ডা. সৈয়দা নাফিসা ইসলাম
টিকা দেওয়ার সময়
কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া জন্মের পর সব শিশুকে অবশ্যই টিকা দিতে হবে। টিকা দিলে শিশুর সামান্য জ্বর-ব্যথা হয়ে থাকে। কিন্তু টিকা না দিলে শিশু রোগাক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে থাকে। অপুষ্টিতে ভুগতে থাকা শিশুদের দেহে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকে। শিশুর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে অবশ্যই টিকা দিতে হবে।
টিকা দেওয়ায় সতর্কতা
⦁ খুব বেশি অসুস্থ শিশুকে চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া টিকা দেওয়া যাবে না।
⦁ পূর্ববর্তী প্যান্টাভ্যালেন্ট টিকা দেওয়ার পর শিশুর খিঁচুনি হলে বা জ্ঞান হারালে পরবর্তী প্যান্টাভ্যালেন্ট টিকা দেওয়া যাবে না। এ ক্ষেত্রে অন্য সব টিকা, যেমন ওপিডি, এমআর, হাম নিয়ম অনুযায়ী দিতে হবে।
⦁ অপরিণত ও কম ওজনের শিশুকে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসককে জানিয়ে টিকা দিতে হবে। সাধারণত আড়াই কেজি ওজন হয়ে গেলে শিশুকে টিকা দেওয়া শুরু করা যায়।
টিকা দেওয়ার নির্দিষ্ট সময় জন্মের পরই শিশুকে বিসিজি টিকা দেওয়া হয়। কোনো কারণে দেরি হলে পরবর্তী যেকোনো সময় বা প্যান্ট্যাভ্যালেন্টের প্রথম ডোজের সঙ্গে দিতে হয়। একই দিনে ওপিভির প্রথম ডোজ দেওয়া হয়। এর পর ৬ সপ্তাহ বয়সে প্যান্টাভ্যালেন্ট এবং পিসিপির প্রথম ডোজ শুরু হবে। এই টিকার ডোজ মোট ৩টি, যা ৪ সপ্তাহ পরপর দিতে হয়। এই ৬ সপ্তাহ বয়সে ওপিভির ডোজ দিতে হবে এবং ৩টি ডোজ ৪ সপ্তাহ পর পর দিতে হয়। আইপিভির ২টি ডোজ ৬ ও ১৪ সপ্তাহে দিতে হয়। ৯ মাস শেষে এমআর টিকার প্রথম ডোজ ও ১৫ মাস শেষে এর দ্বিতীয় ডোজ দিতে হয়।
টিকা দেওয়ার জায়গা
⦁ পোলিও—মুখে খাওয়ানো এবং চামড়ায় ইনজেকশনের মাধ্যমে।
⦁ বিসিজি—চামড়ার মধ্যে ইনজেকশন।
⦁ প্যান্টাভ্যালেন্ট—মাংসের মধ্যে ইনজেকশন।
⦁ পিসিডি—মাংসের মধ্যে ইনজেকশন।
⦁ এমআর—চামড়ার নিচে ইনজেকশন।
যেসব টিকা দেওয়া হয়
ইপিআইর অন্তর্ভুক্ত হলো পোলিও, বিসিজি, হেপাটাইটিস বি, হেমোফিলাস ইনফ্লুয়েঞ্জা, প্যান্টাভ্যালেন্ট, পিসিভি ও এমআর। এর বাইরেও কিছু টিকা বাংলাদেশে পাওয়া যায়।
পোলিও টিকা
যদিও বাংলাদেশে পোলিও প্রায় নির্মূল হয়েছে, তবু এই টিকা ভীষণ জরুরি। এই রোগে হাত-পা বাঁকা হওয়া এমনকি মস্তিষ্ক পর্যন্ত অকেজো হতে পারে।
বিসিজি টিকা
এটি যক্ষ্মা রোগের প্রতিষেধক। এই টিকা দেওয়ার পর বেশি ফুলে গেলে বা বেশি ঘা হলে পুনরায় টিকা দিতে হবে চিকিৎসকের পরামর্শে।
ডিপিটি
ডি-তে ডিফথেরিয়া, পি-তে পারটোসিস বা হুপিং কাশি ও টি-তে টিটেনাস। এই তিনটিই ঝুঁকিপূর্ণ রোগ। এই টিকা তিনটি রোগের প্রতিষেধক হিসেবে কাজ করে। কোনো অবহেলা না করে গুরুত্বসহকারে শিশুকে এই তিনটি টিকা দিতে হবে।
হেপাটাইটিস বি বা হেপ বি
হেপাটাইটিস বি লিভারের একটি মারাত্মক সংক্রামক রোগ, যা হেপাটাইটিস বি ভাইরাস দিয়ে সংক্রমিত হয়। তাই হেপাটাইটিস বি টিকা জরুরি। বর্তমানে ইপিআই কার্যক্রমে পাঁচটি রোগ, যেমন ডিপথেরিয়া, হুপিং কাশি, ধনুষ্টংকার, হেপাটাইটিস বি ও হিমোফাইলাস বা ইনফ্লুয়েঞ্জা-বির বিরুদ্ধে একত্রে প্যান্টাভ্যালেন্ট ভ্যাকসিন দেওয়া হয়।
হাম
এই টিকা শিশুর স্বাস্থ্যের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এটি একটি মারাত্মক পীড়াদায়ক রোগ। সাধারণত শিশুর ১৫ মাস বয়সে এই টিকা দেওয়া হয়। কোনো কারণে টিকা দেওয়ার আগেই যদি শিশুর হাম হয়, তারপরও টিকা দিতে হবে।
টাইফয়েড
টাইফয়েডের কারণে শিশুর যেকোনো অঙ্গ বিকল হতে পারে এবং শিশু স্বাভাবিক কার্যক্রম হারিয়ে ফেলতে পারে। টাইফয়েডের টিকা শিশুকে এসব ঝুঁকি থেকে রক্ষা করে। দুই বছর বয়সের পর এই টিকা তিন বছর পরপর দিতে হয়।
রোটা ভাইরাস
শিশুদের ডায়রিয়া হওয়া স্বাভাবিক বিষয়। ডায়রিয়া হলে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে সঠিক পরিচর্যায় তারা সুস্থ হয়ে ওঠে। কিন্তু রোটা ভাইরাসজনিত ডায়রিয়ায় শিশু অনেক বেশি অসুস্থ হয়ে পড়তে পারে। তাই রোটা ভাইরাস টিকা শিশুদের জন্য জরুরি। এই টিকা মুখে খাওয়ানো হয়।
নিউ মোকক্কাল ভ্যাকসিন
বর্তমানে চিকিৎসাবিজ্ঞানে নিউমোনিয়াকে শিশুমৃত্যু হারের অন্যতম কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। নিউ মোকক্কাল ভ্যাকসিন এই রোগ প্রতিরোধে কাজ করে।
ইনফ্লুয়েঞ্জা ভ্যাকসিন
ইনফ্লুয়েঞ্জা একটি ছোঁয়াচে রোগ। এটি প্রধানত মানুষের শ্বাসতন্ত্রকে আক্রমণ করে। তাই শিশুদের এই টিকা দেওয়া জরুরি, বিশেষ করে যেসব শিশুর হাঁপানি বা অ্যালার্জিজনিত বিভিন্ন রোগ থাকে।
চিকেন পক্স
চিকেন পক্স বা জলবসন্ত একটি ভাইরাস সংক্রামক রোগ। এই রোগের জটিলতা অনেক বেশি। তাই রোগ থেকে বাঁচতে বা রোগের তীব্রতা কমাতে এই টিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
লেখক: কনসালট্যান্ট, শিশু বিভাগ, রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল
টিকা দেওয়ার সময়
কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া জন্মের পর সব শিশুকে অবশ্যই টিকা দিতে হবে। টিকা দিলে শিশুর সামান্য জ্বর-ব্যথা হয়ে থাকে। কিন্তু টিকা না দিলে শিশু রোগাক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে থাকে। অপুষ্টিতে ভুগতে থাকা শিশুদের দেহে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকে। শিশুর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে অবশ্যই টিকা দিতে হবে।
টিকা দেওয়ায় সতর্কতা
⦁ খুব বেশি অসুস্থ শিশুকে চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া টিকা দেওয়া যাবে না।
⦁ পূর্ববর্তী প্যান্টাভ্যালেন্ট টিকা দেওয়ার পর শিশুর খিঁচুনি হলে বা জ্ঞান হারালে পরবর্তী প্যান্টাভ্যালেন্ট টিকা দেওয়া যাবে না। এ ক্ষেত্রে অন্য সব টিকা, যেমন ওপিডি, এমআর, হাম নিয়ম অনুযায়ী দিতে হবে।
⦁ অপরিণত ও কম ওজনের শিশুকে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসককে জানিয়ে টিকা দিতে হবে। সাধারণত আড়াই কেজি ওজন হয়ে গেলে শিশুকে টিকা দেওয়া শুরু করা যায়।
টিকা দেওয়ার নির্দিষ্ট সময় জন্মের পরই শিশুকে বিসিজি টিকা দেওয়া হয়। কোনো কারণে দেরি হলে পরবর্তী যেকোনো সময় বা প্যান্ট্যাভ্যালেন্টের প্রথম ডোজের সঙ্গে দিতে হয়। একই দিনে ওপিভির প্রথম ডোজ দেওয়া হয়। এর পর ৬ সপ্তাহ বয়সে প্যান্টাভ্যালেন্ট এবং পিসিপির প্রথম ডোজ শুরু হবে। এই টিকার ডোজ মোট ৩টি, যা ৪ সপ্তাহ পরপর দিতে হয়। এই ৬ সপ্তাহ বয়সে ওপিভির ডোজ দিতে হবে এবং ৩টি ডোজ ৪ সপ্তাহ পর পর দিতে হয়। আইপিভির ২টি ডোজ ৬ ও ১৪ সপ্তাহে দিতে হয়। ৯ মাস শেষে এমআর টিকার প্রথম ডোজ ও ১৫ মাস শেষে এর দ্বিতীয় ডোজ দিতে হয়।
টিকা দেওয়ার জায়গা
⦁ পোলিও—মুখে খাওয়ানো এবং চামড়ায় ইনজেকশনের মাধ্যমে।
⦁ বিসিজি—চামড়ার মধ্যে ইনজেকশন।
⦁ প্যান্টাভ্যালেন্ট—মাংসের মধ্যে ইনজেকশন।
⦁ পিসিডি—মাংসের মধ্যে ইনজেকশন।
⦁ এমআর—চামড়ার নিচে ইনজেকশন।
যেসব টিকা দেওয়া হয়
ইপিআইর অন্তর্ভুক্ত হলো পোলিও, বিসিজি, হেপাটাইটিস বি, হেমোফিলাস ইনফ্লুয়েঞ্জা, প্যান্টাভ্যালেন্ট, পিসিভি ও এমআর। এর বাইরেও কিছু টিকা বাংলাদেশে পাওয়া যায়।
পোলিও টিকা
যদিও বাংলাদেশে পোলিও প্রায় নির্মূল হয়েছে, তবু এই টিকা ভীষণ জরুরি। এই রোগে হাত-পা বাঁকা হওয়া এমনকি মস্তিষ্ক পর্যন্ত অকেজো হতে পারে।
বিসিজি টিকা
এটি যক্ষ্মা রোগের প্রতিষেধক। এই টিকা দেওয়ার পর বেশি ফুলে গেলে বা বেশি ঘা হলে পুনরায় টিকা দিতে হবে চিকিৎসকের পরামর্শে।
ডিপিটি
ডি-তে ডিফথেরিয়া, পি-তে পারটোসিস বা হুপিং কাশি ও টি-তে টিটেনাস। এই তিনটিই ঝুঁকিপূর্ণ রোগ। এই টিকা তিনটি রোগের প্রতিষেধক হিসেবে কাজ করে। কোনো অবহেলা না করে গুরুত্বসহকারে শিশুকে এই তিনটি টিকা দিতে হবে।
হেপাটাইটিস বি বা হেপ বি
হেপাটাইটিস বি লিভারের একটি মারাত্মক সংক্রামক রোগ, যা হেপাটাইটিস বি ভাইরাস দিয়ে সংক্রমিত হয়। তাই হেপাটাইটিস বি টিকা জরুরি। বর্তমানে ইপিআই কার্যক্রমে পাঁচটি রোগ, যেমন ডিপথেরিয়া, হুপিং কাশি, ধনুষ্টংকার, হেপাটাইটিস বি ও হিমোফাইলাস বা ইনফ্লুয়েঞ্জা-বির বিরুদ্ধে একত্রে প্যান্টাভ্যালেন্ট ভ্যাকসিন দেওয়া হয়।
হাম
এই টিকা শিশুর স্বাস্থ্যের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এটি একটি মারাত্মক পীড়াদায়ক রোগ। সাধারণত শিশুর ১৫ মাস বয়সে এই টিকা দেওয়া হয়। কোনো কারণে টিকা দেওয়ার আগেই যদি শিশুর হাম হয়, তারপরও টিকা দিতে হবে।
টাইফয়েড
টাইফয়েডের কারণে শিশুর যেকোনো অঙ্গ বিকল হতে পারে এবং শিশু স্বাভাবিক কার্যক্রম হারিয়ে ফেলতে পারে। টাইফয়েডের টিকা শিশুকে এসব ঝুঁকি থেকে রক্ষা করে। দুই বছর বয়সের পর এই টিকা তিন বছর পরপর দিতে হয়।
রোটা ভাইরাস
শিশুদের ডায়রিয়া হওয়া স্বাভাবিক বিষয়। ডায়রিয়া হলে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে সঠিক পরিচর্যায় তারা সুস্থ হয়ে ওঠে। কিন্তু রোটা ভাইরাসজনিত ডায়রিয়ায় শিশু অনেক বেশি অসুস্থ হয়ে পড়তে পারে। তাই রোটা ভাইরাস টিকা শিশুদের জন্য জরুরি। এই টিকা মুখে খাওয়ানো হয়।
নিউ মোকক্কাল ভ্যাকসিন
বর্তমানে চিকিৎসাবিজ্ঞানে নিউমোনিয়াকে শিশুমৃত্যু হারের অন্যতম কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। নিউ মোকক্কাল ভ্যাকসিন এই রোগ প্রতিরোধে কাজ করে।
ইনফ্লুয়েঞ্জা ভ্যাকসিন
ইনফ্লুয়েঞ্জা একটি ছোঁয়াচে রোগ। এটি প্রধানত মানুষের শ্বাসতন্ত্রকে আক্রমণ করে। তাই শিশুদের এই টিকা দেওয়া জরুরি, বিশেষ করে যেসব শিশুর হাঁপানি বা অ্যালার্জিজনিত বিভিন্ন রোগ থাকে।
চিকেন পক্স
চিকেন পক্স বা জলবসন্ত একটি ভাইরাস সংক্রামক রোগ। এই রোগের জটিলতা অনেক বেশি। তাই রোগ থেকে বাঁচতে বা রোগের তীব্রতা কমাতে এই টিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
লেখক: কনসালট্যান্ট, শিশু বিভাগ, রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল
সুস্থভাবে জীবনযাপন করার জন্য দেহের পুষ্টির চাহিদা মেটাতে হয়। সাধারণত পুষ্টির কথা ভাবলে মনে করি সবটুকুই আমার খাদ্য থেকেই অর্জন করি। তবে এই ধারণাটি ভুল বললেন বিজ্ঞানীরা। নতুন গবেষণায় বলা যায়, মানুষ কিছু পুষ্টি বায়ু থেকেও শোষণ করতে পারে!
৩ দিন আগেবিশ্বজুড়ে কোটি কোটি মানুষকে প্রভাবিত করে উচ্চ রক্তচাপ বা হাইপারটেনশন। হৃদরোগ, স্ট্রোক, কিডনির ক্ষতি এবং দৃষ্টি শক্তিসহ বেশ কিছু গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যার প্রধান ঝুঁকির কারণ এটি। এই ধরনের ঝুঁকি কমানোর জন্য স্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রা ও বিভিন্ন ধরনের ওষুধ সেবনের পরামর্শ দেন চিকিৎসকেরা। তবে সম্প্রতি যুক্তরাষ
৪ দিন আগেডেঙ্গু ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে আরও ১ হাজার ৩৮৯ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। এ নিয়ে চলতি বছরে আজ রোববার পর্যন্ত এ রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হলো ৭৯ হাজার ৯৮৪ জন। মারা গেছে আরও আটজন।
৫ দিন আগেএমন সময়ে এই গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশিত হলো, যখন ইংল্যান্ডে একটি লক্ষ্যভিত্তিক ফুসফুস স্বাস্থ্য পরীক্ষা কর্মসূচি চালু করা হয়েছে। এই কর্মসূচির লক্ষ্য ২০২৫ সালের মার্চের মধ্যে সম্ভাব্য ৪০ শতাংশ ব্যক্তিকে স্ক্রিনিং করা এবং ২০৩০ সালের মধ্যে সবাইকে এর আওতায় আনা।
৬ দিন আগে