হেনরি প্রধানমন্ত্রিত্ব না ছাড়লে গৃহযুদ্ধ ও গণহত্যা হবে, হাইতির গ্যাং লিডারের হুমকি

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ : ০৬ মার্চ ২০২৪, ১৬: ৪৮

হাইতির প্রধানমন্ত্রী এরিয়েল হেনরিকে উৎখাতের লক্ষ্যে সহিংস অভিযান চালানো সশস্ত্র গ্যাংয়ের লিডার জিমি চেরিজিয়ার হুমকি দিয়ে বলেছেন, হেনরি পদত্যাগ না করলে দেশে গৃহযুদ্ধ এবং গণহত্যা হবে। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা এক প্রতিবেদনে খবরটি দিয়েছে।

হাইতির বিশাল অংশই নিয়ন্ত্রণ করে এসব সশস্ত্র গ্যাং। গত সপ্তাহে এরিয়েল হেনরি দেশের বাইরে থাকার সময় তাকে উৎখাতের লক্ষ্যে রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সে সমন্বিত হামলা চালায় এসব গ্যাং। এতে পোর্ট-অ-প্রিন্সের প্রধান দুটি কারাগারে ডজনের বেশি মানুষ মারা গেছেন। আর কারাগার থেকে পালিয়েছে কয়েক হাজার কয়েদি। এ ঘটনার পর হাইতি সরকার দেশটিতে জরুরি অবস্থা এবং রাত্রিকালীন কারফিউ জারি করেছিল।

গত ফেব্রুয়ারিতে পদত্যাগ করার কথা ছিল এরিয়েল হেনরির। যুক্তরাষ্ট্রের অঞ্চল পুয়ের্তো রিকোতে তিনি আছেন বলে জানা গেছে। এর আগে, গতকাল মঙ্গলবার তাকে বহনকারী বিমানকে অবতরণের অনুমতি দেয়নি ডোমিনিকান রিপাবলিক।

হাইতির রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সে সংবাদমাধ্যমকে গ্যাং লিডার জিমি চেরিজিয়ার বলেন, ‘এরিয়েল হেনরি যদি পদত্যাগ না করেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় যদি তাকে সমর্থন করতে থাকে তাহলে শুরু হতে পারে গৃহযুদ্ধ—যা আমাদের গণহত্যার দিকে নিয়ে যাবে। হয় স্বর্গ নয়তো নরকে পরিণত হবে হাইতি। বড় বড় হোটেলে বসে থাকা গুটিকয়েক কয়েক ধনী ব্যক্তি শ্রমিক শ্রেণির ভাগ্য নির্ধারণ করবে—এটা আর হতে দেওয়া হবে না।’

৪৬ বছর বয়সী চেরিজিয়ের একজন প্রাক্তন পুলিশ কর্মকর্তা। তিনি বারবিকিউ নামে পরিচিত। মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে তার বিরুদ্ধে রয়েছে জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা।

পোর্ট-অ-প্রিন্সের টাউসাইন্ট লুভারচার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের বাইরে গত সোমবার গভীর রাতে পুলিশের ওপর গুলি চালায় কয়েকটি গ্যাং। তখন বিমানবন্দর ছেড়ে পালায় কয়েক ডজন কর্মচারী এবং অনেক কর্মী। গতকাল মঙ্গলবার স্কুল ও ব্যাংকসহ হাইতির বিমানবন্দরও বন্ধ ছিল। হাইতি এখন মূলত গ্যাংগুলোর দখলে।

কয়েক দশক ধরেই দারিদ্র্য, সহিংসতা, রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা এবং একের পর এক প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জের দেশ হাইতি। ২০২১ সালে দেশটির তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জোভেনেল ময়সিকে হত্যা করা হয়। এরপর দেশটিতে ছড়িয়ে পড়ে আরও বড় আকারের বিশৃঙ্খলা। এরপর ক্ষমতায় আসেন এরিয়েল হেনরি। গত ফেব্রুয়ারিতে পদত্যাগ করে নির্বাচন দেওয়ার কথা ছিল তার।

কিন্তু সাম্প্রতিক মাসগুলোতে গ্যাংগুলো শহর ছাড়িয়ে গ্রামেও আধিপত্য বিস্তর করেছে। বিশ্বের অন্যতম দরিদ্র দেশটির নিরাপত্তা বাহিনীকেও করে ফেলেছে কোণঠাসা। এমন অবস্থায় হেনরি বলছেন, দেশে নির্বাচনের পরিস্থিতি নেই। দেশকে স্থিতিশীল করার জন্য জাতিসংঘ সমর্থিত বহুজাতিক পুলিশ মিশন মোতায়েন করার আহ্বান জানিয়েছে তিনি।

জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক বলেছেন, সম্প্রতি অন্তত ১৫ হাজার মানুষকে পোর্ট-অ-প্রিন্সের সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত অংশগুলো থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত