আলোচিত সেই বিমান খুঁজে পেতে নতুন মিশন মালয়েশিয়ার

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ : ২০ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৮: ২২
ছবি: সংগৃহীত

এক দশক আগে হারিয়ে যাওয়া মালয়েশিয়ান এয়ারলাইনসের ফ্লাইট এমএইচ ৩৭০-এর অনুসন্ধান নতুন করে শুরু করার নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে মালয়েশিয়ার সরকার। এটি বিমান চলাচলের ইতিহাসে অন্যতম রহস্যময় ঘটনা।

২০১৪ সালের মার্চ মাসে মালয়েশিয়ান এয়ারলাইনসের বোয়িং ৭৭৭ বিমানটি কুয়ালালামপুর থেকে বেইজিং যাওয়ার পথে নিখোঁজ হয়ে যায়। বিমানে ২৩৯ জন যাত্রী ও ক্রু ছিলেন।

এই ঘটনার পর থেকেই বিমানটির ধ্বংসাবশেষ খুঁজে বের করার প্রচেষ্টা চালানো হয়। কিন্তু তেমন উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়নি। ফলে এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত পরিবারগুলো আজও অনিশ্চয়তা ও বেদনায় দিন কাটাচ্ছে।

শুক্রবার মালয়েশিয়ার পরিবহন মন্ত্রী অ্যান্থনি লোক ঘোষণা করেছেন, একটি নীতিগত অনুমোদনের মাধ্যমে ইউএস-ভিত্তিক সামুদ্রিক অনুসন্ধান প্রতিষ্ঠান ‘ওশান ইনফিনিটির’ সঙ্গে ৭০ মিলিয়ন ডলারের চুক্তি হয়েছে।

চুক্তি অনুযায়ী, অনুসন্ধানে কোনো কিছু খুঁজে পাওয়া না গেলে কোনো ফি প্রদান করতে হবে না। এর মানে, ধ্বংসাবশেষ না পেলে ওশান ইনফিনিটি সংস্থাটি কোনো অর্থ পাবে না।

শুক্রবার বিবিসি জানিয়েছে, ২০১৮ সালেও একই শর্তে একটি তিন মাসব্যাপী অনুসন্ধান পরিচালনা করেছিল ওশান ইনফিনিটি। তবে সেটি সফল হয়নি।

এর আগে, বিমানটি খুঁজে পেতে টানা দুই বছরের একটি বহুজাতিক প্রচেষ্টা চালানো হয়েছিল। এই অনুসন্ধানে দেড় শ মিলিয়ন ডলার খরচ করা হলেও আশাব্যাঞ্জক কোনো ফলাফল আসেনি।

নতুন অনুসন্ধানটি ভারত মহাসাগরের দক্ষিণ অংশের ১৫ হাজার বর্গকিলোমিটার এলাকা জুড়ে পরিচালিত হবে। নতুন কিছু তথ্যকে ‘বিশ্বাসযোগ্য’ হিসেবে চিহ্নিত করে অনুসন্ধানের জন্য সরকার এই অঞ্চল বেছে নিয়েছে।

অ্যান্থনি লোক বলেন, ‘আমরা আশা করি, এবার ফলাফল ইতিবাচক হবে। ধ্বংসাবশেষ পাওয়া গেলে পরিবারগুলোর জন্য এটি কিছুটা হলেও শান্তি বয়ে আনবে।’

ফ্লাইট এমএইচ ৩৭০-এ থাকা যাত্রীদের স্বজনেরা নতুন অনুসন্ধানের অনুমোদনকে স্বাগত জানিয়েছেন। সেই ফ্লাইটের ইনফ্লাইট সুপারভাইজার প্যাট্রিক গোমসের স্ত্রী জ্যাকুইটা গনজালেস বলেছেন, ‘এই সংবাদটি যেন সেরা ক্রিসমাস উপহার।’

ইনতান মাইজুরার স্বামী ছিলেন সেই ফ্লাইটের কেবিন ক্রু। ইনতান বলেন, ‘এটি আমাদের জন্য আশা, কৃতজ্ঞতা এবং দুঃখের মিশ্র অনুভূতি। প্রায় ১১ বছর ধরে এই অনিশ্চয়তা এবং উত্তরের অভাবে আমরা চরম কষ্ট ভোগ করেছি।’

জানা যায়, ২০১৪ সালের ৮ মার্চ ভোরে কুয়ালালামপুর থেকে উড্ডয়ন করেছিল ফ্লাইট এমএইচ ৩৭০। উড্ডয়নের এক ঘণ্টার মধ্যে এটি এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলের সঙ্গে যোগাযোগ হারায় এবং পূর্বনির্ধারিত পথ থেকে সরে যায়।

অনুসন্ধানকারীরা মনে করেন, বিমানটি ভারত মহাসাগরের দক্ষিণ অংশে বিধ্বস্ত হয়েছিল। তবে এর কারণ আজও অজানা।

এর মধ্যে বিমানের কিছু ধ্বংসাবশেষ ভারত মহাসাগরের তীরবর্তী এলাকায় পাওয়া গেছে বলে দাবি করা হয়।

বিমানটির নিখোঁজ হওয়ার কারণ নিয়ে বিশ্বজুড়ে নানা জল্পনা-কল্পনা ডালপালা মেলেছে। উঠে এসেছে নানা ষড়যন্ত্র তত্ত্ব। এর মধ্যে পাইলটের ইচ্ছাকৃতভাবে বিমান বিধ্বস্ত করার অভিযোগ থেকে শুরু করে বিদেশি সামরিক বাহিনীর দ্বারা গুলি করে ভূপাতিত করার দাবিও রয়েছে।

২০১৮ সালের একটি তদন্তে উল্লেখ করা হয়, বিমানের নিয়ন্ত্রণ ইচ্ছাকৃতভাবে পাল্টানো হয়েছিল। তবে এটি কে বা কেন করেছে, সে সম্পর্কে নিশ্চিত কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছানো যায়নি।

তদন্তকারীরা বলেন, ‘ধ্বংসাবশেষ পাওয়া গেলে তবেই নিশ্চিত উত্তর পাওয়া সম্ভব।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

গাড়িচাপায় বুয়েট ছাত্র নিহতের ঘটনায় ৩ আসামি কারাগারে

পুতিনের আর্কটিক ঘাঁটির কাছে রহস্যময় বিস্ফোরণ—আকাশে বিচ্ছুরণ, কেঁপেছে ঘরবাড়ি

কৃত্রিম দ্বীপে ‘সবচেয়ে বড় বিমানবন্দর’ নির্মাণ করছে চীন

মাহফুজ আলমের ‘ফেসবুক পোস্ট’ নিয়ে ভারতের প্রতিবাদ

হামাস—হিজবুল্লাহ নির্মূল, সিরিয়ার ভূখণ্ডে দখলদারিত্বের পর ইরানে দৃষ্টি দেবেন নেতানিয়াহু

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত