Ajker Patrika

সাংবিধানিক আদালতের রায়ে অবশেষে ক্ষমতাচ্যুত দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট

অনলাইন ডেস্ক
দক্ষিণ কোরিয়ার অভিশংসিত প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওল। ছবি: এএফপি
দক্ষিণ কোরিয়ার অভিশংসিত প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওল। ছবি: এএফপি

দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওল অবশেষে ক্ষমতাচ্যুত হয়েছেন। দেশটির সাংবিধানিক আদালত আজ শুক্রবার এ রায় দিয়েছেন। এর আগে গত বছর প্রেসিডেন্টের স্বল্পস্থায়ী সামরিক আইন জারির পদক্ষেপকে কেন্দ্র করে দেশটির পার্লামেন্ট তাঁর বিরুদ্ধে অভিশংসন প্রস্তাব আনে। এ ঘটনা দক্ষিণ কোরিয়ার কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক সংকট তৈরি করে।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইউনের ক্ষমতাচ্যুতির কারণে দেশটির সংবিধান অনুযায়ী ৬০ দিনের মধ্যে একটি প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নতুন প্রেসিডেন্টের শপথগ্রহণ পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী হান ডাক-সু ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করবেন।

ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি মুন হিউং-বে বলেছেন, ইউন প্রেসিডেন্ট হিসেবে তাঁর সাংবিধানিক ক্ষমতার বাইরে গিয়ে কাজ করেছেন এবং এর মাধ্যমে তিনি তাঁর দায়িত্ব লঙ্ঘন করেছেন। তিনি আরও বলেন, ‘ইউনের পদক্ষেপ গণতন্ত্রের জন্য একটি গুরুতর চ্যালেঞ্জ ছিল।’

মুন বলেন, ‘(ইউন) গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্রের সার্বভৌম সদস্য জনগণের আস্থার চরম বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন।’ তিনি যোগ করেন, ‘ইউন সামরিক আইন জারির মাধ্যমে সমাজ, অর্থনীতি ও পররাষ্ট্রনীতির সব ক্ষেত্রে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেছিলেন।’ বিচারপতি মুন জানান, সাংবিধানিক আদালতের আটজন বিচারপতির সবাই এই রায়ের পক্ষে একমত ছিলেন।

ইউনের পদত্যাগের দাবিতে আয়োজিত এক সমাবেশে এই রায়ের পর হাজার হাজার মানুষ উল্লাসে ফেটে পড়েন। এদের মধ্যে কয়েক শ মানুষ আগের রাত থেকেই সেখানে অবস্থান করছিলেন। রায় ঘোষণার পর তাঁরা ‘আমরা জিতেছি!’ বলে স্লোগান দিতে থাকেন।

এই রায় কয়েক মাসের রাজনৈতিক অস্থিরতার অবসান ঘটাল। এই অস্থিরতা এমন এক সময়ে দেখা দেয়, যখন যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসনের সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়নের চেষ্টা চলছিল এবং একই সঙ্গে দেশটির অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিও ধীর হয়ে আসছিল।

অন্যদিকে, ৬৪ বছর বয়সী ইউন রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে একটি ফৌজদারি মামলার মুখোমুখি। এই বিতর্কিত নেতা গত ১৫ জানুয়ারি গ্রেপ্তার হওয়া প্রথম কোনো ক্ষমতাসীন দক্ষিণ কোরীয় প্রেসিডেন্ট। তবে মার্চ মাসে একটি আদালত তার গ্রেপ্তারি পরোয়ানা বাতিল করলে তিনি মুক্তি পান।

গত ৩ ডিসেম্বর ইউনের সামরিক আইন জারির ঘোষণার মাধ্যমে এই সংকটের সূত্রপাত হয়। তিনি বলেছিলেন, ‘রাষ্ট্রবিরোধী’ উপাদান এবং বিরোধী দল ডেমোক্রেটিক পার্টির সংসদীয় সংখ্যাগরিষ্ঠতার কথিত অপব্যবহারের মূলোৎপাটনের জন্য এটি জরুরি ছিল, যা তার মতে দেশকে ধ্বংস করছিল।

তবে আইনপ্রণেতারা নিরাপত্তা বাহিনীর সংসদ ভবন সিল করার প্রচেষ্টা উপেক্ষা করে সামরিক আইন প্রত্যাখ্যানের পক্ষে ভোট দিলে ছয় ঘণ্টা পর ইউন ওই আদেশ প্রত্যাহার করে নেন। ইউন দাবি করেন, তাঁর কখনোই জরুরি সামরিক শাসন সম্পূর্ণরূপে জারির কোনো উদ্দেশ্য ছিল না এবং তিনি এর প্রভাব কমানোর চেষ্টা করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, এতে কেউ আহত হয়নি। এরপর থেকে মাসব্যাপী বিক্ষোভ চলে আসছে। আদালতের এই রায়ের ফলে ইউনের সামরিক আইন ঘোষণার কারণে সৃষ্ট রাজনৈতিক অস্থিরতা প্রশমিত হবে কি না, তা এখনো স্পষ্ট নয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আট মাসের পরিচয়, চার মাসে ‘বাগদান’

সৌদি রাষ্ট্রদূত নিয়ে ভিন্ন কথা বলছে মডেল মেঘনার পরিবার

৯ টুকরো লাশ: সবুজকে হেমায়েতপুর থেকে ডেকে নিয়ে হত্যা করেন পলাশ-তৃষা

সৌদি রাষ্ট্রদূতের কাছে ৫ মিলিয়ন ডলার দাবি করেন মেঘনার সহযোগী সমির, পুলিশের প্রতিবেদন

হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোকের ঝুঁকি জানা যাবে মাত্র ৮০০ টাকার রক্ত পরীক্ষায়

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত