মুখোমুখি বিতর্কে মার্কিন নির্বাচনের দুই ভাইস প্রেসিডেন্ট প্রার্থী

অনলাইন ডেস্ক
Thumbnail image

যুক্তরাষ্ট্রের আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনকে সামনে রেখে এবার মুখোমুখি বিতর্কে অংশ নিয়েছেন ডেমোক্রেটিক পার্টির ভাইস প্রেসিডেন্ট প্রার্থী টিম ওয়ালজ ও রিপাবলিকান পার্টির ভাইস প্রেসিডেন্ট প্রার্থী জে ডি ভ্যান্স। গত মঙ্গলবার রাতে মার্কিন সম্প্রচারমাধ্যম সিবিএস নেটওয়ার্ক আয়োজিত এ বিতর্কে মধ্যপ্রাচ্য সংকট, অভিবাসন, কর, গর্ভপাত, জলবায়ু পরিবর্তন, অর্থনীতিসহ নানা ইস্যুতে কথা বলেন দুই নেতা। তবে জোরালোভাবে নিজেদের মধ্যকার নীতিগত মতপার্থক্য তুলে ধরলেও ব্যক্তিগত আক্রমণ তেমন একটা দেখা যায়নি।

নির্বাচনের ৩৫ দিন আগে মঙ্গলবার এ বিতর্কে অংশ নেন মিনেসোটার গভর্নর টিম ওয়ালজ ও সিনেটর জেডি ভ্যান্স। নির্বাচনী প্রচারাভিযানে পরস্পরকে তীব্র আক্রমণ করলেও বিতর্কে তাঁদের মনোভাব ছিল উষ্ণ। তীব্র আক্রমণের বিষয়টি যেন প্রেসিডেন্ট প্রার্থী কমলা হ্যারিস ও ডোনাল্ড ট্রাম্পের জন্য রেখে দিয়েছেন তাঁরা।

ভ্যান্স প্রশ্ন করেন, হ্যারিস কেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসনে ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে মুদ্রাস্ফীতি, অভিবাসন ও অর্থনীতির দিকে নজর দেননি। তিনি সমানে হ্যারিসের বিরুদ্ধে আক্রমণ চালিয়ে যান। ভ্যান্স বলেন, মধ্যবিত্তের সমস্যা সমাধানের বিষয়ে কমলা হ্যারিসের যদি এত মহৎ পরিকল্পনা থাকে, তাহলে যে কাজটি তাঁকে আমেরিকান জনগণ সাড়ে তিন বছর আগেই দিয়েছিলেন, তাঁর উচিত ছিল তা সম্পন্ন করা।

ওয়ালজ ট্রাম্পকে অস্থিতিশীল নেতা হিসেবে বর্ণনা করেন, যিনি কোটিপতিদেরই শুধু অগ্রাধিকার দিয়েছেন। অভিবাসন সম্পর্কে ভ্যান্সের সমালোচনা তাঁকে ফিরিয়ে দিয়ে সীমান্ত সুরক্ষার বিষয়ে দ্বিদলীয় প্রস্তাব পরিহার করতে কংগ্রেসে রিপাবলিকানদের ওপর চাপ সৃষ্টির জন্য তিনি ট্রাম্পকে অভিযুক্ত করেন। অভিবাসন সম্পর্কে ওয়ালজ বলেন, ‘আমরা অধিকাংশ লোকই এর সমাধান চাই। এটি করার জন্য ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে চার বছর সময় ছিল এবং তিনি আপনাদের কাছে বলেছেন, বিষয়টা কতটা সহজ হবে।’

নিউইয়র্কের সিবিএস ব্রডকাস্টিং সেন্টারে অনুষ্ঠিত বিতর্কের শুরুতেই লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলে ইসরায়েলের অব্যাহত আক্রমণ এবং ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ইরানের পাল্টা ক্ষেপণাস্ত্র আক্রমণের পর মধ্যপ্রাচ্যে ক্রমবর্ধমান সংকটের প্রসঙ্গটি আসে। ওয়ালস বলেন, এ ব্যাপারে ট্রাম্প অনেক বেশি ‘নড়বড়ে’। এই ক্রমবর্ধমান সংঘাত মোকাবিলার জন্য আরও শক্ত মনোভাবাপন্ন মানুষ প্রয়োজন। তবে ভ্যান্স জোর দিয়েই বলেন, ট্রাম্প তাঁর আমলে বিশ্বকে আরও বেশি নিরাপদ করে গেছেন।

যখন জানতে চাওয়া হয়, ইসরায়েল কর্তৃক আগেভাগেই ইরানে হামলাকে সমর্থন করবেন কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে ভ্যান্স বলেন, বিষয়টি তিনি ইসরায়েলের বিবেচনার জন্য রাখবেন। তবে ওয়ালজ এই প্রশ্নের সরাসরি কোনো উত্তর দেননি।

ওয়ালস (৬০) মিনেসোটা অঙ্গরাজ্যের লিবারেল গভর্নর। অন্যদিকে সাবেক স্কুলশিক্ষক ভ্যান্স একজন জনপ্রিয় লেখক এবং ওহাইও অঙ্গরাজ্যের সিনেটর। তাঁরা উভয়ই নিজেদের আমেরিকার মধ্য-পশ্চিমাঞ্চলের সন্তান হিসেবে তুলে ধরেন। তবে দেশের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোর ব্যাপারে তাঁদের দৃষ্টিভঙ্গি পরস্পরবিরোধী।

মার্কিন সংবাদমাধ্যম ভয়েস অব আমেরিকা জানিয়েছে, ট্রাম্প টেলিভিশনে এই বিতর্ক দেখার সময়ে তাঁর ট্রুথ সোশ্যাল সাইটে বিতর্কটি ঘন ঘন পোস্ট করছিলেন। কখনো কখনো মিনিটে দুবার করে।

আগামী ৫ নভেম্বরের নির্বাচনের আগে এই শেষ বিতর্কে উভয় প্রতিপক্ষ পরস্পরকে আঘাত হানার চেষ্টা করেন। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, ভাইস প্রেসিডেন্টদের বিতর্ক খুব উত্তেজনাপূর্ণ হতে পারে। কিন্তু তা নির্বাচনের ফলাফলে তেমন পরিবর্তন আনে না। তা সত্ত্বেও জনগণের মতামতে সামান্য পরিবর্তনও তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বিতাকে পাল্টে দিতে পারে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত