মারুফ ইসলাম, ঢাকা
নিহতের সংখ্যা ১৭ নাকি ৫০, তা নিয়ে বিতর্ক হতে পারে। কিন্তু মাহসা আমিনির মৃত্যুতে ইরান যে বিক্ষোভের আগুনে পুড়ছে, সে বিষয়ে কোনো বিতর্ক নেই। গত আট দিনে দেশটিতে সরকারি হিসাবে মারা গেছেন ১৭ জন বিক্ষোভকারী। আর বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থার হিসাবে পুলিশের গুলিতে মারা গেছেন ৫০ জন। এত মৃত্যুর পরেও শান্ত হননি বিক্ষোভকারীরা। শিগগির হবেন বলেও মনে হচ্ছে না।
ইরানে এই ব্যাপক বিক্ষোভের সূত্রপাত ২২ বছর বয়সী মাহসা আমিনির মৃত্যুকে কেন্দ্র করে। রাজধানী তেহরান দেখতে আসা মাহসা হিজাব পরেছিলেন ঠিকই, তবে সঠিকভাবে পরেননি—তেমনই অভিযোগ ছিল ইরানের নৈতিকতাবিষয়ক পুলিশের। তারা জানিয়েছে, হিজাব পরার পরেও তাঁর চুল দেখা যাচ্ছিল। গত ১৩ সেপ্টেম্বর এই অভিযোগেই মাহসা আমিনিকে গ্রেপ্তার করেছিল ইরানের নৈতিকতাবিষয়ক পুলিশ। তারপর পুলিশি হেফাজতেই শুক্রবার, অর্থাৎ ১৬ সেপ্টেম্বর তাঁর মৃত্যু হয়। অভিযোগ উঠেছে, পুলিশের নির্যাতনের কারণে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। এরপর বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে ইরানজুড়ে।
শনিবার, ১৭ সেপ্টেম্বর মাহসা আমিনির জানাজার সময়েও বিক্ষোভ করেছেন সাধারণ মানুষ। তাঁদের ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে গ্যাস ছুড়েছে পুলিশ। তাতেও শেষরক্ষা হচ্ছে না। বিক্ষোভ দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়ছে।
যদিও পুলিশ বলছে, তাদের নির্যাতনের কারণে আমিনির মত্যু হয়নি। অন্য আটক নারীদের সঙ্গে অপেক্ষা করার সময় তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং পরে মারা যান। তিনি মূলত হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন।
মাত্র ২২ বছর বয়সী একজন তরুণী কেন হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যাবেন? প্রশ্ন উঠেছে। তা যে কারণেই মাহসা আমিনির মৃত্যু হোক না কেন, বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষ। ইরানের প্রেসিডেন্ট ইবরাহিম রাইসি ইতিমধ্যে তদন্তের নির্দেশও দিয়েছেন। কিন্তু বিক্ষোভকারীদের দাবি, ইরানের হিজাববিষয়ক প্রচলিত শরিয়া আইনটি সংস্কার করতে হবে। শরিয়া আইনে বলা আছে, সাত বছরের বেশি বয়সী নারীদের ধর্মীয় হেড স্কার্ফ (হিজাব) পরা বাধ্যতামূলক। তাঁরা চুল ঢেকে রাখতে এবং লম্বা, ঢিলেঢালা পোশাক পরতে বাধ্য।
এই আইন সংস্কারের জন্য বেশ কয়েক মাস ধরেই আন্দোলন চলছে ইরানে। সম্প্রতি মাহসা আমিনির মৃত্যু সেই আন্দোলনের আগুনে ঘি ঢেলেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এমন কিছু ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে, যেখানে দেখা যাচ্ছে, ইরানের অনেক নারী প্রতিবাদস্বরূপ নিজের চুল কেটে ফেলছেন এবং হিজাব পুড়িয়ে দিচ্ছেন।
ছোট্ট একটি ঘটনা এভাবে দাবানলের জন্ম দেবে, কে-ই বা জানত? কখনো কখনো পচা শামুকেও পা কাটে। মাহসা আমিনির বসবাস ছিল পশ্চিম কুর্দিস্তানের সাকেজে। সেখান থেকে ১৩ সেপ্টেম্বর তেহরানে বেড়াতে এসেছিলেন তিনি। সঙ্গে তাঁর ভাই ও অন্য আত্মীয়রাও ছিলেন। তাঁর ভাই জানিয়েছেন, পোশাকবিধি না মানার কারণে পুলিশ তাঁর বোনকে আটক করে ‘ডিটেনশন সেন্টারে’ নিয়ে যায়। ‘যে ঘরে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল, সেখান থেকে আর্তচিৎকারের শব্দ শুনেছি আমি।’ বলেছেন মাহসা আমিনির ভাই।
আমিনির মা জানিয়েছেন, তাঁর মেয়ে সঠিকভাবেই পোশাক পরেছিলেন। ইরানের নিরাপত্তাবাহিনী এক বিবৃতিতে বলেছে, মাহসা আমিনিকে নির্যাতন করা হয়নি। তাঁকে পোশাক আইন শেখানো হচ্ছিল। তিনি হঠাৎ হৃদরোগে আক্রান্ত হন। এরপর তাঁকে দ্রুত হাসপাতালে নেওয়া হয়।
হাসপাতালে শুয়ে থাকা আমিনির একটি ছবি ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। ছবিতে দেখা যাচ্ছে, মাহসা আমিনির নাকে-মুখে নল লাগানো। কান দিয়ে রক্ত বেরোচ্ছে। চোখে কালশিটের দাগ। তিনি কোমায় চলে গেছেন।
এটি শুধু আমিনির ছবি নয়। এ ছবি যেন ইরানের নারী সমাজেরই প্রতিচ্ছবি। নানা আইনে বন্দী ইরানের নারীরা মুক্তি চাইছেন। আমিনির মৃত্যু পর ছড়িয়ে পড়া বিক্ষোভ যেন সে কথাই বারবার স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে।
তথ্যসূত্র: এনডিটিভি, বিবিসি, দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস
নিহতের সংখ্যা ১৭ নাকি ৫০, তা নিয়ে বিতর্ক হতে পারে। কিন্তু মাহসা আমিনির মৃত্যুতে ইরান যে বিক্ষোভের আগুনে পুড়ছে, সে বিষয়ে কোনো বিতর্ক নেই। গত আট দিনে দেশটিতে সরকারি হিসাবে মারা গেছেন ১৭ জন বিক্ষোভকারী। আর বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থার হিসাবে পুলিশের গুলিতে মারা গেছেন ৫০ জন। এত মৃত্যুর পরেও শান্ত হননি বিক্ষোভকারীরা। শিগগির হবেন বলেও মনে হচ্ছে না।
ইরানে এই ব্যাপক বিক্ষোভের সূত্রপাত ২২ বছর বয়সী মাহসা আমিনির মৃত্যুকে কেন্দ্র করে। রাজধানী তেহরান দেখতে আসা মাহসা হিজাব পরেছিলেন ঠিকই, তবে সঠিকভাবে পরেননি—তেমনই অভিযোগ ছিল ইরানের নৈতিকতাবিষয়ক পুলিশের। তারা জানিয়েছে, হিজাব পরার পরেও তাঁর চুল দেখা যাচ্ছিল। গত ১৩ সেপ্টেম্বর এই অভিযোগেই মাহসা আমিনিকে গ্রেপ্তার করেছিল ইরানের নৈতিকতাবিষয়ক পুলিশ। তারপর পুলিশি হেফাজতেই শুক্রবার, অর্থাৎ ১৬ সেপ্টেম্বর তাঁর মৃত্যু হয়। অভিযোগ উঠেছে, পুলিশের নির্যাতনের কারণে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। এরপর বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে ইরানজুড়ে।
শনিবার, ১৭ সেপ্টেম্বর মাহসা আমিনির জানাজার সময়েও বিক্ষোভ করেছেন সাধারণ মানুষ। তাঁদের ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে গ্যাস ছুড়েছে পুলিশ। তাতেও শেষরক্ষা হচ্ছে না। বিক্ষোভ দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়ছে।
যদিও পুলিশ বলছে, তাদের নির্যাতনের কারণে আমিনির মত্যু হয়নি। অন্য আটক নারীদের সঙ্গে অপেক্ষা করার সময় তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং পরে মারা যান। তিনি মূলত হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন।
মাত্র ২২ বছর বয়সী একজন তরুণী কেন হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যাবেন? প্রশ্ন উঠেছে। তা যে কারণেই মাহসা আমিনির মৃত্যু হোক না কেন, বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষ। ইরানের প্রেসিডেন্ট ইবরাহিম রাইসি ইতিমধ্যে তদন্তের নির্দেশও দিয়েছেন। কিন্তু বিক্ষোভকারীদের দাবি, ইরানের হিজাববিষয়ক প্রচলিত শরিয়া আইনটি সংস্কার করতে হবে। শরিয়া আইনে বলা আছে, সাত বছরের বেশি বয়সী নারীদের ধর্মীয় হেড স্কার্ফ (হিজাব) পরা বাধ্যতামূলক। তাঁরা চুল ঢেকে রাখতে এবং লম্বা, ঢিলেঢালা পোশাক পরতে বাধ্য।
এই আইন সংস্কারের জন্য বেশ কয়েক মাস ধরেই আন্দোলন চলছে ইরানে। সম্প্রতি মাহসা আমিনির মৃত্যু সেই আন্দোলনের আগুনে ঘি ঢেলেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এমন কিছু ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে, যেখানে দেখা যাচ্ছে, ইরানের অনেক নারী প্রতিবাদস্বরূপ নিজের চুল কেটে ফেলছেন এবং হিজাব পুড়িয়ে দিচ্ছেন।
ছোট্ট একটি ঘটনা এভাবে দাবানলের জন্ম দেবে, কে-ই বা জানত? কখনো কখনো পচা শামুকেও পা কাটে। মাহসা আমিনির বসবাস ছিল পশ্চিম কুর্দিস্তানের সাকেজে। সেখান থেকে ১৩ সেপ্টেম্বর তেহরানে বেড়াতে এসেছিলেন তিনি। সঙ্গে তাঁর ভাই ও অন্য আত্মীয়রাও ছিলেন। তাঁর ভাই জানিয়েছেন, পোশাকবিধি না মানার কারণে পুলিশ তাঁর বোনকে আটক করে ‘ডিটেনশন সেন্টারে’ নিয়ে যায়। ‘যে ঘরে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল, সেখান থেকে আর্তচিৎকারের শব্দ শুনেছি আমি।’ বলেছেন মাহসা আমিনির ভাই।
আমিনির মা জানিয়েছেন, তাঁর মেয়ে সঠিকভাবেই পোশাক পরেছিলেন। ইরানের নিরাপত্তাবাহিনী এক বিবৃতিতে বলেছে, মাহসা আমিনিকে নির্যাতন করা হয়নি। তাঁকে পোশাক আইন শেখানো হচ্ছিল। তিনি হঠাৎ হৃদরোগে আক্রান্ত হন। এরপর তাঁকে দ্রুত হাসপাতালে নেওয়া হয়।
হাসপাতালে শুয়ে থাকা আমিনির একটি ছবি ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। ছবিতে দেখা যাচ্ছে, মাহসা আমিনির নাকে-মুখে নল লাগানো। কান দিয়ে রক্ত বেরোচ্ছে। চোখে কালশিটের দাগ। তিনি কোমায় চলে গেছেন।
এটি শুধু আমিনির ছবি নয়। এ ছবি যেন ইরানের নারী সমাজেরই প্রতিচ্ছবি। নানা আইনে বন্দী ইরানের নারীরা মুক্তি চাইছেন। আমিনির মৃত্যু পর ছড়িয়ে পড়া বিক্ষোভ যেন সে কথাই বারবার স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে।
তথ্যসূত্র: এনডিটিভি, বিবিসি, দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস
১৯৫১ সাল। ইরানের রাজা রেজা শাহ পাহলভি এলেন পৃথিমপাশা জমিদারবাড়িতে। সে এক হুলুস্থুল ব্যাপার! এ বাড়ির পূর্বপুরুষেরা ইরান থেকে এসেছিলেন বলে জানা যায়।
৪ দিন আগেশীতে কাপড় ভালো রাখতে সেগুলোকে যেমন রোদে মেলে দিতে হয়, সম্পর্ক উন্নয়নে মাঝেমধ্যে তেমনি ভ্রমণেও যেতে হয়। শীত চলে এসেছে। ভ্রমণপ্রেমীরা হয়ে উঠেছেন সরব।
৪ দিন আগেপর্যটন বন্ধে কারফিউ! হ্যাঁ, তেমনটিই ঘটেছে দক্ষিণ কোরিয়ায়। গ্রামের নাম বুকচন হ্যানোক। দক্ষিণ কোরিয়ার জংনো জেলায় এর অবস্থান। বুকচন হ্যানোক দেশটির ‘মাস্ট ভিজিট’ পর্যটন গন্তব্য।
৪ দিন আগেভ্রমণের স্বাদ একবার রক্তে ঢুকলে, তা থেকে মুক্তি পাওয়া কঠিন। এক অদৃশ্য তাড়না কাজ করতে থাকে ভেতরে-ভেতরে।
৪ দিন আগে