ডা. তাহমিদা খানম
বিয়ের পর দম্পতিরা স্বাভাবিকভাবে সন্তান কামনা করে থাকেন। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে সুখী দাম্পত্য জীবনের অন্যতম নিয়ামক বিবেচিত হয় সন্তান। স্বাভাবিক উপায়ে সন্তান ধারণের ঘটনা না ঘটলে ছন্দে বাঁধা জীবনে তাল কেটে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দেয়। দুঃখজনক হলেও সত্য, বর্তমানে পৃথিবীর প্রতি সাত জোড়া দম্পতির মধ্যে এক জোড়া দম্পতি বন্ধ্যত্বের শিকার। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসাব অনুযায়ী, বিশ্বে বর্তমানে ৪০ থেকে ৬০ শতাংশ দম্পতির ক্ষেত্রে পুরুষের সমস্যার কারণে সন্তান ধারণ হয় না। পুরুষের বন্ধ্যত্বের কারণ, লক্ষণ ও নিরাময়ে করণীয়গুলো মিলিয়ে নিন:
পুরুষের বন্ধ্যত্বের কারণ
কমপক্ষে এক বছর সন্তান ধারণে সক্ষম নারী সঙ্গীর সঙ্গে নিয়মিত অসংরক্ষিত যৌনমিলন সত্ত্বেও নারী সঙ্গীটি গর্ভধারণে ব্যর্থ হলে সে পুরুষকে বন্ধ্য বলা যাবে। পুরুষের ফার্টিলিটি বা উর্বরতার কয়েকটি প্রভাবক রয়েছে। যেমন:
১. ইরেকটাইল ডিসফাংশন বা পুরুষত্বহীনতা
২. দুর্বল যৌনাকাঙ্ক্ষা
৩. শুক্রাণুজনিত সমস্যা। এর মধ্যে আছে—
৪. পুরুষ হরমোন বা টেস্টোস্টেরন হরমোনের মাত্রা কম থাকা।
এ কারণগুলো কোনো কোনো ক্ষেত্রে জন্মগত, জিনগত বা দীর্ঘমেয়াদি অসুখ ও এর চিকিৎসাজনিত ফল থেকে হতে পারে। আবার কখনো ব্যক্তিগত ক্ষতিকর জীবনাচরণ, যৌনরোগ, পেশাগত ও পরিবেশগত ঝুঁকি ইত্যাদি কারণেও হতে পারে। এ ধরনের গুরুত্বপূর্ণ কিছু কারণ হলো—
পুরুষের বন্ধ্যত্বের লক্ষণ
বন্ধ্যত্বে আক্রান্ত পুরুষের মধ্যে যে লক্ষণগুলো প্রকাশ পেতে পারে—
বন্ধ্যত্ব নিরাময়ে করণীয়
সঠিক কারণ নির্ণয় সাপেক্ষে পুরুষের বন্ধ্যত্বের অধিকাংশ সমস্যাই নিরাময়যোগ্য। বিভিন্ন ধরনের আধুনিক চিকিৎসার পাশাপাশি খাদ্যাভ্যাস ও জীবনযাপন পদ্ধতির সঠিক পরিমার্জন দরকার।
১. ওষুধ
বন্ধ্যত্ব চিকিৎসায় ওষুধের প্রয়োগ করা হয় মূলত হরমোনজনিত সমস্যার ক্ষেত্রে এবং পুরুষত্বহীনতা দূর করে শুক্রাণুর সংখ্যাকে প্রভাবিত করার জন্য। এ ছাড়া যৌননালির সংক্রমণের চিকিৎসায় অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করা হয়।
২. সার্জারি
পুরুষ প্রজননতন্ত্রের কিছু কিছু সমস্যায় সার্জারির মাধ্যমে বন্ধ্যত্বের চিকিৎসা করা হয়। এর মধ্যে ভ্যারিকোসিল অপারেশন, বন্ধ হয়ে যাওয়া ভাস ডিফারেন্স খুলে দেওয়া ইত্যাদি। এ ছাড়া সরাসরি অণ্ডকোষ থেকে শুক্রাণু সংগ্রহ করে প্রজননের সহায়ক বিভিন্ন পদ্ধতিতে ব্যবহার করা যায়।
৩. সহায়ক প্রজনন পদ্ধতি
ডিম্বাণুকে যেসব পদ্ধতিতে মানবদেহের বাইরে নিষিক্ত করার ব্যবস্থা করা হয়, সে পদ্ধতিগুলোকে সহায়ক প্রজনন বলে। ইন-ভিট্রো-ফার্টিলাইজেশন, ইন্ট্রোসাইটোপ্লাজমিক স্পার্ম ইনজেকশন ইত্যাদি এ ধরনের চিকিৎসা পদ্ধতির অন্তর্গত।
৪. খাদ্যাভ্যাস ও জীবনাচরণ
উর্বরতা বৃদ্ধিকারী খাদ্য়পরিকল্পনা অনুসরণ পুরুষের বন্ধ্যত্ব প্রতিরোধ ও প্রতিকারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। প্রতিদিন সুষম ও স্বাস্থ্যকর খাবার খেতে হবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন ডি, ফলিক অ্যাসিড, জিংক, সেলেনিয়াম-সমৃদ্ধ খাবার, যেমন মাছ, মাংস, ডিম, দুধ ও দুধজাত খাবার, তাজা ও সবুজ শাকসবজি, ফল ইত্যাদি খাদ্যতালিকায় থাকতে হবে।
৫. ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখাসহ নিয়মিত
শরীরচর্চার চেষ্টা করতে হবে। ধূমপান, অ্যালকোহল ও অন্যান্য নেশাজাতীয় দ্রব্য় গ্রহণ বাদ দিতে হবে। উচ্চ তাপমাত্রার স্থানে দীর্ঘক্ষণ অবস্থান না করা, সামাজিকভাবে গ্রহণযোগ্য যৌন অভ্য়াস গড়ে তোলায় মনোযোগী হতে হবে।
ডা. তাহমিদা খানম, মেডিসিন বিশেষজ্ঞ, খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল
ডাক্তারের পরামর্শ সম্পর্কিত আরও পড়ুন:
বিয়ের পর দম্পতিরা স্বাভাবিকভাবে সন্তান কামনা করে থাকেন। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে সুখী দাম্পত্য জীবনের অন্যতম নিয়ামক বিবেচিত হয় সন্তান। স্বাভাবিক উপায়ে সন্তান ধারণের ঘটনা না ঘটলে ছন্দে বাঁধা জীবনে তাল কেটে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দেয়। দুঃখজনক হলেও সত্য, বর্তমানে পৃথিবীর প্রতি সাত জোড়া দম্পতির মধ্যে এক জোড়া দম্পতি বন্ধ্যত্বের শিকার। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসাব অনুযায়ী, বিশ্বে বর্তমানে ৪০ থেকে ৬০ শতাংশ দম্পতির ক্ষেত্রে পুরুষের সমস্যার কারণে সন্তান ধারণ হয় না। পুরুষের বন্ধ্যত্বের কারণ, লক্ষণ ও নিরাময়ে করণীয়গুলো মিলিয়ে নিন:
পুরুষের বন্ধ্যত্বের কারণ
কমপক্ষে এক বছর সন্তান ধারণে সক্ষম নারী সঙ্গীর সঙ্গে নিয়মিত অসংরক্ষিত যৌনমিলন সত্ত্বেও নারী সঙ্গীটি গর্ভধারণে ব্যর্থ হলে সে পুরুষকে বন্ধ্য বলা যাবে। পুরুষের ফার্টিলিটি বা উর্বরতার কয়েকটি প্রভাবক রয়েছে। যেমন:
১. ইরেকটাইল ডিসফাংশন বা পুরুষত্বহীনতা
২. দুর্বল যৌনাকাঙ্ক্ষা
৩. শুক্রাণুজনিত সমস্যা। এর মধ্যে আছে—
৪. পুরুষ হরমোন বা টেস্টোস্টেরন হরমোনের মাত্রা কম থাকা।
এ কারণগুলো কোনো কোনো ক্ষেত্রে জন্মগত, জিনগত বা দীর্ঘমেয়াদি অসুখ ও এর চিকিৎসাজনিত ফল থেকে হতে পারে। আবার কখনো ব্যক্তিগত ক্ষতিকর জীবনাচরণ, যৌনরোগ, পেশাগত ও পরিবেশগত ঝুঁকি ইত্যাদি কারণেও হতে পারে। এ ধরনের গুরুত্বপূর্ণ কিছু কারণ হলো—
পুরুষের বন্ধ্যত্বের লক্ষণ
বন্ধ্যত্বে আক্রান্ত পুরুষের মধ্যে যে লক্ষণগুলো প্রকাশ পেতে পারে—
বন্ধ্যত্ব নিরাময়ে করণীয়
সঠিক কারণ নির্ণয় সাপেক্ষে পুরুষের বন্ধ্যত্বের অধিকাংশ সমস্যাই নিরাময়যোগ্য। বিভিন্ন ধরনের আধুনিক চিকিৎসার পাশাপাশি খাদ্যাভ্যাস ও জীবনযাপন পদ্ধতির সঠিক পরিমার্জন দরকার।
১. ওষুধ
বন্ধ্যত্ব চিকিৎসায় ওষুধের প্রয়োগ করা হয় মূলত হরমোনজনিত সমস্যার ক্ষেত্রে এবং পুরুষত্বহীনতা দূর করে শুক্রাণুর সংখ্যাকে প্রভাবিত করার জন্য। এ ছাড়া যৌননালির সংক্রমণের চিকিৎসায় অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করা হয়।
২. সার্জারি
পুরুষ প্রজননতন্ত্রের কিছু কিছু সমস্যায় সার্জারির মাধ্যমে বন্ধ্যত্বের চিকিৎসা করা হয়। এর মধ্যে ভ্যারিকোসিল অপারেশন, বন্ধ হয়ে যাওয়া ভাস ডিফারেন্স খুলে দেওয়া ইত্যাদি। এ ছাড়া সরাসরি অণ্ডকোষ থেকে শুক্রাণু সংগ্রহ করে প্রজননের সহায়ক বিভিন্ন পদ্ধতিতে ব্যবহার করা যায়।
৩. সহায়ক প্রজনন পদ্ধতি
ডিম্বাণুকে যেসব পদ্ধতিতে মানবদেহের বাইরে নিষিক্ত করার ব্যবস্থা করা হয়, সে পদ্ধতিগুলোকে সহায়ক প্রজনন বলে। ইন-ভিট্রো-ফার্টিলাইজেশন, ইন্ট্রোসাইটোপ্লাজমিক স্পার্ম ইনজেকশন ইত্যাদি এ ধরনের চিকিৎসা পদ্ধতির অন্তর্গত।
৪. খাদ্যাভ্যাস ও জীবনাচরণ
উর্বরতা বৃদ্ধিকারী খাদ্য়পরিকল্পনা অনুসরণ পুরুষের বন্ধ্যত্ব প্রতিরোধ ও প্রতিকারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। প্রতিদিন সুষম ও স্বাস্থ্যকর খাবার খেতে হবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন ডি, ফলিক অ্যাসিড, জিংক, সেলেনিয়াম-সমৃদ্ধ খাবার, যেমন মাছ, মাংস, ডিম, দুধ ও দুধজাত খাবার, তাজা ও সবুজ শাকসবজি, ফল ইত্যাদি খাদ্যতালিকায় থাকতে হবে।
৫. ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখাসহ নিয়মিত
শরীরচর্চার চেষ্টা করতে হবে। ধূমপান, অ্যালকোহল ও অন্যান্য নেশাজাতীয় দ্রব্য় গ্রহণ বাদ দিতে হবে। উচ্চ তাপমাত্রার স্থানে দীর্ঘক্ষণ অবস্থান না করা, সামাজিকভাবে গ্রহণযোগ্য যৌন অভ্য়াস গড়ে তোলায় মনোযোগী হতে হবে।
ডা. তাহমিদা খানম, মেডিসিন বিশেষজ্ঞ, খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল
ডাক্তারের পরামর্শ সম্পর্কিত আরও পড়ুন:
উন্নত দেশগুলো, এমনকি উন্নয়নশীল দেশগুলোতেও টাইফয়েড এখন খুব কম দেখা যায়। কিন্তু প্রাচীন এই রোগের ফলে আধুনিক বিশ্ব তো বটেই, দুনিয়াজুড়ে বেশ বিপজ্জনক হয়ে উঠছে আবারও। হাজার বছর ধরে মানুষের প্রাণ হন্তারক হিসেবে ‘খুনির’ কাজ করে এসেছে এর জীবাণু। সাম্প্রতিক এক গবেষণা দেখিয়েছে, টাইফয়েডের জন্য দায়ী
৪ দিন আগেআমাদের অনেকের প্রায় অনেক সময় নাক খোঁটানোর অভ্যাস আছে। আপাতদৃষ্টে বিষয়টি খুব সাধারণ মনে হলেও গবেষকেরা বলছেন, নাক খোঁটানোর বিষয়টি মোটেও নিরাপদ নয়। ২০২২ সালে বিজ্ঞানবিষয়ক জার্নাল নেচারে প্রকাশিত এক গবেষণায় নাক খোঁটার সঙ্গে স্মৃতিভ্রংশ বা ডিমেনশিয়ার ঝুঁকির ক্ষীণ কিন্তু সম্ভাব্য যোগসূত্রের কথা বলা হয়েছে।
৪ দিন আগেদীর্ঘদিন ধরে নারীদেহের এক প্রত্যঙ্গকে ‘অপ্রয়োজনীয়’ বলে মনে করা হতো। তবে নতুন এক গবেষণায় জানা যায়, এই প্রত্যঙ্গটিই নারীর ডিম্বাশয়ের বিকাশ ও প্রজনন ক্ষমতার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
৪ দিন আগেনানা কারণে ঘুম নেই, মেজাজ খিটখিটে, অতিরিক্ত রাগ আর কোনো কিছুতেই প্রশান্তি নেই। এসব কারণে ইদানীং মানসিক সমস্যার প্রকোপ দেখা যাচ্ছে। মানসিক সমস্যা মানুষেরই হয়। বিশেষ করে যুবসমাজ এ সমস্যায় ভুগছে মারাত্মকভাবে। যে কারণেই হোক না কেন, মানসিক সমস্যা রোগী নিজে বুঝতে পারে না। তাকে বলাও যায় না...
৬ দিন আগে