টিকা নিলেই বিনামূল্যে জ্যান্ত মুরগি

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ : ১৭ জুন ২০২১, ২২: ২৪
আপডেট : ১৭ জুন ২০২১, ২২: ৪০

ঢাকা: বহু চেষ্টা করেও গ্রামের সাধারণ মানুষকে কোভিড টিকা নিতে উৎসাহী করা যাচ্ছে না। অবশেষে এক অভিনব কৌশল উদ্ভাবন করেছে ইন্দোনেশিয়ার সরকার। বিশেষ করে বয়স্ক নাগরিকদের টিকা নিতে উৎসাহিত করতে একটা করে জ্যান্ত মুরগি দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ। 

ইন্দোনেশিয়ার পশ্চিম জাভার সিয়ানজুর অঞ্চলে ৪৫ বছর বা এর বেশি বয়সীদের টিকা নিতে প্রণোদনা হিসেবে মুরগি দেওয়া হচ্ছে। 

পেকাতের উপ-জেলা সহকারী পুলিশ কমিশনার গালিহ অপরিয়া বলেন, সরকারের টিকা কর্মসূচির প্রথম দিকে বয়স্ক বাসিন্দারা টিকা নিতে খুব দ্বিধা বোধ করেছিলেন। প্রথমদিকে অনলাইনে টিকা নিয়ে ব্যাপক অপপ্রচার হয়েছে। প্রচুর ভুল তথ্য ও প্রতারণামূলক প্রচারণা চলেছে। বয়স্ক লোকেদের মধ্যে এমন ধারণা পাকাপোক্ত হয়ে গিয়েছিল যে, কোভিড টিকা নিলে মারাত্মক রোগ হতে পারে। এমনকি মারাও যেতে পারেন। 

উপ-জেলা সরকার ও স্থানীয় স্বাস্থ্য কেন্দ্রের সহযোগিতায় পুলিশ প্রশাসন গত মাসেই বিনা মূল্যে মুরগি দেওয়ার কার্যক্রম শুরু করে। কর্মসূচিটি শুরুর আগে, ২০০ জনের মধ্যে মাত্র ২৫ জন টিকা নিতে আগ্রহী ছিলেন। আর এখন প্রতিদিন ২৫০ লোক টিকা নিচ্ছেন। 

পুলিশ কর্মকর্তা গালিহ অপরিয়া বলেন, মুরগি দেওয়া প্রবীণদের প্রতি ভালোবাসা ও শ্রদ্ধার পরিচায়ক। আর এতে বয়স্করা পুলিশ অফিসার, স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের সঙ্গে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন। 

সিএনএন ইন্দোনেশিয়ার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মুরগি দান কর্মসূচি শুরুর পর পেকাতের তিনটি গ্রাম থেকে কয়েকশ মানুষ টিকা নিতে এসেছিলেন। গালিহ বলেন, কর্মসূচির আওতায় কর্তৃপক্ষ ৫০০টি মুরগি বিনা মূল্যে দিয়েছে। তবে টিকাদান কর্মসূচির আরে ব্যাপক সম্প্রসারণের জন্য তাঁরা অন্যান্য পদক্ষেপ নিচ্ছেন। গ্রামবাসীর কাছে টিকা নেওয়ার সুবিধাগুলো ব্যাখ্যা করা হচ্ছে। শিক্ষিতদের এ কাজে সহযোগিতা করার জন্য উৎসাহিত করা হচ্ছে। ঘরে ঘরে গিয়ে টিকা দেওয়া হচ্ছে। 

গালিহ বলেন, স্বাস্থ্যকর্মীরা এবং সেনাবাহিনীর সদস্যরা পুলিশকে এই কর্মসূচিতে সহায়তা করছে। ঘটনাস্থলে টিকা দেওয়ার স্বাস্থ্য পরীক্ষার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। 

জন হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাব অনুযায়ী, ইন্দোনেশিয়া প্রায় ২০ লাখ কোভিড আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে প্রাণ হারিয়েছেন ৫৩ হাজার জন। এশিয়ায় করোনাভাইরাসে এটিই সবচেয়ে বেশি মৃত্যু। 

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ঈদুল ফিতরের পর ইন্দোনেশিয়ার সবচেয়ে জনবহুল দুটি দ্বীপ জাভা ও সুমাত্রায় সংক্রমণ ব্যাপকভাবে বেড়েছে। 

দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ইন্দোনেশিয়ায় টিকাদান কর্মসূচির গতি বেশ ধীর। ৫০ বছরের বেশি বয়সীদের মধ্যে ২০ শতাংশ লোক প্রথম ডোজ নিয়েছেন। স্থানীয় কর্তৃপক্ষ আশা করছে, মুরগি দেওয়ার কর্মসূচি টিকা দানে গতি আনবে। 

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত