অর্ণব সান্যাল
২৪৪১১৩৯–এ ফোন করে বেলা বোসকে চাকরি পাওয়ার খবর দিতে চেয়েছিলেন অঞ্জন দত্ত। গানের বিষয়টা ছিল, সোনার হরিণের মতো চাকরি পেলেই হয়তো প্রেমিকার সঙ্গে সারাটা জীবন কাটানোর মতো রসদ মিলবে। কিন্তু অঞ্জনের গানের সেই প্রেমিকবর আজকের এই যুগে চাকরি পেলেও কি এতটা স্বস্তিদায়ক উচ্ছ্বাসে ভেসে যেতে পারতেন?
দ্বিধাগ্রস্ত উত্তরটি হলো, হয়তোবা না। কারণ, এখনকার করপোরেট সংস্কৃতিতে চাকরিই জীবন হয়ে উঠেছে প্রায়। কর্মস্থল থেকে এখন আর ঘড়ির কাঁটা মিলিয়ে ডাক আসে না। আসে যখন-তখন। ডাকের সঙ্গে সঙ্গে ঊর্ধ্বতনেরা জেনে নেন কর্মীর অবস্থান ও কর্মকাণ্ডের ঠিকুজি। কখনো কখনো কি শৃঙ্খলিত মনে হয়? হওয়াটা অস্বাভাবিক নয় এমন নজরদারিতে থাকলে। তবে হ্যাঁ, এসব নজরদারি বৈশ্বিক তুলনায় তেমন কঠোর নয় মোটেও। বিশ্বে যেভাবে এখন কর্মীদের ওপর নজরদারি চলছে ঊর্ধ্বতনদের, সেটি জানলে আপনাদের আক্কেল গুড়ুম হতে বাধ্য। তবে, এসব বিষয়ে জানা থাকা ভালো। বিশ্বায়িত বিশ্বের প্রবল হাওয়া কখন এ দেশেও চলে আসে, কে জানে! চলুন তবে জেনে আসা যাক, কর্মস্থলে নজরদারির ক্ষেত্রে বিশ্বে এখন কী অবস্থা।
কর্মস্থলে নজরদারি
প্রথমেই বলে নিই, কর্মস্থলে নজরদারি নতুন কোনো বস্তু নয়। দীর্ঘদিন ধরেই এমনটা চলে আসছে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে। আজ থেকে দু-তিন শ বছর আগে তৎকালীন ব্রিটেনে বা ইউরোপে নজরদারির নামে চাবুকপেটা হতেন শ্রমিকেরা। যুগের ও প্রযুক্তির কল্যাণে সেই জায়গা ধীরে ধীরে নিল সিসিটিভি ক্যামেরা। এসব যন্ত্রনির্মিত ‘চোখ’ দিয়ে বিভিন্ন দোকান ও কারখানায় শ্রমিকদের গতিবিধি নজরে রাখা হতো এবং এখনো হয়। আমরা বিভিন্ন সময় সংবাদমাধ্যমে এমন খবরও পেয়েছি যে, সিসিটিভি দিয়ে কোন শ্রমিক কাজ ফেলে শৌচাগারে যাচ্ছে, তারও হিসাব রাখা হয় এবং সে কারণে অনেকের চাকরিও চলে যায়!
এ তো গেল সাধারণ কর্মী বা শ্রমিকদের কথা। শ্রমিক আমরা কম-বেশি সবাই। তবে কারও কারও গায়ে থাকে সাদা কলারের শার্ট ও রঙিন টাই। হ্যাঁ হ্যাঁ, হোয়াইট কলার জবের কথাই বলছি। এরা সাধারণ শ্রমিকের ওপরে থেকে কাজ সামলান। তবে মালিক ব্যতীত ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের তালিকার তো শেষ নেই। ফলে তাঁদের ওপরে থাকা কর্মকর্তারা চালান অধস্তনদের ওপর নজরদারি। চলতি শতকের শুরু থেকেই এসব চালু হয়েছে। আর প্রযুক্তির উন্নতি যত দ্রুত হয়েছে, ততই আঁটসাঁট হয়েছে নজরদারি। বর্তমানে উন্নত বিশ্বে কর্মীদের ওপর নজরদারিতে ব্যবহৃত হচ্ছে ফোনের কললিস্ট ও ই-মেইল। নজরদারির কিছু কাজ গুগল ওয়ার্কস্পেস, মাইক্রোসফট টিমস বা স্ল্যাক দিয়েও করা হচ্ছে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে নতুন প্রযুক্তির সাহায্যে একজন কর্মীর জুম-কল থেকে শুরু করে কম্পিউটারের কি-বোর্ডে টাইপিং—সবকিছুতেই নজর রাখা হচ্ছে। বাদ যাচ্ছে না কর্মীদের ব্যক্তিগত ইলেকট্রনিক ডিভাইসও। যেমন: ভেরাইটো নামের একটি সফটওয়্যার দিয়ে কর্মীরা গোপন তথ্য ফাঁস করছেন কিনা, তা নির্ণয় করা যায়। আবার ডিপস্কোর নামের একটি সফটওয়্যার ব্যক্তির মুখচ্ছবি ও কণ্ঠস্বর পরীক্ষা করে কর্মী কতটা আস্থাভাজন, তা নির্ণয় করতে পারে!
অর্থাৎ, কর্মীর আগাপাশতলা—সবকিছুই নিয়োগকর্তারা নজর রাখতে চাচ্ছেন। এমনকি অফিসের কাজে কর্মী কতটুকু উৎপাদনক্ষম এবং কাজ করতে গিয়ে তিনি বিরক্ত বা ক্ষুব্ধ হচ্ছেন কি না, সেটিও জানতে চাইছেন কোনো কোনো নিয়োগকর্তা। এ ক্ষেত্রে চাকরিজীবী ব্যক্তির ব্যক্তিগত স্বাধীনতা বলে আর কিছু কি থাকছে?
নজরদারি বেড়েছে
বিভিন্ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান বলছে, মূলত করোনা মহামারির পর থেকে কর্মীদের ওপর এ ধরনের কঠোর নজরদারির মাত্রা ক্রমান্বয়ে বেড়েছে। মহামারির শুরু থেকেই ওয়ার্ক ফ্রম হোমের ব্যাপক প্রচলন চালু হয়। তখন থেকেই নিয়োগকর্তাদের মাথায় বাসা বাঁধে কর্মীরা আদৌ ঠিকমতো কাজ করছে কি না—সেই শঙ্কা। ফলে শুরু হয় নজরদারির নিত্যনতুন উপায় ব্যবহার।
গবেষণা প্রতিষ্ঠান গার্টনার বলছে, মহামারির আগে বড় বড় বাণিজ্য প্রতিষ্ঠানের প্রতি ১০টির মধ্যে মাত্র একটি কর্মীদের ওপর গুপ্তচরবৃত্তি চালানোর সফটওয়্যার ব্যবহার করত। আর গত তিন বছরের মধ্যে এমন সফটওয়্যার ব্যবহার বেড়েছে প্রায় ৭০ শতাংশ।
তবে এতে উজানের টান শুরু হয়েছিল আরেকটু আগে থেকেই। খ্যাতনামা প্রতিষ্ঠান অ্যাকসেনসিওর নিজেদের এক জরিপের বরাত দিয়ে জানিয়েছে, করোনা মহামারি শুরুর আগেই প্রায় ৫০ শতাংশ প্রতিষ্ঠানের হর্তাকর্তারা কর্মীদের ব্যাপারে তথ্য সংগ্রহে বিভিন্ন নজরদারি সফটওয়্যার ব্যবহারের পক্ষে ছিলেন। ইউরোপীয় কমিশনের চালানো অপর এক গবেষণায় দেখা গেছে, কর্মীদের ওপর গুপ্তচরবৃত্তি চালানোর সফটওয়্যারে বৈশ্বিক চাহিদা ২০১৯ সালের এপ্রিল থেকে ২০২০ সালের এপ্রিলের মধ্যে প্রায় দ্বিগুণ বেড়েছে। মহামারির শুরুতে দেওয়া লকডাউনের কয়েক সপ্তাহের মধ্যে কর্মীদের মনিটরিং করার জন্য ব্যবহৃত টুলস খোঁজার বিষয়টি প্রায় ১৮ গুণ বেড়েছিল। এ ক্ষেত্রে কিছু উদাহরণ দেওয়া যাক। যেমন: টাইম ডক্টর নামের একটি সফটওয়্যার যেটি ব্যবহারকারীদের কম্পিউটার স্ক্রিন টাইমের ভিডিওচিত্র ধারণ করে। এর চাহিদা ২০২০ সালের এপ্রিলে এর আগের বছরের তুলনায় তিনগুণ বেড়েছিল। এমন আরেকটি সফটওয়্যার হলো ডেস্কটাইম, যা কম্পিউটারে একজন কর্মীর একটি কাজ সম্পন্নের সময় হিসাবে রাখে। এই সফটওয়্যারের চাহিদা ওই একই সময়ে চারগুণ বেড়েছিল।
এ তো গেল ২০২০ সালের অবস্থা। ২০২১ সালে যুক্তরাষ্ট্রে ১ হাজারের বেশি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে করা এক জরিপে দেখা গেছে, সেসবের ৬০ শতাংশ কর্মীদের ওপর নজরদারিতে নানা ধরনের সফটওয়্যার ব্যবহার করে। আর ওই একই সময় আরও ১৭ শতাংশ প্রতিষ্ঠান এ ব্যাপারে চিন্তাভাবনা শুরু করেছিল এবং এই নজরদারিকে একটি মোক্ষম উপায় হিসেবে বিবেচনা করছিল। হয়তো ২০২২ সাল নাগাদ তারা সিদ্ধান্তে পৌঁছেই গেছে!
প্রশ্ন উঠতেই পারে, কেন কর্মীদের ওপর এত নজরদারি? বা এত নজরদারির প্রয়োজনীয়তাই-বা কতটুকু?
বিশ্লেষকেরা বলছেন, প্রয়োজনীয়তা একদম যে নেই, তা জোর গলায় বলা যাবে না। কিছু ক্ষেত্রে অবশ্যই আছে। যেমন—কিছু কিছু বিশেষায়িত চাকরির ক্ষেত্রে নিরাপত্তার ও কাজের সঠিক মান বজায় রাখার স্বার্থেই নজরদারির প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। বিশেষ করে ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংকের মতো বিভিন্ন আর্থিক ও অর্থ লেনদেনকারী প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে বিভিন্ন কর্মীর ওপর সার্বক্ষণিক নজর রাখতে হয়। অর্থ চুরি বা পাচার ঠেকাতেই এমনটা করতে হয়। আবার কিছু বহুজাতিক কোম্পানিতে প্রতিষ্ঠানের স্পর্শকাতর তথ্যের গোপনীয়তা বজায় রাখার স্বার্থেই সংশ্লিষ্ট কর্মীদের ওপর নজরদারি চালাতে হয়। আবার সোশ্যাল মিডিয়া মডারেশনের কাজ যাঁরা করেন, প্রতিষ্ঠানের স্বার্থেই তাঁদের ডিজিটাল কর্মকাণ্ডে নজর রাখতে হয়। আরেকটি বড় কারণ দেখিয়ে কর্মীদের ওপর নজরদারিকে জায়েজ করা হয়। সেটি হলো, কর্মীদের দক্ষতা ও কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি। সামষ্টিকভাবে কর্মীদের কাজের মানের ওপরই প্রতিষ্ঠানের উন্নতি-অবনতি নির্ভর করে। এ জন্য অনেক প্রতিষ্ঠানই বলে, এই নজরদারির মাধ্যমেই কর্মীদের উন্নত করার উপায় খোঁজা হয়। এতে ভালো-মন্দ কর্মী চিহ্নিত করাসহ অফিসে সহকর্মীদের বুলিং বা তাদের সঙ্গে করা অসদাচরণের মতো অপকর্মও রোখা সম্ভব হবে।
এসব কারণেই জেপিমরগান চেজের মতো বিশ্বখ্যাত ব্যাংক কর্মীদের ফোনকল, চ্যাট রেকর্ড ও ই-মেইল পরীক্ষার নিয়ম চালু রেখেছে। এমনকি কর্মী কতক্ষণ প্রতিষ্ঠান ভবনে অবস্থান করে, তারও হিসাব রাখা হয়। আবার গত বছর ক্রেডিট সুইসের মতো প্রতিষ্ঠান তাদের কর্মীদের ব্যক্তিগত ইলেকট্রনিক ডিভাইসে প্রবেশাধিকার চাইতে শুরু করে। এসবের দেখাদেখি অন্য অনেক প্রতিষ্ঠান প্রয়োজন না থাকা সত্ত্বেও নজরদারি চালু করছে বলে অভিযোগ উঠছে।
এভাবে যখন কর্মীদের বিষয়ে অগণিত ব্যক্তিগত তথ্য নিয়োগকর্তাদের নাগালে আসছে, তখন স্বাভাবিকভাবেই এর অপব্যবহার নিয়ে শঙ্কা জাগছে। কে না জানে, এই পৃথিবীতে তথ্যই সম্পদ। আর সেই তথ্য যদি এখন কর্মীদের বিরুদ্ধে নিয়োগকর্তারা ব্যবহার করতে শুরু করেন, তখন কী হবে? কারণ মানুষের ধর্মই হলো, যেকোনো সুযোগের সদ্ব্যবহার করা, তা ভালো হোক বা খারাপ!
ব্যক্তিগত তথ্যের গোপনীয়তা রক্ষার বিষয়টি বাদে আছে নজরদারির শিকার হওয়া কর্মীদের মানসিক স্বাস্থ্যের বিষয়টি। এ ক্ষেত্রে কর্মীরা অত্যন্ত উদ্বেগে ভুলে থাকেন বলে বিভিন্ন জরিপে উঠে এসেছে। এক গবেষণায় দেখা গেছে, এতে করে কর্মীরা সর্বক্ষণ বিষণ্নতা, উদ্বেগ ও মানসিক চাপে ভুগে থাকে। অনেকে নিজেকে মানুষ ভাবতেও ভুলে যান! ২০১৮ সালে যুক্তরাজ্যের ট্রেড ইউনিয়ন কংগ্রেসের চালানো এক জরিপে দেখা গেছে, কর্মীদের তিন-চতুর্থাংশই নজরদারির বিপক্ষে শুধু নয়, ফেসিয়াল রিকগনিশন সফটওয়্যার ব্যবহারেরও বিপক্ষে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যে নজরদারি চালানো হয়, তা নিয়েও উদ্বেগে আছেন সিংহভাগ কর্মী।
কিন্তু এভাবে কর্মীদের ওপর নজরদারি করা কতটা আইনসংগত?
উত্তর হলো, এই চল উন্নত বিশ্বের দেশগুলোতে বেশ কয়েক বছর ধরে শুরু হলেও এখনো এটি প্রতিরোধে বা নিয়ন্ত্রণে কার্যকর বা নিখুঁত কোনো আইন নেই। এবং এই আইন না থাকাটাকেই ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে চলেছে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। তবে এ-সংক্রান্ত কিছু আইন প্রণয়নের কাজটি উন্নত দেশগুলোতে দেরিতে হলেও শুরু হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক রাজ্যে এমন একটি আইন করা হচ্ছে, যাতে কর্মীদের ওপর নজরদারি করতে হলে তা আগেভাগে জানানোর বাধ্যবাধকতা রাখা হয়েছে। কানেকটিকাট ও ডেলাওয়্যারেও একই ধরনের আইন প্রণয়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ক্যালিফোর্নিয়া আরও এক ধাপ এগিয়ে কর্মীদের ওপর যেকোনো ধরনের ডিজিটাল মনিটরিং নিষিদ্ধের কথা ভাবছে। যুক্তরাজ্যে এমন আইন প্রণয়নের দাবি জোরদার হচ্ছে। অন্যদিকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের জেনারেল ডেটা প্রোটেকশন রেগুলেশনে কর্মীদের এ-সংক্রান্ত অধিকারের সুরক্ষা দেওয়া হয়েছে। তবে সেসব বিধি আরও হালনাগাদের পদক্ষেপও নেওয়া হচ্ছে। কারণ প্রযুক্তি যে গতিতে এগোচ্ছে, তাতে আইনিভাবে অধিকার সুরক্ষায় তাল মেলানো কঠিন হয়ে পড়ছে!
সব মিলিয়ে বলাই যায় যে, বর্তমান বিশ্বে চাকরিজীবীরা এখন আছেন আতশ কাচের নিচে। ছা-পোষা চাকরিজীবীদেরও এখন নিজেদের ছানাপোনাসহ যাবতীয় ব্যক্তিগত তথ্য তুলে দিতে হচ্ছে চাকরিদাতাদের হাতে। এই অসম দাঁড়িপাল্লার একদিকে আছে প্রযুক্তিগত উন্নয়নের দুরন্ত গতি; আরেক দিকে আছে গায়েগতরে খাটা কর্মীদের অধিকার। বর্তমান পুঁজি কাঠামো এই দাঁড়িপাল্লায় ভারসাম্য আনতে দেয় কি না, সেটিই এখন দেখার। আর শেষ পর্যন্ত যদি অধিকার সুরক্ষা না-ই পায়, তবে কবি জীবনানন্দ দাশের কথায় তাল মেলানো ছাড়া তো গত্যন্তর নেই। আমাদের হয়তো মেনে নিতেই হবে, ‘মানুষের হাতে আজ মানুষ হতেছে নাজেহাল, পৃথিবীতে নেই কোনো বিশুদ্ধ চাকরি।’
তথ্যসূত্র: এবিসি নিউজ, কনসালটেন্সি ডট ইউকে, দ্য ইকোনমিস্ট, ওয়াশিংটন সেন্টার ফর ইকুইটেবল গ্রোথ, টিইউসি ডট ওআরজি ডট ইউকে, ফিন্যান্সিয়াল টাইমস, ইথিকাল সিস্টেমস ডট ওআরজি ও ফরচুন ম্যাগাজিন
২৪৪১১৩৯–এ ফোন করে বেলা বোসকে চাকরি পাওয়ার খবর দিতে চেয়েছিলেন অঞ্জন দত্ত। গানের বিষয়টা ছিল, সোনার হরিণের মতো চাকরি পেলেই হয়তো প্রেমিকার সঙ্গে সারাটা জীবন কাটানোর মতো রসদ মিলবে। কিন্তু অঞ্জনের গানের সেই প্রেমিকবর আজকের এই যুগে চাকরি পেলেও কি এতটা স্বস্তিদায়ক উচ্ছ্বাসে ভেসে যেতে পারতেন?
দ্বিধাগ্রস্ত উত্তরটি হলো, হয়তোবা না। কারণ, এখনকার করপোরেট সংস্কৃতিতে চাকরিই জীবন হয়ে উঠেছে প্রায়। কর্মস্থল থেকে এখন আর ঘড়ির কাঁটা মিলিয়ে ডাক আসে না। আসে যখন-তখন। ডাকের সঙ্গে সঙ্গে ঊর্ধ্বতনেরা জেনে নেন কর্মীর অবস্থান ও কর্মকাণ্ডের ঠিকুজি। কখনো কখনো কি শৃঙ্খলিত মনে হয়? হওয়াটা অস্বাভাবিক নয় এমন নজরদারিতে থাকলে। তবে হ্যাঁ, এসব নজরদারি বৈশ্বিক তুলনায় তেমন কঠোর নয় মোটেও। বিশ্বে যেভাবে এখন কর্মীদের ওপর নজরদারি চলছে ঊর্ধ্বতনদের, সেটি জানলে আপনাদের আক্কেল গুড়ুম হতে বাধ্য। তবে, এসব বিষয়ে জানা থাকা ভালো। বিশ্বায়িত বিশ্বের প্রবল হাওয়া কখন এ দেশেও চলে আসে, কে জানে! চলুন তবে জেনে আসা যাক, কর্মস্থলে নজরদারির ক্ষেত্রে বিশ্বে এখন কী অবস্থা।
কর্মস্থলে নজরদারি
প্রথমেই বলে নিই, কর্মস্থলে নজরদারি নতুন কোনো বস্তু নয়। দীর্ঘদিন ধরেই এমনটা চলে আসছে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে। আজ থেকে দু-তিন শ বছর আগে তৎকালীন ব্রিটেনে বা ইউরোপে নজরদারির নামে চাবুকপেটা হতেন শ্রমিকেরা। যুগের ও প্রযুক্তির কল্যাণে সেই জায়গা ধীরে ধীরে নিল সিসিটিভি ক্যামেরা। এসব যন্ত্রনির্মিত ‘চোখ’ দিয়ে বিভিন্ন দোকান ও কারখানায় শ্রমিকদের গতিবিধি নজরে রাখা হতো এবং এখনো হয়। আমরা বিভিন্ন সময় সংবাদমাধ্যমে এমন খবরও পেয়েছি যে, সিসিটিভি দিয়ে কোন শ্রমিক কাজ ফেলে শৌচাগারে যাচ্ছে, তারও হিসাব রাখা হয় এবং সে কারণে অনেকের চাকরিও চলে যায়!
এ তো গেল সাধারণ কর্মী বা শ্রমিকদের কথা। শ্রমিক আমরা কম-বেশি সবাই। তবে কারও কারও গায়ে থাকে সাদা কলারের শার্ট ও রঙিন টাই। হ্যাঁ হ্যাঁ, হোয়াইট কলার জবের কথাই বলছি। এরা সাধারণ শ্রমিকের ওপরে থেকে কাজ সামলান। তবে মালিক ব্যতীত ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের তালিকার তো শেষ নেই। ফলে তাঁদের ওপরে থাকা কর্মকর্তারা চালান অধস্তনদের ওপর নজরদারি। চলতি শতকের শুরু থেকেই এসব চালু হয়েছে। আর প্রযুক্তির উন্নতি যত দ্রুত হয়েছে, ততই আঁটসাঁট হয়েছে নজরদারি। বর্তমানে উন্নত বিশ্বে কর্মীদের ওপর নজরদারিতে ব্যবহৃত হচ্ছে ফোনের কললিস্ট ও ই-মেইল। নজরদারির কিছু কাজ গুগল ওয়ার্কস্পেস, মাইক্রোসফট টিমস বা স্ল্যাক দিয়েও করা হচ্ছে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে নতুন প্রযুক্তির সাহায্যে একজন কর্মীর জুম-কল থেকে শুরু করে কম্পিউটারের কি-বোর্ডে টাইপিং—সবকিছুতেই নজর রাখা হচ্ছে। বাদ যাচ্ছে না কর্মীদের ব্যক্তিগত ইলেকট্রনিক ডিভাইসও। যেমন: ভেরাইটো নামের একটি সফটওয়্যার দিয়ে কর্মীরা গোপন তথ্য ফাঁস করছেন কিনা, তা নির্ণয় করা যায়। আবার ডিপস্কোর নামের একটি সফটওয়্যার ব্যক্তির মুখচ্ছবি ও কণ্ঠস্বর পরীক্ষা করে কর্মী কতটা আস্থাভাজন, তা নির্ণয় করতে পারে!
অর্থাৎ, কর্মীর আগাপাশতলা—সবকিছুই নিয়োগকর্তারা নজর রাখতে চাচ্ছেন। এমনকি অফিসের কাজে কর্মী কতটুকু উৎপাদনক্ষম এবং কাজ করতে গিয়ে তিনি বিরক্ত বা ক্ষুব্ধ হচ্ছেন কি না, সেটিও জানতে চাইছেন কোনো কোনো নিয়োগকর্তা। এ ক্ষেত্রে চাকরিজীবী ব্যক্তির ব্যক্তিগত স্বাধীনতা বলে আর কিছু কি থাকছে?
নজরদারি বেড়েছে
বিভিন্ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান বলছে, মূলত করোনা মহামারির পর থেকে কর্মীদের ওপর এ ধরনের কঠোর নজরদারির মাত্রা ক্রমান্বয়ে বেড়েছে। মহামারির শুরু থেকেই ওয়ার্ক ফ্রম হোমের ব্যাপক প্রচলন চালু হয়। তখন থেকেই নিয়োগকর্তাদের মাথায় বাসা বাঁধে কর্মীরা আদৌ ঠিকমতো কাজ করছে কি না—সেই শঙ্কা। ফলে শুরু হয় নজরদারির নিত্যনতুন উপায় ব্যবহার।
গবেষণা প্রতিষ্ঠান গার্টনার বলছে, মহামারির আগে বড় বড় বাণিজ্য প্রতিষ্ঠানের প্রতি ১০টির মধ্যে মাত্র একটি কর্মীদের ওপর গুপ্তচরবৃত্তি চালানোর সফটওয়্যার ব্যবহার করত। আর গত তিন বছরের মধ্যে এমন সফটওয়্যার ব্যবহার বেড়েছে প্রায় ৭০ শতাংশ।
তবে এতে উজানের টান শুরু হয়েছিল আরেকটু আগে থেকেই। খ্যাতনামা প্রতিষ্ঠান অ্যাকসেনসিওর নিজেদের এক জরিপের বরাত দিয়ে জানিয়েছে, করোনা মহামারি শুরুর আগেই প্রায় ৫০ শতাংশ প্রতিষ্ঠানের হর্তাকর্তারা কর্মীদের ব্যাপারে তথ্য সংগ্রহে বিভিন্ন নজরদারি সফটওয়্যার ব্যবহারের পক্ষে ছিলেন। ইউরোপীয় কমিশনের চালানো অপর এক গবেষণায় দেখা গেছে, কর্মীদের ওপর গুপ্তচরবৃত্তি চালানোর সফটওয়্যারে বৈশ্বিক চাহিদা ২০১৯ সালের এপ্রিল থেকে ২০২০ সালের এপ্রিলের মধ্যে প্রায় দ্বিগুণ বেড়েছে। মহামারির শুরুতে দেওয়া লকডাউনের কয়েক সপ্তাহের মধ্যে কর্মীদের মনিটরিং করার জন্য ব্যবহৃত টুলস খোঁজার বিষয়টি প্রায় ১৮ গুণ বেড়েছিল। এ ক্ষেত্রে কিছু উদাহরণ দেওয়া যাক। যেমন: টাইম ডক্টর নামের একটি সফটওয়্যার যেটি ব্যবহারকারীদের কম্পিউটার স্ক্রিন টাইমের ভিডিওচিত্র ধারণ করে। এর চাহিদা ২০২০ সালের এপ্রিলে এর আগের বছরের তুলনায় তিনগুণ বেড়েছিল। এমন আরেকটি সফটওয়্যার হলো ডেস্কটাইম, যা কম্পিউটারে একজন কর্মীর একটি কাজ সম্পন্নের সময় হিসাবে রাখে। এই সফটওয়্যারের চাহিদা ওই একই সময়ে চারগুণ বেড়েছিল।
এ তো গেল ২০২০ সালের অবস্থা। ২০২১ সালে যুক্তরাষ্ট্রে ১ হাজারের বেশি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে করা এক জরিপে দেখা গেছে, সেসবের ৬০ শতাংশ কর্মীদের ওপর নজরদারিতে নানা ধরনের সফটওয়্যার ব্যবহার করে। আর ওই একই সময় আরও ১৭ শতাংশ প্রতিষ্ঠান এ ব্যাপারে চিন্তাভাবনা শুরু করেছিল এবং এই নজরদারিকে একটি মোক্ষম উপায় হিসেবে বিবেচনা করছিল। হয়তো ২০২২ সাল নাগাদ তারা সিদ্ধান্তে পৌঁছেই গেছে!
প্রশ্ন উঠতেই পারে, কেন কর্মীদের ওপর এত নজরদারি? বা এত নজরদারির প্রয়োজনীয়তাই-বা কতটুকু?
বিশ্লেষকেরা বলছেন, প্রয়োজনীয়তা একদম যে নেই, তা জোর গলায় বলা যাবে না। কিছু ক্ষেত্রে অবশ্যই আছে। যেমন—কিছু কিছু বিশেষায়িত চাকরির ক্ষেত্রে নিরাপত্তার ও কাজের সঠিক মান বজায় রাখার স্বার্থেই নজরদারির প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। বিশেষ করে ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংকের মতো বিভিন্ন আর্থিক ও অর্থ লেনদেনকারী প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে বিভিন্ন কর্মীর ওপর সার্বক্ষণিক নজর রাখতে হয়। অর্থ চুরি বা পাচার ঠেকাতেই এমনটা করতে হয়। আবার কিছু বহুজাতিক কোম্পানিতে প্রতিষ্ঠানের স্পর্শকাতর তথ্যের গোপনীয়তা বজায় রাখার স্বার্থেই সংশ্লিষ্ট কর্মীদের ওপর নজরদারি চালাতে হয়। আবার সোশ্যাল মিডিয়া মডারেশনের কাজ যাঁরা করেন, প্রতিষ্ঠানের স্বার্থেই তাঁদের ডিজিটাল কর্মকাণ্ডে নজর রাখতে হয়। আরেকটি বড় কারণ দেখিয়ে কর্মীদের ওপর নজরদারিকে জায়েজ করা হয়। সেটি হলো, কর্মীদের দক্ষতা ও কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি। সামষ্টিকভাবে কর্মীদের কাজের মানের ওপরই প্রতিষ্ঠানের উন্নতি-অবনতি নির্ভর করে। এ জন্য অনেক প্রতিষ্ঠানই বলে, এই নজরদারির মাধ্যমেই কর্মীদের উন্নত করার উপায় খোঁজা হয়। এতে ভালো-মন্দ কর্মী চিহ্নিত করাসহ অফিসে সহকর্মীদের বুলিং বা তাদের সঙ্গে করা অসদাচরণের মতো অপকর্মও রোখা সম্ভব হবে।
এসব কারণেই জেপিমরগান চেজের মতো বিশ্বখ্যাত ব্যাংক কর্মীদের ফোনকল, চ্যাট রেকর্ড ও ই-মেইল পরীক্ষার নিয়ম চালু রেখেছে। এমনকি কর্মী কতক্ষণ প্রতিষ্ঠান ভবনে অবস্থান করে, তারও হিসাব রাখা হয়। আবার গত বছর ক্রেডিট সুইসের মতো প্রতিষ্ঠান তাদের কর্মীদের ব্যক্তিগত ইলেকট্রনিক ডিভাইসে প্রবেশাধিকার চাইতে শুরু করে। এসবের দেখাদেখি অন্য অনেক প্রতিষ্ঠান প্রয়োজন না থাকা সত্ত্বেও নজরদারি চালু করছে বলে অভিযোগ উঠছে।
এভাবে যখন কর্মীদের বিষয়ে অগণিত ব্যক্তিগত তথ্য নিয়োগকর্তাদের নাগালে আসছে, তখন স্বাভাবিকভাবেই এর অপব্যবহার নিয়ে শঙ্কা জাগছে। কে না জানে, এই পৃথিবীতে তথ্যই সম্পদ। আর সেই তথ্য যদি এখন কর্মীদের বিরুদ্ধে নিয়োগকর্তারা ব্যবহার করতে শুরু করেন, তখন কী হবে? কারণ মানুষের ধর্মই হলো, যেকোনো সুযোগের সদ্ব্যবহার করা, তা ভালো হোক বা খারাপ!
ব্যক্তিগত তথ্যের গোপনীয়তা রক্ষার বিষয়টি বাদে আছে নজরদারির শিকার হওয়া কর্মীদের মানসিক স্বাস্থ্যের বিষয়টি। এ ক্ষেত্রে কর্মীরা অত্যন্ত উদ্বেগে ভুলে থাকেন বলে বিভিন্ন জরিপে উঠে এসেছে। এক গবেষণায় দেখা গেছে, এতে করে কর্মীরা সর্বক্ষণ বিষণ্নতা, উদ্বেগ ও মানসিক চাপে ভুগে থাকে। অনেকে নিজেকে মানুষ ভাবতেও ভুলে যান! ২০১৮ সালে যুক্তরাজ্যের ট্রেড ইউনিয়ন কংগ্রেসের চালানো এক জরিপে দেখা গেছে, কর্মীদের তিন-চতুর্থাংশই নজরদারির বিপক্ষে শুধু নয়, ফেসিয়াল রিকগনিশন সফটওয়্যার ব্যবহারেরও বিপক্ষে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যে নজরদারি চালানো হয়, তা নিয়েও উদ্বেগে আছেন সিংহভাগ কর্মী।
কিন্তু এভাবে কর্মীদের ওপর নজরদারি করা কতটা আইনসংগত?
উত্তর হলো, এই চল উন্নত বিশ্বের দেশগুলোতে বেশ কয়েক বছর ধরে শুরু হলেও এখনো এটি প্রতিরোধে বা নিয়ন্ত্রণে কার্যকর বা নিখুঁত কোনো আইন নেই। এবং এই আইন না থাকাটাকেই ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে চলেছে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। তবে এ-সংক্রান্ত কিছু আইন প্রণয়নের কাজটি উন্নত দেশগুলোতে দেরিতে হলেও শুরু হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক রাজ্যে এমন একটি আইন করা হচ্ছে, যাতে কর্মীদের ওপর নজরদারি করতে হলে তা আগেভাগে জানানোর বাধ্যবাধকতা রাখা হয়েছে। কানেকটিকাট ও ডেলাওয়্যারেও একই ধরনের আইন প্রণয়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ক্যালিফোর্নিয়া আরও এক ধাপ এগিয়ে কর্মীদের ওপর যেকোনো ধরনের ডিজিটাল মনিটরিং নিষিদ্ধের কথা ভাবছে। যুক্তরাজ্যে এমন আইন প্রণয়নের দাবি জোরদার হচ্ছে। অন্যদিকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের জেনারেল ডেটা প্রোটেকশন রেগুলেশনে কর্মীদের এ-সংক্রান্ত অধিকারের সুরক্ষা দেওয়া হয়েছে। তবে সেসব বিধি আরও হালনাগাদের পদক্ষেপও নেওয়া হচ্ছে। কারণ প্রযুক্তি যে গতিতে এগোচ্ছে, তাতে আইনিভাবে অধিকার সুরক্ষায় তাল মেলানো কঠিন হয়ে পড়ছে!
সব মিলিয়ে বলাই যায় যে, বর্তমান বিশ্বে চাকরিজীবীরা এখন আছেন আতশ কাচের নিচে। ছা-পোষা চাকরিজীবীদেরও এখন নিজেদের ছানাপোনাসহ যাবতীয় ব্যক্তিগত তথ্য তুলে দিতে হচ্ছে চাকরিদাতাদের হাতে। এই অসম দাঁড়িপাল্লার একদিকে আছে প্রযুক্তিগত উন্নয়নের দুরন্ত গতি; আরেক দিকে আছে গায়েগতরে খাটা কর্মীদের অধিকার। বর্তমান পুঁজি কাঠামো এই দাঁড়িপাল্লায় ভারসাম্য আনতে দেয় কি না, সেটিই এখন দেখার। আর শেষ পর্যন্ত যদি অধিকার সুরক্ষা না-ই পায়, তবে কবি জীবনানন্দ দাশের কথায় তাল মেলানো ছাড়া তো গত্যন্তর নেই। আমাদের হয়তো মেনে নিতেই হবে, ‘মানুষের হাতে আজ মানুষ হতেছে নাজেহাল, পৃথিবীতে নেই কোনো বিশুদ্ধ চাকরি।’
তথ্যসূত্র: এবিসি নিউজ, কনসালটেন্সি ডট ইউকে, দ্য ইকোনমিস্ট, ওয়াশিংটন সেন্টার ফর ইকুইটেবল গ্রোথ, টিইউসি ডট ওআরজি ডট ইউকে, ফিন্যান্সিয়াল টাইমস, ইথিকাল সিস্টেমস ডট ওআরজি ও ফরচুন ম্যাগাজিন
খাবার মজাদার করতে আমরা সাধারণভাবে তেল-মসলার খুব বাড়াবাড়ি করে ফেলি। সেখান থেকে বাদ যায় না পেঁয়াজ কিংবা রসুন। পেঁয়াজকে কায়দা করে সরিয়ে রাখলেও খাবার মজাদার হতে পারে। তেমনই কিছু রেসিপি...
৬ ঘণ্টা আগেবাংলা অঞ্চলে মিষ্টিজাতীয় প্রাচীন খাবারগুলোর মধ্যে সন্দেশের নাম আছে একেবারে প্রথম দিকে। সব মিষ্টির কিছু না কিছু বদল হলেও, এর বদল হয়েছে খুবই কম। যশোরের নলেন গুড়ের সন্দেশ, মানিকগঞ্জ বা নাগরপুরের প্যারা সন্দেশ, পাবনার মাছের পেটি সন্দেশ ইত্যাদি কে না খেতে পছন্দ করে!
৭ ঘণ্টা আগেজীবনানন্দ দাশের কবিতায় ঘুরেফিরে এসেছে দারুচিনি দ্বীপের কথা, তার রহস্যময় শ্যামলিমার কথা, সেই সবুজের গহিনে দিকহারা নাবিকের আশ্রয়-আকাঙ্ক্ষার কথা। এই দারুচিনি দ্বীপ কি আসলে কোনো সমুদ্রঘেরা ভূখণ্ড, নাকি বনলতা সেন নিজেই, তা নিয়ে কবিরা বিতর্ক করুক। আমরা বরং এই দ্বীপের তত্ত্বতালাশ করি।
৭ ঘণ্টা আগে‘প্রসেসেস’-এ প্রকাশিত এক সমীক্ষায় বলা হয়েছে, ভাতের মাড় ওষুধ হিসেবে ব্যবহৃত হয়। ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগীদের জন্য একটি হজমযোগ্য স্বাস্থ্যকর পানীয় হিসেবে কাজ করে। এমনকি এটি ওজন কমাতে পারে।
৭ ঘণ্টা আগে