জ্বর হয়েছে?

ডা. শাহেদ সাব্বির আহমেদ
প্রকাশ : ০২ অক্টোবর ২০২১, ০৯: ০০
আপডেট : ০২ অক্টোবর ২০২১, ১৬: ৫১

জ্বর কোনো রোগ নয়, রোগের লক্ষণ। বিভিন্ন কারণে আমাদের জ্বর হয়ে থাকে। বড়দের জ্বর সচরাচর সুনির্দিষ্ট কারনেই হয়ে থাকে। অপরিণত স্নায়ুতন্ত্র তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে ভারসাম্য রক্ষা করতে না পারার কারণে অনেক সময় শিশুদের তীব্র জ্বর হয়। এ ছাড়া বড়দের যেসব কারণে জ্বর হয়, সেসব কারণে শিশুদেরও জ্বর হতে পারে।

বর্তমানে ডেঙ্গু জ্বরের প্রকোপ অনেক বেড়ে গেছে। শিশুরাও অনেক আক্রান্ত হচ্ছে। ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর তীব্র জ্বর, চোখের পেছনে ব্যথা, গা ব্যথা ও দুর্বলতা বোধ হয়। জটিলতা হিসেবে রক্তক্ষরণ ও রক্তচাপ কমে গিয়ে মৃত্যুঝুঁকি দেখা দিতে পারে।

যেভাবে জ্বর কমানো যায়
তীব্র জ্বর যে কারণেই হোক তা কমানোর জন্য দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে। দীর্ঘ সময় ধরে তীব্র জ্বর অত্যন্ত ক্ষতিকর হতে পারে; বিশেষ করে শিশুদের জ্বরজনিত খিঁচুনি হতে পারে, যা মস্তিষ্কের ওপর উচ্চ তাপমাত্রার প্রভাবে হয়ে থাকে।

  • কুসুম গরম পানি দিয়ে ভেজানো কাপড় ব্যবহার করে হাত-পা মুছে দেওয়া যেতে পারে।
  • জলপট্টি ও মাথায় পানি ঢালার মাধ্যমেও জ্বর কমানোর চেষ্টা করা যেতে পারে।
  • জ্বর কমাতে প্যারাসিটামল একটি কার্যকর ওষুধ।
  • যেসব রোগী মুখে ওষুধ খেতে পারবে না, তাদের জন্য সাপোজিটরি ব্যবহার করা যেতে পারে। সাপোজিটরি তুলনামূলক দ্রুত কাজ করে। তবে শিশুদের
  • ক্ষেত্রে লক্ষ রাখতে হবে, বয়স ও ওজন হিসাবে মাত্রানুযায়ী যথাস্থানে সম্পূর্ণরূপে প্রয়োগ হয়েছে কি না। অতিরিক্ত প্রয়োগে লিভারের সমস্যা দেখা দিতে পারে।

জ্বরে যা করতে হবে

  • জ্বর হলে শরীরে পানিস্বল্পতা দেখা দিতে পারে। এ জন্য রোগীকে প্রচুর পরিমাণে পানি ও তরল খাবার খেতে দিতে হবে।
  • ঘরে প্রচুর বাতাসের চলাচল নিশ্চিত করতে হবে।
  • ঢিলেঢালা পোশাক পরিধান করতে হবে, যাতে শরীর থেকে তাপ সহজেই পরিবেশে ছড়িয়ে পড়তে পারে।

চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে লক্ষণ ও পরীক্ষা-নিরীক্ষার ভিত্তিতে ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর নির্ণয় হলে অ্যান্টিবায়োটিক সেবন করতে হবে। ভাইরাসজনিত জ্বর নির্দিষ্ট সময় পরে স্বাভাবিকভাবেই সেরে যায়।

ডেঙ্গু একটি ভাইরাসজনিত জ্বর। ওষুধ হিসেবে প্যারাসিটামল জ্বর কমানোর জন্য নিরাপদ। ডেঙ্গু জ্বর হলে অণুচক্রিকা বা প্লাটিলেটের সংখ্যা কমে যেতে পারে, তাই অ্যাসপিরিন-জাতীয় ওষুধ ব্যবহার বিপজ্জনক।

এ ছাড়া বিভিন্ন কারণে জ্বর হতে পারে। জ্বরের কারণ জানতে বিভিন্ন পরীক্ষার প্রয়োজন হতে পারে। তবে দীর্ঘমেয়াদি রোগের কারণে সাধারণত তীব্র জ্বর হয় না। সে ক্ষেত্রে রোগ নির্ণয় সাপেক্ষে চিকিৎসা গ্রহণ করতে হবে।

লেখক: বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত