স্পেসএক্সের রকেট উৎক্ষেপন একসঙ্গে দেখলেন মাস্ক ও ট্রাম্প

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ২০ নভেম্বর ২০২৪, ১৬: ৪৫
Thumbnail image
রকেট উৎক্ষেপণের সময় ট্রাম্পের উপস্থিতি মাস্ককের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার ইঙ্গিত দেয়। ছবি: সংগৃহীত

মার্কিন প্রযুক্তি উদ্যোক্তা ইলন মাস্কের মহাকাশ সংস্থা স্পেস এক্সের পরবর্তী প্রজন্মের রকেট স্টারশিপের পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণ দেখতে সশরীরে হাজির হয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। স্পেস এক্সের নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থেকে এ উৎক্ষেপণ পর্যবেক্ষণ করেছেন তিনি। এ সময় মাস্ক তাঁর পাশে ছিলেন।

স্থানীয় সময় (১৯ নভেম্বর) মঙ্গলবার সংস্থাটির টেক্সাসের ব্রাউনসভিলের বোকা চিকা লঞ্চ প্যাড থেকে এ রকেট উৎক্ষেপণ করা হয়। প্রায় ৪০০ ফুট (১২২ মিটার) উচ্চতার রকেট সিস্টেমটি নভোচারীদের চাঁদে অবতরণ করানোর এবং মঙ্গলগ্রহে পাঠানোর জন্য ডিজাইন করা হয়েছে।

রকেটের ২৩৩ ফুট (৭১ মিটার) উচ্চতার প্রথম স্তরের বুস্টারের ‘সুপার হেভি’। প্রায় ৪০ মাইল (৬২ কিলোমিটার) উচ্চতায় এর দ্বিতীয় স্তর ‘স্টারশিপ’ থেকে আলাদা হয়ে যায় এটি। এরপর মহাকাশের দিকে যেতে থাকে রকেটটিকে।

স্টারশিপ রকেটের মহাকাশে যাওয়ার পর বুস্টারটি মেক্সিকো উপসাগরে পড়ে যায়। তবে এটি উৎক্ষেপণের টাওয়ারে সংযুক্ত বড় যান্ত্রিক বাহুতে ফিরে আসার কথা ছিল। তবে কিছু ত্রুটির কারণে শেষ মুহূর্তে এটি সাগরে পড়ে যায়।

অপরদিকে মহাকাশে পৃথিবী ঘুরে প্রায় এক ঘণ্টা পরে দিনের বেলায় ভারত মহাসাগরে পড়েছে স্টারশিপ রকেটটি।

মহাকাশে প্রথমবারের মতো অন্তর্নির্মিত ইঞ্জিন পুনরায় সফলভাবে চালু করে রকেটটি। মহাকাশে এভাবে চালক বিহীন রকেটটির ইঞ্জিন চালুর ক্ষেত্রে প্রথমবার সফল হলো স্পেসএক্স।

সোশ্যাল মিডিয়ার এক পোস্টে স্পেসএক্সকে অভিনন্দন জানিয়েছেন নাসার প্রধান বিল নেলসন। তিনি স্টারশিপের মহাকাশে ইঞ্জিন পুনরায় প্রজ্বলন ‘অরবিটাল ফ্লাইটের গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি’ চিহ্নিত করেছে। আগামী জানুয়ারিতে ট্রাম্প দায়িত্ব গ্রহণ করার পর প্রেসিডেন্ট অফিস থেকে পদ থেকে সরে যাওয়ার কথা রয়েছে।

রকেট উৎক্ষেপণের সময় ট্রাম্পের উপস্থিতি মাস্ক সঙ্গে মধ্যের ঘনিষ্ঠতার ইঙ্গিত দেয়। মাস্ক এবারের মার্কিন নির্বাচনে ট্রাম্পকে সমর্থন দেন এবং তার নির্বাচনী প্রচারণায় ১৩০ মিলিয়নেরও বেশি ডলার খরচ করেন। সম্প্রতি ট্রাম্প তাকে তার সম্ভাব্য মন্ত্রিপরিষদে স্থান দিয়েছেন। এর ফলে ইলন মাস্ক ও তার কোম্পানিগুলো লাভবান হতে পারে।

গত ১৩ নভেম্বর ডিপার্টমেন্ট অব গভমেন্ট ইফিশিয়েন্সি নামের নতুন বিভাগে ইলন মাস্কে দায়িত্ব দেন ট্রাম্প। সরকারের বিভিন্ন বিভাগে অপ্রয়োজনীয় ব্যয় সংকোচনে তিনি দায়িত্ব পালন করবেন।

মার্কিন ফেডারেল অ্যাভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফএএ) কর্তৃক বাণিজ্যিক রকেট উৎক্ষেপণের নিয়ন্ত্রণ মাস্কের জন্য হতাশার কারণ। তিনি অভিযোগ করেছেন, এই সংস্থা মঙ্গলগ্রহে পৌঁছানোর কোম্পানির অগ্রগতিকে বাধাগ্রস্ত করছে।

তবে রকেটটির এর আগে উৎক্ষেপণের এক মাসেরও কম সময়ের মধ্যে গত মঙ্গলবার স্টারশিপ উৎক্ষেপণের জন্য এফএএ–এর অনুমোদন পেল স্পেসএক্স।

গত মঙ্গলবারের মাস্ক পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণের জন্য চারটি মূল লক্ষ্য তালিকাভুক্ত করেন—মহাকাশে থাকা অবস্থায় স্টারশিপের মহাকাশ উপযোগী ইঞ্জিন পুনরায় চালু করা, দিনের বেলা রকেটটিকে সাগরে অবতরণ করানো (অতীতের প্রচেষ্টাগুলো ছিল রাতে), পৃথিবীতে পুনঃপ্রবেশের সময় স্টারশিপকে আরও তীব্র তাপ সহ্য করানো এবং বুস্টারের অবতরণ দ্রুততর করা।

ট্রাম্প প্রশাসনের অধীনে স্পেসএক্স উন্নয়নে দ্রুত অগ্রগতি করবে বলে আশা করছে স্টারশিপ।

ট্রাম্পের দ্বিতীয় প্রশাসনের অধীনে। প্রশাসনের মহাকাশ সংক্রান্ত পরিকল্পনা নাসা-এর আর্টেমিস প্রোগ্রামকে আরও বেশি গুরুত্ব দেওয়ার আশা করা হচ্ছে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে চাঁদের পৃষ্ঠে নভোচারীদের আবা পাঠানো হবে। এর পাশাপাশি আরও উচ্চাকাঙ্ক্ষী লক্ষ্য হিসেবে মঙ্গলগ্রহে মানুষকে পাঠানো হবে যা ইলন মাস্কের একটি বড় স্বপ্ন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত