মহামারির ধাক্কা কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়াল বিশ্ব পর্যটন: জাতিসংঘের প্রতিবেদন

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ : ২০ জানুয়ারি ২০২৪, ১৩: ০৫
আপডেট : ২০ জানুয়ারি ২০২৪, ১৩: ৩৭

জাতিসংঘের বিশ্ব পর্যটন সংস্থা (ইউএনডব্লিউটিও) বলেছে, এশিয়ায় পর্যটন খাত প্রত্যাশিতভাবে ঘুরে দাঁড়ানোর ফলে ২০২৪ সালে বিশ্ব পর্যটন মহামারির আগের পর্যায়ে পৌঁছাবে।

গতকাল শুক্রবার মাদ্রিদভিত্তিক সংস্থাটি এক বিবৃতিতে বলেছে , বিশ্ব পর্যটন ২০২৪ সালে মহামারির আগের পর্যায়ে পুরোপুরি ফিরতে পারবে বলে আশা করা হচ্ছে। প্রাথমিক অনুমান বলছে, ২০১৯ সালে পর্যটন যে স্তরে ছিল, ২০২৪ সালের শেষে তার চেয়ে ২ শতাংশ বৃদ্ধি ঘটবে।

ইউএনডব্লিউটিওর ওয়েবসাইটে বলছে, গত বছরের পরিসংখ্যান অনুসারে, ১৩০ কোটি পর্যটক বিদেশ ভ্রমণ করেছেন, যা ২০২২ সালের তুলনায় ৪৪ শতাংশ বেশি এবং ২০১৯ সালের পরিমাণের ৮৮ শতাংশ। এশিয়ার পর্যটনশিল্প শক্তভাবে ঘুরে দাঁড়ালেও মধ্যপ্রাচ্য রয়েছে আরও ভালো অবস্থানে। ইউএনডব্লিউটিওর মতে, এটিই একমাত্র অঞ্চল, যা মহামারির আগে অর্থাৎ, ২০১৯ সালের চেয়েও পর্যটনে এগিয়েছে ২২ শতাংশ।

ইউএনডব্লিউটিওর প্রকাশিত বছরের প্রথম পরিসংখ্যান বলছে, ২০২৩ সালে পর্যটন খাতে সবচেয়ে শক্ত অবস্থানে ছিল মধ্যপ্রাচ্য, ইউরোপ ও আফ্রিকা। ২০১৯ সালের চেয়ে ২০২৩ সালে পর্যটন খাতে কেবল এগিয়েছে মধ্যপ্রাচ্য।

বিশ্বের সবচেয়ে বেশি পর্যটকের পদভারে মুখর থাকা অঞ্চল ইউরোপও অনেকটাই কাটিয়ে উঠেছে মহামারির বিপর্যয়। গত বছর ইউরোপ ভ্রমণে গিয়েছে ২০১৯ সালের পরিমাণের প্রায় ৯৪ শতাংশ পর্যটক। ইউরোপের অভ্যন্তরীণ পর্যটকের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের ভ্রমণপিপাসুরাও ঘুরতে গেছেন ইউরোপে।

গত বছর মহামারির আগের মাত্রার ৯৬ শতাংশ পর্যটক পেয়েছে আফ্রিকা। আর যুক্তরাষ্ট্র পৌঁছেছে ৯০ শতাংশে।

এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের বেশ কয়েকটি পর্যটনকেন্দ্র আবারও উন্মুক্ত হওয়ায় অঞ্চলটি গত বছর প্রাক্‌মহামারির ৬৫ শতাংশ পর্যটক পেয়েছে। তবে এই বৃহৎ অঞ্চলের সব জায়গার চিত্র এক নয়। দক্ষিণ এশিয়া যেখানে ২০১৯ সালের তুলনায় ৮৭ শতাংশ পর্যটক পেয়েছে, সেখানে উত্তর এশিয়ায় এসেছে ৫৫ শতাংশ পর্যটক।

ভিসা-সুবিধা এবং আকাশপথে উন্নত পরিবহনব্যবস্থার কারণে ২০২৪ সালে চীনে অভ্যন্তরীণ এবং আন্তর্জাতিক পর্যটন ত্বরান্বিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে। ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, নেদারল্যান্ডস, স্পেন ও মালয়েশিয়ার নাগরিকদের জন্য ২০২৪ সালের ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত এক বছরের জন্য ভিসামুক্ত ভ্রমণের ব্যবস্থা করছে চীন।

চলমান ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধ এবং অস্থিতিশীল বৈশ্বিক অর্থনীতির দিকে নির্দেশ করে ইউএনডব্লিউটিও বলেছে, পর্যটন খাতে এশিয়া কত দ্রুত ঘুরে দাঁড়াতে পারবে তা নির্ভর করছে বিদ্যমান অর্থনৈতিক ও ভূরাজনৈতিক ঝুঁকির ওপর।

ইউএনডব্লিউটিওর সেক্রেটারি জেনারেল জুরাব পোলোলিকাশভিলি বলেছেন, সর্বশেষ পরিসংখ্যানে পর্যটনের দ্রুত বিকাশের চিত্র উঠে এসেছে। ২০২৪ সালের শেষ নাগাদ এই সংখ্যা মহামারির আগের সময়কেও ছাপিয়ে যেতে পারবে বলে আশা করা হচ্ছে। পর্যটন খাতের ঘুরে দাঁড়ানোর প্রভাব পড়েছে অর্থনীতি, প্রবৃদ্ধি এবং সব সম্প্রদায়ের মানুষের কর্মসংস্থান বৃদ্ধির সুযোগে। পর্যটনশিল্পের টেকসই উন্নতিতে প্রয়োজনীয় করণীয়গুলোও মনে করিয়ে দিয়েছে এই পরিসংখ্যান।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত