পেঁয়াজের বাজার আবারও অস্থির

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
আপডেট : ০৩ অক্টোবর ২০২১, ১২: ২৯
Thumbnail image

বাজারে সরবরাহে কোনো ঘাটতি নেই, কিন্তু অক্টোবরের শুরু থেকেই বাড়ছে পেঁয়াজের দাম। দেশের অন্যতম বৃহৎ পাইকারি বাজার খাতুনগঞ্জে গত তিন দিনে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে কেজিতে ৭ থেকে ৮ টাকা।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, সেপ্টেম্বর-অক্টোবর মাস এলেই পেঁয়াজের বাজারে অস্থিরতা শুরু হয়। গত দুই বছর ধরে এই অবস্থা চলছে দেশের পেঁয়াজের বাজারে। এবারও তার পুনরাবৃত্তি ঘটেছে।

গত ২০১৯ ও ’২০ সালে সেপ্টেম্বর মাসে পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করে দিয়েছিল ভারত। এরপর পেঁয়াজের দাম বাড়তে বাড়তে ২০০ টাকায় ঠেকেছিল। এবার অভ্যন্তরীণ বাজারে সংকটের কারণে ভারতে বেড়েছে পেঁয়াজের দাম। এখন পর্যন্ত রপ্তানি বন্ধ না করলেও বাড়তি দামেই পেঁয়াজ কিনতে হচ্ছে আমদানিকারকদের। এর প্রভাব পড়েছে দেশের বাজারেও।

এদিকে ভারতীয় পেঁয়াজের দাম বাড়ায় কেজিপ্রতি ৫ টাকা বাড়তি দাম হাঁকছেন মিয়ানমারের পেঁয়াজ আমদানিকারকেরা। খাতুনগঞ্জে সাধারণত ভারত থেকে আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হয়। এ ছাড়া মিয়ানমার থেকে আমদানি করা ও দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হয়।

খাতুনগঞ্জের অছি মিয়া সওদাগর আড়তের স্বত্বাধিকারী মো. রিগ্যান জানান, ‘গত সপ্তাহে আমরা ভারতীয় পেঁয়াজ পাইকারি কেজিপ্রতি ৩৫ টাকায় বিক্রি করেছি, এখন বিক্রি করছি ৪২ থেকে ৪৪ টাকায়। মিয়ানমারের পেঁয়াজ বিক্রি করেছি ৩২ টাকায়, এখন বিক্রি করছি ৩৭-৩৮ টাকায়। মূলত ভারত থেকে আমদানি পর্যায়ে দাম বেড়েছে। তাই আমরাও দাম বাড়িয়েছি।’

আড়তদার ফরহাদ হোসেন জানান, বাজারে পেঁয়াজের সরবরাহে কোনো ঘাটতি নেই। ভারত, মিয়ানমারের আমদানি পেঁয়াজের পাশাপাশি আড়তে দেশি জাতের বারি, তাহিরপুরী পেঁয়াজ আছে। কিন্তু আমি আগের অভিজ্ঞতা থেকে দেখেছি সেপ্টেম্বর, অক্টোবর মাস এলেই ভারতে পেঁয়াজের সংকট তৈরি হয়। দামও বাড়ে।

হামিদুল্লাহ মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ইদ্রিস আলী জানান, পেঁয়াজের বাজার দীর্ঘদিন স্থিতিশীল ছিল। এতদিন করোনার কারণে বেচাবিক্রি হয়নি। লকডাউনের পরও যেভাবে বেচাবিক্রি শুরু হওয়ার কথা, তাও নেই। রসুন, আদার আমদানিকারকেরা বড় লোকসানে পড়েছেন। এটার কী কারণ বুঝতে পারছি না। তার ওপর পেঁয়াজের দাম বাড়া শুরু করেছে। এটা আরও বাড়বে কি না তাও বলতে পারছি না। বেচাবিক্রি আরও কমে যাওয়ার আশঙ্কায় আছি।’

মিয়ানমার থেকে পেঁয়াজের বোট আসতে মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনী নানা রকম বাধা দেওয়ায় দাম বাড়ছে বলে দাবি করেন ব্যবসায়ীরা। এর সঙ্গে টেকনাফ স্থলবন্দরে বাড়তি শুল্ক আদায়ের কারণে দাম বাড়ছে।

কৃষি অধিদপ্তরের হিসাবে, দেশে এ বছর পেঁয়াজের চাহিদা ধরা হয়েছে প্রায় ৩০ লাখ টন। এর মধ্যে দেশে উৎপাদন হয় ১৭ থেকে ২০ লাখ টনের মতো। বাকি প্রায় ১০ লাখ টন পেঁয়াজ আমদানি করতে হয়। এর বড় অংশ আসে ভারত থেকে। ফলে ভারতের পেঁয়াজের বাজারে অস্থিরতা হলে, এর প্রভাব পড়ে দেশের বাজারেও।

তবে দুই বছরে ভারতের পাশাপাশি তুরস্ক, নেদারল্যান্ডস, পাকিস্তান, মিসরসহ নানা দেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানি করে বাজার স্থিতিশীল রাখার চেষ্টা করেছেন ব্যবসায়ীরা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত