Ajker Patrika

১৭০০ বছর পর সামনে এল সান্তা ক্লজের মুখের ‘প্রকৃত ছবি’

অনলাইন ডেস্ক    
বিজ্ঞানীদের তৈরি করা সান্তা ক্লজের সম্ভাব্য মুখমণ্ডলের ছবি। ছবি: ইনস্টাগ্রাম
বিজ্ঞানীদের তৈরি করা সান্তা ক্লজের সম্ভাব্য মুখমণ্ডলের ছবি। ছবি: ইনস্টাগ্রাম

সান্তা ক্লজ নামে পরিচিত সেন্ট নিকোলাস অব মায়রার মুখমণ্ডলের একটি ছবি প্রকাশ করেছেন বিজ্ঞানীরা। জন্মের প্রায় ১ হাজার ৭০০ বছর পর প্রযুক্তি এবং তাঁর খুলি ব্যবহার করে প্রথমবারের মতো সেন্ট নিকোলাসের মুখমণ্ডলের কাঠামো পুনর্গঠন করেছেন বিজ্ঞানীরা। ফেসিয়াল রিকনস্ট্রাকশন বিশেষজ্ঞ সিসেরো মোরাইস এই প্রকল্পে নেতৃত্ব দেন।

ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম জেরুসালেম পোস্টের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সিসেরো মোরাইস ১৯৫০—এর দশকে লুইগি মার্টিনোর সংগৃহীত ডেটা ব্যবহার করেন। নিকোলিয়ান স্টাডি সেন্টারের অনুমতি নিয়েই সান্তা ক্লজের ত্রিমাত্রিক মুখমণ্ডলের ছবি তৈরি করা হয়েছে। এই প্রতিষ্ঠানটি সেন্ট নিকোলাসকে নিয়ে কাজ করে।

মোরাইস বলেছেন, ‘প্রাথমিকভাবে, আমরা এই ডেটা ব্যবহার করে থ্রিডি বা ত্রিমাত্রিকভাবে খুলির পুনর্গঠন করেছি। এরপর, আমরা সেন্ট নিকোলাসের খুলি থেকে পাওয়া পরিসংখ্যানগত প্রক্ষেপণের সাহায্যে মুখের গঠন চিহ্নিত করেছি। আমরা এটিকে এনাটমিক্যাল ডিফরমেশন (প্রকৃত আকারের পরিবর্তন) পদ্ধতির মাধ্যমে সম্পন্ন করেছি, যেখানে জীবিত ব্যক্তির মাথার টোমোগ্রাফি (এক্স-রে ব্যবহার করে কোনো অঙ্গের প্রকৃত আকার নির্ণয় করা) সমন্বয় করে সেন্ট নিকোলাসের খুলির সঙ্গে মিলিয়ে নেওয়া হয়।’

মোরাইস জানান, তাদের প্রচেষ্টার ফলাফল হিসেবে দুটি ছবি তৈরি হয়েছে। একটি ধূসর রঙের বাস্তবসম্মত ছবি এবং অন্যটি আরও শিল্পসম্মত, যেখানে সেন্ট নিকোলাসের দৈহিক বর্ণনা থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে দাড়ি ও পোশাক যোগ করা হয়েছে। আমাদের এই ছবিটি, ১৮২৩ সালের একটি কবিতায় বর্ণিত সান্তা ক্লজের মুখের ছবির সঙ্গে আশ্চর্যজনকভাবে সামঞ্জস্যপূর্ণ।

কবিতাটির নাম ‘আ ভিজিট ফ্রম সেন্ট নিকোলাস’। ক্লেমেন্ট ক্লার্ক মুর-নামে এক কবি এটির রচয়িতা বলে মনে করা হয়। এই কবিতাটি সান্তা ক্লজ সম্পর্কে অনেক জনপ্রিয় ধারণার জন্ম দিয়েছে, যেমন তিনি লাল পোশাক পরেন, তাঁর লম্বা সাদা দাড়ি ছিল। এ ছাড়া, সান্তা স্লেজ, রেইনডিয়ার উপহারের থলে ব্যবহার করতেন—এসব ধারণাও এই কবিতা থেকেই পাওয়া যায়। এ ছাড়া, তাঁরা মুখমণ্ডল চওড়া ছিল—এমনটাও ধারণা পাওয়া যায় এই কবিতায়।

সান্তা ক্লজের আদি রূপ হলেন সেন্ট নিকোলাস। তিনি চতুর্থ শতকের একজন গ্রিক খ্রিষ্টান বিশপ ছিলেন এবং বর্তমান তুরস্কের মায়রা অঞ্চলে বাস করতেন। আনুমানিক ২৭০ খ্রিষ্টাব্দে পাতারা শহরে জন্মগ্রহণ করা সেন্ট নিকোলাস দানশীলতা ও দয়ার জন্য বিখ্যাত ছিলেন। দরিদ্রদের সাহায্য করা এবং গোপনে দান করার অসংখ্য ঘটনা তাঁকে মানুষের মনে জায়গা করে দেয়। বিশেষত, একটি জনপ্রিয় গল্পে বলা হয় যে, তিনি তিনজন দরিদ্র বালিকার বিয়ের জন্য তাঁদের বাবাকে গোপনে স্বর্ণমুদ্রা উপহার দিয়েছিলেন। ৬ ডিসেম্বর, ৩৪৩ খ্রিষ্টাব্দে তাঁর মৃত্যু হয়। পরে এই দিনটি সেন্ট নিকোলাস দিবস হিসেবে পালিত হতে থাকে।

ইউরোপজুড়ে সেন্ট নিকোলাসের এই দানশীল চরিত্রটি জনপ্রিয় হয়ে ওঠে এবং বিভিন্ন সংস্কৃতিতে রূপান্তরিত হয়। ডাচরা তাঁকে সিন্টারক্লাস নামে উল্লেখ করত, যা থেকেই সান্তা ক্লজ নামটি উদ্ভূত হয়েছে। আধুনিক সান্তা ক্লজ হলেন একটি কল্পিত চরিত্র, যিনি বড়দিনে শিশুদের জন্য উপহার নিয়ে আসেন। লাল পোশাক, সাদা দাড়ি, আর হরিণ টানা স্লেজগাড়িতে চড়ে তিনি এখন বিশ্বজুড়ে শিশুদের আনন্দের প্রতীক হয়ে উঠেছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নয়াদিল্লিতে নতুন হাইকমিশনার রিয়াজ হামিদুল্লাহ, ৩ মাস সময় নিল ভারত

খেজুরে অতি মুনাফা, হতাশ ক্রেতা

চাপে পড়ে ৫টি বাস রিকুইজিশন দিয়েছেন পিরোজপুরের ডিসি, সরকারের হস্তক্ষেপ নেই: প্রেস সচিব

কলাবাগানে সাবেক সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেলের মরদেহ উদ্ধার

রাতে স্বামীর জন্মদিন উদ্‌যাপন, সকালে নদীতে মিলল নববধূর লাশ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত