রায়হান রাশেদ
আজ খতমে তারাবিতে পবিত্র কোরআনের ২৬ তম পারা তিলাওয়াত করা হবে। সুরা আহকাফ, সুরা মুহাম্মদ, সুরা ফাতহ, সুরা হুজুরাত ও সুরা জারিয়াতের ১ থেকে ৩০ নম্বর আয়াত পর্যন্ত পড়া হবে। এই অংশে বাবা-মায়ের অনুগত্য, নবীজির মুখে জিনদের কোরআন শ্রবণ, গুজব রটানো, যুদ্ধবন্দীদের সঙ্গে আচরণনীতি, হুদায়বিয়ার সন্ধি, মক্কা বিজয়, সাহাবিদের প্রতি আল্লাহর সন্তুষ্টি, মানুষের সঙ্গে দুজন ফেরেশতা নিযুক্তসহ নানা বিষয় আলোচিত হয়েছে। এখানে সংক্ষেপে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তুলে ধরা হলো।
সুরা আহকাফের বিষয়বস্তু
মক্কায় অবতীর্ণ ৩৫ আয়াত বিশিষ্ট সুরা আহকাফে আল্লাহ তাআলার একত্ববাদ, মুহাম্মদ (সা.)-এর রিসালাত এবং আখেরাত, মক্কার কাফেরদের গোমরাহি, জিদ, গর্ব ও অহংকার, গোমরাহির ফলাফল সম্পর্কে কাফেরদের সতর্কবার্তা, বাবা-মার অনুগত বিশ্বাসী সন্তান এবং বাবা-মার অবাধ্য সন্তানের বিবরণ, আদ জাতি এবং তাদের ধ্বংসের ঘটনা, নবীজির মুখে কোরআন শুনে জিনদের মুগ্ধ হওয়ার কাহিনির বর্ণনা রয়েছে।
সুরা মুহাম্মদের বিষয়বস্তু
৩৮ আয়াত বিশিষ্ট মক্কায় অবতীর্ণ সুরা মুহাম্মদে মুমিন ও কাফেরদের মাঝে চির সংঘাত, আল্লাহর পক্ষ থেকে মুমিনদের সাহায্য, মুত্তাকিদের পুরস্কার, জিহাদ, আল্লাহর রাস্তায় সম্পদ ব্যয়ের পাশাপাশি কৃপণতা থেকে নিষেধ করা হয়েছে।
কৃপণতা ধ্বংস ডেকে আনে
ধনসম্পদ আল্লাহর দান। আল্লাহ যাকে ইচ্ছা সম্পদশালী করেন, যাকে ইচ্ছা গরিব রাখেন। আল্লাহর রাস্তায় ব্যয় করা এবং অসহায়ের পাশে দাঁড়ানো সম্পদশালীর ইমানি দায়িত্ব। ইসলাম ও মানুষের উপকারে সম্পদ ব্যয়ে কার্পণ্য করা যাবে না। আল্লাহর রাস্তায় ব্যয় না করে কার্পণ্য করা হারাম এবং এ জন্য কোরআনে জাহান্নামের ভয় দেখানো হয়েছে। সাধারণ খাতেও খরচ না করে কার্পণ্য করা উত্তমের পরিপন্থী এক অভ্যাস।
কৃপণতার কারণে আগের অনেক জাতি ধ্বংস হয়েছিল। নবীজি (সা.) উম্মতদের এই অভ্যাস ছাড়ার তাগিদ দিয়েছেন। তিনি কৃপণতা থেকে আল্লাহর কাছে মুক্তি চাইতেন। কারণ, কৃপণতা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। আল্লাহর কাছে অপছন্দনীয় কাজ। মুমিনকে মিতব্যয়ী হতে হবে। অতিরিক্ত ব্যয়ও করবে না, কৃপণতাও অবলম্বন করবে না। আল্লাহ বলেন, ‘দেখ, তোমরাই তারা যাদের আল্লাহর পথে ব্যয় করতে বলা হচ্ছে, অথচ তোমাদের অনেকে কৃপণতা করছ; যারা কার্পণ্য করে তারা কার্পণ্য করে নিজেদেরই প্রতি। আল্লাহ অভাবমুক্ত এবং তোমরা অভাবগ্রস্ত, যদি তোমরা পৃষ্ঠ প্রদর্শন করো তাহলে তিনি অন্য জাতিকে তোমাদের স্থলাভিষিক্ত করবেন; তারা তোমাদের মতো হবে না।’ (সুরা মুহাম্মদ ৩৮)
মক্কা বিজয়ের সুসংবাদ সুরা ফাতহ
সুরা ফাতহ মক্কায় অবতীর্ণ। এ সুরার আয়াত সংখ্যা ২৯। কোরআনের ৪৯ নম্বর সুরা এটি। ফাতহ অর্থ বিজয়। ৬ষ্ঠ হিজরির জিলকদ মাসে মক্কার কাফেরদের সঙ্গে সন্ধি চুক্তি সম্পাদনের পর নবী (সা.) যখন মদিনার দিকে ফিরে যাচ্ছিলেন, তখন সুরাটি নাজিল হয়। আল্লাহ হুদাইবিয়ার সন্ধির আকারে নবী করিম (সা.) ও মুসলমানদের যে মক্কায় বিজয় দান করেছিলেন সে বিষয়ের সুসংবাদ দেওয়া হয়েছে এই সুরায়। মুমিন নর-নারীদের জন্য জান্নাতের ওয়াদা এবং কাফের ও মুনাফিকদের শাস্তি, হুদায়বিয়ার সন্ধিকালে নবীজির সঙ্গে উপস্থিত সাহাবিদের প্রতি আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টির ঘোষণা, খায়বার বিজয়ের সুসংবাদ প্রদান, নবীজির আনীত ধর্ম সব ধর্মের ওপর বিজয় লাভের বিবরণ রয়েছে এ সুরায়।
তিন আসমানি কিতাবে সাহাবিদের গুণের কথা
সুরা ফাতহের ২৯ নম্বর আয়াতে সাহাবিদের কয়েকটি গুণের উল্লেখ রয়েছে। এই গুণগুলো কোরআনসহ তাওরাত ও ইঞ্জিলেও আছে। গুণগুলো হলো:
১. তাঁরা কাফেরদের বিরুদ্ধে অত্যন্ত কঠোর
২. নিজেদের প্রতি সহানুভূতিশীল
৩. রুকু-সিজদায় আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনে নিয়োজিত
৪. তাদের চেহারায় সিজদার চিহ্ন দীপ্তিমান
৫. তাঁদের দৃষ্টান্ত একটি চারাগাছ, যা থেকে নির্গত হয় কিশলয়, এরপর ওটা শক্ত পুষ্ট হয় এবং পরে কাণ্ডের ওপর দাঁড়ায় দৃঢ়ভাবে; যা কৃষকের জন্য আনন্দদায়ক।
গুজব রটানো ভয়াবহ পাপ
আধুনিকোত্তর এই যুগে ব্যাপক জনপ্রিয় হচ্ছে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম। বিশ্বের বৃহৎ এক গোষ্ঠী এই সাইটগুলো ব্যবহার করে। সেখানে নানা মত, ভিন্ন আয়োজন ও হরেক রকম খবরের চর্চা হয়। বিশেষ করে আমাদের দেশে যে কোনো খবর সবকিছুর আগে ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। কোনো সংবাদ গ্রহণ বা প্রচার করার আগে তার সত্যতা যাচাই-বাছাই করতে হবে।
যদি কোনো ব্যক্তি, গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে কোনো খবর পাওয়া যায় তাহলে গভীরভাবে ভেবে দেখতে হবে খবর পাওয়ার মাধ্যম নির্ভরযোগ্য কি না। নির্ভরযোগ্য না হলে তার ভিত্তিতে কোনো তৎপরতা চালানোর আগে খবরটি সঠিক কি না তা যাচাই-বাছাই করে নিতে হবে।
অসত্য, মিথ্যা, সন্দেহ সৃষ্টিকারী, গুজব কিংবা পরস্পরে শত্রুতা সৃষ্টি হয়—এমন কিছু পোস্ট ও প্রচার থেকে বিরত থাকতে হবে। সংবাদ যাচাই-বাছাই না করে গুজব ছড়ানো ভয়াবহ পাপ। আল্লাহ বলেন, ‘হে মুসলমানেরা, যদি কোনো পাপাচারী লোক কোনো খবর নিয়ে আসে, তাহলে তা যাচাই-পরীক্ষা করে দেখবে যেন অজ্ঞতাবশত কোনো জাতির ওপর আক্রমণ করা না হয়। এরূপ কাজ করলে তোমাদের নিজেদের কার্যকলাপ সম্পর্কে অনুতাপ করতে হবে।’ (সুরা হুজুরাত: ৬)
রাসুল (সা.) বলেন, ‘সব শোনা কথা (যাচাই-বাছাই করা ছাড়া) বলা কোনো ব্যক্তির মিথ্যাবাদী হওয়ার জন্য যথেষ্ট।’ (আবু দাউদ: ৪৯৯২)
সামাজিক শিষ্টাচারে অনুকরণীয় নীতি
আল্লাহ তাআলা সুরা হুজুরাতের ১১ থেকে ১২ নম্বর আয়াতে সামাজিক সম্প্রীতি নষ্ট করে, সমাজ জীবনে বিপর্যয় সৃষ্টি করে এমন কিছু বিষয় থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দিয়েছেন। যথা: ১. উপহাস করা। ২. খোঁটা দেওয়া। ৩. মন্দ নামে ডাকা। ৪. অনুমান করা। ৫. দোষ অনুসন্ধান। ৬. গিবত।
সুরা ক্বফের বিষয়বস্তু
মক্কায় অবতীর্ণ ৪৫ আয়াত বিশিষ্ট সুরা ক্বফে ইসলামের মৌলিক আকিদা-বিশ্বাস, কাফের-মুশরিকদের প্রতি সতর্কবার্তা, পূর্ববর্তী জাতি ধ্বংসের কারণ, মানুষের দায়িত্ব সম্পর্কে সচেতনতা, মানুষের সঙ্গে দুজন ফেরেশতার বাস, মৃত্যুর সময় মানুষের আমলনামা বন্ধ, কিয়ামতের দিন হাশরের ময়দানে মানুষের আমলের জবাব, জান্নাত-জাহান্নামের বিবরণ, সকাল-সন্ধ্যা আল্লাহর ইবাদত ও তাসবিহ আদায়ের বর্ণনা রয়েছে।
এ ছাড়া তারাবির আজকের অংশে কাফেরদের উত্থাপিত আপত্তির জবাব, যুদ্ধের হুকুম, আল্লাহর সাহায্য, মুত্তাকিদের পুরস্কার, মুমিনরা পরস্পরে ভাই ভাই, তাকওয়া, কসম, ওয়াদা, আল্লাহর আজমত ও বড়ত্ব ইত্যাদি বিষয়ের আলোচনা রয়েছে।
লেখক: ইসলামবিষয়ক গবেষক ও সাংবাদিক
আজ খতমে তারাবিতে পবিত্র কোরআনের ২৬ তম পারা তিলাওয়াত করা হবে। সুরা আহকাফ, সুরা মুহাম্মদ, সুরা ফাতহ, সুরা হুজুরাত ও সুরা জারিয়াতের ১ থেকে ৩০ নম্বর আয়াত পর্যন্ত পড়া হবে। এই অংশে বাবা-মায়ের অনুগত্য, নবীজির মুখে জিনদের কোরআন শ্রবণ, গুজব রটানো, যুদ্ধবন্দীদের সঙ্গে আচরণনীতি, হুদায়বিয়ার সন্ধি, মক্কা বিজয়, সাহাবিদের প্রতি আল্লাহর সন্তুষ্টি, মানুষের সঙ্গে দুজন ফেরেশতা নিযুক্তসহ নানা বিষয় আলোচিত হয়েছে। এখানে সংক্ষেপে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তুলে ধরা হলো।
সুরা আহকাফের বিষয়বস্তু
মক্কায় অবতীর্ণ ৩৫ আয়াত বিশিষ্ট সুরা আহকাফে আল্লাহ তাআলার একত্ববাদ, মুহাম্মদ (সা.)-এর রিসালাত এবং আখেরাত, মক্কার কাফেরদের গোমরাহি, জিদ, গর্ব ও অহংকার, গোমরাহির ফলাফল সম্পর্কে কাফেরদের সতর্কবার্তা, বাবা-মার অনুগত বিশ্বাসী সন্তান এবং বাবা-মার অবাধ্য সন্তানের বিবরণ, আদ জাতি এবং তাদের ধ্বংসের ঘটনা, নবীজির মুখে কোরআন শুনে জিনদের মুগ্ধ হওয়ার কাহিনির বর্ণনা রয়েছে।
সুরা মুহাম্মদের বিষয়বস্তু
৩৮ আয়াত বিশিষ্ট মক্কায় অবতীর্ণ সুরা মুহাম্মদে মুমিন ও কাফেরদের মাঝে চির সংঘাত, আল্লাহর পক্ষ থেকে মুমিনদের সাহায্য, মুত্তাকিদের পুরস্কার, জিহাদ, আল্লাহর রাস্তায় সম্পদ ব্যয়ের পাশাপাশি কৃপণতা থেকে নিষেধ করা হয়েছে।
কৃপণতা ধ্বংস ডেকে আনে
ধনসম্পদ আল্লাহর দান। আল্লাহ যাকে ইচ্ছা সম্পদশালী করেন, যাকে ইচ্ছা গরিব রাখেন। আল্লাহর রাস্তায় ব্যয় করা এবং অসহায়ের পাশে দাঁড়ানো সম্পদশালীর ইমানি দায়িত্ব। ইসলাম ও মানুষের উপকারে সম্পদ ব্যয়ে কার্পণ্য করা যাবে না। আল্লাহর রাস্তায় ব্যয় না করে কার্পণ্য করা হারাম এবং এ জন্য কোরআনে জাহান্নামের ভয় দেখানো হয়েছে। সাধারণ খাতেও খরচ না করে কার্পণ্য করা উত্তমের পরিপন্থী এক অভ্যাস।
কৃপণতার কারণে আগের অনেক জাতি ধ্বংস হয়েছিল। নবীজি (সা.) উম্মতদের এই অভ্যাস ছাড়ার তাগিদ দিয়েছেন। তিনি কৃপণতা থেকে আল্লাহর কাছে মুক্তি চাইতেন। কারণ, কৃপণতা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। আল্লাহর কাছে অপছন্দনীয় কাজ। মুমিনকে মিতব্যয়ী হতে হবে। অতিরিক্ত ব্যয়ও করবে না, কৃপণতাও অবলম্বন করবে না। আল্লাহ বলেন, ‘দেখ, তোমরাই তারা যাদের আল্লাহর পথে ব্যয় করতে বলা হচ্ছে, অথচ তোমাদের অনেকে কৃপণতা করছ; যারা কার্পণ্য করে তারা কার্পণ্য করে নিজেদেরই প্রতি। আল্লাহ অভাবমুক্ত এবং তোমরা অভাবগ্রস্ত, যদি তোমরা পৃষ্ঠ প্রদর্শন করো তাহলে তিনি অন্য জাতিকে তোমাদের স্থলাভিষিক্ত করবেন; তারা তোমাদের মতো হবে না।’ (সুরা মুহাম্মদ ৩৮)
মক্কা বিজয়ের সুসংবাদ সুরা ফাতহ
সুরা ফাতহ মক্কায় অবতীর্ণ। এ সুরার আয়াত সংখ্যা ২৯। কোরআনের ৪৯ নম্বর সুরা এটি। ফাতহ অর্থ বিজয়। ৬ষ্ঠ হিজরির জিলকদ মাসে মক্কার কাফেরদের সঙ্গে সন্ধি চুক্তি সম্পাদনের পর নবী (সা.) যখন মদিনার দিকে ফিরে যাচ্ছিলেন, তখন সুরাটি নাজিল হয়। আল্লাহ হুদাইবিয়ার সন্ধির আকারে নবী করিম (সা.) ও মুসলমানদের যে মক্কায় বিজয় দান করেছিলেন সে বিষয়ের সুসংবাদ দেওয়া হয়েছে এই সুরায়। মুমিন নর-নারীদের জন্য জান্নাতের ওয়াদা এবং কাফের ও মুনাফিকদের শাস্তি, হুদায়বিয়ার সন্ধিকালে নবীজির সঙ্গে উপস্থিত সাহাবিদের প্রতি আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টির ঘোষণা, খায়বার বিজয়ের সুসংবাদ প্রদান, নবীজির আনীত ধর্ম সব ধর্মের ওপর বিজয় লাভের বিবরণ রয়েছে এ সুরায়।
তিন আসমানি কিতাবে সাহাবিদের গুণের কথা
সুরা ফাতহের ২৯ নম্বর আয়াতে সাহাবিদের কয়েকটি গুণের উল্লেখ রয়েছে। এই গুণগুলো কোরআনসহ তাওরাত ও ইঞ্জিলেও আছে। গুণগুলো হলো:
১. তাঁরা কাফেরদের বিরুদ্ধে অত্যন্ত কঠোর
২. নিজেদের প্রতি সহানুভূতিশীল
৩. রুকু-সিজদায় আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনে নিয়োজিত
৪. তাদের চেহারায় সিজদার চিহ্ন দীপ্তিমান
৫. তাঁদের দৃষ্টান্ত একটি চারাগাছ, যা থেকে নির্গত হয় কিশলয়, এরপর ওটা শক্ত পুষ্ট হয় এবং পরে কাণ্ডের ওপর দাঁড়ায় দৃঢ়ভাবে; যা কৃষকের জন্য আনন্দদায়ক।
গুজব রটানো ভয়াবহ পাপ
আধুনিকোত্তর এই যুগে ব্যাপক জনপ্রিয় হচ্ছে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম। বিশ্বের বৃহৎ এক গোষ্ঠী এই সাইটগুলো ব্যবহার করে। সেখানে নানা মত, ভিন্ন আয়োজন ও হরেক রকম খবরের চর্চা হয়। বিশেষ করে আমাদের দেশে যে কোনো খবর সবকিছুর আগে ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। কোনো সংবাদ গ্রহণ বা প্রচার করার আগে তার সত্যতা যাচাই-বাছাই করতে হবে।
যদি কোনো ব্যক্তি, গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে কোনো খবর পাওয়া যায় তাহলে গভীরভাবে ভেবে দেখতে হবে খবর পাওয়ার মাধ্যম নির্ভরযোগ্য কি না। নির্ভরযোগ্য না হলে তার ভিত্তিতে কোনো তৎপরতা চালানোর আগে খবরটি সঠিক কি না তা যাচাই-বাছাই করে নিতে হবে।
অসত্য, মিথ্যা, সন্দেহ সৃষ্টিকারী, গুজব কিংবা পরস্পরে শত্রুতা সৃষ্টি হয়—এমন কিছু পোস্ট ও প্রচার থেকে বিরত থাকতে হবে। সংবাদ যাচাই-বাছাই না করে গুজব ছড়ানো ভয়াবহ পাপ। আল্লাহ বলেন, ‘হে মুসলমানেরা, যদি কোনো পাপাচারী লোক কোনো খবর নিয়ে আসে, তাহলে তা যাচাই-পরীক্ষা করে দেখবে যেন অজ্ঞতাবশত কোনো জাতির ওপর আক্রমণ করা না হয়। এরূপ কাজ করলে তোমাদের নিজেদের কার্যকলাপ সম্পর্কে অনুতাপ করতে হবে।’ (সুরা হুজুরাত: ৬)
রাসুল (সা.) বলেন, ‘সব শোনা কথা (যাচাই-বাছাই করা ছাড়া) বলা কোনো ব্যক্তির মিথ্যাবাদী হওয়ার জন্য যথেষ্ট।’ (আবু দাউদ: ৪৯৯২)
সামাজিক শিষ্টাচারে অনুকরণীয় নীতি
আল্লাহ তাআলা সুরা হুজুরাতের ১১ থেকে ১২ নম্বর আয়াতে সামাজিক সম্প্রীতি নষ্ট করে, সমাজ জীবনে বিপর্যয় সৃষ্টি করে এমন কিছু বিষয় থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দিয়েছেন। যথা: ১. উপহাস করা। ২. খোঁটা দেওয়া। ৩. মন্দ নামে ডাকা। ৪. অনুমান করা। ৫. দোষ অনুসন্ধান। ৬. গিবত।
সুরা ক্বফের বিষয়বস্তু
মক্কায় অবতীর্ণ ৪৫ আয়াত বিশিষ্ট সুরা ক্বফে ইসলামের মৌলিক আকিদা-বিশ্বাস, কাফের-মুশরিকদের প্রতি সতর্কবার্তা, পূর্ববর্তী জাতি ধ্বংসের কারণ, মানুষের দায়িত্ব সম্পর্কে সচেতনতা, মানুষের সঙ্গে দুজন ফেরেশতার বাস, মৃত্যুর সময় মানুষের আমলনামা বন্ধ, কিয়ামতের দিন হাশরের ময়দানে মানুষের আমলের জবাব, জান্নাত-জাহান্নামের বিবরণ, সকাল-সন্ধ্যা আল্লাহর ইবাদত ও তাসবিহ আদায়ের বর্ণনা রয়েছে।
এ ছাড়া তারাবির আজকের অংশে কাফেরদের উত্থাপিত আপত্তির জবাব, যুদ্ধের হুকুম, আল্লাহর সাহায্য, মুত্তাকিদের পুরস্কার, মুমিনরা পরস্পরে ভাই ভাই, তাকওয়া, কসম, ওয়াদা, আল্লাহর আজমত ও বড়ত্ব ইত্যাদি বিষয়ের আলোচনা রয়েছে।
লেখক: ইসলামবিষয়ক গবেষক ও সাংবাদিক
আল্লাহ তাআলা মানুষকে বিচিত্ররূপে সৃষ্টি করেছেন। গায়ের রঙে যেমন রয়েছে ভিন্নতা, তেমনই মন-মেজাজেও বিচিত্রতা স্পষ্ট।
৪ ঘণ্টা আগেপ্রত্যেক মুসলমানের চূড়ান্ত লক্ষ্য-উদ্দেশ্য ও একান্ত আশা-আকাঙ্ক্ষা হচ্ছে জান্নাতের মেহমান হওয়া। কেননা জান্নাত অনন্ত সুখ, শান্তি ও অসংখ্য নিয়ামতের জায়গা। আল্লাহ তাআলা নিজেই জান্নাতের দিকে বান্দাদের ডেকেছেন। কোরআনে এরশাদ হয়েছে, ‘আল্লাহ শান্তির ঘরের দিকে ডাকছেন।’ (সুরা ইউনুস: ২৫)
১ দিন আগেসংযুক্ত আরব আমিরাতের (ইউএই) অ্যাস্ট্রোনমি সোসাইটির বরাত দিয়ে গালফ নিউজ জানিয়েছে, ইসলামি বর্ষপঞ্জির পঞ্চম মাস জমাদিউল আউয়ালের চাঁদ দেখা যাবে আগামী ৩ নভেম্বর। এই চাঁদ দেখার সঙ্গে রমজান শুরুর ব্যাপারে পূর্বাভাস পান জ্যোতির্বিদেরা।
২ দিন আগেপ্রাকৃতিক দুর্যোগ মানুষের জন্য মহান আল্লাহর পরীক্ষা। দুর্যোগের সময় মুমিনের বিভিন্ন করণীয় সম্পর্কে কোরআন-হাদিসে এসেছে। এখানে কয়েকটি করণীয় বিষয় তুলে ধরা হলো—
২ দিন আগে