Ajker Patrika

অভিনেতা জিন হ্যাকম্যান দম্পতির মৃত্যুতে প্রতিবেশীদের চাঞ্চল্যকর স্বীকারোক্তি

অনলাইন ডেস্ক
হলিউড তারকা জিন হ্যাকম্যান ও তাঁর স্ত্রী বেটসি আরাকাওয়া। ছবি: সংগৃহীত
হলিউড তারকা জিন হ্যাকম্যান ও তাঁর স্ত্রী বেটসি আরাকাওয়া। ছবি: সংগৃহীত

হলিউড তারকা জিন হ্যাকম্যান ও তাঁর স্ত্রী বেটসি আরাকাওয়ার রহস্যময় মৃত্যু ঘিরে নানা প্রশ্ন উঠেছে। নিউ মেক্সিকোর সান্তা ফে শহরে নিজেদের বিলাসবহুল বাড়ি থেকে গত ২৬ ফেব্রুয়ারি তাঁদের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। ধারণা করা হচ্ছে, মরদেহ পাওয়ার এক সপ্তাহেরও বেশি সময় আগে তাঁদের মৃত্যু হয়েছে।

জিন হ্যাকম্যান ৭০ টিরও বেশি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন। অভিনয়জীবন শেষ করার পর নিউ মেক্সিকোতে বসবাস করছিলেন। তাঁর প্রতিবেশীরা জানান, তিনি এবং তাঁর স্ত্রী অত্যন্ত নিভৃত জীবনযাপন করতেন।

সান্তা ফের অভিজাত এলাকায় থাকার পরও হ্যাকম্যান দম্পতির দেখা পাওয়া ছিল বেশ দুর্লভ। প্রতিবেশীরা জানান, তাঁরা খুব কমই তাঁদের বাড়ির বাইরে আসতেন।

গত পাঁচ বছর ধরে হ্যাকম্যান দম্পতির প্রতিবেশী ছিলেন জেমস অ্যাভারেট। তিনি বলেন, ‘আমাদের বাড়িতে গেট রয়েছে, তাঁদের বাড়িতেও গেট। এত বছরেও আমরা একবারও একে অপরকে দেখিনি।’

হার্ভি চকার নামে অন্য এক প্রতিবেশী বলেন, ‘তিনি নিরিবিলি থাকতে চেয়েছিলেন। বিরক্ত হতে চাননি, এতে তাঁর দোষ দেখি না।’

দুই দশকের বেশি সময় ধরে হ্যাকম্যানের পাশে বসবাস করা বাড হ্যামিল্টন জানিয়েছেন, দীর্ঘ এই সময়ে মাত্র একবার হ্যাকম্যান দম্পতির সঙ্গে নৈশভোজের সুযোগ হয়েছিল। তবে তাঁরা প্রতিবছরই নিউ মেক্সিকোর ক্যানসার ফাউন্ডেশনে দান করতেন।

জিন হ্যাকম্যান ও বেটসি আরাকাওয়ার মরদেহ উদ্ধার করার সময় দেখা যায়, তারা আংশিকভাবে মমির মতো হয়ে গেছেন এবং তাদের বাথরুমে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে ছিল নানা ওষুধ। পুলিশ ধারণা করছে, মৃত্যুর অন্তত ৯ দিন পর তাঁদের উদ্ধার করা হয়েছে।

তাঁদের পরিবার প্রাথমিকভাবে কার্বন মনোক্সাইডের বিষক্রিয়ায় মৃত্যু হয়েছে এমন সন্দেহ করলেও নিউ মেক্সিকো গ্যাস কোম্পানির পরীক্ষায় গ্যাসলাইনে কোনো সমস্যা পাওয়া যায়নি।

পুলিশের বরাত দিয়ে ইকোনমিক টাইমস জানিয়েছে, মরদেহে কোনো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। তবে এক গোয়েন্দা কর্মকর্তা জানান, কার্বন মনোক্সাইড বা গ্যাস লিকের ফলে মৃত্যুর ক্ষেত্রে শরীরে দৃশ্যমান কোনো ক্ষত নাও থাকতে পারে।

ময়নাতদন্তের চূড়ান্ত রিপোর্ট এবং টক্সিকোলজি পরীক্ষার ফলাফল এখনো প্রকাশিত হয়নি। ফলে তাঁদের মৃত্যুর প্রকৃত কারণ ও ধরন নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

হ্যাকম্যানের সন্তান এলিজাবেথ-ও-লেসলি এবং নাতনি অ্যানি নিউইয়র্ক পোস্টে এক যৌথ বিবৃতিতে বলেছেন, ‘আমাদের বাবা জিন হ্যাকম্যান এবং তাঁর স্ত্রী বেটসির মৃত্যুর সংবাদ দিতে গিয়ে আমরা অত্যন্ত শোকাহত। তিনি তাঁর অসাধারণ অভিনয় জীবনের জন্য বিশ্বজুড়ে ভালোবাসা এবং প্রশংসা পেয়েছেন। তবে আমাদের কাছে তিনি ছিলেন কেবল বাবা ও দাদু। আমরা তাঁকে খুব মিস করব।’

২০০৪ সালে অভিনয় থেকে অবসর নেওয়ার দীর্ঘ ১৯ বছর পর ২০২৩ সালে মাত্র এক বারের জন্য হ্যাকম্যান ও তাঁর স্ত্রীকে জনসমক্ষে দেখা গিয়েছিল। হ্যাকম্যানের তিন সন্তান ক্রিস্টোফার, এলিজাবেথ ও লেসলি বরাবরই গণমাধ্যমের বাইরে থেকেছেন।

হলিউডের এই কিংবদন্তির আকস্মিক মৃত্যু এখনো রহস্যাবৃত। তদন্ত অব্যাহত রয়েছে এবং শিগগিরই আরও তথ্য প্রকাশিত হতে পারে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত