Ajker Patrika

নিউইয়র্কে তিনজনকে হত্যার পর খুনি বললেন, ‘একাকী ছিল তাই’

হত্যাকারী র‍্যামন রিভেরা। ছবি: সংগৃহীত
হত্যাকারী র‍্যামন রিভেরা। ছবি: সংগৃহীত

ম্যানহাটনের আকাশ তখন দিনের আলোয় ভরা, কিন্তু সেই আলোকে ম্লান করে দিল রক্তের লাল ছোপ। ৫১ বছর বয়সী গৃহহীন র‍্যামন রিভেরা নিজের ভেতরের অন্ধকারকে ছড়িয়ে দিলেন নিউইয়র্কের রাজপথে। এক জোড়া ধারালো ছুরি দিয়ে খুন করলেন তিনজন নিরীহ মানুষকে।

এই হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করেছেন রিভেরা। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি বলেছেন, ভুক্তভোগীদের টার্গেট করেছিলেন কারণ তাঁরা ‘একাকী’ ও ‘বিভ্রান্ত’ ছিলেন।

এই ভয়াবহ হত্যাযজ্ঞের বিবরণ ম্যানহাটনের ফৌজদারি আদালতে হাজির হওয়ার আগে প্রকাশ্যে আসে। নিউইয়র্ক পোস্ট জানিয়েছে, ৫১ বছর বয়সী এই গৃহহীন ব্যক্তি তিনজনকে বিনা প্ররোচনায় নৃশংসভাবে হত্যা করেছেন।

গত সোমবার সকালে প্রথম রিভেরার হামলার শিকার হন ৩৬ বছর বয়সী নির্মাণ শ্রমিক অ্যাঞ্জেল গুস্তাভো লাটা-ল্যান্ডি। পিকস্কিল থেকে আসা এই শ্রমিক সকাল ৮টা ২০ মিনিটে চেলসির একটি জায়গায় কাজের গাড়ির জন্য অপেক্ষা করছিলেন। ছুরিকাঘাতের পরপরই তাঁর মৃত্যু হয়।

আদালতে লাটা-ল্যান্ডির পরিবারের সদস্যরা ছিলেন বেদনাহত। তাঁর বোন ভার্থা ল্যান্ড বলেন, ‘আমার ভাই কাজ করতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছে। আমরা শুধু ন্যায়বিচার চাই।’

অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিস্ট্রিক্ট অ্যাটর্নি মেগান জয় আদালতে জানান, তিনজন নিরপরাধ নিউইয়র্কবাসী নিজেদের মতো করে দিন শুরু করে রিভেরার নির্মমতার শিকার হয়েছেন।

এরপর সকাল সাড়ে ১০টার দিকে রিভেরা নিউইয়র্কের পূর্ব নদীর তীরে যান। সেখানে মাছ ধরায় ব্যস্ত ৬৭ বছর বয়সী চ্যাং ওয়াংকে ছুরিকাঘাত করেন। এর আধাঘণ্টা পর জাতিসংঘ ভবনের কাছে ৩৬ বছর বয়সী উইলমা অগাস্টিনকেও ছুরিকাঘাত করেন তিনি। আহত অবস্থায় তাঁকে হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসকেরা মৃত ঘোষণা করেন।

অগাস্টিন ছিলেন হাইতি থেকে আসা একা মা। তিনি তাঁর ছেলের সঙ্গে আমেরিকানা ইন নামের একটি আশ্রয়কেন্দ্রে থাকতেন। তাঁর পরিচিত এক নারী বলেন, ‘উনি খুব ভালো মানুষ ছিলেন।’

রিভেরাকে অগাস্টিন হত্যার পরপরই গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁর কাছে দুটি ছুরি পাওয়া যায়। জানা গেছে, আগে থেকেই তাঁর মানসিক সমস্যা ছিল।

আদালতে বিচারক জ্যানেট ম্যাকডোনেল তাঁকে বিনা জামিনে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন। এতে কোনো আপত্তি করেননি রিভেরা।

সূত্র জানায়, হত্যাকাণ্ডের পর রিভেরা পুলিশের হেফাজতে দীর্ঘ সময় ঘুমান। পরে জেগে উঠে পুরো ঘটনায় স্বীকারোক্তি দেন।

এই ঘটনা নিউইয়র্ক শহরে চরম নিরাপত্তাহীনতা ও মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত