রজত কান্তি রায়, ঢাকা
তেড়েফুঁড়ে চৈত্রের রোদ তেতে উঠছে প্রতিদিন। গরমে প্রাণ ঠোঁটের কাছাকাছি। মানে ওষ্ঠাগত। সবাই কোনো না কোনো ঠান্ডা খাবার খোঁজেন এ সময়, শরীরটাকে কুল রাখতে। বিলকুল এ সময় শরীর কুল রাখতে হবে। তার জন্য ঠান্ডা খাবার ও আবহাওয়ার বিকল্প কিছুই নেই। মনে পড়ে নিশ্চয়ই, শৈশবে এই চৈত্রের খরতাপ ভেদ করে ভেসে আসত আইসক্রিমওয়ালার ডাক। পঁচিশ বা পঞ্চাশ পয়সার লাল বা মালাই দেওয়া আইসক্রিম জিভে ছোঁয়ালেই শরীরে রোমাঞ্চ জাগত। কাঠ আর থার্মোকল দিয়ে বানানো আইসক্রিমের বাক্সকে মনে হতো রহস্যময় জাদুর বাক্স। আইসক্রিমওয়ালাকে মনে হতো দুঁদে জাদুকর, যিনি বাক্সে হাত ঢুকিয়ে নিয়ে আসবেন পৃথিবীর রহস্যময় জমাটবাঁধা সুস্বাদু তরল। মনে পড়ে না?
মনে পড়ে, লাল কাপড়ে প্যাঁচানো মাটির হাঁড়ি বা ডেকচি মাথায় নিয়ে হাঁটতে হাঁটতে কেউ হেঁকে চলেছেন, ‘অ্যাই কুলফি, কুলফি লাগে কুলফি।’ কুলফি, হাঁড়ি আর মানুষের মাথার ভারসাম্য রক্ষার সে এক অদ্ভুত খেলা! সে খেলা দেখব নাকি কুলফি খাব? নাকি পঁচিশ পয়সার লাল আইসক্রিম? সে এক বিশাল দ্বিধার বিষয় ছিল। লাল আইসক্রিমে জিব হবে লাল আর কুলফির এলাচি ঘ্রাণ ছড়াবে চারদিকে। কোনটা? কিশোরমনের এভারেস্টসম সে দ্বিধা সহজে ভাঙতে চাইত না। কিন্তু বড় মনে কুষ্টিয়ার কুলফি যে দাগ কেটে গেছে, সেটা চাঁদের কলঙ্কের চেয়ে কোনো অংশে কম স্থায়ী নয়। আহা! এলাচির ঘ্রাণ ছড়ানো ‘কোফলি’ কখন যে বাঙালির কুলফি হয়ে গেল সেটা কেউ টেরই পেলাম না।
গবেষকেরা বলে থাকেন, ষোলো শতকের দিকে মোগলদের হেঁশেলে এই কোফলির জন্ম হয়। শব্দটি ফারসি, তবে তার আরবি উৎসও আছে। মোগল হেঁশেলের সঙ্গে যুক্ততার কারণেই কি কুলফিকে ইন্ডিয়ান আইসক্রিম বলা হয়? হবে হয়তো। কিন্তু আমি ভাবছি, আমাদের দেশে কুষ্টিয়ার কুলফি বিখ্যাত। খাঁটি দুধ জ্বাল দিয়ে ঘন করে বানানো কুষ্টিয়ার কুলফি কি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর খেয়েছিলেন? খেয়ে থাকলে ভালো। কিন্তু না খেয়ে থাকলে তিনি ভুল করেছেন।
সে যাক, এই গরমে নরম থাকতে বাড়িতেই বানাতে পারেন কুলফি নামের এই আইসক্রিম-জাতীয় খাবারটি। অবশ্য এর রেসিপি কিছুটা ফিউশন।
শাহি মালাই কুলফি
উপকরণ
দুধ ৩ কাপ, ডিমের কুসুম ২টি, কনডেন্সড মিল্ক ৩ থেকে ৪ টিন, চিনি ২ টেবিল চামচ, কর্নফ্লাওয়ার ১ টেবিল চামচ, এলাচি গুঁড়ো আধা চামচ, পেস্তা বাদামকুচি ৩ টেবিল চামচ, জাফরান, কাঠবাদামকুচি ৩ টেবিল চামচ।
প্রণালি
প্রথমে দুধ জ্বাল দিয়ে ঘন করে ঠান্ডা করে নিন। ঠান্ডা হলে দুধের সঙ্গে ডিমের কুসুম, কর্নফ্লাওয়ার, চিনি, কনডেন্সড মিল্ক একসঙ্গে ব্লেন্ডারে ব্লেন্ড করে নিন। ব্লেন্ড করা হলে মিশ্রণটি চুলায় দিয়ে কিছুক্ষণ জ্বাল দিন। সঙ্গে এলাচিগুঁড়ো, বাদামকুচি আর জাফরান দিয়ে দিন। একটু ঘন হয়ে এলে চুলা থেকে নামিয়ে ঠান্ডা করে কুলফির ছাঁচে ঢেলে ডিপ ফ্রিজে রেখে দিতে হবে ৬ থেকে ৮ ঘণ্টা।কুলফি
উপকরণ
দুধ ১ লিটার, কনডেন্সড মিল্ক ১ কৌটা, মিল্ক পাউডার ১ কাপ, ছোট এলাচিগুঁড়ো ১ চা-চামচের ৪ ভাগের ১ ভাগ, চিনি, জাফরান, পেস্তা বাদামকুচি ১ কাপের ৪ ভাগের ১ ভাগ ও মাওয়া।
প্রণালি
প্রথমে দুধ হালকা গরম করে নিন। অল্প একটুখানি দুধ কাপে তুলে তাতে ভিজিয়ে রাখা জাফরান দিন। এবার দুধে গুঁড়ো দুধ ও কনডেন্সড মিল্ক মিশিয়ে দিন। কিছুক্ষণ নেড়ে তারপর চিনি ও মাওয়া মিশিয়ে নিন। ৫ থেকে ৭ মিনিট পর এলাচিগুঁড়ো দিয়ে আর একটু ফুটিয়ে একদম কম আঁচে রেখে ভেজানো জাফরান মেশানো দুধটুকু ঢেলে ভালো করে নেড়ে নিন। চুলা বন্ধ করে দুধের মিশ্রণে পেস্তা বাদামকুচি মিশিয়ে ঠান্ডা করে নিন। আইসক্রিমের ছাঁচে বা কুলফির গ্লাসে এ মিশ্রণ ঢেলে সারা রাত ডিপ ফ্রিজে রাখুন। পরদিন বা ইচ্ছেমতো সময়ে কুল হতে সে কুলফি খেতে পারেন।
নারকেল কুলফি
উপকরণ
১টি মাঝারি মাপের নারকেল কোরানো, দুধ আধা লিটার, কনডেন্সড মিল্ক ২ থেকে ৩ টেবিল চামচ, চিনি স্বাদমতো, লবণ স্বাদমতো।
প্রণালি
প্রথমে দুধ ফুটিয়ে নিন। দুধ কুসুম গরম থাকা অবস্থায় তাতে চিনি, নারকেল কোরানো, কনডেন্সড মিল্ক আর সামান্য লবণ ভালো করে মিশিয়ে নিন। অন্তত ৫ থেকে ১০ মিনিট ব্লেন্ড করুন। এবার মিশ্রণটি কুলফির ছাঁচে ঢেলে ছাঁচটি ফ্রিজে রেখে দিন। ৬ থেকে ৮ ঘণ্টা ডিপ ফ্রিজে রাখুন।
খাওয়ার আগে বের করে ওপর থেকে কেশর, কাজু, নারকেল কোরা ছড়িয়ে পরিবেশ করুন নারকেল কুলফি।
রেসিপি: শাহনাজ সুলতানা ও রাবেয়া আক্তার
তেড়েফুঁড়ে চৈত্রের রোদ তেতে উঠছে প্রতিদিন। গরমে প্রাণ ঠোঁটের কাছাকাছি। মানে ওষ্ঠাগত। সবাই কোনো না কোনো ঠান্ডা খাবার খোঁজেন এ সময়, শরীরটাকে কুল রাখতে। বিলকুল এ সময় শরীর কুল রাখতে হবে। তার জন্য ঠান্ডা খাবার ও আবহাওয়ার বিকল্প কিছুই নেই। মনে পড়ে নিশ্চয়ই, শৈশবে এই চৈত্রের খরতাপ ভেদ করে ভেসে আসত আইসক্রিমওয়ালার ডাক। পঁচিশ বা পঞ্চাশ পয়সার লাল বা মালাই দেওয়া আইসক্রিম জিভে ছোঁয়ালেই শরীরে রোমাঞ্চ জাগত। কাঠ আর থার্মোকল দিয়ে বানানো আইসক্রিমের বাক্সকে মনে হতো রহস্যময় জাদুর বাক্স। আইসক্রিমওয়ালাকে মনে হতো দুঁদে জাদুকর, যিনি বাক্সে হাত ঢুকিয়ে নিয়ে আসবেন পৃথিবীর রহস্যময় জমাটবাঁধা সুস্বাদু তরল। মনে পড়ে না?
মনে পড়ে, লাল কাপড়ে প্যাঁচানো মাটির হাঁড়ি বা ডেকচি মাথায় নিয়ে হাঁটতে হাঁটতে কেউ হেঁকে চলেছেন, ‘অ্যাই কুলফি, কুলফি লাগে কুলফি।’ কুলফি, হাঁড়ি আর মানুষের মাথার ভারসাম্য রক্ষার সে এক অদ্ভুত খেলা! সে খেলা দেখব নাকি কুলফি খাব? নাকি পঁচিশ পয়সার লাল আইসক্রিম? সে এক বিশাল দ্বিধার বিষয় ছিল। লাল আইসক্রিমে জিব হবে লাল আর কুলফির এলাচি ঘ্রাণ ছড়াবে চারদিকে। কোনটা? কিশোরমনের এভারেস্টসম সে দ্বিধা সহজে ভাঙতে চাইত না। কিন্তু বড় মনে কুষ্টিয়ার কুলফি যে দাগ কেটে গেছে, সেটা চাঁদের কলঙ্কের চেয়ে কোনো অংশে কম স্থায়ী নয়। আহা! এলাচির ঘ্রাণ ছড়ানো ‘কোফলি’ কখন যে বাঙালির কুলফি হয়ে গেল সেটা কেউ টেরই পেলাম না।
গবেষকেরা বলে থাকেন, ষোলো শতকের দিকে মোগলদের হেঁশেলে এই কোফলির জন্ম হয়। শব্দটি ফারসি, তবে তার আরবি উৎসও আছে। মোগল হেঁশেলের সঙ্গে যুক্ততার কারণেই কি কুলফিকে ইন্ডিয়ান আইসক্রিম বলা হয়? হবে হয়তো। কিন্তু আমি ভাবছি, আমাদের দেশে কুষ্টিয়ার কুলফি বিখ্যাত। খাঁটি দুধ জ্বাল দিয়ে ঘন করে বানানো কুষ্টিয়ার কুলফি কি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর খেয়েছিলেন? খেয়ে থাকলে ভালো। কিন্তু না খেয়ে থাকলে তিনি ভুল করেছেন।
সে যাক, এই গরমে নরম থাকতে বাড়িতেই বানাতে পারেন কুলফি নামের এই আইসক্রিম-জাতীয় খাবারটি। অবশ্য এর রেসিপি কিছুটা ফিউশন।
শাহি মালাই কুলফি
উপকরণ
দুধ ৩ কাপ, ডিমের কুসুম ২টি, কনডেন্সড মিল্ক ৩ থেকে ৪ টিন, চিনি ২ টেবিল চামচ, কর্নফ্লাওয়ার ১ টেবিল চামচ, এলাচি গুঁড়ো আধা চামচ, পেস্তা বাদামকুচি ৩ টেবিল চামচ, জাফরান, কাঠবাদামকুচি ৩ টেবিল চামচ।
প্রণালি
প্রথমে দুধ জ্বাল দিয়ে ঘন করে ঠান্ডা করে নিন। ঠান্ডা হলে দুধের সঙ্গে ডিমের কুসুম, কর্নফ্লাওয়ার, চিনি, কনডেন্সড মিল্ক একসঙ্গে ব্লেন্ডারে ব্লেন্ড করে নিন। ব্লেন্ড করা হলে মিশ্রণটি চুলায় দিয়ে কিছুক্ষণ জ্বাল দিন। সঙ্গে এলাচিগুঁড়ো, বাদামকুচি আর জাফরান দিয়ে দিন। একটু ঘন হয়ে এলে চুলা থেকে নামিয়ে ঠান্ডা করে কুলফির ছাঁচে ঢেলে ডিপ ফ্রিজে রেখে দিতে হবে ৬ থেকে ৮ ঘণ্টা।কুলফি
উপকরণ
দুধ ১ লিটার, কনডেন্সড মিল্ক ১ কৌটা, মিল্ক পাউডার ১ কাপ, ছোট এলাচিগুঁড়ো ১ চা-চামচের ৪ ভাগের ১ ভাগ, চিনি, জাফরান, পেস্তা বাদামকুচি ১ কাপের ৪ ভাগের ১ ভাগ ও মাওয়া।
প্রণালি
প্রথমে দুধ হালকা গরম করে নিন। অল্প একটুখানি দুধ কাপে তুলে তাতে ভিজিয়ে রাখা জাফরান দিন। এবার দুধে গুঁড়ো দুধ ও কনডেন্সড মিল্ক মিশিয়ে দিন। কিছুক্ষণ নেড়ে তারপর চিনি ও মাওয়া মিশিয়ে নিন। ৫ থেকে ৭ মিনিট পর এলাচিগুঁড়ো দিয়ে আর একটু ফুটিয়ে একদম কম আঁচে রেখে ভেজানো জাফরান মেশানো দুধটুকু ঢেলে ভালো করে নেড়ে নিন। চুলা বন্ধ করে দুধের মিশ্রণে পেস্তা বাদামকুচি মিশিয়ে ঠান্ডা করে নিন। আইসক্রিমের ছাঁচে বা কুলফির গ্লাসে এ মিশ্রণ ঢেলে সারা রাত ডিপ ফ্রিজে রাখুন। পরদিন বা ইচ্ছেমতো সময়ে কুল হতে সে কুলফি খেতে পারেন।
নারকেল কুলফি
উপকরণ
১টি মাঝারি মাপের নারকেল কোরানো, দুধ আধা লিটার, কনডেন্সড মিল্ক ২ থেকে ৩ টেবিল চামচ, চিনি স্বাদমতো, লবণ স্বাদমতো।
প্রণালি
প্রথমে দুধ ফুটিয়ে নিন। দুধ কুসুম গরম থাকা অবস্থায় তাতে চিনি, নারকেল কোরানো, কনডেন্সড মিল্ক আর সামান্য লবণ ভালো করে মিশিয়ে নিন। অন্তত ৫ থেকে ১০ মিনিট ব্লেন্ড করুন। এবার মিশ্রণটি কুলফির ছাঁচে ঢেলে ছাঁচটি ফ্রিজে রেখে দিন। ৬ থেকে ৮ ঘণ্টা ডিপ ফ্রিজে রাখুন।
খাওয়ার আগে বের করে ওপর থেকে কেশর, কাজু, নারকেল কোরা ছড়িয়ে পরিবেশ করুন নারকেল কুলফি।
রেসিপি: শাহনাজ সুলতানা ও রাবেয়া আক্তার
১৯৫১ সাল। ইরানের রাজা রেজা শাহ পাহলভি এলেন পৃথিমপাশা জমিদারবাড়িতে। সে এক হুলুস্থুল ব্যাপার! এ বাড়ির পূর্বপুরুষেরা ইরান থেকে এসেছিলেন বলে জানা যায়।
১ দিন আগেশীতে কাপড় ভালো রাখতে সেগুলোকে যেমন রোদে মেলে দিতে হয়, সম্পর্ক উন্নয়নে মাঝেমধ্যে তেমনি ভ্রমণেও যেতে হয়। শীত চলে এসেছে। ভ্রমণপ্রেমীরা হয়ে উঠেছেন সরব।
১ দিন আগেপর্যটন বন্ধে কারফিউ! হ্যাঁ, তেমনটিই ঘটেছে দক্ষিণ কোরিয়ায়। গ্রামের নাম বুকচন হ্যানোক। দক্ষিণ কোরিয়ার জংনো জেলায় এর অবস্থান। বুকচন হ্যানোক দেশটির ‘মাস্ট ভিজিট’ পর্যটন গন্তব্য।
১ দিন আগেভ্রমণের স্বাদ একবার রক্তে ঢুকলে, তা থেকে মুক্তি পাওয়া কঠিন। এক অদৃশ্য তাড়না কাজ করতে থাকে ভেতরে-ভেতরে।
১ দিন আগে