ইজাজুল হক
একজন প্রভাবশালী নেতার প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো, তিনি নিজেকে জনগণের সেবক মনে করেন। তাঁর নেতৃত্বের কৌশলে মানুষের সাহায্য ও প্রতিনিধিত্ব করার চেষ্টাই মুখ্য থাকে। তিনি জনগণকে বিশ্বাস করেন। সেই বিশ্বাস তাঁকে তাদের হৃদয়ে স্থান করে দেয়। তিনি গণমানুষের কাছে আসেন। তারাও সহজেই তাঁর কাছে ভিড়তে পারে। তিনি মানুষের ক্ষমতায়ন করেন, অংশগ্রহণ বাড়ান, পরামর্শ নেন, সহযোগিতার হাত বাড়ান এবং জ্ঞানের কথা বলেন। (বোলম্যান অ্যান্ড ডিল, ১৯৯১)
ফরাসি দার্শনিক মন্টেস্কু বলেছেন, ‘সত্যিকারের মহান নেতা হতে চাইলে মানুষের পাশে দাঁড়াতে হয়, ওপরে নয়।’ অর্থাৎ, তিনিই প্রকৃত নেতা, যিনি মানুষের কল্যাণে কাজ করেন, তাদের প্রতি বিনীত থাকেন, পদের দম্ভ দেখান না এবং ক্ষমতার অপব্যবহার করেন না। অবশ্য আজকাল এমন নেতা পাওয়া দুষ্কর। বিনয়, জ্ঞান ও কারিশমার সমন্বয় ঘটেছে—এমন নেতা পৃথিবীর ইতিহাসে খুব কমই দেখা যায়।
তবে এসব গুণের সমন্বয় ঘটেছে—এমন এক মহান নেতার কথা আজ পাঠককে জানাব, যিনি পৃথিবীতে একটি নতুন জীবনধারার সূচনা করেছিলেন। পৃথিবীর ১৮০ কোটি মানুষ এখনো তাঁকে অনুসরণ করে চলেছে। সফলতার শীর্ষ চূড়ায় আরোহণ করেও তিনি সর্বোচ্চ স্তরের বিনয় দেখিয়েছেন। তাঁর জ্ঞান-প্রজ্ঞা ছিল ঐশ্বরিক। নেতৃত্বের সর্বোচ্চ স্তরে পৌঁছেও তিনি নিঃসংকোচে ঘোষণা করেছেন, ‘আমি একজন সাধারণ মানুষই’।
মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) ছিলেন সেই মহান নেতা, যিনি নিজেকে কখনোই রাজা-বাদশাহ মনে করেননি; বরং জনগণের একনিষ্ঠ সেবক মনে করেছেন। হিজরতের বিপৎসংকুল পথ পাড়ি দিয়ে মদিনায় আসার পরপরই তিনি মসজিদে নববির নির্মাণকাজ শুরু করেছিলেন। সাহাবিরা যখন ভারী ইট-পাথর বহন করছিলেন, তখন মহানবী (সা.) নিজেও তাতে অংশ নেন এবং একজন সাধারণ শ্রমিকের মতোই কাজ করেন। এভাবেই তিনি মদিনায় একটি মানবিক ও সাম্যপূর্ণ সমাজের গোড়াপত্তন করেন।
মহানবী (সা.) জীবনের সব ক্ষেত্রেই অতি সাধারণ জীবন যাপন করেছেন। জনগণের সঙ্গেই খেয়েছেন। নিজের রুটি ভাগ করে নিয়েছেন সাহাবিদের সঙ্গে। একই পাত্র থেকে পানি পান করেছেন। তাঁরা ভুখা থাকলে তিনিও ভুখা থেকেছেন। সাহাবিদের মধ্যে তাঁদের একজন হয়েই ছিলেন তিনি। তাঁদের সমস্যাকে মনে করতেন নিজের সমস্যা। তাঁরা খুশি হলে একসঙ্গে হাসতেন এবং তাঁরা দুঃখী হলে একসঙ্গে কাঁদতেন।
যুদ্ধের ময়দানে সৈন্যদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়েছেন। দাম্পত্য জীবনে সঙ্গ দিয়েছেন স্ত্রীদের ঘরের কাজেও। তিনি চাইলেই আরাম-আয়েশের জীবন গড়তে পারতেন। বিলাসিতার উপকরণে ডুবে থাকতে পারতেন। তবে তিনি সেই পথে হাঁটেননি। নিতান্ত সাদাসিধে জীবন কাটিয়েছেন। খড়ের মাদুরে শুয়েছেন। তাঁর পিঠে মাদুরের দাগ পড়ে গিয়েছিল। মাটির জায়নামাজে দাঁড়িয়ে নামাজ আদায় করেছেন, যা তাঁর কপালে দাগ তৈরি করেছিল। একাধিক জায়গায় ছেঁড়া ও তালি দেওয়া কাপড় তিনি পরেছেন। নিজের ছেঁড়া কাপড় নিজেই সেলাই করতেন। (বুখারি)
মহানবী (সা.) একদিন সাহাবিদের সঙ্গে কোথাও যাচ্ছিলেন। বিশ্রাম ও রান্নার বিরতি দেওয়া হলো। সবাইকে কাজ ভাগ করে দেওয়া হলো। মহানবী (সা.) বললেন, তাঁকেও কাজ দেওয়া হোক। তবে সাহাবিরা রাজি হলেন না। মহান আল্লাহর রাসুলকে কীভাবে তাঁরা কাজ দেবেন! কিন্তু তিনি নিজের কথায় অটল রইলেন। বললেন, আমিও সফরের একজন সদস্য; আমারও দায়িত্ব আছে। আল্লাহর রাসুল হওয়ার সুবিধা নিতে তিনি অস্বীকৃতি জানালেন। নিরুপায় হয়ে সাহাবিরা তাঁকে কাঠ সংগ্রহের কাজ দিলেন। তিনি নিষ্ঠার সঙ্গে তা পালন করলেন। (মোবারকপুরি, ১৯৭৯)
সাহাবিদের কাছে তো মহানবী (সা.)-এর মর্যাদা ছিল প্রশ্নাতীত, তবে তাঁর শত্রু ও নিন্দুকেরাও এক বাক্যে তাঁর সততা ও সত্যবাদিতার স্বীকৃতি দিয়েছে। তাই তো দেখা যায়, মক্কা থেকে যখন তিনি বিতাড়িত হচ্ছিলেন, তখনো তাঁর ঘরে মক্কার অবিশ্বাসীদের অনেক আমানত জমা ছিল। সেগুলো প্রাপকদের কাছে পৌঁছে দিতেই হজরত আলি (রা.)-কে মক্কায় রেখে যেতে হয়েছিল।
মহানবী পৃথিবীতে এমন লক্ষাধিক অনুসারী রেখে যেতে পেরেছেন, যাঁরা ইসলামের মহান বার্তা মনেপ্রাণে গ্রহণ করেছিলেন এবং তাঁর সম্মানে জীবন দিতেও প্রস্তুত ছিলেন। তিনি তাঁদের পার্থিব জীবনেরই কেবল নেতা ছিলেন না, পরকালীন জীবনের দিশাও দিয়ে গেছেন। নবী ও নেতা হওয়ার পাশাপাশি তিনি তাঁদের বাবা, ভাই, স্বামী ও বন্ধু ছিলেন। একবার তাঁর কাছে এক ব্যক্তি এলেন। কথা বললেন। ভয়ে কাঁপছিলেন। মহানবী (সা.) বললেন, ‘শান্ত হও। আমি কোনো মহান রাজা-বাদশাহ নই। আমি শুকনো মাংস খাওয়া একজন নারীরই সন্তান।’ (ইবনে মাজাহ)
হুদায়বিয়ার চুক্তির সময় মক্কার কাফিরেরা অনেক অযৌক্তিক দাবি করে বসে। মহানবী (সা.) আল্লাহর আদেশে তাদের দাবি মেনে নেন। সাহাবিদের মধ্যে অসন্তোষ তৈরি হয়। তাঁদের অনেকেই চুক্তির অবমাননামূলক ধারাগুলো মানতে পারছেন না। এমন কঠিন মুহূর্তে চুক্তিনামা লেখা হচ্ছিল। হজরত আলি (রা.) ছিলেন দলিল লেখক। ‘আল্লাহর রাসুল’ এই শব্দদ্বয় চুক্তিতে উল্লেখ করা হলে কুরাইশের এক নেতা আপত্তি জানালেন। বললেন, ‘তাঁকে রাসুল মেনে নিলে এই চুক্তিই তো করতে হয় না।’ হজরত আলি (রা.) এই শব্দগুলো মুছতে অস্বীকৃতি জানালেন। তবে মহানবী (সা.) অত্যন্ত ধৈর্য, বিনয়, কূটনৈতিক শিষ্টাচার ও প্রজ্ঞার সঙ্গে সেই শব্দগুলো নিজ হাতে মুছে দেন এবং সেখানে তাঁর বাবার নাম লিখতে বলেন। (মোবারকপুরি, ১৯৭৯)
মহানবী (সা.)-এর নেতৃত্বের মূল কারিশমাই ছিল বিনয়, প্রজ্ঞা ও সহমর্মিতার সমন্বয়। সাদাসিধে জীবন তাঁকে গণমুখী করে তুলেছিল। মহাত্মা গান্ধী বলেছেন, ‘আমি এমন এক মহান নেতার জীবনী জানতে চেয়েছি, যিনি আজও কোটি মানুষের হৃদয়ে স্থান করে আছেন। তাঁর জীবনী পড়ে আমি নিশ্চিত হয়েছি, তলোয়ারের জোরে তিনি এই অবস্থান অর্জন করেননি। তাঁর অসামান্য সরলতা, বিনয়, আত্মনিবেদন, অঙ্গীকার রক্ষা, বিচক্ষণতা, বন্ধুত্ব, সাহস, ঈশ্বরের প্রতি পূর্ণ আস্থা এবং নিজের দায়িত্বের প্রতি সচেতনতাই তাঁকে এই স্থানে পৌঁছে দিয়েছে।’
একজন প্রভাবশালী নেতার প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো, তিনি নিজেকে জনগণের সেবক মনে করেন। তাঁর নেতৃত্বের কৌশলে মানুষের সাহায্য ও প্রতিনিধিত্ব করার চেষ্টাই মুখ্য থাকে। তিনি জনগণকে বিশ্বাস করেন। সেই বিশ্বাস তাঁকে তাদের হৃদয়ে স্থান করে দেয়। তিনি গণমানুষের কাছে আসেন। তারাও সহজেই তাঁর কাছে ভিড়তে পারে। তিনি মানুষের ক্ষমতায়ন করেন, অংশগ্রহণ বাড়ান, পরামর্শ নেন, সহযোগিতার হাত বাড়ান এবং জ্ঞানের কথা বলেন। (বোলম্যান অ্যান্ড ডিল, ১৯৯১)
ফরাসি দার্শনিক মন্টেস্কু বলেছেন, ‘সত্যিকারের মহান নেতা হতে চাইলে মানুষের পাশে দাঁড়াতে হয়, ওপরে নয়।’ অর্থাৎ, তিনিই প্রকৃত নেতা, যিনি মানুষের কল্যাণে কাজ করেন, তাদের প্রতি বিনীত থাকেন, পদের দম্ভ দেখান না এবং ক্ষমতার অপব্যবহার করেন না। অবশ্য আজকাল এমন নেতা পাওয়া দুষ্কর। বিনয়, জ্ঞান ও কারিশমার সমন্বয় ঘটেছে—এমন নেতা পৃথিবীর ইতিহাসে খুব কমই দেখা যায়।
তবে এসব গুণের সমন্বয় ঘটেছে—এমন এক মহান নেতার কথা আজ পাঠককে জানাব, যিনি পৃথিবীতে একটি নতুন জীবনধারার সূচনা করেছিলেন। পৃথিবীর ১৮০ কোটি মানুষ এখনো তাঁকে অনুসরণ করে চলেছে। সফলতার শীর্ষ চূড়ায় আরোহণ করেও তিনি সর্বোচ্চ স্তরের বিনয় দেখিয়েছেন। তাঁর জ্ঞান-প্রজ্ঞা ছিল ঐশ্বরিক। নেতৃত্বের সর্বোচ্চ স্তরে পৌঁছেও তিনি নিঃসংকোচে ঘোষণা করেছেন, ‘আমি একজন সাধারণ মানুষই’।
মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) ছিলেন সেই মহান নেতা, যিনি নিজেকে কখনোই রাজা-বাদশাহ মনে করেননি; বরং জনগণের একনিষ্ঠ সেবক মনে করেছেন। হিজরতের বিপৎসংকুল পথ পাড়ি দিয়ে মদিনায় আসার পরপরই তিনি মসজিদে নববির নির্মাণকাজ শুরু করেছিলেন। সাহাবিরা যখন ভারী ইট-পাথর বহন করছিলেন, তখন মহানবী (সা.) নিজেও তাতে অংশ নেন এবং একজন সাধারণ শ্রমিকের মতোই কাজ করেন। এভাবেই তিনি মদিনায় একটি মানবিক ও সাম্যপূর্ণ সমাজের গোড়াপত্তন করেন।
মহানবী (সা.) জীবনের সব ক্ষেত্রেই অতি সাধারণ জীবন যাপন করেছেন। জনগণের সঙ্গেই খেয়েছেন। নিজের রুটি ভাগ করে নিয়েছেন সাহাবিদের সঙ্গে। একই পাত্র থেকে পানি পান করেছেন। তাঁরা ভুখা থাকলে তিনিও ভুখা থেকেছেন। সাহাবিদের মধ্যে তাঁদের একজন হয়েই ছিলেন তিনি। তাঁদের সমস্যাকে মনে করতেন নিজের সমস্যা। তাঁরা খুশি হলে একসঙ্গে হাসতেন এবং তাঁরা দুঃখী হলে একসঙ্গে কাঁদতেন।
যুদ্ধের ময়দানে সৈন্যদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়েছেন। দাম্পত্য জীবনে সঙ্গ দিয়েছেন স্ত্রীদের ঘরের কাজেও। তিনি চাইলেই আরাম-আয়েশের জীবন গড়তে পারতেন। বিলাসিতার উপকরণে ডুবে থাকতে পারতেন। তবে তিনি সেই পথে হাঁটেননি। নিতান্ত সাদাসিধে জীবন কাটিয়েছেন। খড়ের মাদুরে শুয়েছেন। তাঁর পিঠে মাদুরের দাগ পড়ে গিয়েছিল। মাটির জায়নামাজে দাঁড়িয়ে নামাজ আদায় করেছেন, যা তাঁর কপালে দাগ তৈরি করেছিল। একাধিক জায়গায় ছেঁড়া ও তালি দেওয়া কাপড় তিনি পরেছেন। নিজের ছেঁড়া কাপড় নিজেই সেলাই করতেন। (বুখারি)
মহানবী (সা.) একদিন সাহাবিদের সঙ্গে কোথাও যাচ্ছিলেন। বিশ্রাম ও রান্নার বিরতি দেওয়া হলো। সবাইকে কাজ ভাগ করে দেওয়া হলো। মহানবী (সা.) বললেন, তাঁকেও কাজ দেওয়া হোক। তবে সাহাবিরা রাজি হলেন না। মহান আল্লাহর রাসুলকে কীভাবে তাঁরা কাজ দেবেন! কিন্তু তিনি নিজের কথায় অটল রইলেন। বললেন, আমিও সফরের একজন সদস্য; আমারও দায়িত্ব আছে। আল্লাহর রাসুল হওয়ার সুবিধা নিতে তিনি অস্বীকৃতি জানালেন। নিরুপায় হয়ে সাহাবিরা তাঁকে কাঠ সংগ্রহের কাজ দিলেন। তিনি নিষ্ঠার সঙ্গে তা পালন করলেন। (মোবারকপুরি, ১৯৭৯)
সাহাবিদের কাছে তো মহানবী (সা.)-এর মর্যাদা ছিল প্রশ্নাতীত, তবে তাঁর শত্রু ও নিন্দুকেরাও এক বাক্যে তাঁর সততা ও সত্যবাদিতার স্বীকৃতি দিয়েছে। তাই তো দেখা যায়, মক্কা থেকে যখন তিনি বিতাড়িত হচ্ছিলেন, তখনো তাঁর ঘরে মক্কার অবিশ্বাসীদের অনেক আমানত জমা ছিল। সেগুলো প্রাপকদের কাছে পৌঁছে দিতেই হজরত আলি (রা.)-কে মক্কায় রেখে যেতে হয়েছিল।
মহানবী পৃথিবীতে এমন লক্ষাধিক অনুসারী রেখে যেতে পেরেছেন, যাঁরা ইসলামের মহান বার্তা মনেপ্রাণে গ্রহণ করেছিলেন এবং তাঁর সম্মানে জীবন দিতেও প্রস্তুত ছিলেন। তিনি তাঁদের পার্থিব জীবনেরই কেবল নেতা ছিলেন না, পরকালীন জীবনের দিশাও দিয়ে গেছেন। নবী ও নেতা হওয়ার পাশাপাশি তিনি তাঁদের বাবা, ভাই, স্বামী ও বন্ধু ছিলেন। একবার তাঁর কাছে এক ব্যক্তি এলেন। কথা বললেন। ভয়ে কাঁপছিলেন। মহানবী (সা.) বললেন, ‘শান্ত হও। আমি কোনো মহান রাজা-বাদশাহ নই। আমি শুকনো মাংস খাওয়া একজন নারীরই সন্তান।’ (ইবনে মাজাহ)
হুদায়বিয়ার চুক্তির সময় মক্কার কাফিরেরা অনেক অযৌক্তিক দাবি করে বসে। মহানবী (সা.) আল্লাহর আদেশে তাদের দাবি মেনে নেন। সাহাবিদের মধ্যে অসন্তোষ তৈরি হয়। তাঁদের অনেকেই চুক্তির অবমাননামূলক ধারাগুলো মানতে পারছেন না। এমন কঠিন মুহূর্তে চুক্তিনামা লেখা হচ্ছিল। হজরত আলি (রা.) ছিলেন দলিল লেখক। ‘আল্লাহর রাসুল’ এই শব্দদ্বয় চুক্তিতে উল্লেখ করা হলে কুরাইশের এক নেতা আপত্তি জানালেন। বললেন, ‘তাঁকে রাসুল মেনে নিলে এই চুক্তিই তো করতে হয় না।’ হজরত আলি (রা.) এই শব্দগুলো মুছতে অস্বীকৃতি জানালেন। তবে মহানবী (সা.) অত্যন্ত ধৈর্য, বিনয়, কূটনৈতিক শিষ্টাচার ও প্রজ্ঞার সঙ্গে সেই শব্দগুলো নিজ হাতে মুছে দেন এবং সেখানে তাঁর বাবার নাম লিখতে বলেন। (মোবারকপুরি, ১৯৭৯)
মহানবী (সা.)-এর নেতৃত্বের মূল কারিশমাই ছিল বিনয়, প্রজ্ঞা ও সহমর্মিতার সমন্বয়। সাদাসিধে জীবন তাঁকে গণমুখী করে তুলেছিল। মহাত্মা গান্ধী বলেছেন, ‘আমি এমন এক মহান নেতার জীবনী জানতে চেয়েছি, যিনি আজও কোটি মানুষের হৃদয়ে স্থান করে আছেন। তাঁর জীবনী পড়ে আমি নিশ্চিত হয়েছি, তলোয়ারের জোরে তিনি এই অবস্থান অর্জন করেননি। তাঁর অসামান্য সরলতা, বিনয়, আত্মনিবেদন, অঙ্গীকার রক্ষা, বিচক্ষণতা, বন্ধুত্ব, সাহস, ঈশ্বরের প্রতি পূর্ণ আস্থা এবং নিজের দায়িত্বের প্রতি সচেতনতাই তাঁকে এই স্থানে পৌঁছে দিয়েছে।’
ইবাদতের নিয়তে করা সব কাজই নেক আমলের অন্তর্ভুক্ত। আর নেক আমল মানুষের জীবনের প্রকৃত সম্পদ। এর মাধ্যমে পাওয়া যাবে জান্নাত। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘এবং যারা ইমান এনেছে ও সৎকর্ম করেছে, তারাই জান্নাতের অধিকারী, তারা সেখানে চিরকাল থাকবে।’ (সুরা বাকারা: ৮২)
১৭ ঘণ্টা আগেভ্রমণের সময় নামাজের ক্ষেত্রে বিশেষ ছাড় দিয়েছে ইসলাম। কোনো ব্যক্তি নিজের আবাসস্থল থেকে ৪৮ মাইল তথা ৭৮ কিলোমিটার দূরের কোনো গন্তব্যে ভ্রমণের নিয়তে বের হয়ে তাঁর এলাকা পেরিয়ে গেলেই শরিয়তের দৃষ্টিতে সে মুসাফির হয়ে যায়। (জাওয়াহিরুল ফিকহ: ১/৪৩৬)
২ দিন আগেজুবাইদা বিনতে জাফর ইবনে মানসুর পঞ্চম আব্বাসি খলিফা হারুনুর রশিদের স্ত্রী ও জাফর ইবনুল মানসুরের কন্যা। তাঁর মা ছিলেন আল-খায়জুরানের বড় বোন সালসাল ইবনে আত্তা। জুবাইদার আসল নাম আমাতুল আজিজ। দাদা আল-মানসুর তাঁকে আদর করে জুবাইদা (ছোট মাখনের টুকরা) নামে ডাকতেন এবং এ নামেই তিনি ইতিহাসে বিখ্যাত।
৩ দিন আগে