বাধ্যবাধকতা ভুলে স্বল্প ও মাঝারি পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েন শুরুর পথে রাশিয়া

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ : ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৬: ০৭
Thumbnail image
রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ। ছবি: এএফপি

রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ বলেছেন, স্বল্প ও মাঝারি পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েনের ক্ষেত্রে প্রস্তাবিত যে স্থগিতাদেশ বা বাধ্যবাধকতা আছে—রাশিয়া তা বাতিল করবে। কারণ, যুক্তরাষ্ট্র এ ধরনের অস্ত্র মোতায়েন শুরু করেছে। পাল্টা প্রতিক্রিয়া হিসেবে রাশিয়াও এ ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েন করতে শুরু করবে। রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ রুশ সংবাদমাধ্যম আরআইএ—কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন।

রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটোর কৌশলগত ক্ষেত্রে অস্থিতিশীল কার্যক্রমের বিশ্লেষণের ভিত্তিতে পরিস্থিতি মূল্যায়ন করছি এবং সেই অনুযায়ী সেখান থেকে উদ্ভূত হুমকির বিবর্তন মূল্যায়ন করছি।’

এ সময় তিনি আরও বলেন, ‘আজ এটি স্পষ্ট যে—উদাহরণস্বরূপ বলা যেতে পারে স্বল্প ও মাঝারি পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েনের ক্ষেত্রে আমাদের স্থগিতাদেশ বা বাধ্যবাধকতা কার্যত আর টিকে নেই এবং এটি বাতিল করতে হবে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র অহংকার পূর্ণভাবে রাশিয়া ও চীনের সতর্কবার্তা উপেক্ষা করেছে এবং বাস্তবে এই শ্রেণির অস্ত্র বিভিন্ন অঞ্চলে মোতায়েন শুরু করেছে।’

এর আগে, স্নায়ুযুদ্ধের উত্তেজনার পারদ যখন তুঙ্গে, তখন তা প্রশমিত করতে চুক্তি করেছিল রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র। ১৯৮৭ সালে স্বাক্ষরিত সেই চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছিলেন তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট মিখাইল গর্বাচেভ ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড রিগ্যান। ইন্টারমিডিয়েট-রেঞ্জ নিউক্লিয়ার ফোর্স ট্রিটি বা আইএনএফ নামে পরিচিত সেই চুক্তিই প্রথম কোনো উদ্যোগ, যার মাধ্যমে পারমাণবিক অস্ত্র ও সেগুলো বহনকারী উৎপাদন সীমিত করার কথা বলা হয়েছিল।

পরে, ২০১৯ সালে যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রকে আইএনএফ থেকে প্রত্যাহার করে নেন। সে সময় তিনি অজুহাত দিয়েছিলেন, মস্কো এই চুক্তির শর্ত লঙ্ঘন করেছে। তবে ক্রেমলিন বরাবরই এটিকে অস্বীকার করেছে। তবে সে সময়ও রাশিয়া চুক্তি থেকে নিজেদের প্রত্যাহারের ঘোষণা দেয়নি। বরং সে সময় ৫০০ থেকে ৫ হাজার ৫০০ কিলোমিটার পাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র তৈরির ওপর নিজস্ব নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। তবে কিছুদিন আগে পুতিন সেই অবস্থান থেকে সরে আসার ঘোষণা দেন।

গত জুনের শেষ দিকে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন আবারও মাঝারি ও স্বল্পপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র উৎপাদন শুরু করার ঘোষণা দেন এবং প্রয়োজনে সেগুলো বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে মোতায়েন করা হবে বলেও জানান তিনি। মূলত যুক্তরাষ্ট্রে কর্মকাণ্ডের প্রতিক্রিয়া হিসেবেই তিনি এই মন্তব্য করেন। এই অবস্থায় দুই দেশের মধ্যে ফের স্নায়ুযুদ্ধের মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত