আবদুল আযীয কাসেমি
জাকাত ইসলামের অতি গুরুত্বপূর্ণ একটি ইবাদত। ইসলামের ভিত্তি যে পাঁচ মৌলিক স্তম্ভের ওপর দাঁড়িয়ে আছে, তার মধ্যে জাকাত অন্যতম। জাকাতের ফরজ হওয়ার বিষয়টি আল্লাহ তাআলা কোরআনে কারিমে বিভিন্ন আঙ্গিকে বারবার উদ্ধৃত করেছেন। সালাতের মতো মহৎ ও গুরুত্বপূর্ণ ইবাদতের সঙ্গে আল্লাহ তাআলা পাশাপাশি জাকাতের কথা উল্লেখ করেছেন কোরআনে কারিমের ২৭টি স্থানে। এ ছাড়া জাকাতের কথা আলাদা করে বলা হয়েছে আরও ৩ স্থানে।
বলতে গেলে কোরআনে কারিমের মোট ৩০টি জায়গায় আল্লাহ তাআলা জাকাত আদায়ের নির্দেশনা প্রদান করেছেন। কেউ যদি জাকাত অস্বীকার করে, তবে সে আর মুমিন থাকবে না।
ইসলামের প্রাথমিক যুগে নবীজির ইন্তেকালের পর হজরত আবু বকর সিদ্দিক (রা)–এর শাসনামলে কিছু গোত্রের লোকজন জাকাত আদায় করতে অস্বীকার করে। হজরত আবু বকর (রা) তাদের বিরুদ্ধে দুর্বার প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। ফলে এই ফিতনা চিরকালের জন্য দমিত হয়ে যায়।
জাকাতের ফরজ। যদি কেউ আদায় না করে, তার ব্যাপারে কোরআন ও সুন্নাহে ভয়াবহ হুঁশিয়ারি বাণী উচ্চারিত হয়েছে। এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ বলেন, ‘যারা সোনা–রুপা সঞ্চিত করে রাখে এবং আল্লাহর পথে তা ব্যয় না করে, আপনি তাদের যাতনাদায়ক শাস্তির সুখবর (দুঃসংবাদ) শুনিয়ে দিন। (শাস্তি হবে সেদিন) যেদিন ওই ধনসম্পদ দোজখের আগুনে উত্তপ্ত করা হবে, তারপর তা দ্বারা ওদের কপাল, পার্শ্বদেশ ও পৃষ্ঠদেশে দাগানো হবে (আর বলা হবে) এ হচ্ছে তা, যা তোমরা নিজেদের জন্য সঞ্চিত করে রেখেছিলে। এখন তোমরা সঞ্চয় করার শাস্তি আস্বাদন করো।’ (সুরা তাওবা: ৩৪-৩৫)
হজরত আবু হুরায়রা (রা) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা) বলেছেন, ‘আল্লাহ তাআলা যাকে সম্পদ দান করেছেন, আর সে তার জাকাত আদায় করে না, কেয়ামতের দিন সে সম্পদকে মাথায় টাকপড়া বিষধর সাপের আকৃতি দেওয়া হবে। যার চোখের ওপর দুটি কালো দাগ থাকবে। সেই সাপ কেয়ামতের দিন তার গলায় পেঁচিয়ে দেওয়া হবে। সেটি তার মুখে দংশন করতে থাকবে আর বলবে, আমি তোমার সম্পদ! আমি তোমার সঞ্চয়!’ (সহিহ্ বুখারি)
কোনো মুসলমান, সাবালক ও স্বাধীন মানুষ যখন নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হবে, তখন তার সে সম্পদের আড়াই শতাংশ জাকাত হিসেবে জাকাত গ্রহণের উপযুক্ত লোকদের প্রদান করতে হবে। জাকাত আদায় করা ওয়াজিব হওয়ার জন্য শর্ত হলো সে সম্পদের ওপর এক বছর অতিবাহিত হতে হবে। অর্থাৎ যেদিন থেকে কেউ নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হবেন, সেদিন থেকে হিসেব করে ঠিক এক চান্দ্রবর্ষ অতিক্রান্ত হওয়ার পর জাকাত আদায় করা অপরিহার্য হয়ে যায়।
নিসাব হলো, কারও কাছে যদি সাড়ে সাত ভরি সোনা, কিংবা সাড়ে বায়ান্ন ভরি রুপা, কিংবা এই দুটির কোনো একটির সমপরিমাণ মূল্যের নগদ অর্থ কিংবা ব্যবসায়িক পণ্য থাকে তখন তিনি নিসাবের মালিক বলে গণ্য হন। বাংলাদেশ জুয়েলারি সমিতি কর্তৃক নির্ধারিত মূল্য অনুযায়ী ২২ ক্যারেটের এক ভরি রুপার মূল্য ২ হাজার ১০০ টাকা। ক্রয়মূল্য ধরে সর্বোচ্চটা হিসাব করলে, কারও কাছে যদি ১ লাখ ১০ হাজার টাকা নগদ অর্থ, কিংবা সমপরিমাণ মূল্যের ব্যবসায়িক পণ্য, কিংবা উপর্যুক্ত চার ক্যাটাগরির সম্পদের সর্বমোট মূল্য ওই টাকার সমপরিমাণ হয় তবুও জাকাত ওয়াজিব হয়ে যাবে।
ওয়াজিব হওয়ার এক চান্দ্রবর্ষ অতিবাহিত হওয়ার পর জাকাত আদায় করতে হবে।
এখন প্রশ্ন হলো, রমজানেই জাকাত আদায় করতে হবে? এর উত্তর হলো, না। রমজানে আদায় করা জরুরি নয়। বরং যেদিন বছর পূর্ণ হবে, সেদিনই আদায় করতে হবে। তবে বর্ষপূর্তির আগে জাকাত আদায় করায় নিষেধ নেই। পাশাপাশি হিসেবের সুবিধার্থে এবং অধিক সওয়াব লাভের বাসনায় কেউ যদি রমজান থেকে রমজান বছর ধরে জাকাত আদায় করে, তাতেও দোষের কিছু নেই। বরং এতেই খানিকটা সুবিধা বেশি।
লেখক: শিক্ষক
জাকাত ইসলামের অতি গুরুত্বপূর্ণ একটি ইবাদত। ইসলামের ভিত্তি যে পাঁচ মৌলিক স্তম্ভের ওপর দাঁড়িয়ে আছে, তার মধ্যে জাকাত অন্যতম। জাকাতের ফরজ হওয়ার বিষয়টি আল্লাহ তাআলা কোরআনে কারিমে বিভিন্ন আঙ্গিকে বারবার উদ্ধৃত করেছেন। সালাতের মতো মহৎ ও গুরুত্বপূর্ণ ইবাদতের সঙ্গে আল্লাহ তাআলা পাশাপাশি জাকাতের কথা উল্লেখ করেছেন কোরআনে কারিমের ২৭টি স্থানে। এ ছাড়া জাকাতের কথা আলাদা করে বলা হয়েছে আরও ৩ স্থানে।
বলতে গেলে কোরআনে কারিমের মোট ৩০টি জায়গায় আল্লাহ তাআলা জাকাত আদায়ের নির্দেশনা প্রদান করেছেন। কেউ যদি জাকাত অস্বীকার করে, তবে সে আর মুমিন থাকবে না।
ইসলামের প্রাথমিক যুগে নবীজির ইন্তেকালের পর হজরত আবু বকর সিদ্দিক (রা)–এর শাসনামলে কিছু গোত্রের লোকজন জাকাত আদায় করতে অস্বীকার করে। হজরত আবু বকর (রা) তাদের বিরুদ্ধে দুর্বার প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। ফলে এই ফিতনা চিরকালের জন্য দমিত হয়ে যায়।
জাকাতের ফরজ। যদি কেউ আদায় না করে, তার ব্যাপারে কোরআন ও সুন্নাহে ভয়াবহ হুঁশিয়ারি বাণী উচ্চারিত হয়েছে। এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ বলেন, ‘যারা সোনা–রুপা সঞ্চিত করে রাখে এবং আল্লাহর পথে তা ব্যয় না করে, আপনি তাদের যাতনাদায়ক শাস্তির সুখবর (দুঃসংবাদ) শুনিয়ে দিন। (শাস্তি হবে সেদিন) যেদিন ওই ধনসম্পদ দোজখের আগুনে উত্তপ্ত করা হবে, তারপর তা দ্বারা ওদের কপাল, পার্শ্বদেশ ও পৃষ্ঠদেশে দাগানো হবে (আর বলা হবে) এ হচ্ছে তা, যা তোমরা নিজেদের জন্য সঞ্চিত করে রেখেছিলে। এখন তোমরা সঞ্চয় করার শাস্তি আস্বাদন করো।’ (সুরা তাওবা: ৩৪-৩৫)
হজরত আবু হুরায়রা (রা) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা) বলেছেন, ‘আল্লাহ তাআলা যাকে সম্পদ দান করেছেন, আর সে তার জাকাত আদায় করে না, কেয়ামতের দিন সে সম্পদকে মাথায় টাকপড়া বিষধর সাপের আকৃতি দেওয়া হবে। যার চোখের ওপর দুটি কালো দাগ থাকবে। সেই সাপ কেয়ামতের দিন তার গলায় পেঁচিয়ে দেওয়া হবে। সেটি তার মুখে দংশন করতে থাকবে আর বলবে, আমি তোমার সম্পদ! আমি তোমার সঞ্চয়!’ (সহিহ্ বুখারি)
কোনো মুসলমান, সাবালক ও স্বাধীন মানুষ যখন নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হবে, তখন তার সে সম্পদের আড়াই শতাংশ জাকাত হিসেবে জাকাত গ্রহণের উপযুক্ত লোকদের প্রদান করতে হবে। জাকাত আদায় করা ওয়াজিব হওয়ার জন্য শর্ত হলো সে সম্পদের ওপর এক বছর অতিবাহিত হতে হবে। অর্থাৎ যেদিন থেকে কেউ নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হবেন, সেদিন থেকে হিসেব করে ঠিক এক চান্দ্রবর্ষ অতিক্রান্ত হওয়ার পর জাকাত আদায় করা অপরিহার্য হয়ে যায়।
নিসাব হলো, কারও কাছে যদি সাড়ে সাত ভরি সোনা, কিংবা সাড়ে বায়ান্ন ভরি রুপা, কিংবা এই দুটির কোনো একটির সমপরিমাণ মূল্যের নগদ অর্থ কিংবা ব্যবসায়িক পণ্য থাকে তখন তিনি নিসাবের মালিক বলে গণ্য হন। বাংলাদেশ জুয়েলারি সমিতি কর্তৃক নির্ধারিত মূল্য অনুযায়ী ২২ ক্যারেটের এক ভরি রুপার মূল্য ২ হাজার ১০০ টাকা। ক্রয়মূল্য ধরে সর্বোচ্চটা হিসাব করলে, কারও কাছে যদি ১ লাখ ১০ হাজার টাকা নগদ অর্থ, কিংবা সমপরিমাণ মূল্যের ব্যবসায়িক পণ্য, কিংবা উপর্যুক্ত চার ক্যাটাগরির সম্পদের সর্বমোট মূল্য ওই টাকার সমপরিমাণ হয় তবুও জাকাত ওয়াজিব হয়ে যাবে।
ওয়াজিব হওয়ার এক চান্দ্রবর্ষ অতিবাহিত হওয়ার পর জাকাত আদায় করতে হবে।
এখন প্রশ্ন হলো, রমজানেই জাকাত আদায় করতে হবে? এর উত্তর হলো, না। রমজানে আদায় করা জরুরি নয়। বরং যেদিন বছর পূর্ণ হবে, সেদিনই আদায় করতে হবে। তবে বর্ষপূর্তির আগে জাকাত আদায় করায় নিষেধ নেই। পাশাপাশি হিসেবের সুবিধার্থে এবং অধিক সওয়াব লাভের বাসনায় কেউ যদি রমজান থেকে রমজান বছর ধরে জাকাত আদায় করে, তাতেও দোষের কিছু নেই। বরং এতেই খানিকটা সুবিধা বেশি।
লেখক: শিক্ষক
জুবাইদা বিনতে জাফর ইবনে মানসুর পঞ্চম আব্বাসি খলিফা হারুনুর রশিদের স্ত্রী ও জাফর ইবনুল মানসুরের কন্যা। তাঁর মা ছিলেন আল-খায়জুরানের বড় বোন সালসাল ইবনে আত্তা। জুবাইদার আসল নাম আমাতুল আজিজ। দাদা আল-মানসুর তাঁকে আদর করে জুবাইদা (ছোট মাখনের টুকরা) নামে ডাকতেন এবং এ নামেই তিনি ইতিহাসে বিখ্যাত।
৬ ঘণ্টা আগেকুয়েতে অনুষ্ঠিত ১৩তম আন্তর্জাতিক হিফজুল কোরআন প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান অর্জন করেছেন বাংলাদেশের হাফেজ আনাস মাহফুজ। বিশ্বের ৭৪টি দেশের প্রতিযোগীদের পেছনে ফেলে দেশের জন্য এ গৌরব বয়ে আনেন তিনি।
৭ ঘণ্টা আগেবিয়ে ইসলামি জীবনব্যবস্থার একটি মৌলিক অংশ। এটি ব্যক্তিগত, পারিবারিক ও সামাজিক জীবনে শান্তি ও স্থিতি নিয়ে আসে। তবে বিয়ের আগে আর্থিক সচ্ছলতা অর্জন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এটি বিয়ে-পরবর্তী জীবনে দায়িত্ব পালনের জন্য ব্যক্তিকে সক্ষম করে।
৭ ঘণ্টা আগে