রজত কান্তি রায়, ঢাকা
মোরা আর জনমে হংসমিথুন ছিলাম কি না, তা জেনে কাজ নেই। এ জনমে মোরা হংস মাংস খাইব, ইহা সত্য। কিন্তু কেন খাইব?
কারণ মাঘের শীতে যখন বনে বাঘ কান্নাকাটি করে, তখনই হাঁসের মাংস খাওয়ার উত্তম সময়। রসিকেরা বলেন, শীতের সময় হাঁসের শরীরে মাংস বৃদ্ধি পায়, সঙ্গে চর্বি। মাংস আর চর্বি মসলা, তেল আর লবণের সংস্পর্শে এলে স্বর্গীয় স্বাদ তৈরি হয়। সেই স্বাদে দুনিয়ার সব দুঃখ-কষ্ট, জরা-ব্যাধি ভুলে থাকা যায়।
জরা-ব্যাধির কথাই যখন উঠল, বলে রাখি, অনেকেই বিশ্বাস করেন হাঁসের মাংস মানুষের শরীরে বিভিন্ন রোগ বাড়িয়ে তোলে; বিশেষ করে নতুন মায়েদের হাঁসের মাংস খাওয়ায় তাই অনেক অঞ্চলে বিধিনিষেধ আছে। আর তাঁদেরই এ মাংস খাওয়া নিষেধ, যাঁদের শরীর ও হৃদয়ে আছে অকারণ ব্যথার প্রকোপ।
রসনাবিলাসীরা অবশ্য এসব থোড়াই কেয়ার করেন। খুলনা অঞ্চলে দেখেছি, রোগীর পথ্য হিসেবে সুপক্ব রাজহাঁসের মাংস টিফিনবক্সে ভরে হাসপাতালে হাজির হয়েছেন স্বজনেরা। কী সুইট! ছিট রুটি আর সুস্বাদু হাঁসের মাংসের মারমার কাটকাট জনপ্রিয়তার গল্প দেশজুড়েই। রাজশাহী শহরের কুমারপাড়া মোড়ে সারি সারি দোকানে পাওয়া যাবে মাষকলাইয়ের রুটি আর জিবে জল আনা হাঁসের মাংস। রাজশাহীর গ্রামে গ্রামেও এ খাবার এখন খাওয়া হবে পরিবার-স্বজন নিয়েই। নওগাঁর মানুষেরা হাঁসের মাংস খাইয়েই বিখ্যাত হয়ে গেলেন।
ঢাকায়? অনেক অনেক রেস্তোরাঁয় পাওয়া যাবে হাঁসের অনেক পদের মাংস। তবে সবখানেই যে সুস্বাদু হবে, তেমন কথা নেই। একটু বুঝেশুনে খেতে হবে। পান্থপথ মোড় একটুখানি পেরিয়ে হাতের ডানে দোতলায় বাংলা ভোজ নামে একটি রেস্তোরাঁয় খেয়েছিলাম এক শীতের রাতে, জিবেয় স্বাদ লেগে আছে এখনো। পুরান ঢাকায় বিস্তর পাবেন।
শ্যামলীতে কাঁচাবাজারের গলিতে শাহি মসজিদের সামনে দিয়ে যে রাস্তাটা হল মার্কেটের দিকে গেছে, ওই রাস্তায় মসজিদের সামনে কয়েকটা দোকান পরেই একটি দোকান আছে। সেখানে মাষকলাইয়ের রুটি পাওয়া যায়, সঙ্গে হাঁসের মাংস। জবরদস্ত রাঁধে তারা। কারিগর চাঁপাইনবাবগঞ্জের। ফলে কলাইয়ের রুটি আর হাঁসের মাংসের যুগলবন্দী মিলবে ভালো সেখানে।
অনেক হলো। এবার দুখানা রেসিপি দেখে নিন। তারপর রেঁধে ফেলুন। মাঘের শীতে বাঘ কাঁদুক। আপনি কড়মড়িয়ে হাঁসের মাংস খান সে ছিট রুটি আর মাষকলাইয়ের রুটি দিয়েই হোক, চালের আটার রুমালি রুটি দিয়েই হোক কিংবা জুঁই ফুলের মতো সাদা ভাত দিয়েই হোক।
হাঁসের দুই রেসিপি
আটপৌরে হাঁসের মাংস
উপকরণ
হাঁসের মাংস ১ কেজি, সয়াবিন তেল ১ কাপ, পেঁয়াজকুচি ১ কাপ, আদাবাটা ২ টেবিল চামচ, রসুনবাটা ১ টেবিল চামচ, হলুদ, ধনে, জিরা, গরমমসলা আর গোলমরিচের গুঁড়ো ১ চা-চামচ করে, মরিচের গুঁড়ো ২ চা-চামচ বা স্বাদমতো, দারুচিনি ২ টুকরো, এলাচি ৪-৫টি, তেজপাতা ৩-৪টি, লবঙ্গ ৩-৪টি।
প্রণালি
প্রথমে হাঁসের মাংস ভালোভাবে ধুয়ে পানি ঝরিয়ে রাখুন। তারপর একটি পাত্রে তেল দিয়ে হালকা গরম করে তাতে পেঁয়াজকুচি, দারুচিনি, এলাচি, তেজপাতা ও লবঙ্গ দিয়ে নাড়তে হবে।
পেঁয়াজ হালকা বাদামি হলে তাতে গরমমসলা বাদে বাটা মসলা ও গুঁড়ো মসলাগুলো দিয়ে কষিয়ে নিন। মসলা কষানো হয়ে গেলে তাতে মাংস দিয়ে দিন। মাংস ঢাকনা দিয়ে সময় নিয়ে ভালোভাবে কষান। প্রয়োজনে সামান্য পানি দিন। হাঁসের মাংস ভালো করে না কষালে গন্ধ থেকে যাবে।
যখন মনে হবে কষানোর মধ্যে মাংস হালকা সেদ্ধ হয়ে গেছে, তখন পরিমাণমতো পানি দিন। গরম পানি দেওয়া ভালো। তারপর মাংস পুরোপুরি সেদ্ধ হয়ে ঝোল গাঢ় হলে গরমমসলা দিয়ে
নামিয়ে নিন।
রন্ধনশিল্পী: ফাতেমা আক্তার
আস্ত হাঁসের রোস্ট
উপকরণ
হাঁস ১টি, জিরা ও ধনেগুঁড়ো ১ চা-চামচ, গোলমরিচের গুঁড়ো আধা চা-চামচ, লবণ স্বাদমতো, সয়াসস ১ কাপের ৪ ভাগের ১ ভাগ, তেল ২ কাপ, অ্যারারুট ২ চা-চামচ, মাখন ১ টেবিল চামচ।
প্রণালি
প্রথমে হাঁসটি ভালোভাবে পরিষ্কার করে গুঁড়ো মসলা, লবণ, সয়াসস দিয়ে মেখে রাখুন। বড় পাতিলে ডুবো পানিতে ঢাকনা দিয়ে হাঁসটিকে ৩-৪ ঘণ্টা সেদ্ধ করে নিন। সেদ্ধ হয়ে এলে ১ কাপ পরিমাণ পানি রেখে হাঁস তুলে নিন। হাঁসের বুকের মাঝখানের বড় হাড়টি টেনে তুলে ফেলুন। এবার গরম তেলে হাঁস হালকা বাদামি করে ভেজে নিন। অল্প একটু পানিতে অ্যারারুট গুলে নিয়ে হাঁস সেদ্ধ করার আগে পানিতে মিলিয়ে জ্বাল দিন। গ্রেভি হলে নামিয়ে ফেলুন। এবার সালাদসমেত পরিবেশন করুন।
রন্ধনশিল্পী: শিরীন মনি
মোরা আর জনমে হংসমিথুন ছিলাম কি না, তা জেনে কাজ নেই। এ জনমে মোরা হংস মাংস খাইব, ইহা সত্য। কিন্তু কেন খাইব?
কারণ মাঘের শীতে যখন বনে বাঘ কান্নাকাটি করে, তখনই হাঁসের মাংস খাওয়ার উত্তম সময়। রসিকেরা বলেন, শীতের সময় হাঁসের শরীরে মাংস বৃদ্ধি পায়, সঙ্গে চর্বি। মাংস আর চর্বি মসলা, তেল আর লবণের সংস্পর্শে এলে স্বর্গীয় স্বাদ তৈরি হয়। সেই স্বাদে দুনিয়ার সব দুঃখ-কষ্ট, জরা-ব্যাধি ভুলে থাকা যায়।
জরা-ব্যাধির কথাই যখন উঠল, বলে রাখি, অনেকেই বিশ্বাস করেন হাঁসের মাংস মানুষের শরীরে বিভিন্ন রোগ বাড়িয়ে তোলে; বিশেষ করে নতুন মায়েদের হাঁসের মাংস খাওয়ায় তাই অনেক অঞ্চলে বিধিনিষেধ আছে। আর তাঁদেরই এ মাংস খাওয়া নিষেধ, যাঁদের শরীর ও হৃদয়ে আছে অকারণ ব্যথার প্রকোপ।
রসনাবিলাসীরা অবশ্য এসব থোড়াই কেয়ার করেন। খুলনা অঞ্চলে দেখেছি, রোগীর পথ্য হিসেবে সুপক্ব রাজহাঁসের মাংস টিফিনবক্সে ভরে হাসপাতালে হাজির হয়েছেন স্বজনেরা। কী সুইট! ছিট রুটি আর সুস্বাদু হাঁসের মাংসের মারমার কাটকাট জনপ্রিয়তার গল্প দেশজুড়েই। রাজশাহী শহরের কুমারপাড়া মোড়ে সারি সারি দোকানে পাওয়া যাবে মাষকলাইয়ের রুটি আর জিবে জল আনা হাঁসের মাংস। রাজশাহীর গ্রামে গ্রামেও এ খাবার এখন খাওয়া হবে পরিবার-স্বজন নিয়েই। নওগাঁর মানুষেরা হাঁসের মাংস খাইয়েই বিখ্যাত হয়ে গেলেন।
ঢাকায়? অনেক অনেক রেস্তোরাঁয় পাওয়া যাবে হাঁসের অনেক পদের মাংস। তবে সবখানেই যে সুস্বাদু হবে, তেমন কথা নেই। একটু বুঝেশুনে খেতে হবে। পান্থপথ মোড় একটুখানি পেরিয়ে হাতের ডানে দোতলায় বাংলা ভোজ নামে একটি রেস্তোরাঁয় খেয়েছিলাম এক শীতের রাতে, জিবেয় স্বাদ লেগে আছে এখনো। পুরান ঢাকায় বিস্তর পাবেন।
শ্যামলীতে কাঁচাবাজারের গলিতে শাহি মসজিদের সামনে দিয়ে যে রাস্তাটা হল মার্কেটের দিকে গেছে, ওই রাস্তায় মসজিদের সামনে কয়েকটা দোকান পরেই একটি দোকান আছে। সেখানে মাষকলাইয়ের রুটি পাওয়া যায়, সঙ্গে হাঁসের মাংস। জবরদস্ত রাঁধে তারা। কারিগর চাঁপাইনবাবগঞ্জের। ফলে কলাইয়ের রুটি আর হাঁসের মাংসের যুগলবন্দী মিলবে ভালো সেখানে।
অনেক হলো। এবার দুখানা রেসিপি দেখে নিন। তারপর রেঁধে ফেলুন। মাঘের শীতে বাঘ কাঁদুক। আপনি কড়মড়িয়ে হাঁসের মাংস খান সে ছিট রুটি আর মাষকলাইয়ের রুটি দিয়েই হোক, চালের আটার রুমালি রুটি দিয়েই হোক কিংবা জুঁই ফুলের মতো সাদা ভাত দিয়েই হোক।
হাঁসের দুই রেসিপি
আটপৌরে হাঁসের মাংস
উপকরণ
হাঁসের মাংস ১ কেজি, সয়াবিন তেল ১ কাপ, পেঁয়াজকুচি ১ কাপ, আদাবাটা ২ টেবিল চামচ, রসুনবাটা ১ টেবিল চামচ, হলুদ, ধনে, জিরা, গরমমসলা আর গোলমরিচের গুঁড়ো ১ চা-চামচ করে, মরিচের গুঁড়ো ২ চা-চামচ বা স্বাদমতো, দারুচিনি ২ টুকরো, এলাচি ৪-৫টি, তেজপাতা ৩-৪টি, লবঙ্গ ৩-৪টি।
প্রণালি
প্রথমে হাঁসের মাংস ভালোভাবে ধুয়ে পানি ঝরিয়ে রাখুন। তারপর একটি পাত্রে তেল দিয়ে হালকা গরম করে তাতে পেঁয়াজকুচি, দারুচিনি, এলাচি, তেজপাতা ও লবঙ্গ দিয়ে নাড়তে হবে।
পেঁয়াজ হালকা বাদামি হলে তাতে গরমমসলা বাদে বাটা মসলা ও গুঁড়ো মসলাগুলো দিয়ে কষিয়ে নিন। মসলা কষানো হয়ে গেলে তাতে মাংস দিয়ে দিন। মাংস ঢাকনা দিয়ে সময় নিয়ে ভালোভাবে কষান। প্রয়োজনে সামান্য পানি দিন। হাঁসের মাংস ভালো করে না কষালে গন্ধ থেকে যাবে।
যখন মনে হবে কষানোর মধ্যে মাংস হালকা সেদ্ধ হয়ে গেছে, তখন পরিমাণমতো পানি দিন। গরম পানি দেওয়া ভালো। তারপর মাংস পুরোপুরি সেদ্ধ হয়ে ঝোল গাঢ় হলে গরমমসলা দিয়ে
নামিয়ে নিন।
রন্ধনশিল্পী: ফাতেমা আক্তার
আস্ত হাঁসের রোস্ট
উপকরণ
হাঁস ১টি, জিরা ও ধনেগুঁড়ো ১ চা-চামচ, গোলমরিচের গুঁড়ো আধা চা-চামচ, লবণ স্বাদমতো, সয়াসস ১ কাপের ৪ ভাগের ১ ভাগ, তেল ২ কাপ, অ্যারারুট ২ চা-চামচ, মাখন ১ টেবিল চামচ।
প্রণালি
প্রথমে হাঁসটি ভালোভাবে পরিষ্কার করে গুঁড়ো মসলা, লবণ, সয়াসস দিয়ে মেখে রাখুন। বড় পাতিলে ডুবো পানিতে ঢাকনা দিয়ে হাঁসটিকে ৩-৪ ঘণ্টা সেদ্ধ করে নিন। সেদ্ধ হয়ে এলে ১ কাপ পরিমাণ পানি রেখে হাঁস তুলে নিন। হাঁসের বুকের মাঝখানের বড় হাড়টি টেনে তুলে ফেলুন। এবার গরম তেলে হাঁস হালকা বাদামি করে ভেজে নিন। অল্প একটু পানিতে অ্যারারুট গুলে নিয়ে হাঁস সেদ্ধ করার আগে পানিতে মিলিয়ে জ্বাল দিন। গ্রেভি হলে নামিয়ে ফেলুন। এবার সালাদসমেত পরিবেশন করুন।
রন্ধনশিল্পী: শিরীন মনি
১৯৫১ সাল। ইরানের রাজা রেজা শাহ পাহলভি এলেন পৃথিমপাশা জমিদারবাড়িতে। সে এক হুলুস্থুল ব্যাপার! এ বাড়ির পূর্বপুরুষেরা ইরান থেকে এসেছিলেন বলে জানা যায়।
২ দিন আগেশীতে কাপড় ভালো রাখতে সেগুলোকে যেমন রোদে মেলে দিতে হয়, সম্পর্ক উন্নয়নে মাঝেমধ্যে তেমনি ভ্রমণেও যেতে হয়। শীত চলে এসেছে। ভ্রমণপ্রেমীরা হয়ে উঠেছেন সরব।
২ দিন আগেপর্যটন বন্ধে কারফিউ! হ্যাঁ, তেমনটিই ঘটেছে দক্ষিণ কোরিয়ায়। গ্রামের নাম বুকচন হ্যানোক। দক্ষিণ কোরিয়ার জংনো জেলায় এর অবস্থান। বুকচন হ্যানোক দেশটির ‘মাস্ট ভিজিট’ পর্যটন গন্তব্য।
২ দিন আগেভ্রমণের স্বাদ একবার রক্তে ঢুকলে, তা থেকে মুক্তি পাওয়া কঠিন। এক অদৃশ্য তাড়না কাজ করতে থাকে ভেতরে-ভেতরে।
২ দিন আগে