গরুর মাংসের বৃহত্তম বাজার হারাচ্ছে ব্রাজিল

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ : ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ০০: ২৩
আপডেট : ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ০৯: ৫৭

চাহিদা কমে যাওয়া এবং দেশের ভেতরেই পর্যাপ্ত উৎপাদন ও সরবরাহের ফলে গরুর মাংসের আমদানি কমছে চীনে। তাই দেশটিতে গরুর মাংসের সবচেয়ে বড় সরবরাহকারী ব্রাজিলের জন্য বর্তমান পরিস্থিতি বড় ধাক্কা হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। আজ মঙ্গলবার ব্লুমবার্গের এক প্রতিবেদনে এমন তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।

সরকারি তথ্য অনুযায়ী, গত বছর চীনে গরুর মাংসের আমদানির পরিমাণ ২০১৬ সালের পর প্রথমবারের মতো কমে যেতে দেখা গেছে। পাশাপাশি দেশটিতে গরুর মাংসের দামও গত তিন বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন স্তরে নেমে গিয়েছিল।

যুক্তরাষ্ট্রের কৃষি বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, ১২ বছর টানা প্রবৃদ্ধির সমাপ্তি ঘটিয়ে ২০২৩ সালে চীনে গরুর মাংসের আমদানি ৪ শতাংশ কমেছে।

এর পরও গত বছর ব্রাজিল যে পরিমাণ গরুর মাংস রপ্তানি করেছে, তার ৫২ শতাংশেরও বেশি গেছে চীনে। এক্সপি ইনভেস্টিমেন্টোসের বিশ্লেষক লিওনার্দো অ্যালেনকার বলেছেন, ‘ব্রাজিল চীনের ওপর অনেক বেশি নির্ভর করে। যদি চীনে একটি হেঁচকিও ওঠে, তবে তা ব্রাজিলকে খুব বাজেভাবে প্রভাবিত করবে!’ 

গত বছর ঠিক এমনটিই ঘটেছে। দেখা গেছে, চীনে গরুর মাংসের আমদানি কমে যাওয়ায় ব্রাজিলের রপ্তানিকারকদের আয়ের ওপর তা বড় প্রভাব ফেলেছে। শুধু ব্রাজিল নয়, দক্ষিণ আমেরিকার গরুর মাংসের বৃহত্তম সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান মিনারভা ফুডসের রপ্তানি আয় ২০২৩ সালে ১৮ শতাংশ কমেছে। আর মারফ্রিগ গ্লোবাল ফুডসের গরুর মাংস প্রক্রিয়াজাতকরণ কার্যক্রম হ্রাস পেয়েছিল ২৬ শতাংশ পর্যন্ত। 

ব্লুমবার্গের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশের ভেতরেই উৎপাদিত গরুর মাংসের সরবরাহ বৃদ্ধির পর বিশ্বজুড়ে মাংস বাণিজ্যে চীনের আমদানি হিস্যা ২০২০ সালের শীর্ষ অবস্থান থেকে নেমে এসেছে।

মার্কিন কৃষি বিভাগের তথ্য অনুসারে, চীন ২০২৩ সালে ৭৭ লাখ টন গরুর মাংস উৎপাদন করেছে, ২০২০ সালের তুলনায় যা প্রায় ১০ লাখ টন বেশি। আরেকটি বিষয় হলো, একটি অর্থনৈতিক মন্দা চীনের গ্রাহকদের গরুর মাংসের বদলে সস্তা প্রোটিন খুঁজতে প্ররোচিত করেছে। 

বিষয়টি ব্রাজিলে কেমন প্রভাব ফেলেছে তা মিনার্ভার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফার্নান্দো গ্যালেটি দে কুইরোজের একটি বক্তব্য থেকে স্পষ্ট বোঝা যায়। গত মাসে তিনি বিশ্লেষকদের সঙ্গে একটি কনফারেন্স কলে বলেছিলেন, স্থানীয় কৃষকেরা গবাদিপশুর প্রজনন ছেড়ে দিচ্ছে এবং গাভিগুলো ব্যাপকভাবে কসাইখানায় পাঠাচ্ছে।

ব্রাজিলের আরেক মাংস রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান জেবিএসের সিইও গিলবার্তো তোমাজোনি চীনে মাংসের দাম কমে যাওয়ার জন্য অস্ট্রেলিয়ার রপ্তানিকারকদের সঙ্গে প্রতিযোগিতার প্রসঙ্গও টেনেছিলেন। 

 এ অবস্থায় ব্রাজিল গরুর মাংসের রপ্তানি গন্তব্যে বৈচিত্র্য আনতে নতুন বাজার খুঁজছে। দেশটির সরকার মেক্সিকো ও সিঙ্গাপুরে গরুর মাংসের জন্য নতুন বাজার পেয়েছে। সম্প্রতি বাংলাদেশেও গরুর মাংস রপ্তানির প্রস্তাব দিয়েছে দেশটি।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত