ঠাকুরবাড়ির হেঁশেলে পোস্তর কৌটো পাওয়া যাবে না, তা কি হয়? এই একটি উপকরণ একেবারেই পশ্চিমবঙ্গীয়, যেটা থেকে মুক্ত হতে পারেনি ঠাকুরবাড়ির রান্নাঘর।
সে বাড়ির ‘পোস্তর দম’-এর কথা নিশ্চয়ই শুনেছেন। পোস্ত হালকা বেটে একটা বড় পাত্রে ঢেলে তাতে মেশানো হতো পেঁয়াজ ও আদাবাটা, জিরাগুঁড়া, লাল মরিচের গুঁড়া, একটা ডিম ও স্বাদ অনুযায়ী লবণ। তারপর সবকিছু খুব ভালো করে মেখে নেওয়া হতো। কড়াইতে একটু বেশি পরিমাণ সরষের তেল দিয়ে ছোট ছোট বড়ার আকারে এই মিশ্রণ ভেজে নেওয়া হতো। এবার ওই তেলেই ডুমো করে কেটে রাখা আলু ঢেলে দিয়ে শুরু হতো মূল রান্নাটা। কড়াই থেকে কিছুটা তেল তুলে রেখে বাকি তেলে দিয়ে দেওয়া হতো পেঁয়াজ ও আদাবাটা। কষাতে কষাতে কাঁচা ভাব চলে গিয়ে তেল ছাড়তে শুরু করলে মরিচগুঁড়া, চিড়াগুঁড়া ও স্বাদমতো লবণ দিয়ে আবার কষানো হতো। তারপর এর সঙ্গে যোগ করা হতো ভেজে রাখা আলু। খানিকক্ষণ কষানোর পর এর সঙ্গে একটু চিনি ও বেশ খানিকটা জল যোগ করা হতো। আলু প্রায় সেদ্ধ হয়ে এলে দেওয়া হতো ভেজে রাখা ডিম পোস্তর বড়াগুলো। ঝোলের পরিমাণ কমে এলে তাতে গরমমসলার গুঁড়া এবং এক টেবিল চামচ ঘি যোগ করে ঢেকে দিলেই হয়ে যেত সুস্বাদু রান্না পোস্তর দম।
এবার একটু আমিষের গল্পে আসি। ঠাকুরবাড়ির রান্নাঘরে যত রকমের মুরগির মাংসের রান্না হতো, সেগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ও অন্যতম পদ ছিল ‘মুরগির রসোল্লা’। এর জন্য টক দই খুব ভালো করে ফেটিয়ে নেওয়া হতো, যাতে দানা দানা না হয়। একটি পাত্রে প্রথমে মুরগির মাংস, তারপর একে একে পেঁয়াজকুচি, রসুনবাটা, শুকনো মরিচবাটা, তেজপাতা, কাঁচা মরিচ, টক দই, লবণ ও ঘি দিয়ে খুব ভালো করে মিশিয়ে নেওয়া হতো। সব উপকরণসমেত পাত্রটি চুলায় বসিয়ে মাঝারি আঁচে রান্না করা হতো। প্রথমে একটু নাড়াচাড়া করে ঢেকে দেওয়া হতো, এরপর পুরো রান্নাটাই হতো স্লো কুকিং মেথডে। মাঝে মাঝে ঢাকনা খুলে একটু উল্টেপাল্টে দেওয়া হতো মুরগির মাংস। পেঁয়াজ ও দই থেকে পানি বেরিয়েই মুরগির মাংস সেদ্ধ হয়ে যেত। পুরো মাংস থেকে তেল ওপরে ভেসে উঠলে চুলা বন্ধ করে দেওয়া হতো। এভাবেই তৈরি হতো মুরগির রসোল্লা।
খাওয়াদাওয়া শেষে মিষ্টিমুখের আয়োজন তো রাখতেই হয়। বাঙালির রান্নাঘরে পায়েস একটি উৎকৃষ্ট মিষ্টান্ন। জোড়াসাঁকো ঠাকুর পরিবারে নানা রকমের মিষ্টির আয়োজন থাকলেও ‘হেম কণার পায়েস’ স্বতন্ত্র এবং বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। এই পায়েস দেখে অনেকের মনে হতে পারে, এটা তো রসমালাই। কিন্তু একদমই তা নয়। শোনা যায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এই পায়েস খেতে খুব পছন্দ করতেন।
প্রথমে আমন্ড বা কাঠবাদাম ভিজিয়ে রেখে খোসা ছাড়িয়ে নেওয়া হতো। ওদিকে গোবিন্দভোগ চাল ভিজিয়ে, ধুয়ে পরিষ্কার করে শুকনো করে গুঁড়া করে নেওয়া হতো। খোয়া ক্ষীর ঝুরঝুরে করে এবং কাজুবাদাম ও কাঠবাদামের পেস্ট করে নেওয়া হতো। একটা পাত্রে বাদামের পেস্ট, খোয়া ক্ষীর, চালের গুঁড়া ও স্বাদমতো চিনি খুব ভালো করে মিশিয়ে এতে দেওয়া হতো ঘি। মাখা মাখা হয়ে যাওয়ার পর এ থেকে খুব ছোট ছোট মসৃণ বল তৈরি করে নেওয়া হতো।
এবার অন্য একটি পাত্রে এক লিটার দুধ নিয়ে তাতে ছোট এলাচি ও কেশর ফেলে ফুটিয়ে তারপর পরিমাণমতো চিনি মেশানো হতো। দুধ ঘন হয়ে এলে তার মধ্যে সেই বলগুলো দিয়ে খুব অল্প আঁচে ফুটতে দেওয়া হতো। এই পায়েসের ঘনত্ব রাখা হতো মাঝারি। ওই ক্ষীর বাদামের বলগুলোর সঙ্গে দুধ ফুটতে ফুটতে মাঝারি ঘনত্বে এলেই হেম কণার পায়েস তৈরি হয়ে যেত।
ঠাকুরবাড়ির হেঁশেলে পোস্তর কৌটো পাওয়া যাবে না, তা কি হয়? এই একটি উপকরণ একেবারেই পশ্চিমবঙ্গীয়, যেটা থেকে মুক্ত হতে পারেনি ঠাকুরবাড়ির রান্নাঘর।
সে বাড়ির ‘পোস্তর দম’-এর কথা নিশ্চয়ই শুনেছেন। পোস্ত হালকা বেটে একটা বড় পাত্রে ঢেলে তাতে মেশানো হতো পেঁয়াজ ও আদাবাটা, জিরাগুঁড়া, লাল মরিচের গুঁড়া, একটা ডিম ও স্বাদ অনুযায়ী লবণ। তারপর সবকিছু খুব ভালো করে মেখে নেওয়া হতো। কড়াইতে একটু বেশি পরিমাণ সরষের তেল দিয়ে ছোট ছোট বড়ার আকারে এই মিশ্রণ ভেজে নেওয়া হতো। এবার ওই তেলেই ডুমো করে কেটে রাখা আলু ঢেলে দিয়ে শুরু হতো মূল রান্নাটা। কড়াই থেকে কিছুটা তেল তুলে রেখে বাকি তেলে দিয়ে দেওয়া হতো পেঁয়াজ ও আদাবাটা। কষাতে কষাতে কাঁচা ভাব চলে গিয়ে তেল ছাড়তে শুরু করলে মরিচগুঁড়া, চিড়াগুঁড়া ও স্বাদমতো লবণ দিয়ে আবার কষানো হতো। তারপর এর সঙ্গে যোগ করা হতো ভেজে রাখা আলু। খানিকক্ষণ কষানোর পর এর সঙ্গে একটু চিনি ও বেশ খানিকটা জল যোগ করা হতো। আলু প্রায় সেদ্ধ হয়ে এলে দেওয়া হতো ভেজে রাখা ডিম পোস্তর বড়াগুলো। ঝোলের পরিমাণ কমে এলে তাতে গরমমসলার গুঁড়া এবং এক টেবিল চামচ ঘি যোগ করে ঢেকে দিলেই হয়ে যেত সুস্বাদু রান্না পোস্তর দম।
এবার একটু আমিষের গল্পে আসি। ঠাকুরবাড়ির রান্নাঘরে যত রকমের মুরগির মাংসের রান্না হতো, সেগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ও অন্যতম পদ ছিল ‘মুরগির রসোল্লা’। এর জন্য টক দই খুব ভালো করে ফেটিয়ে নেওয়া হতো, যাতে দানা দানা না হয়। একটি পাত্রে প্রথমে মুরগির মাংস, তারপর একে একে পেঁয়াজকুচি, রসুনবাটা, শুকনো মরিচবাটা, তেজপাতা, কাঁচা মরিচ, টক দই, লবণ ও ঘি দিয়ে খুব ভালো করে মিশিয়ে নেওয়া হতো। সব উপকরণসমেত পাত্রটি চুলায় বসিয়ে মাঝারি আঁচে রান্না করা হতো। প্রথমে একটু নাড়াচাড়া করে ঢেকে দেওয়া হতো, এরপর পুরো রান্নাটাই হতো স্লো কুকিং মেথডে। মাঝে মাঝে ঢাকনা খুলে একটু উল্টেপাল্টে দেওয়া হতো মুরগির মাংস। পেঁয়াজ ও দই থেকে পানি বেরিয়েই মুরগির মাংস সেদ্ধ হয়ে যেত। পুরো মাংস থেকে তেল ওপরে ভেসে উঠলে চুলা বন্ধ করে দেওয়া হতো। এভাবেই তৈরি হতো মুরগির রসোল্লা।
খাওয়াদাওয়া শেষে মিষ্টিমুখের আয়োজন তো রাখতেই হয়। বাঙালির রান্নাঘরে পায়েস একটি উৎকৃষ্ট মিষ্টান্ন। জোড়াসাঁকো ঠাকুর পরিবারে নানা রকমের মিষ্টির আয়োজন থাকলেও ‘হেম কণার পায়েস’ স্বতন্ত্র এবং বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। এই পায়েস দেখে অনেকের মনে হতে পারে, এটা তো রসমালাই। কিন্তু একদমই তা নয়। শোনা যায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এই পায়েস খেতে খুব পছন্দ করতেন।
প্রথমে আমন্ড বা কাঠবাদাম ভিজিয়ে রেখে খোসা ছাড়িয়ে নেওয়া হতো। ওদিকে গোবিন্দভোগ চাল ভিজিয়ে, ধুয়ে পরিষ্কার করে শুকনো করে গুঁড়া করে নেওয়া হতো। খোয়া ক্ষীর ঝুরঝুরে করে এবং কাজুবাদাম ও কাঠবাদামের পেস্ট করে নেওয়া হতো। একটা পাত্রে বাদামের পেস্ট, খোয়া ক্ষীর, চালের গুঁড়া ও স্বাদমতো চিনি খুব ভালো করে মিশিয়ে এতে দেওয়া হতো ঘি। মাখা মাখা হয়ে যাওয়ার পর এ থেকে খুব ছোট ছোট মসৃণ বল তৈরি করে নেওয়া হতো।
এবার অন্য একটি পাত্রে এক লিটার দুধ নিয়ে তাতে ছোট এলাচি ও কেশর ফেলে ফুটিয়ে তারপর পরিমাণমতো চিনি মেশানো হতো। দুধ ঘন হয়ে এলে তার মধ্যে সেই বলগুলো দিয়ে খুব অল্প আঁচে ফুটতে দেওয়া হতো। এই পায়েসের ঘনত্ব রাখা হতো মাঝারি। ওই ক্ষীর বাদামের বলগুলোর সঙ্গে দুধ ফুটতে ফুটতে মাঝারি ঘনত্বে এলেই হেম কণার পায়েস তৈরি হয়ে যেত।
১৯৫১ সাল। ইরানের রাজা রেজা শাহ পাহলভি এলেন পৃথিমপাশা জমিদারবাড়িতে। সে এক হুলুস্থুল ব্যাপার! এ বাড়ির পূর্বপুরুষেরা ইরান থেকে এসেছিলেন বলে জানা যায়।
১ দিন আগেশীতে কাপড় ভালো রাখতে সেগুলোকে যেমন রোদে মেলে দিতে হয়, সম্পর্ক উন্নয়নে মাঝেমধ্যে তেমনি ভ্রমণেও যেতে হয়। শীত চলে এসেছে। ভ্রমণপ্রেমীরা হয়ে উঠেছেন সরব।
১ দিন আগেপর্যটন বন্ধে কারফিউ! হ্যাঁ, তেমনটিই ঘটেছে দক্ষিণ কোরিয়ায়। গ্রামের নাম বুকচন হ্যানোক। দক্ষিণ কোরিয়ার জংনো জেলায় এর অবস্থান। বুকচন হ্যানোক দেশটির ‘মাস্ট ভিজিট’ পর্যটন গন্তব্য।
১ দিন আগেভ্রমণের স্বাদ একবার রক্তে ঢুকলে, তা থেকে মুক্তি পাওয়া কঠিন। এক অদৃশ্য তাড়না কাজ করতে থাকে ভেতরে-ভেতরে।
১ দিন আগে