের এপ্রিল মাসে ৫১ বিলিয়ন ডলারের বিদেশি ঋণ পরিশোধে শ্রীলঙ্কা অপারগ হয়। মূল্যস্ফীতি ৭০ শতাংশে গিয়ে পৌঁছায়, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যসামগ্রীর অভাব জটিল আকার ধারণ করে, বিদ্যুৎ ঘাটতি চরম পর্যায়ে গিয়ে ঠেকে। জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে এবং বিক্ষুব্ধ জনতার রোষে প্রেসিডেন্ট মাহিন্দা রাজাপক্ষে পদত্যাগ করতে এবং দেশ থেকে পালিয়ে যেতে বাধ্য হন।
২০২৩ সালে অন্তর্বর্তীকালীন রাষ্ট্রপ্রধান রনিল বিক্রমাসিংহে শ্রীলঙ্কার হাল ধরেন। অর্থনৈতিক সংকট থেকে উত্তরণের জন্য আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইমএফ) শ্রীলঙ্কাকে প্রায় ৩ বিলিয়ন ডলারের অর্থসহায়তা দেয়। এ সহায়তার সঙ্গে সঙ্গে আসে নানান শর্ত, যার মূল কথা ছিল একটি কৃচ্ছ্রসাধন কর্মসূচি। ক্রমান্বয়ে শ্রীলঙ্কার অর্থনীতির মোড় ঘুরতে থাকে। মূল্যস্ফীতি ২০২২ সালের সর্বোচ্চ ৭৯ শতাংশ থেকে ০.৫ শতাংশে নেমে এসেছে, রুপির মান স্থিতিশীল হয়েছে। ২০২২ সালের ৪ শতাংশ রাজস্ব ঘাটতি (জাতীয় আয়ের অনুপাতে) বর্তমানে ০.৬ শতাংশ উদ্বৃত্তে রূপান্তরিত হয়েছে। দেশের ঋণ জাতীয় আয়ের অনুপাত ২০২২ সালের ১২৭ শতাংশ থেকে ১০০ শতাংশে হ্রাস পেয়েছে। এ বছর শ্রীলঙ্কার প্রবৃদ্ধির হার ২.২ শতাংশ হবে বলে বিশ্বব্যাংক প্রাক্কলন করছে।
উপর্যুক্ত চিত্রটি নিশ্চিতভাবে ইতিবাচক। কিন্তু সেই সঙ্গে এটাও মনে রাখা দরকার যে শ্রীলঙ্কার আগামী নেতৃত্বের জন্য দেশটির ভবিষ্যৎ পথযাত্রা মসৃণ হবে না। কোনো সন্দেহ নেই যে গত দুই বছরে বিভিন্ন বিষয়ে শ্রীলঙ্কার অর্থনীতিতে বেশ কিছুটা অগ্রগতি হয়েছে। কিন্তু সে অর্জন এখনো ভঙ্গুর এবং নতুন রাষ্ট্রপ্রধানের সামনে অন্তরায় অনেক। এই পরিপ্রেক্ষিতে পাঁচটি সমস্যাকে চিহ্নিত করা যায়।
প্রথমত, শ্রীলঙ্কার সঙ্গে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলকে বিভিন্ন বিষয়ে নতুন একটা বোঝাপড়ায় আসতে হবে বলে অনুড়া দিশানায়েকে মতপ্রকাশ করেছেন। যেমন আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল চায় যে শ্রীলঙ্কার দেশজ এবং বহিঃঋণ একইভাবে মূল্যায়িত হোক। নতুন রাষ্ট্রপ্রধান এর বিরোধিতা করেছেন। তেমনিভাবে তিনি বলেছেন, দেশের ঋণভারের সিংহভাগই যেন তাঁর জনগণের ওপরে না পড়ে সেটা আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলকে নিশ্চিত করতে হবে। কিন্তু শ্রীলঙ্কার অর্থনীতির ভঙ্গুর অবস্থা এবং দেশের অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের শ্লথগতির কারণে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের আদি শর্ত পরিবর্তন করা দুরূহ হবে।
যেমন আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল চায় যে ২০২৭ সাল পর্যন্ত তাদের দেওয়া নীতিমালা এবং শর্তগুলো পালন করা হবে, যাতে শ্রীলঙ্কার অর্থনীতি একটি স্থিতিশীল প্রবৃদ্ধি পথরেখা অনুসরণ করে, বাজারব্যবস্থাকে আশ্বস্ত করে, ঋণ পরিশোধ করে এবং বিনিয়োগকারীদের আকর্ষিত করে। শ্রীলঙ্কাকে নিশ্চিত করতে হবে যে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ যেকোনো নীতি বা শর্ত পরিবর্তন করতে হলে তা আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে একটি সমঝোতার সঙ্গে করা হবে।
দ্বিতীয়ত, নির্বাচনী প্রচারাভিযানের সময়ে অনুড়া দিশানায়েকে বলেছিলেন কৃচ্ছ্রসাধন কর্মসূচির কারণে যাঁরা অর্থনৈতিকভাবে নিপিষ্ট হচ্ছেন, তাঁদের জীবনমান পরিবর্তনের প্রার্থী তিনি। সাম্প্রতিক সময়ে শ্রীলঙ্কার দারিদ্র্যের হার আপাতন ঊর্ধ্বমুখী। বিশ্বব্যাংকের প্রাক্কলন মতে, ২০১৯ সাল থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে দেশটিতে দারিদ্র্যের হার দ্বিগুণ হয়েছে এবং শ্রীলঙ্কার ২৫ শতাংশ লোক এখন দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করে। জীবনযাত্রার ব্যয় এখনো বড় বেশি এবং দেশটিতে প্রকৃত মজুরির মান এখনো সংকটপূর্ব মজুরিস্তরে পৌঁছাতে পারেনি।
নবনির্বাচিত রাষ্ট্রপ্রধান প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন যে শ্রীলঙ্কার আয়করমুক্ত আয়স্তর বর্ধিত করা হবে এবং কিছু স্বাস্থ্য ও খাদ্যসম্পর্কিত পণ্যসামগ্রীকে ১৮ শতাংশ মূল্য সংযোজন করের আওতায় আনা হবে না, যাতে এগুলো সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে থাকে। এসব প্রতিশ্রুতি রক্ষা করা রীতিমতো দুরূহ হবে। করের ক্ষেত্রে কর হ্রাসের কথা বলে নবনির্বাচিত রাষ্ট্রপ্রধান ইতিমধ্যেই ব্যবসায়ী মহলকে উদ্বেগের মধ্যে ফেলে দিয়েছেন। কারণ, তাঁরা মনে করছেন, কর কমিয়ে ফেললে শ্রীলঙ্কা আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে এবং ২০ বিলিয়ন ডলারের ঋণের ব্যাপারে ব্যবস্থা করতে ব্যর্থ হবে। এর ফলে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের নতুন শর্তাবলি আরোপিত হতে পারে। বিদ্যুতের ওপরে ভর্তুকি তুলে নেওয়া এবং মূল্য সংযোজন কর দ্বিগুণ করার কার্যক্রম যদি অব্যাহত থাকে, তাহলে সাধারণ মানুষের ভোগান্তিই বাড়বে।
তৃতীয়ত, শ্রীলঙ্কার বিস্তৃত কৃচ্ছ্রসাধন কার্যক্রমের মধ্যে সার্বভৌম ঋণকাঠামোর পুনঃসংস্কারও অন্তর্ভুক্ত। তত্ত্বীয় দিক থেকে ঋণ পুনঃসংস্কারের অন্যতম লক্ষ্য হচ্ছে ঋণব্যয় কমানো এবং যাতে শিক্ষা বা স্বাস্থ্যসেবা খাতের জন্য সম্পদ লভ্য হয়। শ্রীলঙ্কার ক্ষেত্রে সেটা ঘটছে না। শ্রীলঙ্কার সাম্প্রতিক আর্থিক কর্মকাণ্ড আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের ২০২৩ সালের ঋণ বজায়ক্ষমতা বিশ্লেষণের সঙ্গে সম্পৃক্ত করা হচ্ছে। সমস্যা হচ্ছে যে এ বিশ্লেষণ সঠিক নয়, যার জন্য শ্রীলঙ্কার ঋণ-উপশম কাঙ্ক্ষিত পরিমাণে ঘটেনি। সত্যিকার অর্থে, প্রচুর পরিমাণে বাজেট উদ্বৃত্ত তৈরি করে দেশটিকে ঋণ পরিশোধ করতে হয়েছে। ফলে, সামাজিক খাতে ব্যয় করার মতো পর্যাপ্ত সম্পদ লভ্য হয়নি। অন্যদিকে নিচু করযোগ্য স্তরের কারণে শ্রীলঙ্কার রাজস্ববলয়েও নানান অন্তরায়ের সৃষ্টি হয়েছে।
বিশ্বব্যাংকের মতে, নিম্ন এবং মধ্যম আয়ের দেশগুলোতে করজাতীয় আয়ের অনুপাত হচ্ছে ১৫-২০ শতাংশ। শ্রীলঙ্কায় সে অনুপাতের মান হচ্ছে মাত্র ৮ শতাংশ, যা বিশ্বের মধ্যে নিম্নতম অনুপাতগুলোর একটি। বহু বছরের মুক্তবাজার অর্থনৈতিক নীতিমালা অনুসরণ এবং ২০১৯ সালের চরম ক্ষতিকর বাজেট উপস্থাপন শ্রীলঙ্কার রাজস্ব স্থিতিশীলতাকে বিনষ্ট করেছে। ঋণ পরিশোধ সরকারি আয়ের অনুপাত বিশ্বের মধ্যে শ্রীলঙ্কাতেই সবচেয়ে খারাপ এবং শ্রীলঙ্কার দ্বিপক্ষীয় ঋণ পরিশোধের বর্ধিত সময়সীমা ২০২৮ সালেই শেষ হয়ে যাবে। বর্তমান প্রবণতা অব্যাহত থাকলে ভবিষ্যতে দেশটি বারংবার ঋণ খেলাপে জর্জরিত হবে।
চতুর্থত, শ্রীলঙ্কার ভূরাজনৈতিক পরিবেষ্টনও জটিল। এ অঞ্চলের আর পাঁচটি দেশের মতো শ্রীলঙ্কাও ভারতবান্ধব এবং চীনবান্ধব এই দুটি অবস্থানের মধ্যে দোদুল্যমান থাকে, কারণ এ দুটি দেশের কোনোটির সঙ্গেই সে একটি উদাসীন মনোভাব পোষণ করতে পারে না। যেমন, গত বছর শ্রীলঙ্কাকে দেয় একটি ঋণ-উপশমকাঠামো অনুমোদন করতে চীন বিলম্ব করছিল। কারণ, শ্রীলঙ্কার জন্য গঠিত সরকারি দাতা পর্ষদের সভাপতি জাপান এবং ফ্রান্সের সঙ্গে ভারতও। এই পর্ষদের মাধ্যমের পরিবর্তে শ্রীলঙ্কার সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় আলোচনায় আগ্রহী চীন।
অতএব এসব ডামাডোলের কারণে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের ঋণসাহায্যের দ্বিতীয় কিস্তি পেতে দেরি হয় শ্রীলঙ্কার। শ্রীলঙ্কায় শুধু চীন বা ভারতের স্বার্থ রয়েছে, এমন নয়। গত বছর যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন অর্থায়ন প্রতিষ্ঠান কলম্বো বন্দরে গভীর জলাস্থিত একটি কনটেইনার টার্মিনাল নির্মাণের জন্য ৫০০ মিলিয়ন ডলার সাহায্যদানের অঙ্গীকার করেছে। এমন সব প্রকল্পের দুটো উদ্দেশ্য—এক, শ্রীলঙ্কার ব্যাপারে চীনের প্রভাব হ্রাস করা এবং দুই, ভারত মহাসাগরের গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যপথের পরিপ্রেক্ষিতে শ্রীলঙ্কার ভূরাজনৈতিক গুরুত্বকে পুনর্ব্যক্ত করা।
সত্যিকার অর্থে, চীন এবং ভারতের মতো দুটি শক্তিশালী অর্থনৈতিক প্রতিবেশীর টানাপোড়েন সম্পর্কের পরিপ্রেক্ষিতে শ্রীলঙ্কার ক্ষেত্রে তার ভূরাজনৈতিক নিরপেক্ষতা দেশটির সংস্কার কার্যক্রমের সফলতার জন্য অপরিহার্য। সেই সঙ্গে এটাও মনে রাখা প্রয়োজন যে ২০০৯ সালে শেষ হলেও তিন দশকের গৃহযুদ্ধের ক্ষত শ্রীলঙ্কা এখনো বহন করছে। দেশটির গৃহযুদ্ধের নির্মমতা এবং সেই সঙ্গে প্রেসিডেন্ট মাহিন্দা রাজাপক্ষে সরকারের সিংহলি জাতীয়তাবাদের পৃষ্ঠপোষকতা দেশের সংখ্যালঘু তামিল জনগোষ্ঠীর সঙ্গে অর্থবহ একটি সমঝোতার পরিপন্থী বলে প্রতীয়মান হয়েছিল।
শেষতক শ্রীলঙ্কার অর্থনৈতিক সংকট থেকে উত্তরণের জন্য দেশটির নীতিমালার মধ্যে সমন্বয় অতীব প্রয়োজনীয়। গত দুই বছরে দুর্নীতি দমন এবং সরকারি ঋণ ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে ৭০টির বেশি আইন প্রণীত ও অনুমোদিত হয়েছে। নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট দেশের দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেবেন বলে সতর্কবাণী উচ্চারণ করেছেন। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে শ্রীলঙ্কায় একাধিক অনুগামী সরকারের অর্থনৈতিক অব্যবস্থাপনা এবং অবিবেচক নীতিমালা দেশটির অর্থনৈতিক অব্যবস্থাপনাকে আরও দুর্বল করেছে। কিন্তু এখনো সৃজনশীল চিন্তাভাবনার সুযোগ আছে। যেমন, দেশটির সামুদ্রিক সম্পদ এবং সৈকত-বায়ুকে কাজে লাগিয়ে দেশের অর্থনীতিতে নতুন গতির সঞ্চার করা যায়।
শ্রীলঙ্কার নারকেল এবং দুগ্ধজাতশিল্পে বিনিয়োগ করলে একদিকে যেমন গ্রামীণ অর্থনীতির ভিত আরও মজবুত হবে, অন্যদিকে বৈদেশিক মুদ্রারও সাশ্রয় হবে। কাঠামোগত সংস্কারের ক্রমাগত বাস্তবায়ন এবং সেই সঙ্গে দেশের বাইরে নিয়োজিত শ্রীলঙ্কার শ্রমশক্তির প্রেরিত অর্থপ্রবাহ এবং পর্যটনশিল্পের উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে বহির্বিশ্ব থেকে বাড়তি পুঁজিপ্রবাহ বাড়িয়ে দেবে।
লেখক: অর্থনীতিবিদ
সম্প্রতি শ্রীলঙ্কায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হয়ে গেল। দ্বিতীয় দফায় ৫৭ শতাংশ ভোট পেয়ে দেশটির রাষ্ট্রপ্রধান নির্বাচিত হলেন বামপন্থী দল জনতা ভিমুক্তি পেরামুনা (জেভিপি) মোর্চার প্রার্থী অনুড়া কুমারা দিশানায়েকে। শ্রীলঙ্কার এই নির্বাচনটি তিনটি কারণে গুরুত্বপূর্ণ।
এক, ২০২২ সালে শ্রীলঙ্কার চরম অর্থনৈতিক সংকটের পরে এটাই প্রথম প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। দুই, সেই সংকট উত্তরণের জন্য কৃচ্ছ্রসাধন কর্মসূচির ওপরে এই নির্বাচন আদতে ছিল একটি গণভোট। তিন, সাম্প্রতিক নির্বাচনে শ্রীলঙ্কার অর্থনীতিই ভোটদাতাদের কাছে মুখ্য বিষয়। বলা প্রয়োজন যে বিগত বছরগুলোর বাস্তবতার পরিপ্রেক্ষিতে জেভিপি তাদের আগেকার চরম অবস্থান থেকে অনেকটা সরে এসে বর্তমান সময়ে নমনীয় একটি দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণ করেছে।
একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার থেকে একটি নির্বাচিত সরকারে শ্রীলঙ্কার এই উত্তরণ নিশ্চিতভাবে সাধুবাদের যোগ্য এবং সেই সঙ্গে এই অর্জন উদ্যাপনের দাবি রাখে। কারণ, গত দুই-তিন বছরে দেশটির ওপর দিয়ে বহু ঝড়ঝাপটা গেছে। প্রচুর অর্থনৈতিক অব্যবস্থাপনা, অর্বাচীন নীতিমালা, বৈদেশিক খাতের ধস, কোভিড-১৯ এবং আরও নানাবিধ কারণে ২০২২ সালে শ্রীলঙ্কার অর্থনীতি তলানিতে গিয়ে ঠেকেছিল। বৈদেশিক মুদ্রার মজুত ক্রমবর্ধমান হারে হ্রাস পাচ্ছিল, দেশজ বা বৈদেশিক কোনো ঋণই পরিশোধের মতো সক্ষমতা শ্রীলঙ্কা হারিয়ে ফেলেছিল। সরকারি ঋণ ৮৩ বিলিয়ন ডলারে গিয়ে দাঁড়ায়। ২০২২ সালের এপ্রিল মাসে ৫১ বিলিয়ন ডলারের বিদেশি ঋণ পরিশোধে শ্রীলঙ্কা অপারগ হয়। মূল্যস্ফীতি ৭০ শতাংশে গিয়ে পৌঁছায়, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যসামগ্রীর অভাব জটিল আকার ধারণ করে, বিদ্যুৎ ঘাটতি চরম পর্যায়ে গিয়ে ঠেকে। জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে এবং বিক্ষুব্ধ জনতার রোষে প্রেসিডেন্ট মাহিন্দা রাজাপক্ষে পদত্যাগ করতে এবং দেশ থেকে পালিয়ে যেতে বাধ্য হন।
২০২৩ সালে অন্তর্বর্তীকালীন রাষ্ট্রপ্রধান রনিল বিক্রমাসিংহে শ্রীলঙ্কার হাল ধরেন। অর্থনৈতিক সংকট থেকে উত্তরণের জন্য আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইমএফ) শ্রীলঙ্কাকে প্রায় ৩ বিলিয়ন ডলারের অর্থসহায়তা দেয়। এ সহায়তার সঙ্গে সঙ্গে আসে নানান শর্ত, যার মূল কথা ছিল একটি কৃচ্ছ্রসাধন কর্মসূচি। ক্রমান্বয়ে শ্রীলঙ্কার অর্থনীতির মোড় ঘুরতে থাকে। মূল্যস্ফীতি ২০২২ সালের সর্বোচ্চ ৭৯ শতাংশ থেকে ০.৫ শতাংশে নেমে এসেছে, রুপির মান স্থিতিশীল হয়েছে। ২০২২ সালের ৪ শতাংশ রাজস্ব ঘাটতি (জাতীয় আয়ের অনুপাতে) বর্তমানে ০.৬ শতাংশ উদ্বৃত্তে রূপান্তরিত হয়েছে। দেশের ঋণ জাতীয় আয়ের অনুপাত ২০২২ সালের ১২৭ শতাংশ থেকে ১০০ শতাংশে হ্রাস পেয়েছে। এ বছর শ্রীলঙ্কার প্রবৃদ্ধির হার ২.২ শতাংশ হবে বলে বিশ্বব্যাংক প্রাক্কলন করছে।
উপর্যুক্ত চিত্রটি নিশ্চিতভাবে ইতিবাচক। কিন্তু সেই সঙ্গে এটাও মনে রাখা দরকার যে শ্রীলঙ্কার আগামী নেতৃত্বের জন্য দেশটির ভবিষ্যৎ পথযাত্রা মসৃণ হবে না। কোনো সন্দেহ নেই যে গত দুই বছরে বিভিন্ন বিষয়ে শ্রীলঙ্কার অর্থনীতিতে বেশ কিছুটা অগ্রগতি হয়েছে। কিন্তু সে অর্জন এখনো ভঙ্গুর এবং নতুন রাষ্ট্রপ্রধানের সামনে অন্তরায় অনেক। এই পরিপ্রেক্ষিতে পাঁচটি সমস্যাকে চিহ্নিত করা যায়।
প্রথমত, শ্রীলঙ্কার সঙ্গে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলকে বিভিন্ন বিষয়ে নতুন একটা বোঝাপড়ায় আসতে হবে বলে অনুড়া দিশানায়েকে মতপ্রকাশ করেছেন। যেমন আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল চায় যে শ্রীলঙ্কার দেশজ এবং বহিঃঋণ একইভাবে মূল্যায়িত হোক। নতুন রাষ্ট্রপ্রধান এর বিরোধিতা করেছেন। তেমনিভাবে তিনি বলেছেন, দেশের ঋণভারের সিংহভাগই যেন তাঁর জনগণের ওপরে না পড়ে সেটা আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলকে নিশ্চিত করতে হবে। কিন্তু শ্রীলঙ্কার অর্থনীতির ভঙ্গুর অবস্থা এবং দেশের অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের শ্লথগতির কারণে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের আদি শর্ত পরিবর্তন করা দুরূহ হবে।
যেমন আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল চায় যে ২০২৭ সাল পর্যন্ত তাদের দেওয়া নীতিমালা এবং শর্তগুলো পালন করা হবে, যাতে শ্রীলঙ্কার অর্থনীতি একটি স্থিতিশীল প্রবৃদ্ধি পথরেখা অনুসরণ করে, বাজারব্যবস্থাকে আশ্বস্ত করে, ঋণ পরিশোধ করে এবং বিনিয়োগকারীদের আকর্ষিত করে। শ্রীলঙ্কাকে নিশ্চিত করতে হবে যে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ যেকোনো নীতি বা শর্ত পরিবর্তন করতে হলে তা আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে একটি সমঝোতার সঙ্গে করা হবে।
দ্বিতীয়ত, নির্বাচনী প্রচারাভিযানের সময়ে অনুড়া দিশানায়েকে বলেছিলেন কৃচ্ছ্রসাধন কর্মসূচির কারণে যাঁরা অর্থনৈতিকভাবে নিপিষ্ট হচ্ছেন, তাঁদের জীবনমান পরিবর্তনের প্রার্থী তিনি। সাম্প্রতিক সময়ে শ্রীলঙ্কার দারিদ্র্যের হার আপাতন ঊর্ধ্বমুখী। বিশ্বব্যাংকের প্রাক্কলন মতে, ২০১৯ সাল থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে দেশটিতে দারিদ্র্যের হার দ্বিগুণ হয়েছে এবং শ্রীলঙ্কার ২৫ শতাংশ লোক এখন দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করে। জীবনযাত্রার ব্যয় এখনো বড় বেশি এবং দেশটিতে প্রকৃত মজুরির মান এখনো সংকটপূর্ব মজুরিস্তরে পৌঁছাতে পারেনি।
নবনির্বাচিত রাষ্ট্রপ্রধান প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন যে শ্রীলঙ্কার আয়করমুক্ত আয়স্তর বর্ধিত করা হবে এবং কিছু স্বাস্থ্য ও খাদ্যসম্পর্কিত পণ্যসামগ্রীকে ১৮ শতাংশ মূল্য সংযোজন করের আওতায় আনা হবে না, যাতে এগুলো সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে থাকে। এসব প্রতিশ্রুতি রক্ষা করা রীতিমতো দুরূহ হবে। করের ক্ষেত্রে কর হ্রাসের কথা বলে নবনির্বাচিত রাষ্ট্রপ্রধান ইতিমধ্যেই ব্যবসায়ী মহলকে উদ্বেগের মধ্যে ফেলে দিয়েছেন। কারণ, তাঁরা মনে করছেন, কর কমিয়ে ফেললে শ্রীলঙ্কা আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে এবং ২০ বিলিয়ন ডলারের ঋণের ব্যাপারে ব্যবস্থা করতে ব্যর্থ হবে। এর ফলে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের নতুন শর্তাবলি আরোপিত হতে পারে। বিদ্যুতের ওপরে ভর্তুকি তুলে নেওয়া এবং মূল্য সংযোজন কর দ্বিগুণ করার কার্যক্রম যদি অব্যাহত থাকে, তাহলে সাধারণ মানুষের ভোগান্তিই বাড়বে।
তৃতীয়ত, শ্রীলঙ্কার বিস্তৃত কৃচ্ছ্রসাধন কার্যক্রমের মধ্যে সার্বভৌম ঋণকাঠামোর পুনঃসংস্কারও অন্তর্ভুক্ত। তত্ত্বীয় দিক থেকে ঋণ পুনঃসংস্কারের অন্যতম লক্ষ্য হচ্ছে ঋণব্যয় কমানো এবং যাতে শিক্ষা বা স্বাস্থ্যসেবা খাতের জন্য সম্পদ লভ্য হয়। শ্রীলঙ্কার ক্ষেত্রে সেটা ঘটছে না। শ্রীলঙ্কার সাম্প্রতিক আর্থিক কর্মকাণ্ড আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের ২০২৩ সালের ঋণ বজায়ক্ষমতা বিশ্লেষণের সঙ্গে সম্পৃক্ত করা হচ্ছে। সমস্যা হচ্ছে যে এ বিশ্লেষণ সঠিক নয়, যার জন্য শ্রীলঙ্কার ঋণ-উপশম কাঙ্ক্ষিত পরিমাণে ঘটেনি। সত্যিকার অর্থে, প্রচুর পরিমাণে বাজেট উদ্বৃত্ত তৈরি করে দেশটিকে ঋণ পরিশোধ করতে হয়েছে। ফলে, সামাজিক খাতে ব্যয় করার মতো পর্যাপ্ত সম্পদ লভ্য হয়নি। অন্যদিকে নিচু করযোগ্য স্তরের কারণে শ্রীলঙ্কার রাজস্ববলয়েও নানান অন্তরায়ের সৃষ্টি হয়েছে।
বিশ্বব্যাংকের মতে, নিম্ন এবং মধ্যম আয়ের দেশগুলোতে করজাতীয় আয়ের অনুপাত হচ্ছে ১৫-২০ শতাংশ। শ্রীলঙ্কায় সে অনুপাতের মান হচ্ছে মাত্র ৮ শতাংশ, যা বিশ্বের মধ্যে নিম্নতম অনুপাতগুলোর একটি। বহু বছরের মুক্তবাজার অর্থনৈতিক নীতিমালা অনুসরণ এবং ২০১৯ সালের চরম ক্ষতিকর বাজেট উপস্থাপন শ্রীলঙ্কার রাজস্ব স্থিতিশীলতাকে বিনষ্ট করেছে। ঋণ পরিশোধ সরকারি আয়ের অনুপাত বিশ্বের মধ্যে শ্রীলঙ্কাতেই সবচেয়ে খারাপ এবং শ্রীলঙ্কার দ্বিপক্ষীয় ঋণ পরিশোধের বর্ধিত সময়সীমা ২০২৮ সালেই শেষ হয়ে যাবে। বর্তমান প্রবণতা অব্যাহত থাকলে ভবিষ্যতে দেশটি বারংবার ঋণ খেলাপে জর্জরিত হবে।
চতুর্থত, শ্রীলঙ্কার ভূরাজনৈতিক পরিবেষ্টনও জটিল। এ অঞ্চলের আর পাঁচটি দেশের মতো শ্রীলঙ্কাও ভারতবান্ধব এবং চীনবান্ধব এই দুটি অবস্থানের মধ্যে দোদুল্যমান থাকে, কারণ এ দুটি দেশের কোনোটির সঙ্গেই সে একটি উদাসীন মনোভাব পোষণ করতে পারে না। যেমন, গত বছর শ্রীলঙ্কাকে দেয় একটি ঋণ-উপশমকাঠামো অনুমোদন করতে চীন বিলম্ব করছিল। কারণ, শ্রীলঙ্কার জন্য গঠিত সরকারি দাতা পর্ষদের সভাপতি জাপান এবং ফ্রান্সের সঙ্গে ভারতও। এই পর্ষদের মাধ্যমের পরিবর্তে শ্রীলঙ্কার সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় আলোচনায় আগ্রহী চীন।
অতএব এসব ডামাডোলের কারণে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের ঋণসাহায্যের দ্বিতীয় কিস্তি পেতে দেরি হয় শ্রীলঙ্কার। শ্রীলঙ্কায় শুধু চীন বা ভারতের স্বার্থ রয়েছে, এমন নয়। গত বছর যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন অর্থায়ন প্রতিষ্ঠান কলম্বো বন্দরে গভীর জলাস্থিত একটি কনটেইনার টার্মিনাল নির্মাণের জন্য ৫০০ মিলিয়ন ডলার সাহায্যদানের অঙ্গীকার করেছে। এমন সব প্রকল্পের দুটো উদ্দেশ্য—এক, শ্রীলঙ্কার ব্যাপারে চীনের প্রভাব হ্রাস করা এবং দুই, ভারত মহাসাগরের গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যপথের পরিপ্রেক্ষিতে শ্রীলঙ্কার ভূরাজনৈতিক গুরুত্বকে পুনর্ব্যক্ত করা।
সত্যিকার অর্থে, চীন এবং ভারতের মতো দুটি শক্তিশালী অর্থনৈতিক প্রতিবেশীর টানাপোড়েন সম্পর্কের পরিপ্রেক্ষিতে শ্রীলঙ্কার ক্ষেত্রে তার ভূরাজনৈতিক নিরপেক্ষতা দেশটির সংস্কার কার্যক্রমের সফলতার জন্য অপরিহার্য। সেই সঙ্গে এটাও মনে রাখা প্রয়োজন যে ২০০৯ সালে শেষ হলেও তিন দশকের গৃহযুদ্ধের ক্ষত শ্রীলঙ্কা এখনো বহন করছে। দেশটির গৃহযুদ্ধের নির্মমতা এবং সেই সঙ্গে প্রেসিডেন্ট মাহিন্দা রাজাপক্ষে সরকারের সিংহলি জাতীয়তাবাদের পৃষ্ঠপোষকতা দেশের সংখ্যালঘু তামিল জনগোষ্ঠীর সঙ্গে অর্থবহ একটি সমঝোতার পরিপন্থী বলে প্রতীয়মান হয়েছিল।
শেষতক শ্রীলঙ্কার অর্থনৈতিক সংকট থেকে উত্তরণের জন্য দেশটির নীতিমালার মধ্যে সমন্বয় অতীব প্রয়োজনীয়। গত দুই বছরে দুর্নীতি দমন এবং সরকারি ঋণ ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে ৭০টির বেশি আইন প্রণীত ও অনুমোদিত হয়েছে। নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট দেশের দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেবেন বলে সতর্কবাণী উচ্চারণ করেছেন। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে শ্রীলঙ্কায় একাধিক অনুগামী সরকারের অর্থনৈতিক অব্যবস্থাপনা এবং অবিবেচক নীতিমালা দেশটির অর্থনৈতিক অব্যবস্থাপনাকে আরও দুর্বল করেছে। কিন্তু এখনো সৃজনশীল চিন্তাভাবনার সুযোগ আছে। যেমন, দেশটির সামুদ্রিক সম্পদ এবং সৈকত-বায়ুকে কাজে লাগিয়ে দেশের অর্থনীতিতে নতুন গতির সঞ্চার করা যায়।
শ্রীলঙ্কার নারকেল এবং দুগ্ধজাতশিল্পে বিনিয়োগ করলে একদিকে যেমন গ্রামীণ অর্থনীতির ভিত আরও মজবুত হবে, অন্যদিকে বৈদেশিক মুদ্রারও সাশ্রয় হবে। কাঠামোগত সংস্কারের ক্রমাগত বাস্তবায়ন এবং সেই সঙ্গে দেশের বাইরে নিয়োজিত শ্রীলঙ্কার শ্রমশক্তির প্রেরিত অর্থপ্রবাহ এবং পর্যটনশিল্পের উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে বহির্বিশ্ব থেকে বাড়তি পুঁজিপ্রবাহ বাড়িয়ে দেবে।
লেখক: অর্থনীতিবিদ
ঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
২ দিন আগেদেশের পরিবহন খাতের অন্যতম নিয়ন্ত্রণকারী ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কমিটির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সাইফুল আলমের নেতৃত্বাধীন এ কমিটিকে নিবন্ধন দেয়নি শ্রম অধিদপ্তর। তবে এটি কার্যক্রম চালাচ্ছে। কমিটির নেতারা অংশ নিচ্ছেন ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের...
২ দিন আগেআলুর দাম নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে এবার নিজেই বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। বাজার স্থিতিশীল রাখতে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে রাজধানীতে ভ্রাম্যমাণ ট্রাকের মাধ্যমে ভর্তুকি মূল্যে আলু বিক্রি করা হবে। একজন গ্রাহক ৪০ টাকা দরে সর্বোচ্চ তিন কেজি আলু কিনতে পারবেন...
২ দিন আগেসপ্তাহখানেক আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে অনেকের ওয়াল বিষাদময় হয়ে উঠেছিল ফুলের মতো ছোট্ট শিশু মুনতাহাকে হত্যার ঘটনায়। ৫ বছর বয়সী সিলেটের এই শিশুকে অপহরণের পর হত্যা করে লাশ গুম করতে ডোবায় ফেলে রাখা হয়েছিল। প্রতিবেশী গৃহশিক্ষকের পরিকল্পনায় অপহরণের পর তাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়...
২ দিন আগে