সিজারের পরও স্বাভাবিক প্রসব সম্ভব

প্রকাশ : ১৩ মে ২০২৩, ০৯: ৫৪

প্রশ্ন: আমার বয়স ৩৩ এবং স্বামীর বয়স ৩৬ বছর। দুই বছর চেষ্টা করেও সন্তান নিতে পারছি না। কোনো প্রক্রিয়ায় ভুল হচ্ছে কি না, বুঝতেও পারছি না। চিকিৎসক বলেছেন, প্রথম সন্তান হতে একটু সময় লাগে অনেকের। পরামর্শ প্রয়োজন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক, বগুড়া

দুই বছর বা তার বেশি অরক্ষিত মিলনের পরেও কোনো দম্পতি সন্তান ধারণে ব্যর্থ হলে তা বন্ধ্যত্ব বলে বিবেচিত হয়। যেহেতু আপনাদের দুই বছর পার হয়ে গেছে, তাই স্বামী-স্ত্রী উভয়ের ইতিহাস নিয়ে এবং কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখা দরকার, বন্ধ্যত্বের জন্য দায়ী কোনো ফ্যাক্টর আছে কি না। স্বামীর বীর্য পরীক্ষা এ ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সাধারণত ঋতুচক্রের ৯ম থেকে ২২তম দিন গর্ভধারণের উর্বর সময়। গর্ভধারণ করতে চাইলে এই দিনগুলোতে ঘন ঘন মিলন করতে হবে। যেহেতু ৩৫ বছরের পর থেকে নারীদের গর্ভধারণের সক্ষমতা উল্লেখযোগ্য হারে কমতে থাকে এবং বন্ধ্যত্ব রোগের চিকিৎসা অনেক ক্ষেত্রে সময়সাপেক্ষ হতে পারে, তাই দেরি না করে দ্রুত বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

প্রশ্ন: আমার মায়ের মেনোপজ হয়েছে তিন বছর হলো। তাঁর শরীর তীব্র জ্বালাপোড়া করে। রাতে ঘুমাতে পারেন না। এগুলো কি মেনোপজের কারণে হয়? সমস্যা সমাধানে কী করব?

রেহেনা পারভীন, কক্সবাজার

মেনোপজ নারীজীবনের অত্যন্ত স্বাভাবিক একটি ঘটনা। এ সময় হরমোন পরিবর্তনের কারণে শারীরিক ও মানসিক বিভিন্ন ধরনের অপ্রীতিকর উপসর্গ দেখা দেয়। শরীরে তীব্র জ্বালাপোড়া, রাতে ঘুমাতে না পারা তেমনই কিছু উপসর্গ। এতে ঘাবড়ানোর বা ভয় পাওয়ার কিছু নেই। মেনোপজাল সিম্পটমের সমস্যা সমাধানে প্রথমেই যেটা গুরুত্বপূর্ণ তা হলো, এই সময়ের পরিবর্তনগুলো সহজ ও স্বাভাবিকভাবে গ্রহণ করে নিজেকে কর্মব্যস্ত রাখা। মনে রাখতে হবে, 
এটি জীবনের শেষ নয়; বরং নতুন একটি অধ্যায়। দ্বিতীয়ত, এই সময়ে স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন অনুসরণ করা, যেমন সুষম খাবার খাওয়া, পর্যাপ্ত ঘুমানো, নিয়মিত ব্যায়াম, ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপ থাকলে সেগুলো নিয়ন্ত্রণ ইত্যাদি খুব জরুরি। তৃতীয়ত, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শে হরমোন রিপ্লেসমেন্ট থেরাপি বা এইচআরটি গ্রহণ করা। তবে এইচআরটি গ্রহণ করলে অবশ্যই নিয়মিত চিকিৎসকের ফলোআপে থাকতে হবে।

প্রশ্ন: আমার প্রথম সন্তান সিজারে হয়েছিল। এখন ওর বয়স চার বছর। আবার মা হতে যাচ্ছি। সাড়ে ছয় মাস চলছে গর্ভকালের। স্বাভাবিক প্রসবে কোনো সমস্যা হবে কি?

পিউলি সাহা, বিক্রমপুর

একবার সিজারিয়ান সেকশন হলে পরে স্বাভাবিক প্রসব হওয়া সম্ভব। তবে তার জন্য বেশ কিছু শর্ত পূরণ করা জরুরি। যেমন শিশুর অবস্থা স্বাভাবিক হতে হবে, অ্যামনিয়োটিক ফ্লুইড পর্যাপ্ত হতে হবে, গর্ভস্থ শিশুর ওজন স্বাভাবিক মাত্রার মধ্যে থাকতে হবে, পূর্ববর্তী সিজারিয়ান সেকশনের সেলাইয়ের পুরুত্ব দুই মিলিমিটারের বেশি হতে হবে। আলট্রাসনোগ্রাফির মাধ্যমে এই পুরুত্ব জানা সম্ভব। একজন অভিজ্ঞ প্রসূতি ও স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ দিয়ে পরীক্ষা করে নিশ্চিত হতে হবে প্রসবপথ স্বাভাবিক প্রসবের উপযুক্ত কি না। আগের সিজারিয়ান সেকশনটি কী কারণে হয়েছিল, তা জানা জরুরি। কিছু কারণ রয়েছে যার ফলে প্রসূতিকে প্রতিবারই সিজারিয়ান সেকশনের মাধ্যমে সন্তান প্রসব করাতে হয়।

পরীক্ষার মাধ্যমে নিশ্চিত হতে হবে যে গর্ভস্থ সন্তান ও মায়ের এমন কোনো জটিলতা নেই, যা স্বাভাবিক প্রসবের পথে বাধা হয়ে দাঁড়াবে। সর্বোপরি, সিজারিয়ান সেকশনের পর স্বাভাবিক প্রসব করানো যাবে কি না, তা একজন প্রসূতি ও স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা এবং মা ও শিশুর স্বাস্থ্যগত অবস্থা বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেবেন।

পরামর্শ দিয়েছেন: ডা. ফরিদা ইয়াসমিন সুমি, সহকারী অধ্যাপক (গাইনি) চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সরকারি চাকরিজীবীরা সম্পদের হিসাব না দিলে যেসব শাস্তির মুখোমুখি হতে পারেন

শেখ হাসিনাকে নিয়ে যুক্তরাজ্যে এম সাখাওয়াতের বিস্ফোরক মন্তব্য, কী বলেছেন এই উপদেষ্টা

শিক্ষকের নতুন ২০ হাজার পদ, প্রাথমিকে আসছে বড় পরিবর্তন

লক্ষ্মীপুরে জামায়াত নেতাকে অতিথি করায় মাহফিল বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ

শ্রীপুরে পিকনিকের বাস বিদ্যুতায়িত হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩ শিক্ষার্থীর মৃত্যু, আহত ৩

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত