অনলাইন ডেস্ক
‘হ্যালো, মিষ্টি ছোট্ট পাখি, তুমি কি খুব ক্ষুধার্ত?’ ছোট্ট এক শিশু হামিংবার্ডকে আলতোভাবে ধরে বললেন কাতিয়া। মেক্সিকো সিটিতে তাঁর বাসায় আগত নতুন রোগী এটি। নিজের অ্যাপার্টম্যান্টটিকে ৭৩ বছরের এই নারী আহত ও অসহায় হামিংবার্ড পাখিদের এক হাসপাতাল ও অভয়ারণ্যে পরিণত করেছেন। এক-দুই বছর নয় এভাবে প্রায় এক যুগ ধরে ছোট্ট এই পাখিদের প্রতি এমন ভালোবাসা দেখিয়ে যাচ্ছেন কাতিয়া লতোফ দে আরিদা।
উদ্ভিদের পরাগায়নে সাহায্য করা হামিংবার্ড পাখি মেক্সিকোর ইকোসিস্টেম তথা বাস্তুতন্ত্রের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ। তবে ক্রমেই শহর বিস্তৃত হওয়ায় নানা ধরনের সমস্যায় পড়তে হচ্ছে এই পাখিদের। এমন পরিস্থিতিতে হামিংবার্ডরা বন্ধু হিসেবে পেয়েছে কাতিয়া লতোফ দে আরিদাকে।
নিজে থেকেই হামিংবার্ডদের সেবা করার কৌশল শিখেছেন তিনি। অবসরের প্রায় পুরো সময়টি ব্যয় করার পাশাপাশি নিজের গাঁটের পয়সা খরচ করেই ছোট্ট পাখিদের সুস্থ করে তুলতে সহায়তা করেন। প্রগাঢ় মমতা নিয়ে এই পাখিদের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন তিনি, আর মেক্সিকো সিটিতে তাঁর বাড়িটিকে হামিংবার্ড হসপিটাল নামেই চেনেন স্থানীয়রা।
হামিংবার্ড পাখিদের সেবাদানকারী হিসেবে কাতিয়ার গল্পটি শুরু ২০১১ সালে। ওই সময় জীবনের কঠিন একটি সময় পার করছেন তিনি। মাত্র বছর দুয়েক আগে স্বামীকে হারিয়েছেন নিজে কোলন ক্যানসারের সঙ্গে লড়াই করে সুস্থতার দিকে। এ সময়ই একদিন চোখে মারাত্মক আঘাত পাওয়া একটি হামিংবার্ডকে দেখতে পেয়ে বাড়িতে নিয়ে এলেন। সম্ভবত অন্য কোনো পাখির আক্রমণের শিকার হয়েছে এটি। কিন্তু তখনো পাখিদের যত্ন-আত্মির ব্যাপারে কিছুই জানেন না তিনি। তবে এক পশু চিকিৎসক বন্ধু তাঁকে হামিংবার্ড পাখিদের দেখাশোনার বিষয়ে পরামর্শ ও উৎসাহ দিলেন। এটাই পরবর্তী সময়টা হামিংবার্ড পাখিদের উদ্ধার ও সেবায় নিয়োজিত হওয়ার ব্যাপারে বড় ভূমিকা রাখে।
‘এটাই আমাকে নতুন এক জীবন দিল।’ প্রথম উদ্ধার করা পাখি গুচ্চির কথা মনে করে সাম্প্রতিক এক সাক্ষাৎকারে বলের কাতিয়া। ওটাকে সেবা ও চিকিৎসা দিয়ে সুস্থও করে ফেলতে সক্ষম হন তিনি। কাতিয়া জানান, এক হিসেবে ছোট্ট এই পাখিটাই তাঁকে বাঁচিয়ে দিয়েছে। তিনি বলেন, ক্যানসারের চিকিৎসায় নিজের পাঁচটি পোশাকের দোকান বেঁচে দিতে বাধ্য হোন। সবকিছু মিলিয়ে মানসিকভাবেও ছিলেন বিপর্যস্ত। আর ওই হামিংবার্ডটি তাঁর ওপর প্রভাব বিস্তারকারী নিঃসঙ্গতা ও দুঃখবোধ থেকে টেনে তুলতে সাহায্য করে। আর এটা ছিল কেবল শুরু।
কাতিয়ার ছোট্ট পাখিকে সুস্থ করে তোলার বিষয়টি তাঁর বন্ধুরাও জানতে পারলেন। একপর্যায়ে আহত ও অসহায় বিভিন্ন হামিংবার্ড পাখিকে তাঁর কাছে নিয়ে আসতে শুরু করলেন। কোনো পাখিকেই ফিরিয়ে দিতেন না কাতিয়া। কোনো কোনোটি ছিল একেবারে শিশু। অন্যগুলোর আবার শরীরে কোনো ক্ষত আছে কিংবা বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত হয়।
পাখিগুলোকে সঠিক যত্ন করার জন্য হামিংবার্ড পাখি ও এদের অভ্যাস, আচার-আচরণ সম্পর্কে প্রচুর পড়ালেখা করতে হলো তাঁকে। প্রায় এক যুগের অভিজ্ঞতার ৭৩ বছরের এ নারী হামিংবার্ড বিষয়ে রীতিমতো একজন বিশেষজ্ঞ হয়ে উঠেছেন। বিভিন্ন অনুষ্ঠানে ছোট্ট এই পাখিদের বিষয়ে বলতে আমন্ত্রণও জানানো হয় তাঁকে। ফরাসি সাহিত্য নিয়ে লেখাপড়া করা এই নারীর শরণ নেন পাখিপ্রেমীরা যে কোনো প্রয়োজনে। মেক্সিকো ছাড়িয়ে উত্তর এবং দক্ষিণ আমেরিকায়ও ছড়িয়ে পড়েছে তাঁর খ্যাতি।
হামিংবার্ডদের ব্যাপারে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকেও সহায়তা করে কাতিয়ার এই পাখি-হাসপাতাল। এদের মধ্যে আছে মেক্সিকোর ন্যাশনাল অটোনোমাস ইউনিভার্সিটির ইজতাকালা ক্যাম্পাস। নিজেদের সময় কিংবা জায়গা স্বল্পতার কারণে তারা কখনো কখনো কাতিয়ার শরণাপন্ন হোন বলে জানান, সংস্থাটির গবেষকদের একজন পাখি বিশারদ মারিয়া দেল কোরো আরিজমেন্দি।
আরিজমেন্দি বলেন, মেক্সিকোর রাজধানীতেই ২২ জাতের হামিংবার্ডের বাস, এদের মধ্যে বেশি চোখে পড়ে বোর্ড-বিলড ও ব্যারিলাইন হামিংবার্ডদের।
এদিকে মেক্সিকোতে হামিংবার্ড পাখিদের দুর্দশার বিষয়ে মানুষকে সচেতন করতে নিজের বাড়িতে আশ্রয় নেওয়া এই খুদে রোগীদের নানা ধরনের ভিডিও পোস্ট করেন টিকটকসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। গত প্রায় এক যুগ সময়ে কয়েক শ হামিংবার্ডের চিকিৎসা ও যত্ন-আত্মি করেছেন এ নারী। তবে বছরের যখনই যান এদের কয়েক ডজনের দেখা পাবেন তাঁর বাসায়। এ কাজে একজন সহযোগীও পেয়েছেন তিনি। সিসিলিয়া সান্তোস নামের ওই নারীকে সঙ্গে নিয়ে মোটামুটি দিনের বড় একটা সময়ই তাঁর কাটে ছোট্ট পাখিদের দেখভালে।
পাখিদের সেবা দিয়ে সুস্থ করে তোলার পর মেক্সিকো সিটির দক্ষিণের জঙ্গলে ছেড়ে দেন কাতিয়া। যেগুলোকে কোনোভাবেই সুস্থ করে তোলা সম্ভব হয় না সেগুলোতে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত সেবা দিয়ে যান। মারা গেলে নিজের বাসার কাছেই সমাধিস্থ করেন।
সূত্র: এপি, অডিটি সেন্ট্রাল, তাইপে টাইমস
‘হ্যালো, মিষ্টি ছোট্ট পাখি, তুমি কি খুব ক্ষুধার্ত?’ ছোট্ট এক শিশু হামিংবার্ডকে আলতোভাবে ধরে বললেন কাতিয়া। মেক্সিকো সিটিতে তাঁর বাসায় আগত নতুন রোগী এটি। নিজের অ্যাপার্টম্যান্টটিকে ৭৩ বছরের এই নারী আহত ও অসহায় হামিংবার্ড পাখিদের এক হাসপাতাল ও অভয়ারণ্যে পরিণত করেছেন। এক-দুই বছর নয় এভাবে প্রায় এক যুগ ধরে ছোট্ট এই পাখিদের প্রতি এমন ভালোবাসা দেখিয়ে যাচ্ছেন কাতিয়া লতোফ দে আরিদা।
উদ্ভিদের পরাগায়নে সাহায্য করা হামিংবার্ড পাখি মেক্সিকোর ইকোসিস্টেম তথা বাস্তুতন্ত্রের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ। তবে ক্রমেই শহর বিস্তৃত হওয়ায় নানা ধরনের সমস্যায় পড়তে হচ্ছে এই পাখিদের। এমন পরিস্থিতিতে হামিংবার্ডরা বন্ধু হিসেবে পেয়েছে কাতিয়া লতোফ দে আরিদাকে।
নিজে থেকেই হামিংবার্ডদের সেবা করার কৌশল শিখেছেন তিনি। অবসরের প্রায় পুরো সময়টি ব্যয় করার পাশাপাশি নিজের গাঁটের পয়সা খরচ করেই ছোট্ট পাখিদের সুস্থ করে তুলতে সহায়তা করেন। প্রগাঢ় মমতা নিয়ে এই পাখিদের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন তিনি, আর মেক্সিকো সিটিতে তাঁর বাড়িটিকে হামিংবার্ড হসপিটাল নামেই চেনেন স্থানীয়রা।
হামিংবার্ড পাখিদের সেবাদানকারী হিসেবে কাতিয়ার গল্পটি শুরু ২০১১ সালে। ওই সময় জীবনের কঠিন একটি সময় পার করছেন তিনি। মাত্র বছর দুয়েক আগে স্বামীকে হারিয়েছেন নিজে কোলন ক্যানসারের সঙ্গে লড়াই করে সুস্থতার দিকে। এ সময়ই একদিন চোখে মারাত্মক আঘাত পাওয়া একটি হামিংবার্ডকে দেখতে পেয়ে বাড়িতে নিয়ে এলেন। সম্ভবত অন্য কোনো পাখির আক্রমণের শিকার হয়েছে এটি। কিন্তু তখনো পাখিদের যত্ন-আত্মির ব্যাপারে কিছুই জানেন না তিনি। তবে এক পশু চিকিৎসক বন্ধু তাঁকে হামিংবার্ড পাখিদের দেখাশোনার বিষয়ে পরামর্শ ও উৎসাহ দিলেন। এটাই পরবর্তী সময়টা হামিংবার্ড পাখিদের উদ্ধার ও সেবায় নিয়োজিত হওয়ার ব্যাপারে বড় ভূমিকা রাখে।
‘এটাই আমাকে নতুন এক জীবন দিল।’ প্রথম উদ্ধার করা পাখি গুচ্চির কথা মনে করে সাম্প্রতিক এক সাক্ষাৎকারে বলের কাতিয়া। ওটাকে সেবা ও চিকিৎসা দিয়ে সুস্থও করে ফেলতে সক্ষম হন তিনি। কাতিয়া জানান, এক হিসেবে ছোট্ট এই পাখিটাই তাঁকে বাঁচিয়ে দিয়েছে। তিনি বলেন, ক্যানসারের চিকিৎসায় নিজের পাঁচটি পোশাকের দোকান বেঁচে দিতে বাধ্য হোন। সবকিছু মিলিয়ে মানসিকভাবেও ছিলেন বিপর্যস্ত। আর ওই হামিংবার্ডটি তাঁর ওপর প্রভাব বিস্তারকারী নিঃসঙ্গতা ও দুঃখবোধ থেকে টেনে তুলতে সাহায্য করে। আর এটা ছিল কেবল শুরু।
কাতিয়ার ছোট্ট পাখিকে সুস্থ করে তোলার বিষয়টি তাঁর বন্ধুরাও জানতে পারলেন। একপর্যায়ে আহত ও অসহায় বিভিন্ন হামিংবার্ড পাখিকে তাঁর কাছে নিয়ে আসতে শুরু করলেন। কোনো পাখিকেই ফিরিয়ে দিতেন না কাতিয়া। কোনো কোনোটি ছিল একেবারে শিশু। অন্যগুলোর আবার শরীরে কোনো ক্ষত আছে কিংবা বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত হয়।
পাখিগুলোকে সঠিক যত্ন করার জন্য হামিংবার্ড পাখি ও এদের অভ্যাস, আচার-আচরণ সম্পর্কে প্রচুর পড়ালেখা করতে হলো তাঁকে। প্রায় এক যুগের অভিজ্ঞতার ৭৩ বছরের এ নারী হামিংবার্ড বিষয়ে রীতিমতো একজন বিশেষজ্ঞ হয়ে উঠেছেন। বিভিন্ন অনুষ্ঠানে ছোট্ট এই পাখিদের বিষয়ে বলতে আমন্ত্রণও জানানো হয় তাঁকে। ফরাসি সাহিত্য নিয়ে লেখাপড়া করা এই নারীর শরণ নেন পাখিপ্রেমীরা যে কোনো প্রয়োজনে। মেক্সিকো ছাড়িয়ে উত্তর এবং দক্ষিণ আমেরিকায়ও ছড়িয়ে পড়েছে তাঁর খ্যাতি।
হামিংবার্ডদের ব্যাপারে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকেও সহায়তা করে কাতিয়ার এই পাখি-হাসপাতাল। এদের মধ্যে আছে মেক্সিকোর ন্যাশনাল অটোনোমাস ইউনিভার্সিটির ইজতাকালা ক্যাম্পাস। নিজেদের সময় কিংবা জায়গা স্বল্পতার কারণে তারা কখনো কখনো কাতিয়ার শরণাপন্ন হোন বলে জানান, সংস্থাটির গবেষকদের একজন পাখি বিশারদ মারিয়া দেল কোরো আরিজমেন্দি।
আরিজমেন্দি বলেন, মেক্সিকোর রাজধানীতেই ২২ জাতের হামিংবার্ডের বাস, এদের মধ্যে বেশি চোখে পড়ে বোর্ড-বিলড ও ব্যারিলাইন হামিংবার্ডদের।
এদিকে মেক্সিকোতে হামিংবার্ড পাখিদের দুর্দশার বিষয়ে মানুষকে সচেতন করতে নিজের বাড়িতে আশ্রয় নেওয়া এই খুদে রোগীদের নানা ধরনের ভিডিও পোস্ট করেন টিকটকসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। গত প্রায় এক যুগ সময়ে কয়েক শ হামিংবার্ডের চিকিৎসা ও যত্ন-আত্মি করেছেন এ নারী। তবে বছরের যখনই যান এদের কয়েক ডজনের দেখা পাবেন তাঁর বাসায়। এ কাজে একজন সহযোগীও পেয়েছেন তিনি। সিসিলিয়া সান্তোস নামের ওই নারীকে সঙ্গে নিয়ে মোটামুটি দিনের বড় একটা সময়ই তাঁর কাটে ছোট্ট পাখিদের দেখভালে।
পাখিদের সেবা দিয়ে সুস্থ করে তোলার পর মেক্সিকো সিটির দক্ষিণের জঙ্গলে ছেড়ে দেন কাতিয়া। যেগুলোকে কোনোভাবেই সুস্থ করে তোলা সম্ভব হয় না সেগুলোতে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত সেবা দিয়ে যান। মারা গেলে নিজের বাসার কাছেই সমাধিস্থ করেন।
সূত্র: এপি, অডিটি সেন্ট্রাল, তাইপে টাইমস
১৯৫১ সাল। ইরানের রাজা রেজা শাহ পাহলভি এলেন পৃথিমপাশা জমিদারবাড়িতে। সে এক হুলুস্থুল ব্যাপার! এ বাড়ির পূর্বপুরুষেরা ইরান থেকে এসেছিলেন বলে জানা যায়।
২ দিন আগেশীতে কাপড় ভালো রাখতে সেগুলোকে যেমন রোদে মেলে দিতে হয়, সম্পর্ক উন্নয়নে মাঝেমধ্যে তেমনি ভ্রমণেও যেতে হয়। শীত চলে এসেছে। ভ্রমণপ্রেমীরা হয়ে উঠেছেন সরব।
২ দিন আগেপর্যটন বন্ধে কারফিউ! হ্যাঁ, তেমনটিই ঘটেছে দক্ষিণ কোরিয়ায়। গ্রামের নাম বুকচন হ্যানোক। দক্ষিণ কোরিয়ার জংনো জেলায় এর অবস্থান। বুকচন হ্যানোক দেশটির ‘মাস্ট ভিজিট’ পর্যটন গন্তব্য।
২ দিন আগেভ্রমণের স্বাদ একবার রক্তে ঢুকলে, তা থেকে মুক্তি পাওয়া কঠিন। এক অদৃশ্য তাড়না কাজ করতে থাকে ভেতরে-ভেতরে।
২ দিন আগে