Ajker Patrika

ট্রাম্পের প্রশাসনে থাকছে না মাস্কের চাকরি!

অনলাইন ডেস্ক
ইলন মাস্ক। ছবি: এএফপি
ইলন মাস্ক। ছবি: এএফপি

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি কর্মদক্ষতা বিভাগের (ডিওজিই) প্রধান হিসেবে বিশ্বের শীর্ষ ধনকুবের ইলন মাস্ককে নিয়োগ দিয়েছিলেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে তাঁর বিতর্কিত মেয়াদ সম্ভবত শিগগির শেষ হতে চলেছে। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের আমলাতন্ত্রকে ছেঁটে ছোট করেছেন এবং সরকারি ব্যয়ের তীব্র সমালোচনা করেছেন। তবে বিশ্বের এই শীর্ষ ধনী ব্যক্তির সরকারি চাকরির মেয়াদ আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই আইনি পরিণতিতে পৌঁছাবে।

মূলত ইলন মাস্ককে নিয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্পের একটি মন্তব্য তাঁর চাকরির পরিণতি নিয়ে জল্পনা উসকে দিয়েছে। গত সোমবার সাংবাদিকদের ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ‘তাঁর একটি বড় কোম্পানি আছে চালানোর...কোনো এক সময় উনি ফিরে যাবেন।’ প্রেসিডেন্ট আরও যোগ করেন, ‘তবে যত দিন সম্ভব, আমি তাঁকে ধরে রাখতে চাইব।’

যুক্তরাষ্ট্রের সাধারণ আইন অনুসারে, একজন বিশেষ সরকারি কর্মচারী সর্বোচ্চ ১৩০ দিন চাকরিতে বহাল থাকতে পারেন। সম্ভবত মে মাসের শেষ দিকে মাস্কের এই ১৩০ দিনের মেয়াদ শেষ হবে। যদিও এর আগে হোয়াইট হাউস দাবি করেছিল মাস্ক ‘এখানেই থাকবেন।’

মার্কিন সংবাদমাধ্যম পলিটিকো গতকাল বুধবার ট্রাম্প প্রশাসনের ভেতরের সূত্রের বরাত দিয়ে জানিয়েছে, মাস্ক সত্যিই আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে তার প্রধান ভূমিকা থেকে সরে দাঁড়াবেন। তবে মাস্ক এই খবরকে ‘ভুয়া খবর’ বলে অভিহিত করেছেন এবং হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লেভিট গতকাল বুধবার পলিটিকোর প্রতিবেদনকে ‘আবর্জনা’ বলে উল্লেখ করেছেন।

লেভিট বলেন, ‘ইলন মাস্ক এবং প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প উভয়েই জনসমক্ষে বলেছেন, ডিওজিই-এ তাঁর অবিশ্বাস্য কাজ শেষ হলে ইলন একজন বিশেষ সরকারি কর্মচারী হিসেবে সরকারি চাকরি থেকে অব্যাহতি নেবেন।’ হোয়াইট হাউস তাৎক্ষণিকভাবে দ্য গার্ডিয়ানের মন্তব্যের অনুরোধের জবাব দেয়নি।

মাস্ক যখন বিদায়ের পথ খুঁজছেন, তখন ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশের অধীনে তাঁর সরকারি দক্ষতা বিভাগ (ডিওজিই) ২০২৬ সাল পর্যন্ত চলতে থাকবে। মাস্কের নিয়োগ করা উচ্চ-স্তরের কর্মকর্তা এখনো সরকারের বিভিন্ন সংস্থায় দায়িত্ব পালন করছেন এবং তারা সম্ভবত এই বিলিয়নিয়ারের সরকারি চাকরির মেয়াদ পেরিয়েও টিকে থাকবেন।

মাস্ক জানুয়ারিতে কোনো রকম যাচাইবাছাই ছাড়াই ট্রাম্পের দলে একজন উচ্চ-পদস্থ কর্মকর্তা হিসেবে যোগ দেন। তিনি এরপর থেকে ‘আক্ষরিকভাবেই’ সরকারি সংস্থাগুলোর ওপর ‘করাত’ চালিয়েছেন। তাঁর নির্দেশে ব্যাপকভাবে সরকারি কর্মী ছাঁটাই করা হয়েছে, যার মধ্যে এ সপ্তাহেই স্বাস্থ্য ও মানব পরিষেবা বিভাগ থেকে প্রায় ১০ হাজার কর্মী ছাঁটাই করা হয়েছেন। একই সঙ্গে মানবিক সহায়তা সংস্থা ইউএসএআইডি এবং মার্কিন রাষ্ট্রপরিচালিত গণমাধ্যম ভয়েস অব আমেরিকার মতো সংস্থাগুলো বিলুপ্ত করার পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমসের তথ্য অনুযায়ী, ২০ জানুয়ারি থেকে আনুমানিক ৫৬ হাজার ফেডারেল কর্মী চাকরি হারিয়েছেন এবং আরও ৭৫ হাজার স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করেছেন, যেখানে আরও অন্তত ১ লাখ ৭১ হাজার কর্মী ছাঁটাই করার পরিকল্পনা রয়েছে।

মার্কেট ল স্কুলের এক নতুন জনমত জরিপ অনুসারে, এই বিশাল ছাঁটাই ভালোভাবে নেয়নি জনগণ। জরিপে দেখা গেছে, মাত্র ৪১ শতাংশ আমেরিকান ডিওজই-এর কাজকে সমর্থন করে, যেখানে মাস্কের ব্যক্তিগত জনপ্রিয়তা আরও কম, মাত্র ৩৮ শতাংশ। মার্চ মাসের মাঝামাঝি সময়ে কুইনিপিয়াক পোলের ফলাফলে দেখা গেছে, দেশের অর্ধেকেরও বেশি মানুষ বিশ্বাস করে মাস্ক এবং ও তাঁর সংস্থা যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষতি করছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত