Ajker Patrika

সালিসে না আসায় দল বেঁধে গিয়ে বাবা-ছেলেকে কুপিয়ে হত্যা

ময়মনসিংহ ও ফুলবাড়িয়া প্রতিনিধি
আপডেট : ১৩ এপ্রিল ২০২৫, ২২: ২১
ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়ার নাওগাঁও ইউনিয়নের নাওগাঁও দক্ষিণপাড়া গ্রামে আজ রোববার দুপুরে ভাঙচুর করা আব্দুল গফুরের বাড়িঘর। ছবি: সংগৃহীত
ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়ার নাওগাঁও ইউনিয়নের নাওগাঁও দক্ষিণপাড়া গ্রামে আজ রোববার দুপুরে ভাঙচুর করা আব্দুল গফুরের বাড়িঘর। ছবি: সংগৃহীত

ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়ায় কিশোর ছেলেসহ এক ব্যক্তিকে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। এ সময় তাঁদের বাড়িঘর ভাঙচুর করা হয়। চুরি ও মাদক সেবনের অভিযোগে ডাকা সালিসে না আসায় শত শত মানুষ তাঁদের বাড়িতে গিয়ে এই হামলা চালান বলে এলাকাবাসী জানিয়েছেন।

আজ রোববার দুপুরে উপজেলার নাওগাঁও ইউনিয়নের নাওগাঁও দক্ষিণপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত ব্যক্তিরা হলেন আব্দুল গফুর (৪০) ও তাঁর কিশোর ছেলে মেহেদী হাসান (১৫। এ সময় শত শত লোক তাঁদের বাড়িঘর ভাঙচুর করেন। হত্যাকাণ্ডের পর লোকজন পাশের গ্রাম রাঙ্গামাটিয়ায় হারুন নামের এক ব্যক্তির বাড়ি, দোকান ও একটি মাজার ভাঙচুর করেন বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় পুলিশ তিনজনকে আটক করেছে।

খবর পেয়ে বিকেলে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন ময়মনসিংহ পুলিশ সুপার কাজী আখতারুল আলম। ঘটনার পর থেকে গ্রেপ্তার এড়াতে নাওগাঁও দক্ষিণপাড়া গ্রামের পরিবারগুলোর পুরুষ সদস্যরা পলাতক রয়েছেন বলে জানা গেছে। যাঁরা গ্রামে আছেন, তাঁরাও ভয়ে কোনো কিছু বলতে রাজি হননি।

পুলিশ ও এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আব্দুল গফুর নাওগাঁও গ্রামের হযরত আলীর ছেলে। দীর্ঘদিন ধরে তিনি ও তাঁর ছেলে মেহেদী হাসান এলাকায় মাদকদ্রব্য সেবন-বিক্রি ও চুরি করে আসছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। বাবা-ছেলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে গ্রামের মানুষ সালিস ডাকেন। দুপুরে আব্দুল গফুরের বাড়িসংলগ্ন নাওগাঁও হোসেনীয়া স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসার সামনে গ্রামের শত শত মানুষ সালিসে আসেন।

এদিকে এলাকার লোকজনের ডাকে সালিসে না এসে আব্দুল গফুর ও মেহিদী হাসান তাঁদের ঘরে রাম দা নিয়ে বসে থাকেন। বাবা-ছেলের জন্য অপেক্ষা করে একপর্যায়ে উপস্থিত লোকজন তাঁদের বাড়িতে হাজির হন। এ সময় দা নিয়ে আব্দুল গফুর ও মেহেদী ঘর থেকে বেরিয়ে আসেন। জড়ো হওয়া লোকজন দা কেড়ে নিয়ে কুপিয়ে ও পিটিয়ে তাঁদের হত্যা করেন।

আব্দুল গফুরের স্ত্রী শিল্পি আক্তার বলেন, ‘স্থানীয় হাবিবুর রহমানসহ শত শত মানুষ সালিসের নামে আমার স্বামী ও ছেলেকে পরিকল্পিতভাবে কুপিয়ে হত্যা করেন। তাঁরা (স্বামী-সন্তান) যতই অপরাধ করুক না কেন, দেশে তো আইন আছে। আইনের মাধ্যমে বিচার হতো। তাঁদের কেন নির্মমভাবে হত্যা করা হলো?’

ফুলবাড়িয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রোকনুজ্জামান আজকের পত্রিকাকে বলেন, শতাধিক মানুষের উপস্থিতিতে বাবা-ছেলের বিরুদ্ধে সালিস বসেছিল। কিন্তু তাঁরা সালিসে না আসায় লোকজন গিয়ে এই হত্যাকাণ্ড ঘটায়। খবর পেয়ে পুলিশ তিনজনকে আটক করেছে। এ ঘটনায় নিহত ব্যক্তিদের পরিবার মামলা করবে বলে জানিয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত