Ajker Patrika

ফ্যাক্টচেক /হাসপাতালের বেড থেকে উঠে দুই রোগীর মারামারিতে জড়ানোর ভিডিওটি ভারতের

ফ্যাক্টচেক  ডেস্ক
দেশে হাসপাতালের ভেতরে রোগীসহ দুই পক্ষের হাতাহাতির দাবিতে ফেসবুক পোস্ট। ছবি: স্ক্রিনশট
দেশে হাসপাতালের ভেতরে রোগীসহ দুই পক্ষের হাতাহাতির দাবিতে ফেসবুক পোস্ট। ছবি: স্ক্রিনশট

হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে থাকা রোগীও মারামারিতে যোগ দিয়েছেন—এমন দাবিতে একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওটি বিভিন্ন ফেসবুক অ্যাকাউন্ট ও পেজ থেকে প্রায় একই ক্যাপশনে ছড়ানো হচ্ছে। একটি কক্ষে হাসপাতালের পেইনবেডের মতো দেখতে বিছানায় দুজনকে শুয়ে থাকতে দেখা যায়। একপর্যায়ে সেখানে হাতাতাতি লাগে। তাতে অংশ নেন পেইনবেডে শুয়ে থাকা দুজন। শরীরে স্যালাইন নেওয়া অবস্থায় তাঁরা উঠে দাঁড়িয়ে মারামারিতে অংশ নেন।

Munna Sardar নামের একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে গত শুক্রবার (১১ এপ্রিল) ৮টা ৪৯ মিনিটে পোস্ট করা ভিডিওটি সবচেয়ে বেশি ছড়িয়েছে। ভিডিওটির ক্যাপশনে লেখা, ‘শুধুমাত্র বাংলাদেশে সম্ভব,, মারামারির সময় রোগী উঠে গিয়ে মারামারি করে।’ (বানান অপরিবর্তিত)

আজ সোমবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ভিডিওটি ২ লাখ ৯৬ হাজারবার দেখা হয়েছে, ৬৯৬টি রিঅ্যাকশন পড়েছে। বিভিন্ন অ্যাকাউন্ট থেকে ৫৭টি কমেন্ট করা হয়েছে ও শেয়ার হয়েছে ১ হাজার ১০০ বার।

ভিডিওটি অন্য দেশের উল্লেখ করে পোস্টে কমেন্ট করেছেন একজন। আবার অনেকে বাংলাদেশের ঘটনা লিখেও মন্তব্য করেছেন। Ali Hosain Medda নামের একটি অ্যাকাউন্ট থেকে লেখা হয়েছে, ‘বাংলাদেশে সবই সম্ভব।’ (বানান অপরিবর্তিত) Md Raju Islam লিখেছে, ‘এটি হলো আমাদের চরিত্র।’

MD Arif Hossain নামের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট, Gen Z𝙷𝙴𝙰𝚁𝚃-𝙱𝚁𝙴𝙰𝙺𝙴𝚁 নামের পেজ থেকে একই ক্যাপশনে ভিডিওটি পোস্ট করা হয়েছে।

ভিডিওটির কিছু কি–ফ্রেম রিভার্স ইমেজ সার্চ করা হলে Pratidin Time নামের ভারতের আসাম থেকে প্রচারিত একটি ইলেকট্রনিক সংবাদমাধ্যমের ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে ওই রকম ভিডিওটি পাওয়া যায়, যেটি ১০ এপ্রিল পোস্ট করা হয়। এর সঙ্গে সম্প্রতি ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে মারধর করা ব্যক্তিদের অবস্থান, মারধরের ভঙ্গি, পোশাক, মারধরের শিকার হওয়া ব্যক্তি ও কক্ষের দেয়ালের মিল পাওয়া যায়।

ছড়িয়ে পড়া ভিডিওর সঙ্গে Pratidin Time-এর ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টের প্রতিবেদনের সাদৃশ্য। ছবি: স্ক্রিনশট
ছড়িয়ে পড়া ভিডিওর সঙ্গে Pratidin Time-এর ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টের প্রতিবেদনের সাদৃশ্য। ছবি: স্ক্রিনশট

প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ভারতের আসাম রাজ্যের হোজাই জেলার দবোকা লাইফ কেয়ার নামের একটি হাসপাতালে হঠাৎ দুই পক্ষের মারামারি শুরুর হলে একপর্যায়ে এক রোগী স্যালাইন নেওয়া অবস্থায় সেই মারামারিতে যুক্ত হন। পরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এসে দুই পক্ষকে শান্ত করে।

আসাম থেকে প্রচারিত Northeast Live নামের ইলেকট্রনিক সংবাদমাধ্যমের ইউটিউব চ্যানেলে ১০ এপ্রিলে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকেও একই তথ্য ও দৃশ্য পাওয়া যায়।

ছড়িয়ে পড়া ভিডিওর সঙ্গে Northeast Live-এর প্রতিবেদন। ছবি: স্ক্রিনশট
ছড়িয়ে পড়া ভিডিওর সঙ্গে Northeast Live-এর প্রতিবেদন। ছবি: স্ক্রিনশট

এই প্রতিবেদন থেকে আরও জানা যায়, আসামের দবোকা বাজারে দুই গ্রুপ সংঘর্ষে জড়ালে তাঁরা আহত হয়ে একই হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি হন। পরে দুই গ্রুপের সদস্যদের হাসপাতালে দেখা হলে তাঁদের মধ্যে আবার হাতাহাতি হয়। গুগলে সার্চ করে বাংলাদেশের কোনো হাসপাতালে এমন কোনো ঘটনার বিষয়ে দেশীয় সংবাদমাধ্যমে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।

সুতরাং হাসপাতালের ভেতরে হাতাহাতির দাবিতে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া ভিডিওটি বাংলাদেশের ঘটনা নয়। প্রকৃতপক্ষে এটি ভারতের আসামের হোজাই জেলার দবোকা লাইফ কেয়ার নামের একটি হাসপাতালে দুই পক্ষের মারামারির ঘটনা।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, সংবাদমাধ্যম বা যেকোনো মাধ্যমে প্রচারিত কোনো ছবি, ভিডিও বা তথ্য বিভ্রান্তিকর মনে হলে তার স্ক্রিনশট বা লিংক কিংবা সে সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য আমাদের ই-মেইল করুন। আমাদের ই-মেইল ঠিকানা factcheck@ajkerpatrika.com
Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত