Ajker Patrika

কর্মক্ষেত্রে ক্যানসারের উপাদান এখন বৈশ্বিক সমস্যা

আপডেট : ১১ অক্টোবর ২০২৪, ২০: ২৫
কর্মক্ষেত্রে ক্যানসারের উপাদান এখন বৈশ্বিক সমস্যা

পশ্চিম ইউরোপ এবং অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের কর্মক্ষেত্রে কার্সিনোজেনের সঙ্গে সম্পৃক্ত ক্যানসারে অন্য যেকোনো অঞ্চলের চেয়ে বেশি মানুষ মারা যায়। কার্সিনোজেন হলো ক্যানসার সৃষ্টিকারী বিভিন্ন উপাদান। এসব উপাদান প্রায় সময়ই কর্মক্ষেত্রে থেকে মানুষের শরীরে প্রবেশ করে। 

একটি পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, কর্মক্ষেত্রের কার্সিনোজেন থেকে সৃষ্ট ক্যানসারের ক্ষেত্রে মধ্য ইউরোপ এবং এশিয়ার ধনী দেশগুলো পশ্চিম ইউরোপ, অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডকে প্রায় ছুঁয়ে ফেলছে। 

পেশাগত কারণে সৃষ্ট ক্যানসারের অনুসন্ধান করে অ্যাসবেস্টস, আর্সেনিক, বেরিলিয়াম, বেনজিনসহ এক ডজনেরও বেশি দূষিত পদার্থের সন্ধান পেয়েছে দ্য গ্লোবাল বার্ডেন অব ডিজিজ। ২০২১ সালে প্রকাশিত তাদের একটি পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, পশ্চিম ইউরোপ এবং অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডে এই ধরনের ক্যানসার থেকে মৃত্যুর হার সবচেয়ে বেশি ছিল। এর মধ্যে পশ্চিম ইউরোপে গত প্রায় ৩০ বছরেরও বেশি সময় ধরে কর্মক্ষেত্র থেকে সৃষ্ট ক্যানসারে প্রতি লাখে সর্বাধিক সংখ্যক মানুষের মৃত্যুর ঘটনা ঘটে এসেছে। অন্যদিকে সিঙ্গাপুর, জাপান, ব্রুনাই এবং দক্ষিণ কোরিয়াসহ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার উচ্চ আয়ের দেশগুলোতে এ ধরনের ক্যানসারে মৃত্যুর হার ১৯৯০ সাল থেকে এখন পর্যন্ত তিন গুণ হয়েছে। 

মৃত্যুর এই হার বেড়েছে মধ্য ইউরোপ এবং পূর্ব এশিয়াতেও। ১৯৯০ সাল থেকে মধ্য ইউরোপে কর্মক্ষেত্রজনিত কারণে ক্যানসারের হার দ্বিগুণ হয়েছে। আর পূর্ব এশিয়াতে হয়েছে আড়াই গুণ। আরেকটি বিষয় হলো—উল্লিখিত এসব অঞ্চল এবং দেশগুলোর বেশির ভাগেরই বিশ্বব্যাংকের মানদণ্ড অনুযায়ী একটি বৃহৎ উৎপাদন অর্থনীতি রয়েছে। 

পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, সবচেয়ে বড় উৎপাদনকারী অর্থনীতির ৩০ শতাংশ দেশে কর্মক্ষেত্রে কার্সিনোজেনের কারণে ক্যানসারে বেশি মানুষ মারা যায়। 

অনেক চাকরি থেকেই এই ধরনের কার্সিনোজেন মানুষের শরীরে প্রবেশ করতে পারে। উদাহরণস্বরূপ বেনজিনের কথাই বলা যাক—এটি এমন একটি কার্সিনোজেন, যা সাধারণত ধূমপানের মাধ্যমে মানুষের শরীরে প্রবেশ করে। পাশাপাশি এটি আঠালো পদার্থ, পরিষ্কারকারক পণ্য এবং পেইন্ট স্ট্রিপারগুলো থেকে শরীরের সংস্পর্শে আসতে পারে। উৎপাদন কাজের সঙ্গে জড়িত অনেক শ্রমিকই কর্মক্ষেত্রে বেরিলিয়ামের সংস্পর্শে আসেন। 

দেশগুলো এসব পদার্থের নিঃসরণ সীমিত করার জন্য পদক্ষেপ নিচ্ছে। ‘অর্গানাইজেশন ফর ইকোনমিক কো-অপারেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের’ (ওইসিডি) আওতাধীন প্রায় সব দেশই অ্যাসবেস্টস নিষিদ্ধ করেছে। যেমন—অস্ট্রেলিয়ান সরকার কৃত্রিম পাথর টাইলসের ওপর নিষেধাজ্ঞা চালু করেছে, যা ২০২৫ সাল থেকে কার্যকর হবে। পাথর প্রকৌশলের মাধ্যমে সিলিকার নিঃসরণ ঘটে। এটি সিলিকোসিস সৃষ্টির জন্য সবচেয়ে দায়ী। এর ফলে ফুসফুসে দাগ হয়ে যায় এবং কর্মক্ষমতা কমে যায়। এটি ফুসফুসের ক্যানসারের সঙ্গে যুক্ত।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত