বেলারুশের একনায়ক লুকাশেঙ্কো সপ্তমবারের মতো প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত

অনলাইন ডেস্ক
Thumbnail image
বেলারুশের প্রেসিডেন্ট লুকাশেঙ্কো। ছবি: এএফপি

আলেকজান্ডার লুকাশেঙ্কো সপ্তমবারের মতো বেলারুশের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন। এর আগে, তিনি টানা ৬ মেয়াদে ৩০ বছর দেশটি শাসন করেছেন। এই জয়ের ফলে তাঁর শাসনকালকে আরও পাঁচ বছরের জন্য বেড়ে গেল। গতকাল রোববার দেশটিতে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। রুশ সংবাদমাধ্যম আরটির প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

কেন্দ্রীয় নির্বাচনী কমিশনের প্রধান ইগর কারপেঙ্কোর বরাত দিয়ে বেলারুশের রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারমাধ্যম বেল্টা আজ সোমবার সকালে জানিয়েছে, নির্বাচনে লুকাশেঙ্কো ৮৬ দশমিক ৮২ শতাংশ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন। অন্য কোনো প্রার্থী ৫ শতাংশ ভোটও পাননি।

এই নির্বাচনে জয়ের ফলে লুকাশেঙ্কো ২০৩০ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকবেন। বেলারুশের ইতিহাসে লুকাশেঙ্কো প্রথম ও একমাত্র নেতা যিনি টানা ৭ বার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলেন। লুকাশেঙ্কো ১৯৯৪ সাল থেকে দেশটি শাসন করছেন। ১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে বেলারুশ। স্বাধীনতার পর দেশটির অস্থায়ী সরকারপ্রধান ছিলেন সাবেক সোভিয়েত বেলারুশ অঙ্গরাজ্যের চেয়ারম্যান স্তানিস্লাভ শুশকেভিচ। এরপর ১৯৯৪ সালে প্রথমবারের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হয় বেলারুশে এবং তাতে জয়ী হন লুকাশেঙ্কো।

এর আগে, ২০২০ সালে নির্বাচিত হওয়ার পর লুকাশেঙ্কো আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন। পশ্চিমা দেশগুলো তাঁর বিরুদ্ধে ভোট জালিয়াতির অভিযোগ এনেছিল। তবে তিনি এই অভিযোগ অস্বীকার করেন। সেই নির্বাচনের পর ব্যাপক প্রতিবাদ শুরু হয় এবং পশ্চিমা সমর্থনপুষ্ট বিরোধী নেত্রী সভেৎলানা তিখানোভস্কা দাবি করেন, তিনি বেলারুশের ‘নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট’ এবং পশ্চিমা বিশ্বের সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ অব্যাহত রেখেছেন।

পশ্চিমা মিডিয়া লুকাশেঙ্কোকে প্রায়শই এক ‘অবৈধ শাসক’ হিসেবে উল্লেখ করে। গত বছরের নভেম্বরে লুকাশেঙ্কো স্বীকার করেন বেলারুশে ‘একনায়কতন্ত্র’ চলছে। তিনি ‘স্থিতিশীলতা, নিরাপত্তা, শৃঙ্খলা, সদয়তা ও আতিথেয়তা’ মূল কারণ হিসেবে তাঁর শাসনকে উল্লেখ করেন। লুকাশেঙ্কো আগে বলেছিলেন, নির্বাচনী প্রক্রিয়া সুষ্ঠু হওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, যাতে ‘আমেরিকান কৌশলের প্রদর্শনী’ দেখা না যায়।

বেলারুশ ১৯৯৯ সাল থেকে রাশিয়ার কৌশলগত অংশীদার এবং ইউক্রেন সংঘাতের পরিপ্রেক্ষিতে ২০২২ সালের পর দুই দেশের সম্পর্ক আরও জোরদার হয়েছে। গত বছর মস্কো ও মিনস্ক একটি নিরাপত্তা চুক্তি করে। মূলত ইউরোপে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক উপস্থিতি বৃদ্ধির প্রতিক্রিয়ায় এই চুক্তি হয়। এই চুক্তির আওতায়, ২০২৫ সালের মধ্যে বেলারুশে রাশিয়া মাঝারি পাল্লার নতুন হাইপারসনিক ওরেশনিক ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা স্থাপনের পরিকল্পনা করছে।

রোববার এক সংবাদ সম্মেলনে লুকাশেঙ্কো বলেছেন, যেকোনো দিন বেলারুশে এই ক্ষেপণাস্ত্রগুলো স্থাপন করা হবে। তিনি আরও জানান, ‘একটি ওরেশনিকই বেলারুশকে রক্ষার জন্য যথেষ্ট।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত