৮ বছর পর সিরিয়ার আলেপ্পোতে আবারও ঢুকে পড়েছে বিদ্রোহীরা

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২১: ২৮
Thumbnail image
সিরিয়ার আলেপ্পো শহর আবারও নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার দাবি করেছে বিদ্রোহীরা। ছবি: এএফপি

সিরিয়ার সশস্ত্র বিদ্রোহীরা দাবি করেছে, তারা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর আলেপ্পোতে প্রবেশ করেছে। শুক্রবার সিএনএন জানিয়েছে, ২০১৬ সালে সরকারি বাহিনী শহরটি পুনর্দখল করেছিল। কিন্তু ৮ বছর পর হঠাৎ করে আবারও এই শহরটিতে ঢুকে পড়েছে অস্ত্রধারীরা।

জানা গেছে, সম্প্রতি একটি আকস্মিক হামলায় আলেপ্পোর বেশ কিছু অঞ্চল দখল করে নিয়েছিল বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলো। বিদ্রোহীদের নতুন জোট মিলিটারি অপারেশনস কমান্ডের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে—‘আমাদের বাহিনী আলেপ্পো শহরে প্রবেশ শুরু করেছে।’

বিদ্রোহীদের এই দাবি স্বাধীন যাচাই করা সম্ভব না হলেও সরকারি বাহিনী এই আক্রমণকে ‘সন্ত্রাসী সংগঠনগুলোর বড় হামলা’ বলে অভিহিত করেছে।

বিদ্রোহীরা দাবি করেছে, তারা ইতিমধ্যে আলেপ্পোর সরকারি সামরিক গবেষণা কেন্দ্র দখল করেছে এবং সেখানে ইরান-সমর্থিত মিলিশিয়াদের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়েছে।

সিএনএন জানিয়েছে, গত বৃহস্পতিবার বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রণ দাবি করা আলেপ্পো এবং ইদলিবের বিভিন্ন এলাকায় বিমান হামলা ও গোলাবর্ষণে অন্তত ১৫ জন বেসামরিক মানুষ নিহত হয়েছেন। এদের মধ্যে ছয় শিশু ও দুই নারী ছিলেন। আহত হয়েছেন আরও ৩৬ জন।

ইরানের গণমাধ্যম জানিয়েছে, এই সংঘর্ষে ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ডস কর্পসের ব্রিগেডিয়ার জেনারেল কিউমারস পোরহাশেমি নিহত হয়েছেন।

ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রী আব্বাস আরাগচি সিরিয়ায় বিদ্রোহীদের আবারও সক্রিয় করার জন্য যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলকে দায়ী করেছেন। তিনি সিরিয়ার সরকার ও সেনাবাহিনীকে ইরানের সমর্থন অব্যাহত রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভও সিরিয়ার সরকারকে দ্রুত নিয়ন্ত্রণ পুনঃপ্রতিষ্ঠার আহ্বান জানিয়েছেন। ইরান এবং রাশিয়া সিরিয়ার গুরুত্বপূর্ণ মিত্র।

উল্লেখ্য, ২০১১ সালে আরব বসন্তের সময় সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের সরকারের বিরুদ্ধে গণতন্ত্রপন্থী বিক্ষোভের পর দেশটিতে গৃহযুদ্ধ শুরু হয়ে যায়। সে সময় দেশটির বিদ্রোহী বাহিনীগুলো ফ্রি সিরিয়ান আর্মি গঠন করেছিল।

সিরিয়ার গৃহযুদ্ধকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন দেশ ও আঞ্চলিক শক্তিগুলো, যেমন—সৌদি আরব, ইরান, যুক্তরাষ্ট্র এবং রাশিয়া ছায়াযুদ্ধের মাধ্যমে এই সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। গৃহযুদ্ধের একপর্যায়ে সিরিয়ায় আইএসআইএস জঙ্গিরা আধিপত্য বিস্তার করলেও পরবর্তীতে তাদেরকে সেখান থেকে বিতাড়িত করা হয়।

২০২০ সালে একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তির পর সিরিয়ার সংঘর্ষ স্থবির হয়ে পড়েছিল। তবে কিছু ক্ষেত্রে বিদ্রোহী ও সরকারি বাহিনীগুলোর মধ্যে সংঘর্ষ স্বল্প মাত্রায় অব্যাহত ছিল।

জাতিসংঘের তথ্যমতে, এক দশকেরও বেশি সময় ধরে চলা সিরিয়ার গৃহযুদ্ধে ৩ লাখেরও বেশি বেসামরিক মানুষ নিহত হয়েছেন। ঘর-বাড়ি হারিয়ে বাস্তুচ্যুত হয়েছেন লাখ লাখ মানুষ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত