ড. আবু সালেহ মুহাম্মদ তোহা
মদিনাতুন নবী বা নবী (সা.)-এর শহর পবিত্র মদিনা মুসলিম উম্মাহর ভালোবাসা, আবেগ ও উচ্ছ্বাসের কেন্দ্রবিন্দু। সেখানে শুয়ে আছেন মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)। মদিনার আকাশ-বাতাসে মিশে আছে তাঁর পবিত্র নিশ্বাসের সুবাস। মদিনার ভূমি তাঁর পা মোবারকের স্পর্শে ধন্য। রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর স্মৃতিবিজড়িত, ইসলাম ও মুসলমানদের পুণ্যভূমি এই মদিনা। ইসলামের প্রথম মসজিদ মসজিদে কুবা, অনন্য ফজিলতের মসজিদে নববি, পৃথিবীর বুকে জান্নাতের টুকরো রিয়াজুল জান্নাত, যা রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর আমলের মিম্বর ও কবরের মধ্যে অবস্থিত, সাহাবিদের কবরস্থান জান্নাতুল বাকি প্রভৃতি মর্যাদাপূর্ণ স্থান মদিনাতেই অবস্থিত। কাজেই কোনো মুসলমান হজ বা ওমরাহ পালনের জন্য মক্কায় যাবে আর মদিনায় না গিয়ে ফিরে আসবে—তা হয় না। মদিনায় গমন যদিও হজ বা ওমরাহর ফরজ বা ওয়াজিব নয়, তবে নবীজির ভালোবাসার টানে সবাই ছুটে যায় পবিত্র মদিনায়।
নবী (সা.)-এর ভালোবাসার নগরী
মদিনা পুরো পৃথিবীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ, মর্যাদাপূর্ণ ও সম্মানিত নগরী। রাসুলুল্লাহ (সা.) নিজে এই শহরকে ভালোবেসেছেন, পছন্দ করেছেন এবং এর জন্য দোয়া করেছেন। ইবরাহিম (আ.) যেমন মক্কা নগরীর জন্য দোয়া করেছেন, তেমনিভাবে রাসুলুল্লাহ (সা.) মদিনার জন্য দোয়া করেছেন এবং মহান আল্লাহ তা কবুল করেছেন। তিনি মদিনাকে এতই ভালোবাসতেন যে, কোনো সফর থেকে প্রত্যাবর্তনকালে উটের গতি বাড়িয়ে দিতেন। মদিনায় ফিরে আসতে তিনি ব্যাকুল হয়ে যেতেন। মদিনার পবিত্রতায় তিনি ঘোষণা করেছেন, ‘এ শহর পবিত্র। এটা পাপগুলো দূর করে—যেমন কামারের হাপর লোহার মরীচিকা দূর করে।’ (মুসলিম: ১৩৮৪) ইবনে ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেন, ‘তোমাদের মধ্যে কেউ যদি মদিনায় মৃত্যুবরণ করতে পারে, সে যেন তা-ই করে। কারণ যে ব্যক্তি এখানে মারা যাবে, আমি তার পক্ষে সুপারিশ করব।’ (নাসায়ি: ১৯৭১)
দাজ্জাল থেকে নিরাপদ নগরী
মহান আল্লাহ তাআলা মদিনার প্রবেশদ্বারসমূহে প্রহরী নিযুক্ত করেছেন, যাঁরা এই নগরীতে মহামারি ও দাজ্জালের প্রবেশকে প্রতিহত করেন। নবী (সা.) বলেন, ‘মদিনার পথে-প্রান্তরে রয়েছে (প্রহরী) ফেরেশতারা, (তাই) এখানে মহামারি ও দাজ্জাল প্রবেশ করতে পারবে না।’ (বুখারি: ১৮৮০) আনাস ইবনে মালিক (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘দাজ্জাল মদিনার দিকে আসবে, তখন সে দেখতে পাবে ফেরেশতারা মদিনা পাহারা দিয়ে রেখেছেন। কাজেই দাজ্জাল ও প্লেগ মদিনার কাছে আসতে পারবে না, ইনশা আল্লাহ।’ (বুখারি: ৭৪৭৩)
অন্যতম পবিত্র নগরী
রাসুলুল্লাহ (সা.) মদিনাকে হারাম বলে ঘোষণা করেছেন। হারাম শব্দের দুটো অর্থ রয়েছে। একটি অর্থ হলো নিষিদ্ধ, আরেকটি পবিত্র। দুটো অর্থই এ নগরীর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। এটি পবিত্র নগরী এবং এখানে রক্তপাত নিষিদ্ধ। জাবের (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘নিশ্চয়ই ইবরাহিম (আ.) মক্কার হারাম নির্ধারণ করেছেন আর আমি মদিনাকে হারাম বলে ঘোষণা করছি—এর দুই প্রান্তের কঙ্করময় মাঠের মধ্যবর্তী অংশকে। অতএব, এখানকার কোনো কাঁটাযুক্ত গাছও কর্তন করা যাবে না এবং এখানকার জীবজন্তুও শিকার করা যাবে না।’ (মুসলিম: ৩২০৮)
মসজিদে নববির মর্যাদা
মসজিদে নববির রয়েছে স্বতন্ত্র মর্যাদা ও ফজিলত। সেখানে নামাজ আদায়ের সওয়াব বাড়িয়ে দেওয়া হয়। লাগাতার ৪০ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করতে পারলে আরও প্রতিদান রয়েছে। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেন, ‘আমার এই মসজিদে (নববিতে) ১ রাকাত নামাজ মসজিদে হারাম ছাড়া অন্য সব মসজিদে ১ হাজার রাকাত নামাজ অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ।’ (ইবনে মাজাহ: ১৪০৬; মুসনাদে আহমাদ: ১৪৬৯৪) আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি আমার মসজিদে একাধারে ৪০ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করবে, তার জন্য জাহান্নাম, শাস্তি ও মোনাফেকি থেকে মুক্তি লিখে দেওয়া হবে।’ (মুসনাদে আহমাদ: ১২১৭৩; তাবরানি: ৫৪৪)
রওজা জিয়ারতের ফজিলত
রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর রওজা মোবারক জিয়ারত একটি অনন্য ইবাদত। তাঁর কবরের পাশে দাঁড়িয়ে সালাম প্রদান করা ও দরুদ পাঠ করা সৌভাগ্যের ব্যাপার। নবীজির কবরের পাশে দাঁড়িয়ে সালাম পেশ করলে তিনি উত্তর দেন। দিনরাত সর্বাবস্থায়ই কবরের কাছ ও দূর থেকে নবী (সা.)-এর ওপর সালাত ও সালাম অব্যাহত থাকে। সারাক্ষণ কেউ না কেউ কোনো না কোনোভাবে দরুদ-সালাম পেশ করতে থাকে আর নবী (সা.) এর উত্তর দিতে থাকেন। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘কোনো ব্যক্তি যখন আমার প্রতি সালাম পেশ করে, তখন আল্লাহ আমার মধ্যে আমার আত্মা ফিরিয়ে দেন, ফলে আমি তার সালামের জবাব দিই।’ (আবু দাউদ: ২০৪১) আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি আমার কবর জিয়ারত করেছে, তার জন্য আমার শাফায়াত ওয়াজিব হয়ে গেছে।’ (বায়হাকি: ৩৮৬২)
লেখক: সহযোগী অধ্যাপক, আরবি বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
মদিনাতুন নবী বা নবী (সা.)-এর শহর পবিত্র মদিনা মুসলিম উম্মাহর ভালোবাসা, আবেগ ও উচ্ছ্বাসের কেন্দ্রবিন্দু। সেখানে শুয়ে আছেন মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)। মদিনার আকাশ-বাতাসে মিশে আছে তাঁর পবিত্র নিশ্বাসের সুবাস। মদিনার ভূমি তাঁর পা মোবারকের স্পর্শে ধন্য। রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর স্মৃতিবিজড়িত, ইসলাম ও মুসলমানদের পুণ্যভূমি এই মদিনা। ইসলামের প্রথম মসজিদ মসজিদে কুবা, অনন্য ফজিলতের মসজিদে নববি, পৃথিবীর বুকে জান্নাতের টুকরো রিয়াজুল জান্নাত, যা রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর আমলের মিম্বর ও কবরের মধ্যে অবস্থিত, সাহাবিদের কবরস্থান জান্নাতুল বাকি প্রভৃতি মর্যাদাপূর্ণ স্থান মদিনাতেই অবস্থিত। কাজেই কোনো মুসলমান হজ বা ওমরাহ পালনের জন্য মক্কায় যাবে আর মদিনায় না গিয়ে ফিরে আসবে—তা হয় না। মদিনায় গমন যদিও হজ বা ওমরাহর ফরজ বা ওয়াজিব নয়, তবে নবীজির ভালোবাসার টানে সবাই ছুটে যায় পবিত্র মদিনায়।
নবী (সা.)-এর ভালোবাসার নগরী
মদিনা পুরো পৃথিবীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ, মর্যাদাপূর্ণ ও সম্মানিত নগরী। রাসুলুল্লাহ (সা.) নিজে এই শহরকে ভালোবেসেছেন, পছন্দ করেছেন এবং এর জন্য দোয়া করেছেন। ইবরাহিম (আ.) যেমন মক্কা নগরীর জন্য দোয়া করেছেন, তেমনিভাবে রাসুলুল্লাহ (সা.) মদিনার জন্য দোয়া করেছেন এবং মহান আল্লাহ তা কবুল করেছেন। তিনি মদিনাকে এতই ভালোবাসতেন যে, কোনো সফর থেকে প্রত্যাবর্তনকালে উটের গতি বাড়িয়ে দিতেন। মদিনায় ফিরে আসতে তিনি ব্যাকুল হয়ে যেতেন। মদিনার পবিত্রতায় তিনি ঘোষণা করেছেন, ‘এ শহর পবিত্র। এটা পাপগুলো দূর করে—যেমন কামারের হাপর লোহার মরীচিকা দূর করে।’ (মুসলিম: ১৩৮৪) ইবনে ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেন, ‘তোমাদের মধ্যে কেউ যদি মদিনায় মৃত্যুবরণ করতে পারে, সে যেন তা-ই করে। কারণ যে ব্যক্তি এখানে মারা যাবে, আমি তার পক্ষে সুপারিশ করব।’ (নাসায়ি: ১৯৭১)
দাজ্জাল থেকে নিরাপদ নগরী
মহান আল্লাহ তাআলা মদিনার প্রবেশদ্বারসমূহে প্রহরী নিযুক্ত করেছেন, যাঁরা এই নগরীতে মহামারি ও দাজ্জালের প্রবেশকে প্রতিহত করেন। নবী (সা.) বলেন, ‘মদিনার পথে-প্রান্তরে রয়েছে (প্রহরী) ফেরেশতারা, (তাই) এখানে মহামারি ও দাজ্জাল প্রবেশ করতে পারবে না।’ (বুখারি: ১৮৮০) আনাস ইবনে মালিক (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘দাজ্জাল মদিনার দিকে আসবে, তখন সে দেখতে পাবে ফেরেশতারা মদিনা পাহারা দিয়ে রেখেছেন। কাজেই দাজ্জাল ও প্লেগ মদিনার কাছে আসতে পারবে না, ইনশা আল্লাহ।’ (বুখারি: ৭৪৭৩)
অন্যতম পবিত্র নগরী
রাসুলুল্লাহ (সা.) মদিনাকে হারাম বলে ঘোষণা করেছেন। হারাম শব্দের দুটো অর্থ রয়েছে। একটি অর্থ হলো নিষিদ্ধ, আরেকটি পবিত্র। দুটো অর্থই এ নগরীর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। এটি পবিত্র নগরী এবং এখানে রক্তপাত নিষিদ্ধ। জাবের (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘নিশ্চয়ই ইবরাহিম (আ.) মক্কার হারাম নির্ধারণ করেছেন আর আমি মদিনাকে হারাম বলে ঘোষণা করছি—এর দুই প্রান্তের কঙ্করময় মাঠের মধ্যবর্তী অংশকে। অতএব, এখানকার কোনো কাঁটাযুক্ত গাছও কর্তন করা যাবে না এবং এখানকার জীবজন্তুও শিকার করা যাবে না।’ (মুসলিম: ৩২০৮)
মসজিদে নববির মর্যাদা
মসজিদে নববির রয়েছে স্বতন্ত্র মর্যাদা ও ফজিলত। সেখানে নামাজ আদায়ের সওয়াব বাড়িয়ে দেওয়া হয়। লাগাতার ৪০ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করতে পারলে আরও প্রতিদান রয়েছে। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেন, ‘আমার এই মসজিদে (নববিতে) ১ রাকাত নামাজ মসজিদে হারাম ছাড়া অন্য সব মসজিদে ১ হাজার রাকাত নামাজ অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ।’ (ইবনে মাজাহ: ১৪০৬; মুসনাদে আহমাদ: ১৪৬৯৪) আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি আমার মসজিদে একাধারে ৪০ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করবে, তার জন্য জাহান্নাম, শাস্তি ও মোনাফেকি থেকে মুক্তি লিখে দেওয়া হবে।’ (মুসনাদে আহমাদ: ১২১৭৩; তাবরানি: ৫৪৪)
রওজা জিয়ারতের ফজিলত
রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর রওজা মোবারক জিয়ারত একটি অনন্য ইবাদত। তাঁর কবরের পাশে দাঁড়িয়ে সালাম প্রদান করা ও দরুদ পাঠ করা সৌভাগ্যের ব্যাপার। নবীজির কবরের পাশে দাঁড়িয়ে সালাম পেশ করলে তিনি উত্তর দেন। দিনরাত সর্বাবস্থায়ই কবরের কাছ ও দূর থেকে নবী (সা.)-এর ওপর সালাত ও সালাম অব্যাহত থাকে। সারাক্ষণ কেউ না কেউ কোনো না কোনোভাবে দরুদ-সালাম পেশ করতে থাকে আর নবী (সা.) এর উত্তর দিতে থাকেন। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘কোনো ব্যক্তি যখন আমার প্রতি সালাম পেশ করে, তখন আল্লাহ আমার মধ্যে আমার আত্মা ফিরিয়ে দেন, ফলে আমি তার সালামের জবাব দিই।’ (আবু দাউদ: ২০৪১) আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি আমার কবর জিয়ারত করেছে, তার জন্য আমার শাফায়াত ওয়াজিব হয়ে গেছে।’ (বায়হাকি: ৩৮৬২)
লেখক: সহযোগী অধ্যাপক, আরবি বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
জুবাইদা বিনতে জাফর ইবনে মানসুর পঞ্চম আব্বাসি খলিফা হারুনুর রশিদের স্ত্রী ও জাফর ইবনুল মানসুরের কন্যা। তাঁর মা ছিলেন আল-খায়জুরানের বড় বোন সালসাল ইবনে আত্তা। জুবাইদার আসল নাম আমাতুল আজিজ। দাদা আল-মানসুর তাঁকে আদর করে জুবাইদা (ছোট মাখনের টুকরা) নামে ডাকতেন এবং এ নামেই তিনি ইতিহাসে বিখ্যাত।
৪ ঘণ্টা আগেকুয়েতে অনুষ্ঠিত ১৩তম আন্তর্জাতিক হিফজুল কোরআন প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান অর্জন করেছেন বাংলাদেশের হাফেজ আনাস মাহফুজ। বিশ্বের ৭৪টি দেশের প্রতিযোগীদের পেছনে ফেলে দেশের জন্য এ গৌরব বয়ে আনেন তিনি।
৪ ঘণ্টা আগেবিয়ে ইসলামি জীবনব্যবস্থার একটি মৌলিক অংশ। এটি ব্যক্তিগত, পারিবারিক ও সামাজিক জীবনে শান্তি ও স্থিতি নিয়ে আসে। তবে বিয়ের আগে আর্থিক সচ্ছলতা অর্জন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এটি বিয়ে-পরবর্তী জীবনে দায়িত্ব পালনের জন্য ব্যক্তিকে সক্ষম করে।
৪ ঘণ্টা আগে