ইসলাম ডেস্ক
মক্কার কোরাইশ নেতারা শিআবে আবি তালিবে অবরুদ্ধ করে তখন মহানবী (সা.) ও তাঁর সাহাবিদের জীবন অতিষ্ঠ করে তুলেছিল। সেই দুঃসময়ে মহানবী (সা.) প্রথমে অভিভাবক ও হিতাকাঙ্ক্ষী চাচা আবু তালিবকে হারান। এমন বিপদের সময় তিনি অভিভাবকহীন হয়ে পড়েন। দুই মাস যেতে না যেতেই নবুওয়াতের দশম হিজরির রমজান মাসের ১০ তারিখে তিনি প্রিয়তমা স্ত্রী হজরত খাদিজা (রা.)-কেও হারান। মহানবী (সা.)-এর চরম দুঃসময়ে এই দুই ব্যক্তিই তাঁকে আগলে রেখেছিলেন। ফলে তিনি মুষড়ে পড়েন, তাঁর মনোবল ভেঙে পড়ে।
খাদিজা (রা.)-এর বর্ণাঢ্য জীবন
খাদিজা বিনতে খুওয়াইলিদ ছিলেন কোরাইশ নেতা খুওয়াইলিদ ইবনে আসাদের কন্যা। আনুমানিক ৫৫৫ খ্রিষ্টাব্দে মক্কায় জন্মগ্রহণ করেন। মক্কার প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী ও বিদুষী নারী ছিলেন। ৪০ বছর বয়সে ইসলামের নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর অনুপম ব্যক্তিত্বে মুগ্ধ হন এবং তাঁকে বিয়ে করেন। তখন নবীজির বয়স ২৫ বছর। তিনিই প্রথম ইসলাম গ্রহণকারী নারী।
খাদিজা (রা.) ব্যবসায় সাফল্য পেয়েছিলেন। ইয়েমেন ও সিরিয়ায় তিনি প্রতিনিধিদের মাধ্যমে ব্যবসায় পরিচালনা করতেন। ৫৯৫ খ্রিষ্টাব্দে তিনি সিরিয়ায় ব্যবসা পরিচালনার জন্য মক্কার বিশ্বস্ত যুবক মুহাম্মদকে বেছে নেন। সঙ্গে দেন খাদিজার ক্রীতদাস মায়সারাকেও। তাঁরা সফলভাবে কাফেলা নিয়ে মক্কায় ফিরে আসেন এবং যুবক মুহাম্মদকে খাদিজা দ্বিগুণ পারিশ্রমিক দেন।
খাদিজা (রা.)-এর তিনবার বিয়ে হয়। প্রত্যেক স্বামী থেকেই তাঁর সন্তান রয়েছে। প্রথম স্বামীর নাম আতিক ইবনে আইজ এবং দ্বিতীয় স্বামীর নাম মালিক ইবনে নাবাশ। প্রথমজন থেকে কন্যা হিন্দা এবং দ্বিতীয়জন থেকে দুই সন্তান হালা ও হিন্দকে গর্ভে ধারণ করেন। দ্বিতীয় স্বামীর মৃত্যুর কিছুদিন পর খাদিজা (রা.) বান্ধবী নাফিসার মাধ্যমে যুবক মুহাম্মদকে বিয়ের প্রস্তাব দেন।
নবী মুহাম্মদ (সা.)-এর ঘরে খাদিজা (রা.) ৬ সন্তানের জন্ম দেন। প্রথম সন্তান কাসিম। অল্প বয়সে কাসিম মক্কায় মারা যান। এরপর জন্ম হয় জয়নবের। তৃতীয় সন্তান আবদুল্লাহ জন্মগ্রহণ করেন নবুওয়াতের পর। আব্দুল্লাহও অল্প বয়সে মারা যান। এরপর জন্মগ্রহণ করেন রুকাইয়া, উম্মে কুলসুম এবং ফাতিমা।
ত্রিশ বছর বয়স থেকেই মহানবী (সা.) প্রায়ই মক্কার অদূরে হেরা গুহায় ধ্যানমগ্ন অবস্থায় কাটাতেন। খাদিজা (সা.) নিয়মিত তাঁকে খাবার দিয়ে আসতেন। একদিন ধ্যানের সময় ফেরেশতা জিবরাইল অহি নিয়ে এলেন এবং মহানবী (সা.)–কে চাপ দিয়ে বক্ষে অহি প্রবিষ্ট করে দেন। এই ঘটনার পর তিনি ভীত হয়ে ঘরে ফিরে আসেন। তখন খাদিজা (রা.) এসব বিস্ময়কর ঘটনা বিশ্বাস করেন এবং নবিজির প্রতি ইমান আনেন। খাদিজা তাঁকে সান্ত্বনা দেন।
ধনাঢ্য খাদিজা (রা.) নিজের সব সম্পদ মহানবী (সা.) ও ইসলামের খেদমতে ব্যয় করেছেন। মুসলমানদের চরম দুর্দশার সময়ে তিনি সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন। শিআবে আবি তালিবে অবরুদ্ধ অবস্থায়ও তিনি বিপুল সহযোগিতা করেন।
অবশেষে নবুওয়াতের ১০ম বছর ১০ রমজান মক্কায় তিনি ইন্তেকাল করেন। তাঁকে মক্কার জান্নাতুল মুআল্লায় দাফন করা হয়।
ইসলামে খাদিজা (রা.)-এর অবদান
হজরত খাদিজা (রা.) ছিলেন মহানবী (সা.) ও ইসলামের জন্য আল্লাহর বিশেষ নেয়ামত। দীর্ঘ পঁচিশ বছর তিনি মহানবী (সা.)-কে সাহচর্য দিয়ে, সেবা-যত্ন দিয়ে, বিপদ আপদে সাহস ও শক্তি দিয়ে, অভাব অনটনে অর্থ সম্পদ দিয়ে, ধ্যান ও জ্ঞানের প্রয়োজনে প্রেরণা ও পরামর্শ দিয়ে ইসলামের বিকাশে অসামান্য অবদান রেখেছেন। মহানবী (সা.) তাঁর অবদানের স্বীকৃতি দিয়ে বলেছেন, ‘যখন মানুষ আমাকে অস্বীকার করল, তখন তিনি আমার প্রতি নিটোল বিশ্বাস স্থাপন করলেন। যখন মানুষ আমাকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করল, তখন তিনি আমাকে দান করলেন। যখন মানুষ আমাকে বঞ্চিত করল, তখন তিনি আমাকে তাঁর সম্পদে অংশীদার করলেন। আল্লাহ আমাকে তাঁর গর্ভে সন্তান দিলেন। অন্য কোনো স্ত্রীর গর্ভে সন্তান দেননি।’ (মুসনাদে আহমাদ: ৬ / ১১৮)
অন্য হাদিসে মহানবী (সা.) খাদিজা (রা.)-এর শ্রেষ্ঠত্বের ঘোষণা দিয়েছেন। আনাস বিন মালেক (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘সৃষ্টিজগতের মধ্যে চারজন নারী শ্রেষ্ঠ। তাঁরা হলেন, মারইয়াম বিনতে ইমরান, ফেরাউনের স্ত্রী আসিয়া, খাদিজা বিনতে খুওয়াইলিদ ও ফাতেমা বিনতে মুহাম্মদ।’ (তিরমিজি: ৩৮৭৪; আহমাদ: ১২৪১৪)
মক্কার কোরাইশ নেতারা শিআবে আবি তালিবে অবরুদ্ধ করে তখন মহানবী (সা.) ও তাঁর সাহাবিদের জীবন অতিষ্ঠ করে তুলেছিল। সেই দুঃসময়ে মহানবী (সা.) প্রথমে অভিভাবক ও হিতাকাঙ্ক্ষী চাচা আবু তালিবকে হারান। এমন বিপদের সময় তিনি অভিভাবকহীন হয়ে পড়েন। দুই মাস যেতে না যেতেই নবুওয়াতের দশম হিজরির রমজান মাসের ১০ তারিখে তিনি প্রিয়তমা স্ত্রী হজরত খাদিজা (রা.)-কেও হারান। মহানবী (সা.)-এর চরম দুঃসময়ে এই দুই ব্যক্তিই তাঁকে আগলে রেখেছিলেন। ফলে তিনি মুষড়ে পড়েন, তাঁর মনোবল ভেঙে পড়ে।
খাদিজা (রা.)-এর বর্ণাঢ্য জীবন
খাদিজা বিনতে খুওয়াইলিদ ছিলেন কোরাইশ নেতা খুওয়াইলিদ ইবনে আসাদের কন্যা। আনুমানিক ৫৫৫ খ্রিষ্টাব্দে মক্কায় জন্মগ্রহণ করেন। মক্কার প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী ও বিদুষী নারী ছিলেন। ৪০ বছর বয়সে ইসলামের নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর অনুপম ব্যক্তিত্বে মুগ্ধ হন এবং তাঁকে বিয়ে করেন। তখন নবীজির বয়স ২৫ বছর। তিনিই প্রথম ইসলাম গ্রহণকারী নারী।
খাদিজা (রা.) ব্যবসায় সাফল্য পেয়েছিলেন। ইয়েমেন ও সিরিয়ায় তিনি প্রতিনিধিদের মাধ্যমে ব্যবসায় পরিচালনা করতেন। ৫৯৫ খ্রিষ্টাব্দে তিনি সিরিয়ায় ব্যবসা পরিচালনার জন্য মক্কার বিশ্বস্ত যুবক মুহাম্মদকে বেছে নেন। সঙ্গে দেন খাদিজার ক্রীতদাস মায়সারাকেও। তাঁরা সফলভাবে কাফেলা নিয়ে মক্কায় ফিরে আসেন এবং যুবক মুহাম্মদকে খাদিজা দ্বিগুণ পারিশ্রমিক দেন।
খাদিজা (রা.)-এর তিনবার বিয়ে হয়। প্রত্যেক স্বামী থেকেই তাঁর সন্তান রয়েছে। প্রথম স্বামীর নাম আতিক ইবনে আইজ এবং দ্বিতীয় স্বামীর নাম মালিক ইবনে নাবাশ। প্রথমজন থেকে কন্যা হিন্দা এবং দ্বিতীয়জন থেকে দুই সন্তান হালা ও হিন্দকে গর্ভে ধারণ করেন। দ্বিতীয় স্বামীর মৃত্যুর কিছুদিন পর খাদিজা (রা.) বান্ধবী নাফিসার মাধ্যমে যুবক মুহাম্মদকে বিয়ের প্রস্তাব দেন।
নবী মুহাম্মদ (সা.)-এর ঘরে খাদিজা (রা.) ৬ সন্তানের জন্ম দেন। প্রথম সন্তান কাসিম। অল্প বয়সে কাসিম মক্কায় মারা যান। এরপর জন্ম হয় জয়নবের। তৃতীয় সন্তান আবদুল্লাহ জন্মগ্রহণ করেন নবুওয়াতের পর। আব্দুল্লাহও অল্প বয়সে মারা যান। এরপর জন্মগ্রহণ করেন রুকাইয়া, উম্মে কুলসুম এবং ফাতিমা।
ত্রিশ বছর বয়স থেকেই মহানবী (সা.) প্রায়ই মক্কার অদূরে হেরা গুহায় ধ্যানমগ্ন অবস্থায় কাটাতেন। খাদিজা (সা.) নিয়মিত তাঁকে খাবার দিয়ে আসতেন। একদিন ধ্যানের সময় ফেরেশতা জিবরাইল অহি নিয়ে এলেন এবং মহানবী (সা.)–কে চাপ দিয়ে বক্ষে অহি প্রবিষ্ট করে দেন। এই ঘটনার পর তিনি ভীত হয়ে ঘরে ফিরে আসেন। তখন খাদিজা (রা.) এসব বিস্ময়কর ঘটনা বিশ্বাস করেন এবং নবিজির প্রতি ইমান আনেন। খাদিজা তাঁকে সান্ত্বনা দেন।
ধনাঢ্য খাদিজা (রা.) নিজের সব সম্পদ মহানবী (সা.) ও ইসলামের খেদমতে ব্যয় করেছেন। মুসলমানদের চরম দুর্দশার সময়ে তিনি সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন। শিআবে আবি তালিবে অবরুদ্ধ অবস্থায়ও তিনি বিপুল সহযোগিতা করেন।
অবশেষে নবুওয়াতের ১০ম বছর ১০ রমজান মক্কায় তিনি ইন্তেকাল করেন। তাঁকে মক্কার জান্নাতুল মুআল্লায় দাফন করা হয়।
ইসলামে খাদিজা (রা.)-এর অবদান
হজরত খাদিজা (রা.) ছিলেন মহানবী (সা.) ও ইসলামের জন্য আল্লাহর বিশেষ নেয়ামত। দীর্ঘ পঁচিশ বছর তিনি মহানবী (সা.)-কে সাহচর্য দিয়ে, সেবা-যত্ন দিয়ে, বিপদ আপদে সাহস ও শক্তি দিয়ে, অভাব অনটনে অর্থ সম্পদ দিয়ে, ধ্যান ও জ্ঞানের প্রয়োজনে প্রেরণা ও পরামর্শ দিয়ে ইসলামের বিকাশে অসামান্য অবদান রেখেছেন। মহানবী (সা.) তাঁর অবদানের স্বীকৃতি দিয়ে বলেছেন, ‘যখন মানুষ আমাকে অস্বীকার করল, তখন তিনি আমার প্রতি নিটোল বিশ্বাস স্থাপন করলেন। যখন মানুষ আমাকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করল, তখন তিনি আমাকে দান করলেন। যখন মানুষ আমাকে বঞ্চিত করল, তখন তিনি আমাকে তাঁর সম্পদে অংশীদার করলেন। আল্লাহ আমাকে তাঁর গর্ভে সন্তান দিলেন। অন্য কোনো স্ত্রীর গর্ভে সন্তান দেননি।’ (মুসনাদে আহমাদ: ৬ / ১১৮)
অন্য হাদিসে মহানবী (সা.) খাদিজা (রা.)-এর শ্রেষ্ঠত্বের ঘোষণা দিয়েছেন। আনাস বিন মালেক (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘সৃষ্টিজগতের মধ্যে চারজন নারী শ্রেষ্ঠ। তাঁরা হলেন, মারইয়াম বিনতে ইমরান, ফেরাউনের স্ত্রী আসিয়া, খাদিজা বিনতে খুওয়াইলিদ ও ফাতেমা বিনতে মুহাম্মদ।’ (তিরমিজি: ৩৮৭৪; আহমাদ: ১২৪১৪)
আল্লাহ তাআলা মানুষকে বিচিত্ররূপে সৃষ্টি করেছেন। গায়ের রঙে যেমন রয়েছে ভিন্নতা, তেমনই মন-মেজাজেও বিচিত্রতা স্পষ্ট।
৪ ঘণ্টা আগেপ্রত্যেক মুসলমানের চূড়ান্ত লক্ষ্য-উদ্দেশ্য ও একান্ত আশা-আকাঙ্ক্ষা হচ্ছে জান্নাতের মেহমান হওয়া। কেননা জান্নাত অনন্ত সুখ, শান্তি ও অসংখ্য নিয়ামতের জায়গা। আল্লাহ তাআলা নিজেই জান্নাতের দিকে বান্দাদের ডেকেছেন। কোরআনে এরশাদ হয়েছে, ‘আল্লাহ শান্তির ঘরের দিকে ডাকছেন।’ (সুরা ইউনুস: ২৫)
১ দিন আগেসংযুক্ত আরব আমিরাতের (ইউএই) অ্যাস্ট্রোনমি সোসাইটির বরাত দিয়ে গালফ নিউজ জানিয়েছে, ইসলামি বর্ষপঞ্জির পঞ্চম মাস জমাদিউল আউয়ালের চাঁদ দেখা যাবে আগামী ৩ নভেম্বর। এই চাঁদ দেখার সঙ্গে রমজান শুরুর ব্যাপারে পূর্বাভাস পান জ্যোতির্বিদেরা।
২ দিন আগেপ্রাকৃতিক দুর্যোগ মানুষের জন্য মহান আল্লাহর পরীক্ষা। দুর্যোগের সময় মুমিনের বিভিন্ন করণীয় সম্পর্কে কোরআন-হাদিসে এসেছে। এখানে কয়েকটি করণীয় বিষয় তুলে ধরা হলো—
২ দিন আগে