Ajker Patrika

ভারতে সরকার বদলাতে ২১ মিলিয়ন ডলার ব্যয় করেছিল বাইডেন প্রশাসন, ট্রাম্পের অনুমান

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৫: ০২
মিয়ামির জনসভায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ডা ট্রাম্প। ছবি: এএফপি
মিয়ামির জনসভায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ডা ট্রাম্প। ছবি: এএফপি

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আবারও বাইডেন প্রশাসনের তরফ থেকে ভারতের জাতীয় নির্বাচনে ‘ভোটার উপস্থিতি’ বাড়ানোর জন্য ২১ মিলিয়ন ডলার দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তিনি বলেছেন, তাঁর অনুমান, এই অর্থ মূলত ব্যয় করা হয়েছে ভারতের নির্বাচনে ‘অন্য কাউকে জেতানোর চেষ্টা’ করার জন্য। তাঁর ইঙ্গিত, বাইডেন প্রশাসন সম্ভবত ভারতে সরকার বদলে এই অর্থ ব্যয় করেছিল।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির খবরে বলা হয়েছে, ফ্লোরিডার মিয়ামিতে বৃহস্পতিবার এক জনসভায় ডোনাল্ড ট্রাম্প এই বিষয়ে বক্তব্য দেন। তিনি বলেন, ‘আমরা কেন ভারতীয় ভোটারদের উপস্থিতির জন্য ২১ মিলিয়ন ডলার ব্যয় করব? আমি অনুমান করছি, তারা (বাইডেন প্রশাসন) অন্য কাউকে নির্বাচিত করার চেষ্টা করছিল। আমাদের ভারত সরকারকে জানাতে হবে...এটি একটি সম্পূর্ণ যুগান্তকারী ঘটনা।’

এর আগে, ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ মিত্র ইলন মাস্কের নেতৃত্বে তাঁর প্রতিষ্ঠিত মার্কিন ডিপার্টমেন্ট অব গভর্নমেন্ট ইফিসিয়েন্সি বা সরকারি কর্মদক্ষতা বিভাগ প্রকাশ করে যে, মার্কিন সহায়তা সংস্থা ইউনাইটেড স্টেটস এজেন্সি ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট বা ইউএসএআইডি ভারতের নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি বাড়ানোর জন্য ২১ মিলিয়ন ডলার বরাদ্দ করেছিল।

মার্কিন প্রশাসনের ব্যয় কমানোর লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠিত ট্রাম্পের এই বিভাগ গত ১৬ ফেব্রুয়ারি প্রকাশিত এক তালিকায় উল্লেখ করে যে, ‘মার্কিন করদাতাদের অর্থ কোথায় ব্যয় করা হচ্ছে’ এবং সেই তালিকায় ‘ভারতে ভোটার উপস্থিতির জন্য ২১ মিলিয়ন ডলার’ বরাদ্দ ছিল অন্যতম। ডিওজিই জানায়, তালিকাভুক্ত সব ব্যয়ের বরাদ্দ বাতিল করা হয়েছে।

সে সময় ডিওজিই আরও দাবি করে, বাংলাদেশের রাজনৈতিক কাঠামো শক্তিশালী করার জন্য ২৯ মিলিয়ন ডলার বরাদ্দ করা হয়েছিল। এই অর্থ এমন একটি দেশে বরাদ্দ করা হয়েছিল যেখানে গত বছর রাজনৈতিক অস্থিরতা তৈরি হয় এবং অভিযোগ ওঠে যুক্তরাষ্ট্রের ‘ডিপ স্টেট’ শেখ হাসিনাকে ক্ষমতা থেকে সরানোর ঘটনায় জড়িত ছিল। এ ছাড়া, নেপালের আর্থিক সংহতি ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের জন্য ৩৯ মিলিয়ন ডলার বরাদ্দ করা হয়েছিল।

ট্রাম্প মিয়ামির জনসমাবেশে বলেন, ‘গত এক মাসে, আমরা ইউএসএআইডি কার্যত বন্ধ করে দিয়েছি। কারণ, ইউএসএআইডি এই ধরনের পাগলামিতে বড় ধরনের অর্থায়ন করছিল।’ তিনি আরও বলেন, ‘এক মাসেরও কম সময়ে, ডিওজিই এরই মধ্যে ৫৫ বিলিয়ন ডলারের বেশি সাশ্রয় করেছে, এবং আমরা মাত্র শুরু করছি...আমরা দ্রুতই অর্থনীতি চাঙা করব। কারণ, আমরা ফেডারেল সরকারকে নাটকীয়ভাবে সংকুচিত করছি।’

এর আগে, গতকাল বুধবার ট্রাম্প ডিওজিইর পদক্ষেপের সমর্থনে বক্তব্য রাখেন এবং প্রশ্ন তোলেন কেন মার্কিন করদাতাদের অর্থ ভারতের ভোটার উপস্থিতি বাড়ানোর জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘আমরা কেন ভারতকে ২১ মিলিয়ন ডলার দিচ্ছি? তাদেরই তো অনেক বেশি অর্থ আছে। তারা বিশ্বের অন্যতম উচ্চ কর আরোপকারী দেশ, বিশেষ করে আমাদের ক্ষেত্রে; আমাদের সেখানে প্রবেশ করা খুবই কঠিন কারণ তাদের শুল্ক এত বেশি। আমি ভারত এবং তাদের প্রধানমন্ত্রীকে সম্মান করি, কিন্তু ভারতের ভোটার উপস্থিতির জন্য ২১ মিলিয়ন ডলার? আর এখানে (আমেরিকায়) ভোটার উপস্থিতির কী হবে?’

এদিকে, ডিওজিইর নথি প্রকাশের ভারতে ক্ষমতাসীন ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) বিরোধী দল কংগ্রেসকে এই ২১ মিলিয়ন ডলার অনুদানের বিষয়ে আক্রমণ করে এবং বলেছে, এটি ‘নিঃসন্দেহে ভারতের নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় বহিরাগত হস্তক্ষেপ।’

বিজেপি নেতা অমিত মালব্য বলেন, ‘এর থেকে কার লাভ হচ্ছে? অন্তত ক্ষমতাসীন দল (বিজেপি) তো নয়! এই উদ্যোগ ভারতীয় প্রতিষ্ঠানগুলোতে বিদেশি সংগঠনের সিস্টেম্যাটিক অনুপ্রবেশের সঙ্গে যুক্ত।’

অমিত মালব্য হাঙ্গেরির বংশোদ্ভূত মার্কিন ধনকুবের জর্জ সোরোসকেও দায়ী করেন। বিশ্বব্যাপী ডানপন্থী রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বরা তাঁর বিরুদ্ধে বিভিন্ন দেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে হস্তক্ষেপের জন্য অভিযুক্ত করে থাকেন। এ বিষয়ে মালব্য বলেন, ‘আবারও দেখা যাচ্ছে, কংগ্রেস ও গান্ধী পরিবারের ঘনিষ্ঠ সহযোগী হিসেবে পরিচিত জর্জ সোরোসের ছায়া আমাদের নির্বাচনী প্রক্রিয়ার ওপর পড়েছে।’

মালব্য আরও দাবি করেন, ২০১২ সালে ভারতের নির্বাচন কমিশন এবং দ্য ইন্টারন্যাশনাল ফাউন্ডেশন ফর ইলেক্টোরাল সিস্টেমসের মধ্যে স্বাক্ষরিত একটি সমঝোতা স্মারক ছিল বিতর্কিত। কারণ দ্য ইন্টারন্যাশনাল ফাউন্ডেশন ফর ইলেক্টোরাল সিস্টেমসের সঙ্গে সোরোসের ‘ওপেন সোসাইটি ফাউন্ডেশনের’ যোগসূত্র আছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত