মো. ইকবাল হোসেন
বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় ১৭ শতাংশ কিডনি রোগে আক্রান্ত। এই সংখ্যা ২ কোটির বেশি। প্রতিবছর তা বেড়েই চলেছে। কিডনি রোগীরা রোজা রাখতে চাইলে তাঁদের অবশ্যই চিকিৎসকের অনুমতি নেওয়া সাপেক্ষে রোজা রাখতে হবে। রোজা রাখার ক্ষেত্রে অবশ্যই একজন বিশেষজ্ঞ পুষ্টিবিদের পরামর্শে আপনার খাদ্যতালিকা সাজাবেন।
কী খাবার খাওয়া যাবে
কিডনি রোগে পানিও মেপে খেতে হয়। তাই আপনাকে সারা দিনে বুঝেশুনে খাবার খেতে হবে। এই রোগীদের রক্তের ক্রিয়েটিনিন রিপোর্ট দেখে দ্বিতীয় শ্রেণির প্রোটিন খেতে নিষেধ করা হয়। রক্তের ইলেকট্রোলাইটসে পটাশিয়াম ও বাই কার্বোনেটের রিপোর্ট দেখে শাকসবজি এবং ফলমূল খাওয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। এ ছাড়া এলবুমিন-ক্রিয়েটিনিনের অনুপাত, প্রস্রাবে লোহিত রক্তকণিকার উপস্থিতিসহ বিভিন্ন কিছু বিবেচনা করে কিডনি রোগীদের ডায়েট প্ল্যান তৈরি করতে হয়।
রোগীদের যদি শুধু ক্রিয়েটিনিন বেশি থাকে, সে ক্ষেত্রে ডাল ও ডালের তৈরি খাবার বন্ধ রাখতে হবে। ডালের বেসন দিয়ে তৈরি পেঁয়াজি, বেগুনি, বিভিন্ন রকমের চপ, পাকোড়া, হালিম—এগুলো খাওয়া যাবে না। শিমের বিচি, কাঁঠালের বিচি, মটরশুঁটি, বরবটি, বাদাম—এগুলো বা এসব দিয়ে তৈরি খাবারও বন্ধ রাখতে হবে। মাছ-মাংস স্বাভাবিকের চেয়ে ২০ থেকে ৩০ শতাংশ কমিয়ে দিতে হবে।
গরু-খাসির মাংস খাওয়া বন্ধ করতে হবে। তবে উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা না থাকলে পরিমিত পরিমাণে খাওয়া যাবে।
কিডনি রোগীদের পটাশিয়াম ও বাই কার্বোনেট যদি বেশি থাকে, সে ক্ষেত্রে পটাশিয়াম-সমৃদ্ধ শাকসবজি ও ফল খাওয়া বন্ধ করতে হবে।
ফল
প্রায় সব ফলই পটাশিয়াম-সমৃদ্ধ। তাই সব ধরনের ফল খাওয়া বন্ধ রাখাই উত্তম। বিশেষ করে টক ফলে পটাশিয়াম অনেক বেশি থাকে। শুধু আপেল, পেয়ারা, নাশপাতি, পেঁপে, বরই—এগুলো কম পটাশিয়াম-সমৃদ্ধ। এই ফলগুলো পরিমিত পরিমাণে খাওয়া যাবে। ডাবের পানিও বেশ পটাশিয়াম-সমৃদ্ধ।
শাকসবজি
সব ধরনের শাকসবজিতে কমবেশি পটাশিয়াম থাকে বলে সেগুলো কিডনিবান্ধব নয়। তাই শাকসবজিগুলো থেকে কিছুটা পটাশিয়াম কমিয়ে খাওয়ার চেষ্টা করতে হবে। কয়েকটি পদ্ধতিতে পটাশিয়াম কমানো যায়।
শাকসবজি ছোট টুকরা করে কেটে দু-তিন ঘণ্টা পানিতে ভিজিয়ে রাখতে হবে। এরপর পানি থেকে তুলে স্বাভাবিক নিয়মে কম মসলা দিয়ে রান্না করতে হবে।
শাকসবজি সেদ্ধ করার পর পানি ফেলে দিয়ে রান্না করতে হবে। এ ক্ষেত্রে পটাশিয়ামের সঙ্গে অন্যান্য পুষ্টি উপাদানও কমে যাওয়ার আশঙ্কা আছে।
শাকসবজি বেশি ঝোল করে রান্না করতে হবে, কিন্তু ঝোল কম নিয়ে খেতে হবে। এতে শরীরে কম পরিমাণে পটাশিয়াম যাবে।
শাকসবজি রান্নার সময় তাপে প্রায় ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ পটাশিয়াম নষ্ট হয়ে যায়। তাই উচ্চতাপে রান্না করা শাকসবজিতে পটাশিয়াম কিছুটা কম থাকে। সে ক্ষেত্রে শাকসবজি কাঁচা, অর্ধসিদ্ধ বা ভাজি করে না খাওয়াই উত্তম।
তৃতীয় থেকে পঞ্চম পর্যায়ের রোগীদের আটা-ময়দার তৈরি খাবার বন্ধ করতে হবে।
সে ক্ষেত্রে চালের আটার তৈরি খাবার খেতে হবে। সব ক্ষেত্রে মসলার ব্যবহার কমাতে হবে। সারা দিনে লবণের ব্যবহার ৪০ শতাংশ পর্যন্ত কমিয়ে ফেলতে হবে। লবণ বেশি খেলে উচ্চ রক্তচাপ বেড়ে যাবে। সঙ্গে কিডনির আরও অবনতি হবে।
ইফতার
ফল: অল্প পরিমাণে আপেল, নাশপাতি কিংবা পেঁপে।
শরবত: ১০০ গ্রাম পাকা পেঁপের শরবত।
এনার্জি বুস্টার: একটি সেদ্ধ ডিম কুসুমসহ।
অন্যান্য খাবার (যেকোনো ১টি): কম চর্বির দুধ দিয়ে তৈরি সাগু/সুজি বা পায়েস। অথবা চালের আটার রুটির সঙ্গে ছোট এক টুকরো মাছ বা মাংস অথবা ৩টা ডিমের সাদা অংশ এবং শাকসবজি।
অথবা ভাত ও মাছ বা মাংস এবং দুই থেকে তিনটি ডিমের সাদা অংশ ও শাকসবজি।
তারাবির নামাজের পরে
কম চর্বিযুক্ত দুধ বা টক দই দিয়ে ওটস খেতে পারেন। অথবা চালের আটার রুটি/ভাত, মাছ/মাংস, শাকসবজি খেতে পারেন।
সেহরি
সেহরিতে ভাত বা ছোট এক টুকরো মাছ কিংবা মাংস, শাকসবজি এবং এক কাপ কম চর্বিযুক্ত দুধ বা টক দই খাবেন।
বাইরের খাবার, প্যাকেটজাত খাবার, টেস্টিং সল্টযুক্ত খাবার খাবেন না। সে ক্ষেত্রে কিডনি জটিলতা আরও বেড়ে যাবে।
জ্যেষ্ঠ পুষ্টি কর্মকর্তা, চট্টগ্রাম ডায়াবেটিক জেনারেল হাসপাতাল
বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় ১৭ শতাংশ কিডনি রোগে আক্রান্ত। এই সংখ্যা ২ কোটির বেশি। প্রতিবছর তা বেড়েই চলেছে। কিডনি রোগীরা রোজা রাখতে চাইলে তাঁদের অবশ্যই চিকিৎসকের অনুমতি নেওয়া সাপেক্ষে রোজা রাখতে হবে। রোজা রাখার ক্ষেত্রে অবশ্যই একজন বিশেষজ্ঞ পুষ্টিবিদের পরামর্শে আপনার খাদ্যতালিকা সাজাবেন।
কী খাবার খাওয়া যাবে
কিডনি রোগে পানিও মেপে খেতে হয়। তাই আপনাকে সারা দিনে বুঝেশুনে খাবার খেতে হবে। এই রোগীদের রক্তের ক্রিয়েটিনিন রিপোর্ট দেখে দ্বিতীয় শ্রেণির প্রোটিন খেতে নিষেধ করা হয়। রক্তের ইলেকট্রোলাইটসে পটাশিয়াম ও বাই কার্বোনেটের রিপোর্ট দেখে শাকসবজি এবং ফলমূল খাওয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। এ ছাড়া এলবুমিন-ক্রিয়েটিনিনের অনুপাত, প্রস্রাবে লোহিত রক্তকণিকার উপস্থিতিসহ বিভিন্ন কিছু বিবেচনা করে কিডনি রোগীদের ডায়েট প্ল্যান তৈরি করতে হয়।
রোগীদের যদি শুধু ক্রিয়েটিনিন বেশি থাকে, সে ক্ষেত্রে ডাল ও ডালের তৈরি খাবার বন্ধ রাখতে হবে। ডালের বেসন দিয়ে তৈরি পেঁয়াজি, বেগুনি, বিভিন্ন রকমের চপ, পাকোড়া, হালিম—এগুলো খাওয়া যাবে না। শিমের বিচি, কাঁঠালের বিচি, মটরশুঁটি, বরবটি, বাদাম—এগুলো বা এসব দিয়ে তৈরি খাবারও বন্ধ রাখতে হবে। মাছ-মাংস স্বাভাবিকের চেয়ে ২০ থেকে ৩০ শতাংশ কমিয়ে দিতে হবে।
গরু-খাসির মাংস খাওয়া বন্ধ করতে হবে। তবে উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা না থাকলে পরিমিত পরিমাণে খাওয়া যাবে।
কিডনি রোগীদের পটাশিয়াম ও বাই কার্বোনেট যদি বেশি থাকে, সে ক্ষেত্রে পটাশিয়াম-সমৃদ্ধ শাকসবজি ও ফল খাওয়া বন্ধ করতে হবে।
ফল
প্রায় সব ফলই পটাশিয়াম-সমৃদ্ধ। তাই সব ধরনের ফল খাওয়া বন্ধ রাখাই উত্তম। বিশেষ করে টক ফলে পটাশিয়াম অনেক বেশি থাকে। শুধু আপেল, পেয়ারা, নাশপাতি, পেঁপে, বরই—এগুলো কম পটাশিয়াম-সমৃদ্ধ। এই ফলগুলো পরিমিত পরিমাণে খাওয়া যাবে। ডাবের পানিও বেশ পটাশিয়াম-সমৃদ্ধ।
শাকসবজি
সব ধরনের শাকসবজিতে কমবেশি পটাশিয়াম থাকে বলে সেগুলো কিডনিবান্ধব নয়। তাই শাকসবজিগুলো থেকে কিছুটা পটাশিয়াম কমিয়ে খাওয়ার চেষ্টা করতে হবে। কয়েকটি পদ্ধতিতে পটাশিয়াম কমানো যায়।
শাকসবজি ছোট টুকরা করে কেটে দু-তিন ঘণ্টা পানিতে ভিজিয়ে রাখতে হবে। এরপর পানি থেকে তুলে স্বাভাবিক নিয়মে কম মসলা দিয়ে রান্না করতে হবে।
শাকসবজি সেদ্ধ করার পর পানি ফেলে দিয়ে রান্না করতে হবে। এ ক্ষেত্রে পটাশিয়ামের সঙ্গে অন্যান্য পুষ্টি উপাদানও কমে যাওয়ার আশঙ্কা আছে।
শাকসবজি বেশি ঝোল করে রান্না করতে হবে, কিন্তু ঝোল কম নিয়ে খেতে হবে। এতে শরীরে কম পরিমাণে পটাশিয়াম যাবে।
শাকসবজি রান্নার সময় তাপে প্রায় ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ পটাশিয়াম নষ্ট হয়ে যায়। তাই উচ্চতাপে রান্না করা শাকসবজিতে পটাশিয়াম কিছুটা কম থাকে। সে ক্ষেত্রে শাকসবজি কাঁচা, অর্ধসিদ্ধ বা ভাজি করে না খাওয়াই উত্তম।
তৃতীয় থেকে পঞ্চম পর্যায়ের রোগীদের আটা-ময়দার তৈরি খাবার বন্ধ করতে হবে।
সে ক্ষেত্রে চালের আটার তৈরি খাবার খেতে হবে। সব ক্ষেত্রে মসলার ব্যবহার কমাতে হবে। সারা দিনে লবণের ব্যবহার ৪০ শতাংশ পর্যন্ত কমিয়ে ফেলতে হবে। লবণ বেশি খেলে উচ্চ রক্তচাপ বেড়ে যাবে। সঙ্গে কিডনির আরও অবনতি হবে।
ইফতার
ফল: অল্প পরিমাণে আপেল, নাশপাতি কিংবা পেঁপে।
শরবত: ১০০ গ্রাম পাকা পেঁপের শরবত।
এনার্জি বুস্টার: একটি সেদ্ধ ডিম কুসুমসহ।
অন্যান্য খাবার (যেকোনো ১টি): কম চর্বির দুধ দিয়ে তৈরি সাগু/সুজি বা পায়েস। অথবা চালের আটার রুটির সঙ্গে ছোট এক টুকরো মাছ বা মাংস অথবা ৩টা ডিমের সাদা অংশ এবং শাকসবজি।
অথবা ভাত ও মাছ বা মাংস এবং দুই থেকে তিনটি ডিমের সাদা অংশ ও শাকসবজি।
তারাবির নামাজের পরে
কম চর্বিযুক্ত দুধ বা টক দই দিয়ে ওটস খেতে পারেন। অথবা চালের আটার রুটি/ভাত, মাছ/মাংস, শাকসবজি খেতে পারেন।
সেহরি
সেহরিতে ভাত বা ছোট এক টুকরো মাছ কিংবা মাংস, শাকসবজি এবং এক কাপ কম চর্বিযুক্ত দুধ বা টক দই খাবেন।
বাইরের খাবার, প্যাকেটজাত খাবার, টেস্টিং সল্টযুক্ত খাবার খাবেন না। সে ক্ষেত্রে কিডনি জটিলতা আরও বেড়ে যাবে।
জ্যেষ্ঠ পুষ্টি কর্মকর্তা, চট্টগ্রাম ডায়াবেটিক জেনারেল হাসপাতাল
পরিবারের শিশুটির জন্য খাবার বাছাইয়ের ক্ষেত্রে তাজা ফল, সবজি, মাছসহ স্বাস্থ্যকর খাবার বাছাই করা হয়ে থাকে। সে অনুযায়ী, পরিবারের শিশু সদস্যটি কী ধরনের পানীয় গ্রহণ করছে, সেদিকে খেয়াল রাখছেন তো? অনেকেই শিশু-কিশোরদের পানীয় গ্রহণের পরিমাণে বা কী ধরনের পানীয় গ্রহণ করা ক্ষতিকর সে বিষয়টি লক্ষ্য রাখেন না।
১৭ ঘণ্টা আগেকিডনি রোগীদের একটি সাধারণ জিজ্ঞাসা, তাঁরা রোজা রাখতে সক্ষম কি না। একজন কিডনি রোগী রোজা পালন করতে পারবেন কি না, তা নির্ভর করে তাঁর সার্বিক শারীরিক সুস্থতা ও কিডনির কার্যক্ষমতার ওপর। ক্রনিক কিডনি ডিজিজ বা সিকেডি স্টেজ ১ থেকে ৫ পর্যন্ত পাঁচ ভাগে বিভক্ত। এর শেষ ধাপ ইন্ড স্টেজ রেনাল ডিজিজ বা ইএসআরডি।
১ দিন আগেবড়রা রোজা পালন করলেও শিশুরা অর্থাৎ, ইনফ্যান্ট, টডলার ও প্রি স্কুল চাইল্ড রোজা রাখে না। তবে তারা পরিবারের সঙ্গে রমজানের পরিবেশ উপভোগ করতে পারে। শিশুর সঠিকভাবে যত্ন এবং পরিকল্পিত দিনযাপন নিশ্চিত করলে তারা সুস্থ থাকবে এবং রমজানের শিক্ষা গ্রহণ করতে পারবে।
১ দিন আগেআমরা রোজা রেখে ভাজাপোড়া খাওয়ার যে রেওয়াজ করে ফেলেছি, তা কবে কীভাবে চালু হয়েছে, ঠিক জানা নেই। আমাদের দেশীয় খাবারের যে ঘরানা আছে, সেটা কিন্তু এমন নয়। সম্ভবত পাকিস্তানের খাদ্যসংস্কৃতির সঙ্গে এর কিছুটা মিল আছে। কিন্তু কখনোই আমাদের গ্রামবাংলায় ভাজাপোড়া খাওয়ার এমন প্রচলন ছিল না। হালে পুরো দেশে রোজায়...
১ দিন আগে