Ajker Patrika

গান, কবিতায় নিষেধাজ্ঞা অমান্য করলেন আফগান নারীরা

অনলাইন ডেস্ক
গান, কবিতায় নিষেধাজ্ঞা অমান্য করলেন আফগান নারীরা

আফগানিস্তানে নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে তালেবান সরকার। এই নিষেধাজ্ঞাও নারীদের লক্ষ্যবস্তু করে। দেশটির নতুন একটি আইনে জনসমাগম কিংবা পরপুরুষের সামনে নারীদের কথা বলা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গান ও কবিতা পোস্ট করে এই নিষেধাজ্ঞা অমান্য করতে শুরু করেছেন আফগান নারীরা।

তালেবান কর্তৃপক্ষ সম্প্রতি নতুন আইনটির ঘোষণা দেয়। এই আইনে বাড়ির বাইরে বের হলে নারীদের মুখ ও শরীর ঢেকে রাখার পাশাপাশি কণ্ঠস্বর চেপে রাখারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এই আইনের প্রতিবাদে দেশের ভেতরে ও বাইরে থাকা আফগান নারীরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাঁদের নিজেদের কণ্ঠে গাওয়া গান পোস্ট করছে। এসব গানের পোস্টে তাঁরা ‘আমার কণ্ঠ নিষিদ্ধ নয়’ এবং ‘তালেবানকে না’ হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করছেন।

আফগানিস্তানের সাবেক নারী পুলিশ জালা জাজাই বর্তমানে পোল্যান্ডে আছেন। আফগান নারীদের প্রতি সংহতি জানিয়ে তিনি দেশটির সুপরিচিত শিল্পী আরিয়ানা সাঈদের একটি গান গেয়ে এটির ভিডিও শেয়ার করেছেন। সংবাদ সংস্থা এএফপির কাছে আফগান নারীদের ওপর নিষেধাজ্ঞাকে অগ্রহণযোগ্য বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

জালা জাজাই বলেন, ‘আফগান নারীরা বুঝতে পেরেছে, ধর্ম ও সংস্কৃতির নামে দুর্বৃত্তরা আমাদের মানবাধিকারকে অস্বীকার করতে পারে না। অধিকারের জন্য আমাদের কণ্ঠ কখনোই থেমে থাকবে না।’

আফগানিস্তানের ভেতরেই ধারণ করা একটি ভিডিওতে এক নারীকে তাঁর মুখের ওপর লম্বা ঘোমটা এবং পা থেকে মাথা পর্যন্ত কালো পোশাক পরে গান গাইতে দেখা গেছে। তিনি বলেন, ‘আপনি অদূর ভবিষ্যতের জন্য আমার কণ্ঠস্বর স্তব্ধ করে দিয়েছেন। একজন নারী হওয়ার অপরাধে আপনি আমাকে আমার বাড়িতে বন্দী করে রেখেছেন।’

একটি ভিডিওতে চেহারা গোপন রেখে একটি বই থেকে কবিতা পড়তে দেখা গেছে এক আফগান নারীকে। আরেকটি ভিডিওতে নারী কর্মীদের একটি দলকে দেখা গেছে, তাঁরা তালেবানের সর্বোচ্চ নেতা হিবাতুল্লা আখুন্দজাদার ছবি ছিঁড়ছেন। নারীদের আরেক দল স্লোগান দিচ্ছেন—‘নারীর কণ্ঠ, ন্যায়ের কণ্ঠ’।

দুই দশক পর ২০২১ সালে তালেবানেরা দ্বিতীয়বারের মতো আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখলের পর থেকে ‘পুণ্যের প্রচার এবং পাপ প্রতিরোধ’ আইনটির মাধ্যমে নানা ধরনের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে ইসলামি বা শরিয়া আইন বাস্তবায়ন করছে। এই আইন অনুযায়ী, জনসমক্ষে উচ্চ স্বরে নারীদের গান বা আবৃত্তি করা উচিত নয়। শুধু তাই নয়, বাড়ির বাইরে বের হলে নারীদের কথা বলা থেকে বিরত থাকতেও বলা হয়েছে। আফগান আইনে বলা হয়েছে, ‘যখন একজন প্রাপ্তবয়স্ক নারীকে প্রয়োজনে বাড়ি থেকে বের হতে হয়, তখন তাঁকে মুখ, শরীর এবং কণ্ঠস্বর ঢেকে রাখতে হয়।’

আইনটিতে নারীর কণ্ঠস্বরকে ‘আউরত’ হিসাবে উল্লেখ করা হয়েছে। শরিয়াতে ব্যবহৃত এই শব্দটি দিয়ে সাধারণত নারী-পুরুষের গোপন অঙ্গকে নির্দেশ করা হয়। তালেবান সরকারের প্রধান মুখপাত্র জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ বলেছেন, আইনের সমালোচনা ‘অহংকার’ এবং শরিয়া সম্পর্কে ভুল বোঝাবুঝি প্রকাশ করে।

আফগানিস্তানে সম্প্রতি নারীরা শিক্ষা, পাবলিক স্পেস এবং কিছু চাকরিতে প্রবেশের ক্ষেত্রে বিধিনিষেধের শিকার হয়েছে। এটিকে ‘লিঙ্গবৈষম্য’ হিসাবে চিহ্নিত করে নিন্দা জানিয়েছে জাতিসংঘ সহ অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কক্সবাজারে বিমানঘাঁটিতে গুলি: যা বলছে আইএসপিআর, নিহতের মা-বাবা ও স্থানীয়রা

কক্সবাজার বিমান ঘাঁটিতে দুর্বৃত্তদের হামলা, সংঘর্ষে নিহত ১

ভারতের কাছে হারে পাকিস্তান টিম ম্যানেজমেন্টকে ধুয়ে দিলেন শোয়েব

নতুন রাজনৈতিক দলের নাম ও প্রতীক নিয়ে কী প্রস্তাব এল, জানালেন আখতার

মালিককে ঘরে আটকে রেখে খামারে পেট্রল ঢেলে আগুন, পুড়ল ৮ গরু

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত