Ajker Patrika

স্বাস্থ্যকর সাহ্‌রি বিষয়ে যে তথ্যগুলো জানতে হবে

মো. ইকবাল হোসেন 
আপডেট : ১৮ মার্চ ২০২৫, ১৫: ৪৭
স্বাস্থ্যকর সাহ্‌রি বিষয়ে যে তথ্যগুলো জানতে হবে

প্রায় ১৪ ঘণ্টা রোজা রেখে শরীর সতেজ রাখা বেশ চ্যালেঞ্জিং। আর ডায়াবেটিসের রোগীদের জন্য এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা বেশি কঠিন হবে।

এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার একটি অন্যতম অংশ হচ্ছে স্বাস্থ্যকর সাহ্‌রি। আপনি যদি সঠিক নিয়মে, সঠিক খাবার দিয়ে সাহ্‌রি করেন, তাহলে খুব সহজে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে পারবেন। এর জন্য কিছু বিষয় বিবেচনায় রাখতে হবে।

পরিমিত পরিমাণে খেতে হবে
সাহ্‌রি দিয়ে একজন রোজাদারের দিন শুরু হয়। অনেকে মনে করেন যে সাহ্‌রিতে পেট পুরে খেলে মনে হয় সারা দিনে আর ক্ষুধা লাগে না। তাই অনেককে প্রচুর পরিমাণে খেতে দেখা যায়। এরপর শেষ সময়ের সাইরেন বাজার আগপর্যন্ত পানি খেতেই থাকে। এগুলো করবেন না। এতে শরীরে একধরনের অস্বস্তি তৈরি হবে, যা আপনাকে সারা দিন কষ্ট দেবে।

সাহ্‌রিতে স্বাভাবিক খাবারটাই খাবেন। পরিমিত পরিমাণে ভাতের সঙ্গে মাছ বা মাংস, ডাল, সবজি, সালাদ। শেষে এক কাপ দুধ বা দই খাবেন।

সাহ্‌রিতে দুধ
সাহ্‌রিতে একটু দুধ বা দই খেলে এখান থেকে আপনি ধীরে ধীরে শক্তি পাবেন, যা সারা দিন বেশ সতেজ রাখবে। আপনি চাইলে সাহ্‌রিতে দুধ-ভাতও খেতে পারেন। 
সাহ্‌রিতে বেশি খেলে কী ক্ষতি আপনি যত বেশি খাবার খাবেন, সেগুলো পরিপাকে তত বেশি পানির প্রয়োজন হবে। আপনি হয়তো পানিও বেশি পান করছেন। কিন্তু পানি বেশি পান করলে তা প্রস্রাবের মাধ্যমে শরীর থেকে বের হয়ে যায়। এখন আপনার অতিরিক্ত খাওয়া খাবারগুলো পরিপাকের জন্য শরীরকোষের ভেতরে পানির ঘাটতি হবে। ফলে আপনার পানির পিপাসা বেশি পাবে। তখন রোজা সম্পূর্ণ করা আপনার জন্য কষ্টদায়ক হয়ে যাবে।

কোন চালের ভাত খাবেন
সাহ্‌রিতে আতপ চালের ভাত খাবেন না। আপনি সেদ্ধ মোটা চালের ভাত খেতে পারেন অথবা লাল চালের ভাত খাবেন। সেদ্ধ মোটা চাল এবং লাল চালের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স অনেক কম। তাই এগুলো আপনাকে সারা দিনই খুব ধীরে ধীরে শক্তি সরবরাহ করবে, যা আপনার সারা দিনের না খেয়ে থাকার পক্ষে বেশ সহায়ক হবে। অন্যদিকে আতপ চালের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স কিছুটা বেশি, ফলে এটি খুব দ্রুত হজম হয়ে যাবে। আপনি চাইলে ভাতের পরিবর্তে সমপরিমাণ লাল আটার রুটিও খেতে পারেন।

শাকসবজি
সাহ্‌রিতে সবজির পাশাপাশি কিছু শাক অবশ্যই খাবেন। শাকের সেলুলোজ সারা দিনে পেট ভরে থাকার মতো অনুভূতি দেবে। এটি আপনার ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণ করবে। শাকসবজির আঁশে পানি ধরে রাখার ক্ষমতা অনেক বেশি। সাহ্‌রিতে পরিমিত পরিমাণে শাক-সবজি খেলে সারা দিন পানিশূন্যতা দেখা দেবে না। ফলে আপনি তৃষ্ণার্তও হবেন না। সাহ্‌রিতে ঢ্যাঁড়স, পেঁপে, বাঁধাকপি, বিটরুট, লাউ, টমেটো, ফুলকপি এগুলো রাখতে পারেন। শাক হিসেবে পুঁইশাক, লালশাক, লাউশাক, পালংশাক—এগুলো ভালো। 
আপনি চাইলে সাহ্‌রিতে একটা খোসাসহ ফল খেতে পারেন। যেমন—আপেল, নাসপাতি, পেয়ারা, খেজুর, আঙুর ইত্যাদি। এগুলো আঁশসমৃদ্ধ হওয়ায় ক্ষুধা প্রতিরোধে সহায়তা করে।

সাহ্‌রিতে মাছ নাকি মাংস
সাহ্‌রিতে অবশ্যই মাছ খাবেন, মাংস এড়িয়ে চলতে চেষ্টা করবেন। প্রথমত মাংসে ভালো চর্বির পরিমাণ মাছের তুলনায় কম থাকে। দ্বিতীয়ত, মাংস পরিপাকে শরীরে বেশি পানির প্রয়োজন হয় এবং সময়ও বেশি লাগে, যা আপনার সারা দিনের অস্বস্তির কারণ হতে পারে। 

রান্নায় মসলা
রান্নায় তেল ও মসলার ব্যবহার কমাতে হবে। অতিরিক্ত তেল-মসলাসমৃদ্ধ খাবার গ্যাস্ট্রিকের কারণ হতে পারে। পেটে ব্যথা, বুক জ্বালাপোড়ার মতো সমস্যা দেখা দেবে। এ ক্ষেত্রে শরীরে পানির ঘাটতিসহ কোষ্ঠকাঠিন্য দেখা দিতে পারে। 

পরামর্শ দিয়েছেন: জ্যেষ্ঠ পুষ্টি কর্মকর্তা, চট্টগ্রাম ডায়াবেটিক জেনারেল হাসপাতাল

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ভূমিকম্পে ইরাবতী নদীতে ভেঙে পড়ল ব্রিটিশ আমলে নির্মিত সেতু

‘ছেলেকে পিটিয়ে মেরেছে আফসোস নেই, একটাই কষ্ট—নাতি জেলে যাচ্ছে’

জোরালো ভূমিকম্পে কাঁপল দেশ, উৎপত্তিস্থলে মাত্রা ৭.৭

পরকীয়ার জেরে খুন হচ্ছে স্বামী, ভয়ে নিজেই স্ত্রীকে প্রেমিকের হাতে তুলে দিলেন যুবক

সয়াবিন তেল লিটারে ১৮ টাকা বাড়াতে চান ব্যবসায়ীরা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত