Ajker Patrika

মা-বাবার খেদমতে জান্নাত লাভের সুযোগ

কাউসার লাবীব
আপডেট : ০৭ এপ্রিল ২০২৫, ১৫: ১০
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

মা-বাবা পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ সম্পদ, নিরাপদ আশ্রয়স্থল। আদর-সোহাগ মাখিয়ে মা যে স্বপ্নগুলো চোখে বুনে দেন, বাবা যে প্রতিজ্ঞা নিয়ে এগিয়ে যান, তা আমাদের জীবনের চিরন্তন আলো। তাদের স্নেহ-ভালোবাসায় নত হয় পৃথিবী। তাদের পরিশ্রমে গড়ে ওঠে আমাদের সুন্দর ভবিষ্যৎ। তাদের ভরসায় আমরা শক্তি পাই। তাদের দোয়ায় আমাদের জীবন হয়ে ওঠে সার্থক। তাইতো মা-বাবাকে সর্বোচ্চ সম্মান দিয়েছে ইসলাম।

পবিত্র কোরআন ও হাদিসে অসংখ্য জায়গায় আল্লাহ তাআলা বারবার মা-বাবার মর্যাদার কথা বলেছেন। তাদের সঙ্গে সদাচরণের নির্দেশ দিয়েছেন।

আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আর তোমরা আল্লাহরই ইবাদত কর এবং তাঁর সঙ্গে কোনো বিষয়ে অংশীদার স্থাপন করো না এবং মাতা-পিতার সঙ্গে সদ্ব্যবহার কর।’ (সুরা নিসা: ৩৬)

অন্য আয়াতে বলেন, ‘তোমার রব নির্দেশ দিয়েছেন, তোমরা তিনি (আল্লাহ) ছাড়া অন্য কারও ইবাদত করবে না এবং মাতা-পিতার প্রতি সদ্ব্যবহার করবে। তাদের একজন অথবা উভয়ে তোমার জীবদ্দশায় বার্ধক্যে উপনীত হলে তাদের বিরক্তিসূচক কিছু বলো না এবং তাদের ভর্ৎসনা করো না। তাদের সঙ্গে কথা বলো সম্মানসূচক নম্রভাবে।’ (সুরা বনি ইসরাইল: ২৩)

আল্লাহ তাআলা আরও বলেন, ‘আমি মানুষকে তার মা-বাবার সঙ্গে (সদাচরণের) নির্দেশ দিয়েছি। তার মা কষ্ট ভোগ করতে করতে তাকে গর্ভধারণ করে। তার দুধ ছাড়ানো হয় দুই বছরে। সুতরাং আমার শুকরিয়া ও তোমার মা-বাবার শুকরিয়া আদায় করো।’ (সুরা লোকমান: ১৪)

নবী করিম (সা.) বলেন, ‘যে সন্তান তার পিতামাতার দিকে সশ্রদ্ধ ও ভালোবাসার নজরে তাকায়, সঙ্গে সঙ্গে আল্লাহ তার আমলনামায় একটি কবুল হজের সওয়াব দেন। এ কথা শুনে উপস্থিত সাহাবায়ে কেরাম বললেন, হে আল্লাহর রাসুল, সে যদি ওইভাবে দৈনিক ১০০ বার তাকায় তাহলে কি সে ১০০ কবুল হজের সওয়াব পাবে? উত্তরে রাসুলুল্লাহ (সা.) বললেন হ্যাঁ, যদি দৈনিক ১০০ বারও তাকায়, তাহলে সেই সন্তান ১০০ কবুল হজের সওয়াব পাবে।’ (শুআবুল ইমান: ৭৪৭২)

অন্য হাদিসে এসেছে, ‘যখন কোনো অনুগত সন্তান নিজের মা-বাবার দিকে অনুগ্রহের নজরে দেখে, আল্লাহ তাআলা তার প্রতিটি দৃষ্টির বিনিময়ে একটি করে কবুল হজের সওয়াব দান করেন।’ (সুনানে বায়হাকি)

মা-বাবার খেদমত করার প্রতি বিশেষভাবে গুরুত্ব দিয়েছে ইসলাম। আল্লাহর রাসুল (সা) . একবার বলেন, ‘তার নাক ধূলিমলিন হোক, আবারও নাক ধূলিমলিন হোক, আবারও নাক ধূলিমলিন হোক।’ জিজ্ঞেস করা হলো, ‘কোন ব্যক্তির, হে আল্লাহর রাসুল?’ তিনি বললেন, ‘যে তার মা-বাবা উভয়কে অথবা একজনকে বার্ধক্যাবস্থায় পেল অথচ সে (তাদের খেদমত করে) জান্নাতে প্রবেশ করতে পারল না।’ (সহিহ্ মুসলিম: ৬৪০৪)

আনাস ইবনে মালিক (রা.) বর্ণনা করেন, এক ব্যক্তি রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর কাছে এসে বললেন, ‘আমি যুদ্ধে অংশ নিতে চাই, কিন্তু আমার সেই সামর্থ্য ও সক্ষমতা নেই।’ আল্লাহর রাসুল (সা.) তাকে জিজ্ঞেস করেন, ‘তোমার মাতা-পিতার কেউ কি জীবিত আছেন?’ লোকটি বললেন, ‘আমার মা জীবিত।’ তখন রাসুল (সা.) বললেন, ‘তাহলে মায়ের সেবা করে আল্লাহর নিকট যুদ্ধে যেতে না পারার অপারগতা পেশ করো। এভাবে যদি করতে পার এবং তোমার মা সন্তুষ্ট থাকেন—তবে তুমি হজ, ওমরা এবং জিহাদের সওয়াব পেয়ে যাবে। সুতরাং আল্লাহকে ভয় করো এবং মায়ের সেবা করো।’ (মাজমাউজ জাওয়াইদ: ১৩৩৯৯)

সদাচার, খেদমতের পাশাপাশি মা-বাবার জন্য দোয়া করার নির্দেশ দিয়েছে ইসলাম।

আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘অনুকম্পায় তাদের প্রতি বিনয়াবনত থাক এবং বলো, হে আমার রব, তাঁদের প্রতি দয়া করুন যেভাবে শৈশবে তাঁরা আমাকে লালন-পালন করেছিলেন। (সুরা বনি ইসরাইল: ২৪)।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

গলা ধাক্কার পর ছোট্ট মেয়েটিকে লাঠি দিয়ে পেটালেন কফিশপের কর্মচারী

বিশ্বব্যাংকে সিরিয়ার ঋণ পরিশোধ করে দিচ্ছে সৌদি আরব

ইউরোপের ভিসা পেতে ভারতে গিয়ে গ্রেপ্তার ৭ বাংলাদেশি

‘চরিত্র হননের চেষ্টা’: গ্রেপ্তারি পরোয়ানার পর দুদককে পাল্টা আক্রমণ টিউলিপের

জুয়ার বিজ্ঞাপনের প্রচার: আলোচিত টিকটকার জান্নাতের স্বামী তোহা কারাগারে

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত