সানজিদা সামরিন, ঢাকা
‘মোটা হওয়া’ মানে শরীরে অতিরিক্ত চর্বি জমানো নয়। বয়স ও উচ্চতা অনুসারে শরীরে সঠিক ওজন থাকাই মোটা হওয়া। বয়স ও উচ্চতা অনুসারে যদি শরীরের ওজন স্বাভাবিক না থাকে, তাহলে মানুষ রোগা হিসেবে চিহ্নিত হয়। অতিরিক্ত ওজন থাকা স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকর। আবার বয়স ও উচ্চতা অনুপাতে ওজন যদি ঠিক না থাকে, সেটাও ভাববার মতোই বিষয়। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এমন হলে প্রথমেই শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করাতে হবে। বিশেষ শারীরিক অবস্থা, যেমন হাইপার থাইরয়েডিজম, ওষুধের প্রভাব, কিডনি সমস্যা ইত্যাদি থাকলে ওজন কমতে পারে। সে ক্ষেত্রে স্বাভাবিক খাবারে কাজ না হলে সম্পূরক খাদ্যের মাধ্যমে শরীরে পুষ্টির জোগান দিতে হবে। তবে একজন সুস্থ প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির মোটা হওয়ার জন্য বিভিন্ন ধরনের নিয়মকানুন মানতে হবে। পাশাপাশি খাবার তালিকায়ও নজর দিতে হবে বলে মনে মনে পুষ্টিবিদেরা।
মোটা হওয়ার খাদ্য তালিকা
মোটা হওয়ার জন্য খাবার তালিকা তৈরির ক্ষেত্রে বয়সের কথা বিবেচনায় রাখতে হবে। পাশাপাশি ব্যক্তির শারীরিক অবস্থা, অর্থাৎ কোনো অসুখ-বিসুখ রয়েছে কিনা, সেটা খেয়াল রাখতে হবে বলে জানান পুষ্টিবিদ ও হোলস্টিক লাইফস্টাইল মোডিফায়ার জাকিয়া নাজনীন। তিনি বলেন, ‘প্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে কোনো বিশেষ রোগ থাকলে আমরা চাইলেও চর্বিজাতীয় খাবার খাওয়ার পরামর্শ দিতে পারি না। সে ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে তবেই খাদ্যতালিকা তৈরি করতে হবে। আর এমনিতে প্রাপ্তবয়স্ক সুস্থ ব্যক্তিদের জন্য খাবার তালিকা তৈরির সময় শর্করা পরিমিত রাখা হয়। অন্যদিকে প্রোটিনের পরিমাণ বাড়ানো হয়। পাশাপাশি মোটা হওয়ার জন্য পূর্বে যেটুকু চর্বিজাতীয় খাবার খাওয়া হতো, তার থেকে কিছু পরিমাণ বাড়াতে হবে। তবে চেষ্টা করতে হবে খাবারে শর্করা যেন বেশি না থাকে।’
সকালের খাবার তালিকা
আমাদের দেশে সকালের নাশতার ক্ষেত্রে একেকজনের অভ্যাস একেক রকম। পুষ্টিবিদ ও হোলস্টিক লাইফস্টাইল মোডিফায়ার জাকিয়া নাজনীন বলেন, ‘সাধারণত রুটি, ভাজি ও ডিম থাকে। মোটা হওয়ার জন্য এ ক্ষেত্রে আমরা দুটো রুটি না সেঁকে হালকা তেল দিয়ে ভেজে নিতে পারি। আবার এখানে একটুখানি মাখনও চাইলে যোগ করা যায়। আবার যদি ডিজিজ কন্ডিশন থাকে, তাহলে মাখন খাওয়া যাবে কিনা সেটাও বুঝতে হবে। সকালের নাশতায় একটা মৌসুমি ফল রাখতে হবে। কেউ যদি বাড়িতে পাউরুটি তৈরি করে খেতে চান, সে ক্ষেত্রে এর সঙ্গে পিনাট বাটার মেখে খেতে পারেন। ওজন বাড়াতে পিনাট বাটার খুব ভালো। সকালের নাশতায় ডিম রাখতে হবে। সে ক্ষেত্রে ডিম সেদ্ধ না করে হালকা তেলে পোচ করে খাওয়া যেতে পারে।’
দুপুরের খাবার তালিকা
দুপুরের খাবারে ভাত, মাছ বা মাংস, সবজি, ডাল থাকে। এগুলো আগে যে পরিমাণে খাওয়া হতো, তার চেয়ে একটু পরিমাণে বাড়িয়ে খেতে হবে। ওজন কমানোর সময় আমরা যেমন প্রোটিন কমাই, তেমনি ওজন বাড়ানোর জন্য প্রোটিন খানিকটা বাড়াতে হবে খাদ্যতালিকায়।
বিকেলের খাবার তালিকা
বিকেলে খুব ভাজাপোড়া জাতীয় খাবার খাওয়ার প্রয়োজন নেই। খুব কম ওজন যাদের, তাঁরা মাখন দিয়ে তৈরি কোনো নাশতা খেতে পারেন। এ ছাড়া পিনাট বাটার দিয়ে এক স্লাইস পাউরুটিও খাওয়া যায়। খাওয়া যেতে পারে একটি কলা কিংবা ডিম ও পাউরুটি দিয়ে বানানো একটি স্যান্ডুইচ।
রাতের খাবার তালিকা
রাতের খাবারে সাধারণত যা থাকে, তাই থাকুক। তবে চর্বির পরিমাণ কিছুটা বাড়াতে হবে। সে ক্ষেত্রে রাতের খাবার তৈরির সময় তেলের ব্যবহার একটু বুঝে করতে হবে। যেমন, সবজি রান্নার সময় একটু বেশি পরিমাণে তেল দিতে হবে। তবে সে তেল যেন চুলায় বেশিক্ষণ আঁচে না থাকে, সেদিকে নজর দিতে হবে। তেল বেশি আঁচে থাকলে, তা শরীরে টক্সিসিটি বাড়ায়। রাতের খাবারের সঙ্গে চাইলে সালাদও রাখা যায়। সে সালাদে মুরগির মাংস, পাঁচমিশালী সবজি বা ফল থাকতে পারে। সালাদের সঙ্গে এক্সট্রা ভার্জিন অলিভ ওয়েল বা মাখন মিশিয়ে নেওয়া যেতে পারে। এককথায় মোটা হওয়ার জন্য খাবারে প্রোটিন ও স্বাস্থ্যকর চর্বি বাড়াতে হবে। শিশুদের ক্ষেত্রে বাড়িতে চিকেন ফ্রাই তৈরি করে দেওয়া যেতে পারে। তবে চুলায় তেল যেন মাঝারি আঁচে রেখে ভাজা হয়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে বলে পরামর্শ দেন জাকিয়া নাজনীন।
ঘরোয়াভাবে মোটা হওয়ার সহজ উপায়
ঘরোয়াভাবে দ্রুত মোটা হওয়ার জন্য কিছু সহজ উপায় রয়েছে—
মোটা হওয়ার কার্যকরী ও সহজ ১০টি খাবার
কয়েকটি খাবার রয়েছে, যেগুলো খেলে ওজন সহজেই বাড়বে। পুষ্টিবিদ মাসুমা চৌধুরী জানিয়েছেন ১০টি খাবারের কথা, যেগুলো খেলে স্বাস্থ্যকর উপায়ে সহজে মোটা হওয়া সম্ভব।
ডিম: প্রোটিনের গুরুত্বপূর্ণ উৎস ডিম। এতে আরও রয়েছে স্বাস্থ্যকর চর্বি ও অন্যান্য পুষ্টিগুণ। আর এই পুষ্টিগুণের বেশির ভাগই থাকে কুসুমের মধ্যে।
পনির: পনিরে রয়েছে স্বাস্থ্যকর চর্বি, প্রোটিন, ক্যালসিয়াম ও ক্যালরি। যারা মোটা হওয়ার চেষ্টা করছেন, তাঁদের উচিত ফুলফ্যাট পনির খাওয়া।
দই: ফুলফ্যাট দইয়ে থাকে প্রোটিন ও অন্যান্য পুষ্টি উপাদান। বিকেলের স্ন্যাক্স বা সকাল ও দুপুরের মধ্যকার নাশতা হিসেবে দই ও কলা খাওয়া যেতে পারে।
ডার্ক চকলেট: ডার্ক চকলেটে রয়েছে চর্বি, উচ্চ ক্যালরি ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। যারা ওজন বাড়ানো নিয়ে ভাবছেন, তাঁরা ডার্ক চকলেট কেনার সময় ৭০ শতাংশ কোকো রয়েছে—এমন ডার্ক চকলেট কিনুন।
দুধ: দুধে রয়েছে স্বাস্থ্যকর চর্বি, শর্করা ও প্রোটিন। এ ছাড়া এতে রয়েছে ভিটামিন, খনিজ ও ক্যালসিয়াম। দুধে যে প্রোটিন থাকে, তা পেশি গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
লাল মাংস: পেশি গঠনে এবং ওজন বাড়াতে লাল মাংস রাখা যেতে পারে খাদ্যতালিকায়। লাল মাংসে রয়েছে প্রোটিন ও চর্বি, যা ওজন বাড়াতে সহায়তা করে।
কলা: ওজন বাড়াতে সহায়ক ফলগুলোর মধ্যে কলা অন্যতম। এতে রয়েছে শর্করা, প্রোটিন, ভিটামিন বি৬, ম্যাংগানিজ ও ক্যালরি। ওজন বাড়ানোর জন্য ফল হিসেবে খাওয়া ছাড়াও দই, স্মুদি, কেক বানাতে কলা ব্যবহার করতে পারেন।
বাদাম: যাদের ওজন অতিরিক্ত কম, তাঁরা ওজন বাড়াতে রোজ বাদাম খেতে পারেন। স্বাস্থ্যকর নাশতার মধ্যে বাদাম অন্যতম।
খেজুর: খেজুরে রয়েছে ক্যালরি, প্রোটিন, চর্বি, শর্করা, আঁশ, পটাশিয়াম ও ম্যাগনেশিয়াম। এ ছাড়া খেজুর কপার, ম্যাংগানিজ, আয়রন ও ভিটামিন বি৬। শরীরে শক্তি জোগাতে ও সুস্বাস্থ্য ধরে রাখতে রোজ খেজুর খেতে পারেন।
অন্যান্য খাবার: পুডিং, পনির, হাই প্রোটিন ফুড, স্বাস্থ্যকর চর্বি গ্রহণ করা যেতে পারে। বয়স ৪০ বছরের নিচে হলে এই খাবারগুলো তালিকায় যোগ করা যেতে পারে। বয়স ৪০ বছরের ওপরে হলে শারীরিক অবস্থা বুঝে ও ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে খেতে হবে।
কার্যকরী আরও উপায়: মোটা হওয়ার জন্য কেবল খাবারই নয়, আরও কয়েকটি বিষয় মেনে চলতে হবে বলে মনে করেন মাসুমা চৌধুরী। সেগুলো হচ্ছে—পর্যাপ্ত ঘুম, স্ট্রেস ম্যানেজমেন্ট, সম্পূরক খাদ্য (যদি প্রয়োজন হয়)।
প্রাকৃতিকভাবে মোটা হওয়ার সহজ উপায়
মোটা হতে কিছু প্রাকৃতিক উপায় অনুসরণ করা যেতে পারে—
মোটা না হওয়ার কারণ
পুষ্টিবিদ মাসুমা চৌধুরী বলেন, ‘বিপাক প্রক্রিয়া, থাইরয়েডের রোগ, করোনারির রোগ থাকলে সাপ্লিমেন্ট কাজ করে কিন্তু খাবার কাজ করে না। এ রোগগুলো আছে কি-না, সেটা জানার জন্য বছরে দুবার চেকআপ করা জরুরি। তারপর বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিয়ে ডায়েট চার্ট বানিয়ে নিতে হবে।’ মোটা না হওয়ার সাধারণ কিছু কারণ আছে। যেমন—
থাইরয়েডে সমস্যা: থাইরয়েড অনেক বেশি সক্রিয় হয়ে উঠলে বিপাক বেড়ে যায়, ফলে দ্রুত ওজন হ্রাস পায়। এই সমস্যাকে বলা হয় হাইপারথাইরয়েডিজম।
ডায়াবেটিস: টাইপ১ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হলে অস্বাভাবিকভাবে ওজন হ্রাস হতে পারে।
ক্যানসার: ক্যানসার টিউমার অনেক বেশি ক্যালরি পুড়িয়ে ফেলে। ফলে ওজন কমে যায়।
অতিরিক্ত পরিশ্রম: প্রতিদিন যারা শারীরিক পরিশ্রম, ব্যায়াম ও খেলাধুলা করেন, তাঁদের বিপাক ক্রিয়া ভালো থাকে। ফলে ক্যালরি খুব দ্রুত পোড়ে।
বিষণ্নতা: বিষণ্নতায় ভুগলে কখনো কখনো ক্ষুধা হ্রাস পায়। খাওয়া-দাওয়ার অনিয়মে পুষ্টির ঘাটতি দেখা দিতে পারে। ফলে শরীর রোগা হয়ে পড়ে। এ ক্ষেত্রে দ্রুত বিশেষজ্ঞের শরণাপন্ন হওয়া উচিত।
এ ছাড়াও বিভিন্ন সংক্রামক ব্যাধি, যেমন যক্ষ্মা, এইডস ইত্যাদি হলে ওজন কমে যেতে পারে। ফলে বয়স ও উচ্চতা অনুপাতে ওজন সঠিক মাত্রায় না থাকলে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।
সতর্কতা: ওজন বাড়ানো কিংবা কমানো একটি জটিল প্রক্রিয়া। ওজন বাড়ানোর জন্য নিজে নিজে ডায়েট চার্ট বা খাদ্যতালিকা তৈরি না করে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন। আপনার শারীরিক অবস্থা বুঝে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক বা পুষ্টিবিদ আপনার ওজন বাড়ানোর পরামর্শ দেবেন।
‘মোটা হওয়া’ মানে শরীরে অতিরিক্ত চর্বি জমানো নয়। বয়স ও উচ্চতা অনুসারে শরীরে সঠিক ওজন থাকাই মোটা হওয়া। বয়স ও উচ্চতা অনুসারে যদি শরীরের ওজন স্বাভাবিক না থাকে, তাহলে মানুষ রোগা হিসেবে চিহ্নিত হয়। অতিরিক্ত ওজন থাকা স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকর। আবার বয়স ও উচ্চতা অনুপাতে ওজন যদি ঠিক না থাকে, সেটাও ভাববার মতোই বিষয়। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এমন হলে প্রথমেই শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করাতে হবে। বিশেষ শারীরিক অবস্থা, যেমন হাইপার থাইরয়েডিজম, ওষুধের প্রভাব, কিডনি সমস্যা ইত্যাদি থাকলে ওজন কমতে পারে। সে ক্ষেত্রে স্বাভাবিক খাবারে কাজ না হলে সম্পূরক খাদ্যের মাধ্যমে শরীরে পুষ্টির জোগান দিতে হবে। তবে একজন সুস্থ প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির মোটা হওয়ার জন্য বিভিন্ন ধরনের নিয়মকানুন মানতে হবে। পাশাপাশি খাবার তালিকায়ও নজর দিতে হবে বলে মনে মনে পুষ্টিবিদেরা।
মোটা হওয়ার খাদ্য তালিকা
মোটা হওয়ার জন্য খাবার তালিকা তৈরির ক্ষেত্রে বয়সের কথা বিবেচনায় রাখতে হবে। পাশাপাশি ব্যক্তির শারীরিক অবস্থা, অর্থাৎ কোনো অসুখ-বিসুখ রয়েছে কিনা, সেটা খেয়াল রাখতে হবে বলে জানান পুষ্টিবিদ ও হোলস্টিক লাইফস্টাইল মোডিফায়ার জাকিয়া নাজনীন। তিনি বলেন, ‘প্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে কোনো বিশেষ রোগ থাকলে আমরা চাইলেও চর্বিজাতীয় খাবার খাওয়ার পরামর্শ দিতে পারি না। সে ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে তবেই খাদ্যতালিকা তৈরি করতে হবে। আর এমনিতে প্রাপ্তবয়স্ক সুস্থ ব্যক্তিদের জন্য খাবার তালিকা তৈরির সময় শর্করা পরিমিত রাখা হয়। অন্যদিকে প্রোটিনের পরিমাণ বাড়ানো হয়। পাশাপাশি মোটা হওয়ার জন্য পূর্বে যেটুকু চর্বিজাতীয় খাবার খাওয়া হতো, তার থেকে কিছু পরিমাণ বাড়াতে হবে। তবে চেষ্টা করতে হবে খাবারে শর্করা যেন বেশি না থাকে।’
সকালের খাবার তালিকা
আমাদের দেশে সকালের নাশতার ক্ষেত্রে একেকজনের অভ্যাস একেক রকম। পুষ্টিবিদ ও হোলস্টিক লাইফস্টাইল মোডিফায়ার জাকিয়া নাজনীন বলেন, ‘সাধারণত রুটি, ভাজি ও ডিম থাকে। মোটা হওয়ার জন্য এ ক্ষেত্রে আমরা দুটো রুটি না সেঁকে হালকা তেল দিয়ে ভেজে নিতে পারি। আবার এখানে একটুখানি মাখনও চাইলে যোগ করা যায়। আবার যদি ডিজিজ কন্ডিশন থাকে, তাহলে মাখন খাওয়া যাবে কিনা সেটাও বুঝতে হবে। সকালের নাশতায় একটা মৌসুমি ফল রাখতে হবে। কেউ যদি বাড়িতে পাউরুটি তৈরি করে খেতে চান, সে ক্ষেত্রে এর সঙ্গে পিনাট বাটার মেখে খেতে পারেন। ওজন বাড়াতে পিনাট বাটার খুব ভালো। সকালের নাশতায় ডিম রাখতে হবে। সে ক্ষেত্রে ডিম সেদ্ধ না করে হালকা তেলে পোচ করে খাওয়া যেতে পারে।’
দুপুরের খাবার তালিকা
দুপুরের খাবারে ভাত, মাছ বা মাংস, সবজি, ডাল থাকে। এগুলো আগে যে পরিমাণে খাওয়া হতো, তার চেয়ে একটু পরিমাণে বাড়িয়ে খেতে হবে। ওজন কমানোর সময় আমরা যেমন প্রোটিন কমাই, তেমনি ওজন বাড়ানোর জন্য প্রোটিন খানিকটা বাড়াতে হবে খাদ্যতালিকায়।
বিকেলের খাবার তালিকা
বিকেলে খুব ভাজাপোড়া জাতীয় খাবার খাওয়ার প্রয়োজন নেই। খুব কম ওজন যাদের, তাঁরা মাখন দিয়ে তৈরি কোনো নাশতা খেতে পারেন। এ ছাড়া পিনাট বাটার দিয়ে এক স্লাইস পাউরুটিও খাওয়া যায়। খাওয়া যেতে পারে একটি কলা কিংবা ডিম ও পাউরুটি দিয়ে বানানো একটি স্যান্ডুইচ।
রাতের খাবার তালিকা
রাতের খাবারে সাধারণত যা থাকে, তাই থাকুক। তবে চর্বির পরিমাণ কিছুটা বাড়াতে হবে। সে ক্ষেত্রে রাতের খাবার তৈরির সময় তেলের ব্যবহার একটু বুঝে করতে হবে। যেমন, সবজি রান্নার সময় একটু বেশি পরিমাণে তেল দিতে হবে। তবে সে তেল যেন চুলায় বেশিক্ষণ আঁচে না থাকে, সেদিকে নজর দিতে হবে। তেল বেশি আঁচে থাকলে, তা শরীরে টক্সিসিটি বাড়ায়। রাতের খাবারের সঙ্গে চাইলে সালাদও রাখা যায়। সে সালাদে মুরগির মাংস, পাঁচমিশালী সবজি বা ফল থাকতে পারে। সালাদের সঙ্গে এক্সট্রা ভার্জিন অলিভ ওয়েল বা মাখন মিশিয়ে নেওয়া যেতে পারে। এককথায় মোটা হওয়ার জন্য খাবারে প্রোটিন ও স্বাস্থ্যকর চর্বি বাড়াতে হবে। শিশুদের ক্ষেত্রে বাড়িতে চিকেন ফ্রাই তৈরি করে দেওয়া যেতে পারে। তবে চুলায় তেল যেন মাঝারি আঁচে রেখে ভাজা হয়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে বলে পরামর্শ দেন জাকিয়া নাজনীন।
ঘরোয়াভাবে মোটা হওয়ার সহজ উপায়
ঘরোয়াভাবে দ্রুত মোটা হওয়ার জন্য কিছু সহজ উপায় রয়েছে—
মোটা হওয়ার কার্যকরী ও সহজ ১০টি খাবার
কয়েকটি খাবার রয়েছে, যেগুলো খেলে ওজন সহজেই বাড়বে। পুষ্টিবিদ মাসুমা চৌধুরী জানিয়েছেন ১০টি খাবারের কথা, যেগুলো খেলে স্বাস্থ্যকর উপায়ে সহজে মোটা হওয়া সম্ভব।
ডিম: প্রোটিনের গুরুত্বপূর্ণ উৎস ডিম। এতে আরও রয়েছে স্বাস্থ্যকর চর্বি ও অন্যান্য পুষ্টিগুণ। আর এই পুষ্টিগুণের বেশির ভাগই থাকে কুসুমের মধ্যে।
পনির: পনিরে রয়েছে স্বাস্থ্যকর চর্বি, প্রোটিন, ক্যালসিয়াম ও ক্যালরি। যারা মোটা হওয়ার চেষ্টা করছেন, তাঁদের উচিত ফুলফ্যাট পনির খাওয়া।
দই: ফুলফ্যাট দইয়ে থাকে প্রোটিন ও অন্যান্য পুষ্টি উপাদান। বিকেলের স্ন্যাক্স বা সকাল ও দুপুরের মধ্যকার নাশতা হিসেবে দই ও কলা খাওয়া যেতে পারে।
ডার্ক চকলেট: ডার্ক চকলেটে রয়েছে চর্বি, উচ্চ ক্যালরি ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। যারা ওজন বাড়ানো নিয়ে ভাবছেন, তাঁরা ডার্ক চকলেট কেনার সময় ৭০ শতাংশ কোকো রয়েছে—এমন ডার্ক চকলেট কিনুন।
দুধ: দুধে রয়েছে স্বাস্থ্যকর চর্বি, শর্করা ও প্রোটিন। এ ছাড়া এতে রয়েছে ভিটামিন, খনিজ ও ক্যালসিয়াম। দুধে যে প্রোটিন থাকে, তা পেশি গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
লাল মাংস: পেশি গঠনে এবং ওজন বাড়াতে লাল মাংস রাখা যেতে পারে খাদ্যতালিকায়। লাল মাংসে রয়েছে প্রোটিন ও চর্বি, যা ওজন বাড়াতে সহায়তা করে।
কলা: ওজন বাড়াতে সহায়ক ফলগুলোর মধ্যে কলা অন্যতম। এতে রয়েছে শর্করা, প্রোটিন, ভিটামিন বি৬, ম্যাংগানিজ ও ক্যালরি। ওজন বাড়ানোর জন্য ফল হিসেবে খাওয়া ছাড়াও দই, স্মুদি, কেক বানাতে কলা ব্যবহার করতে পারেন।
বাদাম: যাদের ওজন অতিরিক্ত কম, তাঁরা ওজন বাড়াতে রোজ বাদাম খেতে পারেন। স্বাস্থ্যকর নাশতার মধ্যে বাদাম অন্যতম।
খেজুর: খেজুরে রয়েছে ক্যালরি, প্রোটিন, চর্বি, শর্করা, আঁশ, পটাশিয়াম ও ম্যাগনেশিয়াম। এ ছাড়া খেজুর কপার, ম্যাংগানিজ, আয়রন ও ভিটামিন বি৬। শরীরে শক্তি জোগাতে ও সুস্বাস্থ্য ধরে রাখতে রোজ খেজুর খেতে পারেন।
অন্যান্য খাবার: পুডিং, পনির, হাই প্রোটিন ফুড, স্বাস্থ্যকর চর্বি গ্রহণ করা যেতে পারে। বয়স ৪০ বছরের নিচে হলে এই খাবারগুলো তালিকায় যোগ করা যেতে পারে। বয়স ৪০ বছরের ওপরে হলে শারীরিক অবস্থা বুঝে ও ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে খেতে হবে।
কার্যকরী আরও উপায়: মোটা হওয়ার জন্য কেবল খাবারই নয়, আরও কয়েকটি বিষয় মেনে চলতে হবে বলে মনে করেন মাসুমা চৌধুরী। সেগুলো হচ্ছে—পর্যাপ্ত ঘুম, স্ট্রেস ম্যানেজমেন্ট, সম্পূরক খাদ্য (যদি প্রয়োজন হয়)।
প্রাকৃতিকভাবে মোটা হওয়ার সহজ উপায়
মোটা হতে কিছু প্রাকৃতিক উপায় অনুসরণ করা যেতে পারে—
মোটা না হওয়ার কারণ
পুষ্টিবিদ মাসুমা চৌধুরী বলেন, ‘বিপাক প্রক্রিয়া, থাইরয়েডের রোগ, করোনারির রোগ থাকলে সাপ্লিমেন্ট কাজ করে কিন্তু খাবার কাজ করে না। এ রোগগুলো আছে কি-না, সেটা জানার জন্য বছরে দুবার চেকআপ করা জরুরি। তারপর বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিয়ে ডায়েট চার্ট বানিয়ে নিতে হবে।’ মোটা না হওয়ার সাধারণ কিছু কারণ আছে। যেমন—
থাইরয়েডে সমস্যা: থাইরয়েড অনেক বেশি সক্রিয় হয়ে উঠলে বিপাক বেড়ে যায়, ফলে দ্রুত ওজন হ্রাস পায়। এই সমস্যাকে বলা হয় হাইপারথাইরয়েডিজম।
ডায়াবেটিস: টাইপ১ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হলে অস্বাভাবিকভাবে ওজন হ্রাস হতে পারে।
ক্যানসার: ক্যানসার টিউমার অনেক বেশি ক্যালরি পুড়িয়ে ফেলে। ফলে ওজন কমে যায়।
অতিরিক্ত পরিশ্রম: প্রতিদিন যারা শারীরিক পরিশ্রম, ব্যায়াম ও খেলাধুলা করেন, তাঁদের বিপাক ক্রিয়া ভালো থাকে। ফলে ক্যালরি খুব দ্রুত পোড়ে।
বিষণ্নতা: বিষণ্নতায় ভুগলে কখনো কখনো ক্ষুধা হ্রাস পায়। খাওয়া-দাওয়ার অনিয়মে পুষ্টির ঘাটতি দেখা দিতে পারে। ফলে শরীর রোগা হয়ে পড়ে। এ ক্ষেত্রে দ্রুত বিশেষজ্ঞের শরণাপন্ন হওয়া উচিত।
এ ছাড়াও বিভিন্ন সংক্রামক ব্যাধি, যেমন যক্ষ্মা, এইডস ইত্যাদি হলে ওজন কমে যেতে পারে। ফলে বয়স ও উচ্চতা অনুপাতে ওজন সঠিক মাত্রায় না থাকলে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।
সতর্কতা: ওজন বাড়ানো কিংবা কমানো একটি জটিল প্রক্রিয়া। ওজন বাড়ানোর জন্য নিজে নিজে ডায়েট চার্ট বা খাদ্যতালিকা তৈরি না করে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন। আপনার শারীরিক অবস্থা বুঝে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক বা পুষ্টিবিদ আপনার ওজন বাড়ানোর পরামর্শ দেবেন।
১৯৫১ সাল। ইরানের রাজা রেজা শাহ পাহলভি এলেন পৃথিমপাশা জমিদারবাড়িতে। সে এক হুলুস্থুল ব্যাপার! এ বাড়ির পূর্বপুরুষেরা ইরান থেকে এসেছিলেন বলে জানা যায়।
১ দিন আগেশীতে কাপড় ভালো রাখতে সেগুলোকে যেমন রোদে মেলে দিতে হয়, সম্পর্ক উন্নয়নে মাঝেমধ্যে তেমনি ভ্রমণেও যেতে হয়। শীত চলে এসেছে। ভ্রমণপ্রেমীরা হয়ে উঠেছেন সরব।
১ দিন আগেপর্যটন বন্ধে কারফিউ! হ্যাঁ, তেমনটিই ঘটেছে দক্ষিণ কোরিয়ায়। গ্রামের নাম বুকচন হ্যানোক। দক্ষিণ কোরিয়ার জংনো জেলায় এর অবস্থান। বুকচন হ্যানোক দেশটির ‘মাস্ট ভিজিট’ পর্যটন গন্তব্য।
১ দিন আগেভ্রমণের স্বাদ একবার রক্তে ঢুকলে, তা থেকে মুক্তি পাওয়া কঠিন। এক অদৃশ্য তাড়না কাজ করতে থাকে ভেতরে-ভেতরে।
১ দিন আগে