Ajker Patrika

খাজনা দিতে গেলেই প্রশ্ন ‘কত টাকা এনেছেন?’

আজিজুর রহমান, চৌগাছা
আপডেট : ২৭ মে ২০২২, ১৩: ৩৭
খাজনা দিতে গেলেই প্রশ্ন ‘কত টাকা এনেছেন?’

যশোরের চৌগাছার স্বরুপদাহ ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ভূমি সহকারী কর্মকর্তা (নায়েব) জাহাঙ্গীর আলমের বিরুদ্ধে জমির খাজনা দিতে আসা ব্যক্তিদের হয়রানি ও অর্থ আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। এসব ঘটনার পরিপ্রক্ষিতে গত মঙ্গলবার বাঘারদাঁড়ি গ্রামের সোহরাব হোসেন শ্রাবণ চৌগাছা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন।

অভিযোগ পাওয়ার বিষয় নিশ্চিত করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইরুফা সুলতানা বলেন, ‘তাঁর বিরুদ্ধে এ রকম আরও অভিযোগ রয়েছে। লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তাঁকে ডেকে বিষয়টি জানতে চাওয়া হবে। প্রয়োজনে অভিযোগকারীর মুখোমুখি করে অভিযোগ প্রমাণ হলে তাঁর বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা করা হবে।’

লিখিত অভিযোগে সোহরাব হোসেন বলেন, ‘জমি কেনার জন্য জাহাঙ্গীর আমার কাছে দুটি দাখিলার জন্য ৯ হাজার টাকা দাবি করেন। পরে ৫ হাজার টাকা নিয়ে তিনি দুটি দাখিলা দেন। ৫ হাজার টাকা নিলেও তিনি আমাকে একটি দাখিলার ৬৬৬ টাকা এবং অন্য দাখিলার ১৮২ টাকার অনলাইন দাখিলা সনদ দেন। আমি জাহাঙ্গীর আলমের এমন অপকর্মের বিচারসহ আমার অতিরিক্ত নেওয়া টাকা ফেরত পাওয়ার দাবি জানাচ্ছি।’

বাঘারদাঁড়ি গ্রামের কৃষক অহেদ আলী বলেন, ‘এই নায়েব (ভূমি সহকারী কর্মকর্তা) টাকা ছাড়া কিছু চেনেন না। তাঁর কাছে জমির খাজনা দিতে গেলেই বলেন ‘কত টাকা এনেছেন’।

ইউনিয়নের অন্য একটি গ্রামের বাসিন্দা শরিফুল ইসলাম বলেন, ‘ওনার কাছে আমি এ বছর তিন দিন গিয়ে জানতে চেয়েছি শতাংশপ্রতি খাজনা কত। ওনার কাছ থেকে উত্তর আমি আজও পাইনি।’

ইউনিয়নের স্বরুপদাহ গ্রামের বাসিন্দা ইউনিয়ন ভূমি অফিসের পাশের স্বরুপদাহ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক সাহিদুজ্জামান সবুজ বলেন, ‘টাকা ছাড়া তিনি কোনো কাজ করেন না।’

ইউনিয়ন ভূমি অফিসের অন্তর্গত চৌগাছা পৌরসভার তারনিবাস গ্রামের বাসিন্দা ও তরিকুল ইসলাম পৌর কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের প্রভাষক হাসিবুল ইসলাম বলেন, ‘এর আগে যিনি ছিলেন, তিনি খুব ভালো লোক ছিলেন। তবে জাহাঙ্গীর আলমের নামে অনেক বদনাম।’

ইউনিয়নের জিওলগাড়ি-বেলেমাঠের বাসিন্দা এবং ইতালিপ্রবাসী ফারুক হোসেন লাল্টু বলেন, তিনি টাকা ছাড়া কোনো কাজই করেন না। চরম দুর্নীতিগ্রস্ত এই জাহাঙ্গীরকে স্বরুপদাহ থেকে দ্রুত অপসারণের জন্য জোর দাবি জানাচ্ছি। এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

এ বিষয়ে চৌগাছা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইরুফা সুলতানা বলেন, ‘লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তাঁর বিরুদ্ধে আগেও এ ধরনের অনেক অভিযোগ রয়েছে। তাঁকে ডেকে বিষয়টি জানতে চাওয়া হবে। প্রয়োজনে অভিযোগকারীকে ডেকে মুখোমুখি করে অভিযোগ প্রমাণ হলে তাঁর বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা করা হবে।’

মোবাইল ফোনে এ বিষয়ে জানতে চাইলে জাহাঙ্গীর আলম অনেক্ষণ চুপ থেকে বলেন, ‘এমন ঘটনা আমার স্মরণে নেই। একই দিন অন্য একজনের কাছ থেকে ২৫ হাজার টাকা নেওয়ার কথা বলা হলে তিনি বলেন ‘মাশাআল্লাহ’।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে লিখিত অভিযোগের কথা বলা হলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে আমার জানা নেই।

ইউএনও আপনাকে ডেকে পাঠাননি? বা আপনার কাছে এ বিষয়ে জানতে চাননি? প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘না আজকে ইউএনও আমাকে ডাকেননি বা কিছু জানতেও চাননি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বিশ্ববিদ্যালয় ঘোষণা হলেই মেয়াদ শেষ নতুন পরিচালনা কমিটির

মুসলিম থেকে খ্রিষ্টান হওয়া ইরানি নারী এখন পানামার জঙ্গলে

ঢাবি ছাত্রীকে যৌন হেনস্তাকারীর পক্ষে নামা ‘তৌহিদী জনতার’ আড়ালে এরা কারা

এনসিপিকে চাঁদা দিচ্ছেন ধনীরা, ক্রাউডফান্ডিং করেও অর্থ সংগ্রহ করা হবে: নাহিদ ইসলাম

ভ্যানিটি ব্যাগ ধরে টান, সন্তানসহ ছিটকে পড়তেই তরুণীর গালে ছুরিকাঘাত

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত