আলজেরিয়া উপকূলে ২ পর্যটককে গুলি করে হত্যা, মরক্কোতে উত্তেজনা

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ০১ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ২০: ২২
Thumbnail image

জেট স্কিতে চেপে মরক্কোর সামুদ্রিক জলসীমায় ঘুরছিলেন চার পর্যটক। তাঁরা সবাই একই সঙ্গে মরক্কো ও ফ্রান্সের দ্বৈত নাগরিক। ঘুরতে ঘুরতে চলে গিয়েছিলেন আলজেরিয়ার জলসীমায়। পরে আলজেরীয় কোস্টগার্ড গুলি করে তাঁদের দুজনকে হত্যা করেছে। 

শুক্রবার সন্ধ্যায় এ বিষয়ে বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চারজনের মধ্যে দুজনকে হত্যার পাশাপাশি একজনকে গ্রেপ্তারও করেছে আলজেরীয় কোস্টগার্ড সদস্যরা। 

বিতর্কিত পশ্চিম সাহারা নিয়ে আলজেরিয়া এবং মরক্কোর মাঝে উত্তেজনার দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে। এই উত্তেজনার সূত্র ধরেই ১৯৯৪ সালে দুই দেশের সীমান্ত বন্ধ হয়ে যায়। দুই বছর আগে শত্রুতা করার অভিযোগ তুলে মরক্কোর সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্কও ছিন্ন করেছে আলজেরিয়া। 

বিবিসি জানিয়েছে, সর্বশেষ এক জেলে সাগরে গুলিবিদ্ধ একটি মরদেহের ভিডিও পোস্ট করলে উত্তেজনা শুরু হয় মরক্কোতে। 

চার পর্যটকের মধ্যে পালিয়ে মরক্কোতে ফিরে আসতে পেরেছেন শুধু মোহামেদ কিসি নামে একজন। গুলিতে নিহত দুজনের মধ্যে একজন আবার কিসির ভাই। 

স্থানীয় গণমাধ্যমকে কিসি বলেন, ‘পথ হারিয়ে আলজেরিয়ার সীমানায় চলে যাওয়ার আগ পর্যন্ত আমরা আমাদের যাত্রা অব্যাহত রেখেছিলাম।’ 

কিসি জানান, একপর্যায়ে তাঁদের জেট স্কিগুলোর জ্বালানি শেষ হয়ে গিয়েছিল। তিনি বলেন, ‘আমরা জানতাম, ততক্ষণে আমরা আলজেরিয়ার জলসীমায়। কারণ আমাদের দিকে কালো রঙের একটি আলজেরীয় ডিঙি এগিয়ে আসছিল। আর ওই ডিঙি থেকেই আমাদের দিকে গুলি ছোড়া হয়।’ 

তিনি বলেন, ‘ভাগ্য গুনে আমি বেঁচে গেছি। কিন্তু তারা আমার ভাই এবং এক বন্ধুকে গুলি করে হত্যা করেছে।’ 

কিসি দাবি করেন, কোস্টগার্ডের নজরে আসার পর তাঁরা পালানোর কোনো চেষ্টা করেননি। গুলিবিদ্ধ হওয়ার আগে তাঁর ভাই বিলাল কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করেছিলেন। 

কিসি জানান, ভাই ও বন্ধু নিহত হওয়া ছাড়াও গুলিবিদ্ধ অবস্থায় আরও এক বন্ধুকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যায় কোস্টগার্ড। 

এ ঘটনার পর মরক্কোর দিকে প্রাণপণে সাঁতরাতে শুরু করেন কিসি। একসময় মরক্কোর কোস্টগার্ড সদস্যরা তাঁকে উদ্ধার করে। 

কিসির ক্ষুব্ধ চাচাতো ভাই আব্দেলকরিম মরক্কোর কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি করেছেন, যেন এই ঘটনাটিকে আন্তর্জাতিক আদালতে নিয়ে যাওয়া হয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তিনি লিখেছেন, ‘ওরা আমার ভাই বিলালকে হত্যা করেছে। আলজেরিয়ার জলসীমায় চলে যাওয়াই ছিল তার একমাত্র অপরাধ। সে তার বন্ধুদের সঙ্গে ছুটি কাটাচ্ছিল।’ 

এ ঘটনায় বিলাল ছাড়াও নিহত অপরজনের নাম আব্দেলালি মারচুয়ার। তাঁর মরদেহ এখনো আলজেরিয়ার জলসীমায় রয়ে গেছে। 

এ বিষয়ে মরক্কোর সরকারের মুখপাত্র কোনো মন্তব্য করতে চাননি। আলজেরিয়া কর্তৃপক্ষেরও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। দুই দেশের মধ্যে প্রায় ২ হাজার কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্ত রয়েছে। ফরাসি উপনিবেশ থেকে মুক্ত হওয়ার পর থেকেই সীমান্ত নিয়ে দুই দেশের মধ্যে শত্রুতার সূত্রপাত হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত